
বাংলাদেশের মাটি এখনো মুক্তিযুদ্ধের রক্তে ভেজা—যে যুদ্ধ হয়েছিল স্বাধীনতা, সমতা ও মর্যাদার জন্য। অথচ আজও কিছু রাজনৈতিক শক্তি মধ্যযুগীয় মানসিকতার কায়দায় নারীর স্বাধীনতাকে শিকল পরানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা নতুন ভাষায়, নতুন মুখে, ধর্মের নামে আবারও নারীকে ঘরে বন্দি করার রাজনীতি শুরু করেছে—আর আশ্চর্যের বিষয়, এই ষড়যন্ত্রের পেছনে বর্তমান ক্ষমতাসীনদের নীরব সহযোগিতা চোখে পড়ে না বলে নয়।
আজ এই দেশে নারীর শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও সামাজিক অংশগ্রহণ যখন রাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় অর্জন, তখনই কিছু কট্টরপন্থী পাকিস্তানমুখী চিন্তাধারার দল নারীর স্বাধীনতাকে “সম্মান” আর “ভর্তুকি”র নামে গিলে খাওয়ার পরিকল্পনা করছে।
এ যেন প্রগতির রাস্তায় ধর্মীয় পর্দা টানার নতুন সংস্করণ—যেখানে নারীকে বলা হচ্ছে, ঘরে থাকাই তোমার মর্যাদা, বাইরে যাওয়াই তোমার অপরাধ!
আরও ভয়াবহ হলো—এই প্রচারণার সাথে যুক্ত হয়েছে কিছু তথাকথিত “ধর্মপ্রাণ” নারী, যারা নিজেরা ইউরোপ-আমেরিকা-অস্ট্রেলিয়ার মুক্ত সমাজে বসবাস করেন, কিন্তু বাংলাদেশের নারীদের ভাগ্যে আঁধার নামাতে ব্যস্ত। তারা বিদেশের স্বাধীনতা উপভোগ করে, অথচ নিজের দেশের নারীদের স্বাধীনতাকে পাপ মনে করেন। এ এক ভয়ংকর ভণ্ডামি, এক নিখাদ প্রতারণা।
নারীর অধিকার কেড়ে নেওয়ার এই প্রচেষ্টা শুধু নারীকে নয়, পুরো জাতিকে অন্ধকারে ঠেলে দেবে।
নারীকে ঘরে বন্দি করা মানে—বুদ্ধিকে বন্দি করা, স্বাধীনতাকে শিকল পরানো, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিশ্বাসঘাতকতা করা।
বাংলাদেশের নারী আর কোনো শিকল মেনে নেবে না।
যে রাজনীতি নারীকে পেছনে টানতে চায়, সে রাজনীতি আসলে নিজের পতন ডেকে আনে।
এই দেশ আলোর, অন্ধকারের নয়—এই দেশ স্বাধীনতার, দাসত্বের নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০২

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




