somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শিশুদের জন্য ভালবাসা

২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ বিকাল ৪:১৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অর্ঘ সবে মাত্র তৃতীয় শ্রেণীতে উঠেছে।বাবা মার সাথে ভীষন ভাব।বোধ হওয়ার পর থেকে অর্ঘ দেখছে তার বাবা মা স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস,একুশে ফেব্র“য়ারী ও পহেলা বৈশাখ সহ বিভিন্ন বাঙ্গালী ঘরানার অনুষ্ঠানে আগ্রহভরে অংশগ্রহন করছে।অর্ঘ ও বাদ যাচ্ছে না।অর্ঘ বাবা মার কাছ থেকে জেনেছে স্বাধীনতা যুদ্ধ কি? মুক্তিযোদ্ধা কারা, রাজাকার ই বা কারা,পহেলা বৈশাখ কি ইত্যাদি ইত্যাদি নানা বিষয়।আজকাল অর্ঘ জাতীয় পতাকা খচিত টি শার্ট ও ক্যাপ আগ্রহভরে পড়ছে।দেশপ্রেমের চেতনা বাহ্যিক বেশভুষায় শুধুই নয় অন্তরেও লেগেছে।সমবয়সী অনেকের মধ্যেই অর্ঘের মতো দেশপ্রেমের চেতনা জাগ্রত নেই।অর্ঘের দেশপ্রেম জাগ্রত করার পেছনে রয়েছে বাবা মার সচেতনতাবোধ।

অর্ঘের বাবা মা দুজনই উচ্চ শিতি চাকুরিজীবী ।অর্ঘের বাবা একটি বেসরকারী ব্যাংকে আর মা একটি প্রাইমারী স্কুলের বাংলার শিকিা।দুজনই ভীষন ব্যস্ত।অর্ঘের বাবা মা জানে পরিবারই হল একটি শিশুর প্রথম পাঠশালা।আর পাঠশালায় তত্ত্বীয় জ্ঞানের চেয়ে ব্যবহারিক জ্ঞান অধিক ফলপ্রসু।শিশুর জীবনে প্রথম অর্জিত শিাই তার সারা জীবনের বুনিয়াদ।অর্ঘের বাবা মা কায়দা করে অর্ঘকে কোন কিছু বোঝার আগেই স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস,একুশে ফেব্র“য়ারী ও পহেলা বৈশাখে অনুষ্ঠানে নিয়ে গেছেন।প্রথম প্রথম অর্ঘ বাবা মার কোলেচড়ে এসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করলেও পরবর্তীতে বোঝ হওয়ার পর সে অনুসন্ধিস্যু হয়ে ওঠে।বাবা মাকে বিভিন্ন প্রশ্নবানে জর্জরিত করে জেনে নেয় এসব অনুষ্ঠানের আদ্যোপান্ত মাহাত্ম্য।অর্ঘের মনের অগোচরেই ভেসে ওঠে রাজাকারের হিংস্র মুখ আর মুক্তিযোদ্ধার মায়াভরা মুখ।অর্ঘ এখন ঘৃনা করে রাজাকারদের আর ভালবাসে মুক্তিযোদ্ধাদের।

এসব ল ল অর্ঘরাই জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার।অর্ঘদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার দায়িত্ব সবার আগে প্রথম পাঠশালার শিকদের।প্রথম পাঠশালার অন্য শিকেরা হলেন দাদা,দাদি,কাকা,কাকি,মামা,মামি ইত্যাদি নিকট আত্মীয়রা।অর্ঘদের জন্য সর্বেেত্র ভালবাসার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।ভালবাসার মাধ্যমে তাদের আদর ও শাসন করতে হবে।শিশুরা সাধারনত পড়ার টেবিলে বেশিন বসে থাকতে চায় না।তাই তাদের নিয়ে ঘুরতে যেতে হবে।ঘুরতে ঘুরতে তাদের পাখি গাছ গাছালির নাম শেখানো যেতে পারে।পড়ার টেবিলে না বসিয়েও শিশুদের শিন পদ্ধতি অব্যাহত রাখা যায়।শিশুরাও বোরিং বিহীন শিণ পদ্ধতিতে অংশ নিবে মহাসানন্দে।

শহরের বেশির ভাগ শিশুই বিনোদনের জন্য আশ্রয় নেয় কম্পিউটার,টেলিভিশন,ইন্টারনেট ইত্যাদির উপর।শিশুদের মনোবিকাশের পাশাপাশি শারিরিক বিকাশের জন্য চাই খেলাধূলা।শহরে পর্যাপ্ত খালি জায়গা,মাঠ,পার্ক না থাকায় শিশুরা খেলাধূলার সুবিধা থেকে মুক্ত।বাড়ির আঙ্গিনায়, ছাদ বা আশেপাশের খালি জায়গায় শিশুরা যেন প্রতিদিন বিকেলে অন্তত এক ঘন্টা খেলাধূলা করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।খেলাধূলা শারীরিকের পাশাপাশি মানসিক বিকাশে ভূমিকা রাখে।শিশুরা যেন কম্পিউটারে গেমস খেলে ঘন্টা ঘন্টা সময় অপচয় না করে সেদিক নজর দিতে হবে।

শিশুদের গঠনমূলক কাজের প্রশংশা করতে হবে।ভালো কাজের প্রশংশা করলে শিশুরা ভবিষ্যৎতে ভালো কাজ করতে অনুপ্রানিত হবে।আমাদের সবচেয়ে বড় হীনমন্নতা হলো প্রশংশা না করা।আপনি যখন একটি শিশুকে বলবেন তোমার আঁকা ছবিটা তো খুব সুন্দর হয়েছে।সে যেরকম অনুপ্রানিত হবে সমালোচনা বা শাসনে ততটা হবে না।সমালোচনা করলেও তা যেন প্রশংসার মধ্য দিয়ে হয়।শিশুদের ভালো কাজের পুরস্কার হিসেবে তার পছন্দনীয় উপকরন উপহার দিতে পারেন।এতে শিশুদের সৃজনশীল মেধার বিকাশ ঘটে।

শিশুরা সঙ্গপ্রিয়।শিশুরা এখনও রাস, খোস,ভূত,প্রেত,রুপকথার গল্প শুনতে চায়।এসব গল্প শিশুর মনে চিত্রকল্প তৈরি করে।তাই ভয়ঙ্কর ভীতিকর রাস খোসের গল্প শোনানে যাবে না।কারন তাতে তাদের মনে দীর্ঘমেয়াদি ভীতি তৈরি হতে পারে।সেইসাথে তাদের স্বাভাবিক কর্মকান্ডে প্রভাব পড়তে পারে।শিশুদের শিনীয় গল্প শোনাতে হবে।গল্প বলার পর সেই গল্প থেকে ছোট ছোট প্রশ্ন করে তাদের মেধাকে শানিত করতে হবে।

শিশুদেরকে ছোট বেলা থেকে পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।তাকে নিয়ে স্থানীয় বা জাতীয় বই মেলায় যাওয়া যেতে পারে।তাদে কে তাদের পছন্দনীয় বই ক্রয় করে দেওয়া যেতে পারে।শিশুরা সাধারনত গল্প উপন্যাসের চেয়ে কার্টুন ও কমিকস বই বেশী পছন্দ করে।সে েেত্র তাদের পছন্দকে প্রাধান্য দিতে হবে।অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে রাখতে হবে তাদের সন্তান যেন নিজস্ব পড়াশোনা বাদ দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত সময় গল্পের বইয়ের পেছনে খরচ না করে।

ছবি আঁকা,গান,নৃত্য,খেলাধূলা এসব বিষয়ের মধ্যে আপনার সন্তানের ঝোঁক কোনটির মধ্যে বেশী।শিশুদেরকে হযবরল ভাবে সবগুলি বিষয় শেখাতে গেলে কোনটিই ভালভাবে শিখতে পারবে না।অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানকে একসাথে গানের স্কুল,আর্ট স্কুল,স্পোর্টস একাডেমীতে ভর্তি করে তালগোল বানিয়ে ফেলেন।এরে অভিভাবকের উচিত হবে সন্তানের আগ্রহের বিষয়টি আবিষ্কার করে ঐ বিষয়ের উপর জোড় দেওয়া।

অর্ঘের পিতামাতার মত একটু কৈৗশলি হলেই শাসন নয় ভালবাসার মাধ্যমেই সন্তানকে সর্ববিষয়ে পারদর্শী করতে পারবেন।ভালবাসার মাধ্যমে তাদের মধ্যে দেশপ্রেমের চেতনা থেকে শুরু করে বড়দের প্রতি শ্রদ্ধার মানসিকতা তৈরি করা যায়।শিশুরা যেহেতু অনুকরনপ্রিয় তাই সবসময় তাদের সামনে নির্ঝঞ্ঝাট পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।শিশুদের বোকা ভাবলে চলবে না।তারা অনেক জটিল মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার বুঝতে পারে।তাই আপনার প্রিয় সন্তানটির উপর কোন কিছু চাপিয়ে দেওয়ার পূর্বে মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনুন।তার কথার মূল্যায়ন ও প্রাধান্য দিন।





০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×