অর্ঘ সবে মাত্র তৃতীয় শ্রেণীতে উঠেছে।বাবা মার সাথে ভীষন ভাব।বোধ হওয়ার পর থেকে অর্ঘ দেখছে তার বাবা মা স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস,একুশে ফেব্র“য়ারী ও পহেলা বৈশাখ সহ বিভিন্ন বাঙ্গালী ঘরানার অনুষ্ঠানে আগ্রহভরে অংশগ্রহন করছে।অর্ঘ ও বাদ যাচ্ছে না।অর্ঘ বাবা মার কাছ থেকে জেনেছে স্বাধীনতা যুদ্ধ কি? মুক্তিযোদ্ধা কারা, রাজাকার ই বা কারা,পহেলা বৈশাখ কি ইত্যাদি ইত্যাদি নানা বিষয়।আজকাল অর্ঘ জাতীয় পতাকা খচিত টি শার্ট ও ক্যাপ আগ্রহভরে পড়ছে।দেশপ্রেমের চেতনা বাহ্যিক বেশভুষায় শুধুই নয় অন্তরেও লেগেছে।সমবয়সী অনেকের মধ্যেই অর্ঘের মতো দেশপ্রেমের চেতনা জাগ্রত নেই।অর্ঘের দেশপ্রেম জাগ্রত করার পেছনে রয়েছে বাবা মার সচেতনতাবোধ।
অর্ঘের বাবা মা দুজনই উচ্চ শিতি চাকুরিজীবী ।অর্ঘের বাবা একটি বেসরকারী ব্যাংকে আর মা একটি প্রাইমারী স্কুলের বাংলার শিকিা।দুজনই ভীষন ব্যস্ত।অর্ঘের বাবা মা জানে পরিবারই হল একটি শিশুর প্রথম পাঠশালা।আর পাঠশালায় তত্ত্বীয় জ্ঞানের চেয়ে ব্যবহারিক জ্ঞান অধিক ফলপ্রসু।শিশুর জীবনে প্রথম অর্জিত শিাই তার সারা জীবনের বুনিয়াদ।অর্ঘের বাবা মা কায়দা করে অর্ঘকে কোন কিছু বোঝার আগেই স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস,একুশে ফেব্র“য়ারী ও পহেলা বৈশাখে অনুষ্ঠানে নিয়ে গেছেন।প্রথম প্রথম অর্ঘ বাবা মার কোলেচড়ে এসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করলেও পরবর্তীতে বোঝ হওয়ার পর সে অনুসন্ধিস্যু হয়ে ওঠে।বাবা মাকে বিভিন্ন প্রশ্নবানে জর্জরিত করে জেনে নেয় এসব অনুষ্ঠানের আদ্যোপান্ত মাহাত্ম্য।অর্ঘের মনের অগোচরেই ভেসে ওঠে রাজাকারের হিংস্র মুখ আর মুক্তিযোদ্ধার মায়াভরা মুখ।অর্ঘ এখন ঘৃনা করে রাজাকারদের আর ভালবাসে মুক্তিযোদ্ধাদের।
এসব ল ল অর্ঘরাই জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার।অর্ঘদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করার দায়িত্ব সবার আগে প্রথম পাঠশালার শিকদের।প্রথম পাঠশালার অন্য শিকেরা হলেন দাদা,দাদি,কাকা,কাকি,মামা,মামি ইত্যাদি নিকট আত্মীয়রা।অর্ঘদের জন্য সর্বেেত্র ভালবাসার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।ভালবাসার মাধ্যমে তাদের আদর ও শাসন করতে হবে।শিশুরা সাধারনত পড়ার টেবিলে বেশিন বসে থাকতে চায় না।তাই তাদের নিয়ে ঘুরতে যেতে হবে।ঘুরতে ঘুরতে তাদের পাখি গাছ গাছালির নাম শেখানো যেতে পারে।পড়ার টেবিলে না বসিয়েও শিশুদের শিন পদ্ধতি অব্যাহত রাখা যায়।শিশুরাও বোরিং বিহীন শিণ পদ্ধতিতে অংশ নিবে মহাসানন্দে।
শহরের বেশির ভাগ শিশুই বিনোদনের জন্য আশ্রয় নেয় কম্পিউটার,টেলিভিশন,ইন্টারনেট ইত্যাদির উপর।শিশুদের মনোবিকাশের পাশাপাশি শারিরিক বিকাশের জন্য চাই খেলাধূলা।শহরে পর্যাপ্ত খালি জায়গা,মাঠ,পার্ক না থাকায় শিশুরা খেলাধূলার সুবিধা থেকে মুক্ত।বাড়ির আঙ্গিনায়, ছাদ বা আশেপাশের খালি জায়গায় শিশুরা যেন প্রতিদিন বিকেলে অন্তত এক ঘন্টা খেলাধূলা করতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।খেলাধূলা শারীরিকের পাশাপাশি মানসিক বিকাশে ভূমিকা রাখে।শিশুরা যেন কম্পিউটারে গেমস খেলে ঘন্টা ঘন্টা সময় অপচয় না করে সেদিক নজর দিতে হবে।
শিশুদের গঠনমূলক কাজের প্রশংশা করতে হবে।ভালো কাজের প্রশংশা করলে শিশুরা ভবিষ্যৎতে ভালো কাজ করতে অনুপ্রানিত হবে।আমাদের সবচেয়ে বড় হীনমন্নতা হলো প্রশংশা না করা।আপনি যখন একটি শিশুকে বলবেন তোমার আঁকা ছবিটা তো খুব সুন্দর হয়েছে।সে যেরকম অনুপ্রানিত হবে সমালোচনা বা শাসনে ততটা হবে না।সমালোচনা করলেও তা যেন প্রশংসার মধ্য দিয়ে হয়।শিশুদের ভালো কাজের পুরস্কার হিসেবে তার পছন্দনীয় উপকরন উপহার দিতে পারেন।এতে শিশুদের সৃজনশীল মেধার বিকাশ ঘটে।
শিশুরা সঙ্গপ্রিয়।শিশুরা এখনও রাস, খোস,ভূত,প্রেত,রুপকথার গল্প শুনতে চায়।এসব গল্প শিশুর মনে চিত্রকল্প তৈরি করে।তাই ভয়ঙ্কর ভীতিকর রাস খোসের গল্প শোনানে যাবে না।কারন তাতে তাদের মনে দীর্ঘমেয়াদি ভীতি তৈরি হতে পারে।সেইসাথে তাদের স্বাভাবিক কর্মকান্ডে প্রভাব পড়তে পারে।শিশুদের শিনীয় গল্প শোনাতে হবে।গল্প বলার পর সেই গল্প থেকে ছোট ছোট প্রশ্ন করে তাদের মেধাকে শানিত করতে হবে।
শিশুদেরকে ছোট বেলা থেকে পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।তাকে নিয়ে স্থানীয় বা জাতীয় বই মেলায় যাওয়া যেতে পারে।তাদে কে তাদের পছন্দনীয় বই ক্রয় করে দেওয়া যেতে পারে।শিশুরা সাধারনত গল্প উপন্যাসের চেয়ে কার্টুন ও কমিকস বই বেশী পছন্দ করে।সে েেত্র তাদের পছন্দকে প্রাধান্য দিতে হবে।অভিভাবকদের খেয়াল রাখতে রাখতে হবে তাদের সন্তান যেন নিজস্ব পড়াশোনা বাদ দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত সময় গল্পের বইয়ের পেছনে খরচ না করে।
ছবি আঁকা,গান,নৃত্য,খেলাধূলা এসব বিষয়ের মধ্যে আপনার সন্তানের ঝোঁক কোনটির মধ্যে বেশী।শিশুদেরকে হযবরল ভাবে সবগুলি বিষয় শেখাতে গেলে কোনটিই ভালভাবে শিখতে পারবে না।অনেক অভিভাবকই তাদের সন্তানকে একসাথে গানের স্কুল,আর্ট স্কুল,স্পোর্টস একাডেমীতে ভর্তি করে তালগোল বানিয়ে ফেলেন।এরে অভিভাবকের উচিত হবে সন্তানের আগ্রহের বিষয়টি আবিষ্কার করে ঐ বিষয়ের উপর জোড় দেওয়া।
অর্ঘের পিতামাতার মত একটু কৈৗশলি হলেই শাসন নয় ভালবাসার মাধ্যমেই সন্তানকে সর্ববিষয়ে পারদর্শী করতে পারবেন।ভালবাসার মাধ্যমে তাদের মধ্যে দেশপ্রেমের চেতনা থেকে শুরু করে বড়দের প্রতি শ্রদ্ধার মানসিকতা তৈরি করা যায়।শিশুরা যেহেতু অনুকরনপ্রিয় তাই সবসময় তাদের সামনে নির্ঝঞ্ঝাট পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।শিশুদের বোকা ভাবলে চলবে না।তারা অনেক জটিল মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার বুঝতে পারে।তাই আপনার প্রিয় সন্তানটির উপর কোন কিছু চাপিয়ে দেওয়ার পূর্বে মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনুন।তার কথার মূল্যায়ন ও প্রাধান্য দিন।
আলোচিত ব্লগ
আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?


৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন
এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন
মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫….(৭)
ষষ্ঠ পর্বের লিঙ্কঃ মায়াময় স্মৃতি, পবিত্র হজ্জ্ব- ২০২৫-….(৬)
০৬ জুন ২০২৫ তারিখে সূর্যোদয়ের পরে পরেই আমাদেরকে বাসে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হলো। এই দিনটি বছরের পবিত্রতম দিন।... ...বাকিটুকু পড়ুন
আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।
ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।