somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

গার্মেন্ট কারখানায় আগুন কোনো দুর্ঘটনা নয়- ‘হত্যাকাণ্ড'

২৫ শে নভেম্বর, ২০১২ রাত ১০:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশে গার্মেন্ট ‘শিল্পে’র গোড়াপত্তন প্রায় বত্রিশ বছর আগে। এই বত্রিশ বছরে গার্মেন্ট কারখানার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার। প্রায় কুড়ি থেকে ত্রিশ লাখ শ্রমিক এই বিশাল সেক্টরে শ্রম দিচ্ছে। সব সরকারই বেশ ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে এই সেক্টরের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের খতিয়ান দিয়ে কৃতিত্ব জাহির করেছে এবং করছে। পরিসংখ্যান দিয়ে বিশ্বের অন্য কোনো দেশ চললেও বাংলাদেশ চলে না। এই পোশাক শিল্পের আয় দেশের জাতীয় বাজেটের ‘কত অংশ, দেশের কী কী উপকার করছে, দেশের অর্থনীতিতে কতো পার্সেন্ট অবদান রাখছেÑ ব্যাপারগুলো অর্থহীন। ওটা বানরের পিঠা ভাগ করার মতো চালাকি বিশেষ। এতো বড়ো একটা সেক্টরে শ্রমিক অসন্তোষ থাকবে, মারামারি-কাটাকাটি থাকবে, চুরি-চামারি থাকবে, ধাপ্পাবাজি-ফেরেপবাজি থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। এই গার্মেন্টস কারখানাগুলোতে কী হয়নি? শ্রমিকের রক্ত চুষে নেওয়া, নারী শ্রমিককে ভোগ করা, ধর্ষণ করা, খুন করা, পুড়িয়ে মারা, পায়ে দলে মারা, পিষে মারা, ছাঁটাই করে মারা, জেলে ভরা, হাত-পা গুঁড়ো করে দেওয়া, এসিড দিয়ে ঝলসে দেওয়া, ধর্ষণ করতে করতে মেরে ফেলাÑ কী হয়নি? এবং এসবই হয়েছে ওই তথাকথিত বৈদেশিক মুদ্রা আর তথাকথিত অর্থনীতির চাকা চরার ধাপ্পা দিয়ে।

গত ২০০৫ সালে বোশেখ মাসে সাভারের স্পেকট্রাম সুয়েটার ফ্যাক্টরি ধসে শতাধিক শ্রমিককে জ্যান্ত কবর দেওয়ার তিনদিনের মাথায় আমরা জাতীয়ভাবে আনন্দউল্লাস করেছি। নেচে গেয়ে রং মেখে সঙ সেজে। সেবার এত বড় একটা জাতীয় দুর্যোগ (যদিও সরকার বাহাদুর এবং নব্য এলিটরা এটাকে জাতীয় দুর্যোগ বলেননি, মানেননি) ঘটে যাওয়ার পর সভ্য মানুষের দেশ হলে যা হতো তা হলো বর্ষবরণের আনন্দ উৎসব সীমিত করে শোক পালন করা হতো। লাখো-কোটি টাকা বাতাসে না উড়িয়ে ওই হতভাগাদের পরিবার-পরিজনদের দেওয়া হতো। ওই ফ্যাক্টরির মালিক শাসকদল বিএনপির এমপির জামাতা না শ্বশুর, তদন্ত কমিটি তদন্ত করে কী উদ্ধার করবে না করবে তার চেয়েও বড়ো প্রশ্ন জ্যান্ত কবর হওয়া মানুষগুলোর প্রতি মমত্ত্ব প্রদর্শন, শোক প্রদর্শন করা। সেটা আমরা করিনি। সরকারপ্রধান আর প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রধানদের অকুস্থল পরিদর্শন আর চেহারা মুবারক প্রদর্শন ছাড়া আর কিছুই হয়নি। অসহায়ের মতো তিলে তিলে শতাধিক মানুষ মরেছে। কেউ তিনদিন পরে মরেছে। কেউ হয়তো চারদিন বেঁচে ছিল। ভাবলে গা শিউরে ওঠে, শত শত মানুষের দুমড়ানো-মুচড়ানো দেহ কংক্রিটের খাঁজে খাঁজে আটকে আছে। ওদের কেউ কেউ হয়তো উদ্ধারকারীদের কথাবার্তা শুনছে, কিন্তু চিৎকার করে বলতে পারছে নাÑ আমায় বাঁচাও, আমায় উদ্ধার করো!
আসল ব্যাপারটা শ্রেণীর। এই অগণিত মৃত মানুষ, জ্যান্ত কবর হয়ে যাওয়া মানুষগুলো গার্মেন্টস শ্রমিক না হয়ে যদি সেনা সদস্য হতো, কর্মকর্তা হতো তাহলে কি এটা ঘটতো? যেটা আমরা ঘটতে দেখলাম? আমরা তো জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী কাজে গিয়ে নিহত হওয়া সেনা সদস্য, কর্মকর্তাদের মৃত্যুর পর দেখেছিলাম, দেখেছিলাম সরকারের তোড়জোড়। দেখেছিলাম আনুষ্ঠানিক শোক। জাতীয় শোক।

তার পর আবারো ‘দোজখের’ আগুনে ২২ জন মানুষের পুড়ে মরা। সেবছরই পরের মাসের ৭ তারিখে নারায়ণগঞ্জের সান গার্মেন্টসে বাইশজন পুড়ে মরেছে। এটাকে ঠিক পুড়ে মরা বলা যাবে না। এটা এক ধরনের হত্যাকাণ্ড। শুধু এই কারখানার বেলায় নয়, বাংলাদেশে যতো পোশাক শিল্পের কারখানা আছে তার প্রায় সবই একধরনের দোজখ বিশেষ। নারায়ণগঞ্জের আলোচ্য কারখানাটিতে আগুন লাগার পর শ্রমিকরা বেরোতে না পেরে জ্যান্ত পুড়েছে। জ্যান্ত মানুষ ধীরে ধীরে আগুনে পুড়ে কয়লা হওয়া বীভৎস। মৃত্যু এমনিতেই বীভৎস, কদাকার। মৃত্যুর কোনো সৌন্দর্য নেই, আগুনে পুড়ে মরাটা তাই বীভৎসতম। অভিযোগ উঠেছে ওই কারখানাটিতে ৫ মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হয় না। ব্যাংকের দেনা শোধ হয় না। ব্যাক ক্রোক করে নিতে পারে মনে করে মালিক গং নিজেরাই আগুন ধরিয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের সময় কয়েক কোটি লিখিয়ে নেওয়া গেলে ইন্স্যুরেন্স ক্লেইম ইত্যাদি করে একটা মোটা অঙ্ক রেয়াত পাওয়ার চিন্তা থেকে এ কাজ হতে পারে।
এর আগে-পরে অর্থাৎ গার্মেন্ট সেক্টরের গোড়াপত্তনের পর থেকে সর্বশেষ সাভারের তাজরিন গার্মেন্টে ১১৬ জন জ্যান্ত শ্রমিক পুমে মরা পর্যন্ত একটা গড় হিসেব করলে দেখা যাবে এ যাবত এই গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি নামক ‘মানুষ হত্যা করার কারখানাগুলোয়’ প্রায় ৬ হাজার শ্রমিক পুড়ে মরেছে। এ যাবত তেত্রিশটির মত ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। যার ভয়াবহতম হচ্ছে এবারের অর্থাৎ ২৪ নভেম্বর রাতের দোজখের আগুন। এই যে প্রায় ৬ হাজার দরিদ্র শ্রমিক পুড়ে এবং ভবনচাপা পড়ে মারা গেল তার ভেতর কি এক জনও কর্মকর্তা ছিল? না। কেন ছিলনা? তারা কি বিশেষ কোন ত্বরিকা আবিষ্কার করেছে? না তাও না। এর সহজ উত্তর তারা জানত যে এখনে একটু পরে হত্যাযজ্ঞ চলবে! কি ভাবে?
যদি ধরে নেয়া হয় যে প্রত্যেকটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পেছনে যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা আছে বা যথাযথ কারণ আছে। কি সেই কারণ? খুব সহজেই এই ধরণের ডিজাস্টারের পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বিবৃতি দেন-সর্ট সার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা। যদি ধরে নেয়া যায় এই বিবৃতিই সঠিক তাহলে প্রশ্ন উঠবে সর্ট সার্কিট যে ঘটবে সেটা কর্মকর্তারা কিভাবে আগে থেকে জানল? যদি না জানবে তাহলে তারাও কেন ভিকটিম হলো না? কেন শত শত শ্রমিকের সাথে দু একজন কর্মকর্তা নিহত হলো না? এর উত্তর নেই। অনুমান করতে কষ্ট হয়না এই সব আগুন লাগার ঘটনার অধিকাংশই সংঘটিত। খুব ঠাণ্ডা মাথায় মালিকপক্ষের প্রচ্ছন্ন বা অপ্রচ্ছন্ন মদদে আগুন লাগানো হয়। প্রধানত যে সব কারণে আগুন লাগানো হয়- এক. কারখানা দেনাগ্রস্থ হলে। দুই. স্টক লট হলে, অর্থাৎ অর্ডার সময়মত শিপমেন্ট করতে না পারলে সেই বিরাট লট অবিক্রিত পড়ে থাকলে। তিন. বিদেশে টাকা পাচার সম্পন্ন হলে। চার. শ্রমিকদের কয়েক মাসের বেতন-বোনাস বাকি পড়লে। এবং পাঁচ. যদি কোনো কারণে ওই কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন করে ওই মালিকের কাছ থেকে ন্যায্য দাবী আদায় করে নেয় এবং মালিক সেই দাবী পুরণ করতে বাধ্য হয় তখন প্রতিশোধের জিঘাংসা থেকে আগুন লাগানো হতে পারে।

এর পর প্রশ্ন আসে প্রতি বছর কিংবা মাঝে মাঝেই যখন একই ধরণের ঘটনায় শত শত শ্রমিকের মৃত্যু ঘটে তার পরও কেন সরকারের তরফে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়না? প্রতিকার প্রশ্নে যে বিষয়গুলো উঠে আসে কেন তার যথাযথ বাস্তবায়ন হয় না? কেন এসব মনিটরিংয়ের জন্য বিশেষ সেক্টর খোলা হয়না? কেন সংশ্লিষ্ট মালিকদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়না? কেন কারখানাগুলো নিরাপদ হয়না? কেন কাকে ঘুষ দিয়ে কারখানাগুলো মৃত্যুকূপ হিসেবে বছরের পর বছর টিকে থাকে? সংশ্লিষ্ট কারখানাটি চালু করার আগে সংশ্লিষ্ট সরকারী দফতর থেকে স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তাজনিত সার্টিফিকেট নিতে হয়েছিল, সেটা কিভাবে ইস্যু হয়েছিল? তদন্ত করে সরকারী কর্মকর্তা সে সার্টিফিকেট দিয়েছিলেন। তা কি আইনসম্মত ছিল??সেই কর্মকর্তারা কারা?
তাদের কি কখনো গ্রেপ্তার করা হবে? আজ থেকে প্রায় এক দশকেরও বেশী আগে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট কারখানা শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য যে বিশদ দিক নির্দেশনা প্রদান করেছিল সেটির ঠিক কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে? যদি না হয়ে থাকে, তাহলে সংশ্লিষ্ট সরকারী আমলা, মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এখনো আদালত অবমাননার জন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না কেন?

আমরা লেখকরা এ ধরনের হত্যাকাণ্ডকে যতোই ধিক্কার দিই না কেন, পাঠক, দয়া করে বিক্ষুব্ধ হবেন না, দ্রোহি হবেন না। প্রকৃতিতে ‘ন্যাচারাল সিলেকশন’ বলে একটা কথা আছে। মানুষের মৃত্যু এখন আর আমাদের পীড়িত তো করেই না, সমান্যতম ভাবিতও করে না। ‘র‌্যাব’, ‘চিতা’, ‘কোবরা’র ‘ক্রসফায়ারে’ আঁকাবাঁকা, ভেঙেচুড়ে, দুমড়েমুচড়ে মানুষ মরে, আর তা দেখে হাজার হাজার মানুষ আনন্দ মিছিল (!) করে, মিষ্টি বিলোয়! কামেলরা বলেনÑ হারামির বাচ্চাগুলো এমন সন্ত্রাস করেছিল যে তাদের মৃত্যুতে মানুষ হাফ ছেড়ে বেঁচেছে, তাই আনন্দ মিছিল! মারহাবা! গার্মেন্টস কারখানায় একশ ষোল জন পুড়ে মরা কী খুব বড়ো কিছু? গত দুআড়াই দশকে এই ফ্যাক্টরিগুলোতে কতো মানুষ পুড়ে মরেছে তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। অনুমান করা যায় ছয় হাজার মানুষ আগুনে পুড়ে মরেছে। ভুল বললাম, পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। অপ্রশস্ত সিঁড়ি, প্রধান গেটে তিন-চার ধাপে তালাবন্ধ, শেকল দিয়ে সেই তালাকে আরো নিরাপত্তা দেওয়া। অধিকাংশ কারখানায় ফায়ার স্কেপ সিঁড়ি নেই, অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা নেই। কোথাও নামকাওয়াস্তে দুএকটা ফায়ার এস্টিংগুইশার থাকলেও তা অচল। পানি নেই। আগুন নেভানোর অন্য কোনো ব্যবস্থাও নেই। শুধু যদি গেটের তালাটা খোলা থাকে, অথবা গেটে তালা না দেওয়া থাকে তাহলে এই হতভাগাদের মৃত্যুটা এড়ানো যায়। কেন তা হয় না? কেন ব্যাংকে ভল্টের মতো নিñিদ্র নিরাপত্তা দরকার? না, ভয় আছে। পাছে শ্রমিকরা সুতো-বোতাম, টুকরো টাকরা কাপড় নিয়ে যায়! এই সকল অব্যবস্থা নিয়ে কম লেখালেখি হয়নি। এক একটা অগ্নিকাণ্ডের পর এক-দেড়শ মানুষ মরার পর বিস্তর লেখালেখি, আলোচনা, সেমিনার হযেছে। রেজাল্ট শূন্য। সেমিনারকারীদের, অথবা সরকারের এসব দেখভাল করা লোকদের কাঁচকলা দেখিয়ে আবারো সেই পূর্বাবস্থা বহাল। আবারো আগুন। আবারো মৃত্যু। অনিবার্য মুত্যৃ।
সমাজবিজ্ঞানীরা বলেন ডেভেলপমেন্ট এবং ডিজাস্টার নাকি হাত ধরাধরি করে আসে। যে যে কাজে দেশ-জাতির ডেভেলপমেন্ট হয় সেই সেই ডেভেলপমেন্টের দায় মেটাতে ডিজাস্টারও হয়। এবং তার নিশ্চিত বলি সাধারণ শ্রমিক। বিশেষ করে নারী এবং শিশু শ্রমিক। কেন একজন মালিক মরবে না? আজ পর্যন্ত কী কোনো একজন এমডি, ডিরেক্টর, পিএস, কমার্শিয়াল অফিসার মরেছে? না। কেন তারা মরবে না? দুর্ঘটনা তো জাতপাত বিচার করে আসে না, গরিব-ধমী দেখে না, তাহলে আজ অবধি কেন কোনো মালিক মরলো না আগুনে পুড়ে? সহজ উত্তরÑ মালিকরা পুড়ে মরার মতো জায়গায় থাকে না। তাদের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে আগুন প্রবেশ করে না। কেবল অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত হাভাতে শ্রমিকরাই (নারী এবং শিশু) আগুনে পুড়ে মরার জায়গাতে কাজ করে। তাদের পুড়ে মরাটাই যেন নিয়তি। গার্মেন্টস নামক এই দর্জির কারখানাগুলো কোনো শিল্প নয় তাই এর নিট ফলাফল ক্যাশ কারেন্সি। হয়তো এর সহায়ক হিসেবে অন্যান্য অনেক কারখানা গড়ে উঠেছে। কিন্তু সবই ভাড়াবাড়ির মতো। দুমাসের নোটিশে ভাড়াটের মতো বাড়ি ছেড়ে যেতে পারে এই বিনিয়োগ। এই সেক্টর দেশের অর্থনীতিতে কী পরিমাণে সত্যিকার অবদান রেখেছে তা পরিসংখ্যান সাপেক্ষ। কিন্তু এই সেক্টরের কারণে এ দেশে একটা নব্য এলিট শ্রেনী পয়দা হয়েছে, এবং তারা প্রয়োজনে বেশ্যার দালালের মতো উভয়পক্ষের মুনাফা লুটতে কুণ্ঠা বোধ করে না, এটা পরিসংখ্যান ছাড়াই বলে দেওয়া যায়। এই শ্রেণীর কোনো কোনো বুগর্জ মন্তব্য করেছেন গার্মেন্টস উঠে গেলে নাকি হাজার হাজার নারী শ্রমিক বেকার হয়ে বেশ্যাবৃত্তি করবে! দেখুন কী বিশ্লেষণের পাণ্ডিত্য! তার মানে বাংলাদেশে বেশ্যাবৃত্তিরও ভালো বাজার তৈরি হয়েছে! মাশাল্লাহ।
গার্মেন্টস বাংলাদেশে গোড়াপত্তন হওয়ার আগে যে কলকারখানাগুলো ছিল তাতে প্রতি বছর শয়ে শয়ে শ্রমিক মারা যেতো না। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় পায়ের তলে পিষ্ট হয়ে শিশু শ্রমিক মরতো না। বন্ধ গেটের তালায় হাত দিয়ে খুলতে না পেরে চিৎকার করতে করতে পুড়ে মরতো না। জানালা দিয়ে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে মরতো না। একটা দেশে সভ্য মানুষের (!) শহরে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর একই কায়গায় মানুষ পুড়ে মরছে। সরকার, সুশীল, বিবেকবান মানুষ বলাবলি করছে। বিবৃতি দিচ্ছে। সেমিনার হচ্ছে। আইন হচ্ছে। নীতি নির্ধারণ হচ্ছে। কর্মশালা হচ্ছে, কিন্তু কিছুতেই অসহায় শ্রমিকদের মৃত্যু বন্ধ হচ্ছে না। পরদিন কারখানা খুলছে। এই মেগাসিটির এক কোটি মানুষ ধান্ধায় নেমে যাচ্ছে। হাসছে, খাচ্ছে, ঘুমুচ্ছে, সংবাদপত্র পড়ছে এবং প্রতিকারহীন মৃত্যু কেবলই তার সংখ্যা বাড়িয়ে চলেছে।


মনজুরুল হক
২৫.১১.২০১২
ছবি সূত্র: গুগল।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:৩৩
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিছু হিন্দু অখন্ড ভারত চায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৮




মুসলিম অখন্ড ভারত শাসন করেছে তখন তারা ছিলো সংখ্যা লঘু। খ্রিস্টান অখন্ড ভারত শাসন করেছে, তারা তখন সংখ্যা লঘু মুসলিম থেকেও সংখ্যা লঘু ছিলো। তারপর মুসলিমদেরকে সাথে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। টাইম ম্যাগাজিনের আগামীর ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় বাংলাদেশের নাহিদ ইসলাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:১২




নাহিদের ভাষ্য, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের পালস বুঝতে হবে। বাংলাদশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতার যে পালাক্রম– অবশ্যই তার অবসান হতে হবে। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’ ... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গল্প প্রকাশিত হবার পর নিষিদ্ধ হয়

লিখেছেন জাহিদ শাওন, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৫০


এক কাপ চা, শীতের সন্ধ্যায় বেশি ঝালের ভর্তায় মাখানো চিতই পিঠার অজুহাতে বুকপকেটে কতবার প্রেম নিয়ে তোমার কাছে গিয়েছিলাম সে গল্প কেউ জানে না।
আজকাল অবশ্য আক্ষেপ নেই।
যে গল্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধী চেষ্টা করেছিলেন বাংলাদেশের মিলিটারীকে ক্ষমতা থেকে দুরে রাখতে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৩:২৪



১৯৭১ সালের জেনারেশন'এর কাছে ইন্দিরা (১৯১৭ - ১৯৮৪ ) ছিলেন ১ জন বিশাল ব্যক্তিত্ব; যু্দ্ধ লেগে যাওয়ার পর, উনি বলেছিলেন যে, বাংগালীরা ভালো ও নীরিহ জাতি, তিনি এই জাতিকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - পর্ব ৩

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:২৩

জুলাই ১৮: ছাত্রলীগের হামলা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হত্যা এবং ঢাবি প্রশাসনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে ১৭ই জুলাই কমপ্লিট শাট ডাউন কর্সুচী ঘোষনা করে বৈষম্যিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×