somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঘ্রাণ

০৬ ই আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৭:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাসটা চলতে শুরু করলে শরীরের ঝাঁকুনিটা বেশ বাড়তে বিষয়টা খুব মজার মনে হয় হাসানের কাছে। সে তার মাথাটাকে ডানে-বায়ে সামনে-পিছনে ঝাঁকাতে থাকে। সাথে বাসের ঝাঁকুনিটাও বাড়তে থাকে। হাসানের মজাটা বেড়ে যায়। মাথা ঝাঁকুনিটা আর একটু বাড়ায়। এমন সময় একটা বোটকা গন্ধ তার নাকে আসে। অপরিচিত, না মনে হয়। কোনো একদিন হয়তো এই গন্ধটার সাথে সে পরিচিত হয়েছে। কারোর গায়ের গন্ধ। ঘামে ভেজা। সাথে বিভিন্ন কম দামি পারফিউম। একটা ককটেল মার্কা গন্ধ। হাসানের একটু বমি বমি ভাব হয়। মাথাটা ভার হয়ে যায়। এদিক সেদিক আর ঝাঁকাতে পারে না। হঠাৎই সে গন্ধের উৎস পেয়ে যায়। সামনে দেখতে পায়; তার দিকে তাকিয়ে মেয়েটি হাসছে। আতকে উঠে গলগল করে পেট থেকে সবটা বমি উগলে দেয়।

না বিছানাটা নষ্ট হয়নি। শরীরটা ঝাঁকি দিয়ে ঘুম ভেঙে যায়। বিছানায় পাশে শিল্পী বেশ শান্তভাবেই ঘুমাচ্ছে। বিছানা ছেড়ে হাসান লাইটটা জ্বালায়। শিল্পী ঘুমাচ্ছে। শুধু ব্লাউজ আর পেটিকোট শরীরে। শাড়িটা বিছানার কোনায় পায়ের কাছে পড়ে আছে। বেশ নির্দ্বিধায় ঘুমাচ্ছে শিল্পী। একটা সিগারেট ধরায় হাসান। আজ চতুর্থ দিন শিল্পী আর সে এক বিছানায়। যদিও বিয়ের পঞ্চম দিন আজ। প্রথম দিন আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব আরও বিভিন্ন কারণে একসাথে থাকা হয়নি। তাই বিয়ের পাঁচ, একসাথে চার আর স্বপ্নটার দুই।

গতকালও ঠিক এই স্বপ্নটাই দেখেছে হাসান। প্রথম দিন খুব একটা পাত্তা দেয়নি। পরপর দুই দিন বলে আজ একটু ভাবছে। তবে গতকাল মেয়েটিকে আজকের মতো এতো ভালোভাবে দেখতে পায়নি সে। সিগারেটটা শেষ হয়ে যায়। একগ্লাস পানি শেষ করে আর একটা সিগারেট ধরায় হাসান। এরই মাঝে শিল্পী পাশ ফিরে শুয়েছে। পেটিকোটটা হাঁটুর উপর পর্যন্ত উঠে গেছে। শিল্পী অবলীলায় ঘুমাচ্ছে। হাসান শিল্পীর শরীরের উন্মুক্ত অংশগুলোর দিকে তাকায়। চারদিনের কথাবার্তায় এখনও হাসান নিশ্চিত নয় শিল্পীর জীবনে সেই প্রথম পুরুষ কিনা! যদিও শিল্পী তাকেই প্রথম বলে জানিয়েছে। এনিয়ে অবশ্য হাসানের খুব একটা সমস্য নেই। হিসাব মতে শিল্পীই হাসানের প্রথম নারী। শুধু একবার; অনেক বছর আগে- তখনও এম.এ-র রেজাল্ট বের হয়নি; রবিউল, শামীম আর কবিরের সাথে হাসান ঢুকে গিয়েছিল হোটেলটায়। সেই প্রথম আর শেষ। রবিউল, শামীম আর কবির ছিল হাসানের স্পন্সর। মেয়েটা খুব সাদা-মাটা। দুঃখী দুঃখী চেহারায় হাসি রাখার চেষ্টা। দরজা বন্ধ করেই মেয়েটা একে একে সব কাপড় গা থেকে খুলে ফেললো নির্বিকার ভাবে। হাসান ডানে-বায়ে, সামনে-পিছে, উপর-নিচ অনেক বার ঝেঁকেছিল। সেখান থেকে বের হওয়ার সময় সে একটা বোটকা গন্ধ টের পায়। প্রথমে ভেবেছিল রুমের গন্ধ। কিন্তু রাস্তায় রিক্সা দিয়ে যেতে যেতে গন্ধটা আরো বেশি করে টের পায় সে। হাসানের গা থেকে আসছিল। মেয়েটার গায়ের গন্ধ হাসানের গায়ে লেপ্টে গেছে। গা গুলাতে থাকে তার। বাসস্থান পর্যন্ত যাওয়া হয় না। রাস্তার মাঝেই বমি হয়ে যায়।

ঘরের লাইটটা বেশিক্ষণ জ্বালানো থাকায় শিল্পীর ঘুম ভেঙে যায়। হাসানকে সজাগ দেখে একটু বিস্মিত আর একটু লজ্জিত হয় সে। পেটিকোটটা হাঁটুর নিচে নামিয়ে হাসানের পাশে উঠে বসে। বলে- লাইটটা বন্ধ করে দেই...
-ঘুমের সমস্যা হচ্ছে?
শিল্পী মুচকি হাসে। হাসানের গালে আলতো চুমু খায়। হাসান মুচকি হেসে উঠে দাঁড়ায়।
-আমি বন্ধ করে দিচ্ছি। লাইটটা নিভিয়ে হাসান বিছানায় ফিরে আসে। শিল্পী ও হাসান এক দেহ হয়ে যেতে থাকে। হঠাৎ সেই বোটকা গন্ধটা হাসানের নাকে আসে। গন্ধটা এড়ানোর জন্য শিল্পীর দুই স্তনের মাঝে নাকসহ মুখটা গুঁজে দেয় সে। তার পুরো শরীর গুলিয়ে উঠে। গন্ধের তেজ বেড়ে যায়। ঝটকা দিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় হাসান। সুইচ টিপে আলো জ্বালায়। বিছনার দিকে তাকিয়ে স্পষ্ট চিনতে পারে, ছ'বছর আগের হোটেলের মেয়েটি তার বিছানায় উলঙ্গ শুয়ে আছে।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×