জীবনের সমস্ত উত্তরাধিকার অমীমাংসিত রেখে
বলেছিলাম, কেবল আর দুটি বসন্তের পর,
যখন পৃথিবীর আকাশে জ্যোৎস্নার প্লাবন নেমে
সমুদ্রের ঢেউয়ে ভেসে আসবে সফেদ ফেনা,
যখন শরতের লতায় মোড়ানো গাছের শাখায়
দোল খাওয়া পাখির নীড়ের মতো
ঘরে ঘরে নেমে আসবে অস্তরবির কিরণ
সেই বিন্দু আলোক ধরে আমরা বাঁধব নতুন ঘর।
যে বীণার মাধবী সুরের মূর্ছনায় ভেসে ভেসে
এক জীবনের সমস্ত কান্না-হাসি লুকানোর
আয়োজন করেছিলাম গোপনে, সঙ্গোপনে
উত্তরী হাওয়ার তালে, জীবনের দোলাচলে
কেবল দুটি বছরের অপেক্ষার প্রয়োজন ফেলে
সবকিছু ভেঙে দিলে একাকী আনমনে।
যে লেকের স্বচ্ছ জলে তোমার প্রতিচ্ছবি নেই
মেঘের গর্জনে ফিরে যায় বসন্তের আবেদন
যেখানে কখনোই সূর্যের রঙ বদলে শরৎ আসে না
সেখানেও বেঁচে থাকি, বদ্ধঘরে প্রবল একাকী
ভালোবাসা জেগে থাকে বলে, আত্মার মৃত্যু নেই বলে
অন্ধকার গুহার ভেতরেও বাঁশের কঞ্চি হাতে
কিছু ছন্দ গাঁথি প্রতিদিন, কিছু এলোমেলো সুর তুলি
আমাবশ্যা-পূর্ণিমার নিশিথে, বেদনার নিক্তিতে।
কেবল দুটি বসন্তের বিলম্ব যেখানে অসহ্য হলো
শ্রাবণের তুমুল বৃষ্টিতেও যে নারী প্রকৃতির বুকে
সামান্য প্রশান্তি আসেনি, সেখানে এক পৃথিবীর
যাবতীয় সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া থেমে গিয়ে
কেবল অভিশপ্ত করছে প্রজন্মের সব প্রেমকে।