somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

** হিমুরাইজ ** = ০২

০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
** হিমুরাইজ ** = ০১



হিমুরাইজ = ০২

রাস্তায় একা হাটার মধ্যে একটা মজা আছে।রাস্তায় একা হাটতে হাটতে কত কিছু ভাবা যায়।আমার মাঝে-মাঝে মনে হয় ভাবনা আছে বলেই মানুষ বেঁচে আছে।ভাবনা না থাকলে মানুষ বাঁচতে পারত না।আমি বেকার মানুষ কোন কাজ নাই তাই এখন রাস্তায় বেশি বেশি হাটি।নির্জন রাস্তায় একা একা হেটে বেড়ায় কখনও বা বাতাসের সাথে কথা বলি।সকালে হাটি,দুপুরে হাটি,বিকালে হাটি,রাতে হাটি,মধ্যে রাতেও হাটি।মধ্যে রাতে হাটা রিক্স তবুও হাটি।মধ্যে রাতে হাটার মধ্যে একটা রোমাঞ্চ রোমাঞ্চ ভাব আছে।
যে দিন আকাশে গোল থালার মত চাঁদ ওঠে সে দিন মধ্যে রাতে অনেক হাটি।হাটতে হাটতে সকাল হয়ে যায়।এখন অবশ্য মধ্যে রাতে হাটা বন্ধ করে দিয়েছি।ছিনতাইকারীর ঝামেলা, বেশি ঝামেলা পুলিশের।কাছে তো একটা টাকাও থাকে না।টাকা না থাকলে সমস্যা বেশি।তখন ছিনতাই কারীরা মজার মজার গালি দেয়।তারপর মার ধোর করে ছেড়ে দেয়।মারধোর না করে যদি শুধু মজার মজার গালি দিয়ে ছেড়ে দিত তাতে সমস্যা ছিল না।ছিনতাইকারীরা যে সব গালি দেয় সে সব গালি খুবই মজার বললাম এই কারনে যে তাদের গালি শুনলে আমার কাছে খুবই মাজার লাগে।একটা গালি না বললে বোঝানো যাবে না এ সব গালি কত মজার।যেমন একটা গালি হল,মাংগের পুত।আমার মনে হয় ম্যাংগো থেকে মাংগের এবং পুত্র থেকে পুত শব্দটা এসেছে।যার প্রকৃত অর্থ হল আমের ছেলে।খুবই মজার গালি।ছিনতাইকারীদের গালি শুনে মনে হয় তারা খুবই শিক্ষিত।এবার যদি তাদের সাথে দেখা হয় তাহলে তাদেরকে বলব,স্যাররা আপনাদের কেউ কি আমাকে প্রাইভেট পড়াবেন?মাস গেলে ভাল বেতন দেব।তখন আর আপনাদের ছিনতাই করা লাগবে না।এ সব মজার মজার গালির উপর আমি একটা বই লেখার ও চিন্তা ভাবনা করে ফেলেছি।ইতি মধ্যে বেশ কিছু মজার গালিও সংগ্রহ করেছি।যে বই বের করার চিন্তা করেছি তার নামও ঠিক করে ফেলেছি।বইটার নাম দেব বাংলার যত মজার গালি।আশা আছে বইটা বের করার পরপরই পত্রিকায় খবর প্রকাশ করব যে,বইটি নিষিদ্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।তখন এর বিক্রি ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে।আমি রাতারাতি হয়ে যাব বিখ্যাত লেখক।বাঙালিদের আবার নিষিদ্ধের প্রতি টান বেশি তো তাই।
ইদানিং রাস্তায় বেশি হাটাহাটির কারনে সজিব ভাই মনে করছেন আমি দিন দিন পাগল হয়ে যাচ্ছি।তাই রাস্তায় একা হাটা হাটি তিনি আমার উপর নিষিদ্ধ ঘোষনা করেছেন।এ জন্য রাস্তায় হাটাহাটি করা আমার কাছে আরও বেশি ইন্টারেস্টিং হয়েছে।আমি সজিব ভাই কে ফাঁকি দিয়ে দূরের রাস্তায় চলে যায়।একা একা হাটি আর মনের মধ্যে পরম তৃপ্তি পায়।আজ যে রাস্তায় হাটছি সে রাস্তাটি মোটামুটি নির্জন।মাঝে মাঝে রিক্সা ভ্যানে করে কিছু লোকজন চলাচল করছে।এই রাস্তাটি আমাদের শহর থেকে তিন কি মি দূরে পাশের গ্রামে।এই গ্রামটা এখনও শহর হয়ে ওঠেনি।স্থানীয় লোকজন আমার দিকে কেমন ড্যাব ড্যাব চোঁখে তাকাচ্ছে।আমিও তাদের দিকে ড্যাব ড্যাব চোঁখে তাকাচ্ছি।এখন আমার মাথায় যে ভাবনা চলছে তা হল বাংলার যত মজার গালি বইটার জন্য আরও যত সব মজার মজার গালি কি করে সংগ্রহ করা যায় তা নিয়ে।এ জন্য অবশ্য আমাকে প্রচুর খাটুনি করতে হবে। শহর গ্রাম বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে মজার গালি সংগ্রহ করতে হবে।তাছাড়া প্রতিটা গালির উৎপত্তি কোথা থেকে দেওয়া গেলে বইটা আরও বেশি ভাল হবে।তবে আমার খাটুনিটা বেড়ে যাবে এই যা।যত কষ্ট হয় হোক একটা ভাল বই বের করতে গেলে তো কষ্ট হবেই।তাছাড়া কষ্ট করে পরিশ্রম না করলে সুখ তো আসবে না।
কথায় আছে না পরিশ্রমই সকল সুখের মূল।সে দিন আরও একটা মজার গালি পেয়েছি,মাদার সান।যার বাংলা অর্থ দাড়ায় মায়ের ছেলে।খুবই ইন্টারেস্টিং মনে হচ্ছে এটি।তবে মজার গালি মাদার সানের উৎপত্তি এখনও খুজে পায়নি।সমস্যা নেই চেষ্টা করে যাচ্ছি খুব তাড়াতাড়িই হয়তো পেয়ে যাব।এই যে আমি এত বড় কাজে লেগেছি আমার পাশে কেউ নেই।সজিব ভাই কে বলব তাও ভরষা পাচ্ছি না।মজার গালি নিয়ে বই রচনার কথা শুনলে তিনি হয়তো কোন কালবিলম্ব না করে আমাকে সোজা পাবনার পাগলা গারদে পাঠিয়ে দিবেন।তা দিলেও ভাল একটা অভিজ্ঞতা হবে।মানুষের জীবনে তো কত অভিজ্ঞতারই দরকার হয়।আচ্ছা পাগলরা কি কোন মজার গালি দেয়?
এ সব ভাবতে ভাবতে কত দূরে এসে পড়েছি নিজেও জানি না।প্রায় শেষ বিকেলের সূর্যটা কেবল লাল হতে শুরু করেছে।এক পাশে বিস্তৃত সবুজ মাঠ মাঠের ওপারে খোলা নীল আকাশ।
আরে নীল ভাই সালামালাইকুম।
আরে কদর তুই?
হ নীল ভাইজান আমি।
আজ দোকানে যাসনি?নাকি চাকুরি ছেড়ে দিয়েছিস?
না নীল ভাই চাকরি ছাড়ি নাই।গতকাল রাত থেকে জ্বর আইছিল তাই আজ যায় নাই।
তা তুই এখানে কি জন্য এসেছিস?
আমি এইখানে আসবো না ক্যান!এইখানেই তো আমার বাড়ি।আপনি এইখানে আইছেন ক্যান?
হাটতে এসেছি।
তাই বইল্যা এত দূর!
কই এত দূর সামান্য পথই তো এসেছি।
কি যে কন নীল ভাই।
বাদ দে এ সব এখন বল তোর মন কেমন আছে।ভাল না নীল ভাই।আচ্ছা নীল ভাই কন তো মাইনষের মন খারাপ হয় ক্যান?
আমি সঠিক বলতে পারব নারে কদর।মন বিষয়টা অনেক বড় বিষয়।তবে এই যে তুই বললি তোর মন খারাপ,আমার মন কিন্তু একটু আগে ভাল ছিল।এখন আমার মনটাও খারাপ।
মানুষ যাকে ভালবাসে,যাদের কে ভালবাসে তাদের মন খারাপের কথা শুনলে তারও মন খারাপ হয়।আমি তোকে ভালবাসি কদর।তাই তোর মন খারাপ শুনে আমার মনটাও খারাপ হয়ে গেল।
তুই আমাকে ভালবাসিস কদর?
হ নীল ভাইজান আমি আপনারে খুব ভালবাসি।ওই যে আকাশ দেখতাছেন ওই আকাশডার মত।
এবার বল তোর মন খারাপ কেন?
মা তো ছোড বেলায় মারা গেছে।বাপ থেইকাও নাই।সৎ মায় শুধু কয় কাম কইরা টাকা আনতে।নইলে খাইতে দিব না।কিছু উনিশ বিশ করলেই মার দেয়।
তুই আমাকে তোদের বাসায় নিয়ে যাবি?
যাবেন ভাইজান আমাগো বাড়ি!ওই যে দূরে গোল পাতার ছাউনি মাডির ঘর দেখতাছেন ওইডাই আমাগো বাড়ি।
নারে কদর এখন যাব না চিনে রাখলাম পরে একদিন যাব।চল সামনে এগিয়ে ওই রাস্তার ধারে ঘাসের উপরে বসি।আমরা এগিয়ে গিয়ে ঘাসে মোড়ানো গালিচার উপরে বসলাম।সূর্যটা এখন আরও টকটকে লাল হয়েছে।আজ সূর্যাস্ত দেখব।সুর্যাস্ত দেখলে নাকি মন ভাল হয়।জানিস কদর বছরে অন্তত একদিন হলেও সূর্যদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে হয় তাহলে নাকি মন ভাল থাকে।
ভাইজান আমি তো বছরে কত বার দেখি সূর্যদয় ও সূর্যআস্ত তার ঠিক নাই কিন্তু কই আমার মনডা তো ভালা হয় না।
আমি কদরের মূখের দিকে তাকায়।নিষ্পাপ মুখটিতে ক্লান্তির ছায়া।হয়তো আজ দুপুরে ওর সৎ মা ওকে ঠিক মত খেতে দেয় নি।
আচ্ছা কদরের কাছে কি জিজ্ঞেস করব ও কোন মজার গালি জানে কিনা।কদর ছোট মানুষ ওকে না জিজ্ঞের করাই ভাল।ও ব্যাপারটা ভালভাবে নাও নিতে পারে।তাছাড়া ওর মন ভাল নেই।পরে একদিন বিল্টু ভাইয়ের চায়ের দোকানে মন ভাল অবস্থায় পেলে তখন জিজ্ঞেন করে নেব।সূর্য ডুবে গেছে।আমাকে অনেকক্ষন না পেলে সজিব ভাই নিশ্চয় ভাববে আমি হাটতে বেরিয়েছিলাম ।এবার আমাকে উঠতেই হবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০১৭ বিকাল ৪:০১
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×