বার্মার লোকেরা যেমন বছরের শুরুতে একজন আরেকজনের গায়ে পানি ছুড়ে মারে, তেমন করে হাসিনা-খালেদাও একে অন্যকে নববর্ষের শুভেচ্ছা ছুড়ে দিয়েছেন। চারদিকে শুভেচ্ছা উড়ছে, শুভেচ্ছা ভাসছে, শুভেচ্ছা হাঁটছে-খোঁড়াচ্ছে এবং হামাগুড়ি দিচ্ছে। ভাবছিলাম, প্রায় সারাদিন ধরেই, বছরের নতুন দিনটি নিয়ে সবাই এত এত মাতামাতি করছে, আমিই বা বাদ থাকি কেন? আমি যে গোলার্ধে ল্যাপটপ কোলে করে বসে আছি, সেখানকার সূর্য বাংলাদেশের সর্ষেক্ষেতগুলোকে কোটালীপাড়ার মেয়েদের মতো সুন্দর করে তুলছে এখন। আহ পহেলা বৈশাখ!
এখন বুঝি লালপেড়ে সাদা শাড়ীরা তানপুরা হাতে রাজহাঁসের মতো বসে আছে রমনার বটতলায়?
চায়নার লোকের ভাবে, নতুন বছরের শুরুতে একটু জোরে আওয়াজ-টাওয়াজ করলেই অশুভ আত্মারা সারা বছরের জন্য ধারে-কাছেও ঘেঁষবে না। রমনার বটমূলে বসে সানজিদা খাতুনও তেমন ভাবেন বুঝি! 'তাপস নিঃশ্বাস বায়ে' বাংলাদেশের সব অশান্তি দূরে নিয়ে গেলে ভাল হতো।
একটা মজার ব্যাপার, অনেক দেশেই নববর্ষে পানি ছুড়ে মারার ব্যাপারটা চালু আছে। বুড্ডিস্ট নিউ ইয়ারে এটা করা হয়, ইংল্যান্ডের ওয়েলসে এটা করা হয়, বার্মাতে করা হয়- এ কথা আগেই বলেছি। ছোটবেলায় দেখিছি, এইদিনে আমাদের পাড়ার হিন্দু-মুসলমান সবার বাড়ীতে- কাঁসার ঘটিতে পানি রেখে তাতে আমের ছোট ছোট ডাল ডুবিয়ে রাখা হতো। ব্রাজিলের লোকেরা কি জানে, তাদের সাথে আদি ভারতবাসিদের নববর্ষ উৎযাপনে এতখানি মিল হলো কী করে? নদীতে পুষ্পাঞ্জলি সত্যিই বুঝি দুর্ভাগ্য ঠেকিয়ে রাখে!
আজ বৃষ্টি হবে? ঝড়ো বাতাস... উতল হাওয়া! নীল অঞ্জনঘন কুঞ্জ ছায়ায় সমবৃত অম্বর, হে গম্ভীর!