somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে সংঘটিত তেল দুর্ঘটনা, পরিবেশের উপর তার সম্ভব্য প্রতিক্রিয়া ও সরকারের করনীয়

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তেল ও পানি উভই তরল পদার্থ হলেও বেশি ভাগ তেল (দুই এক প্রকার ছাড়া) পানি অপেক্ষা হাল্কা হওয়ায় তা পানির সাথে না মিশে পানির উপরে ভাসতে থাকে। কোন দুর্ঘটনার ফলে যদি তেল নদী কিংবা সমুদ্রের পানিতে ছড়িয়ে পরে তার বিস্তৃতি নির্ভর করে বাতাস প্রবাহের দিক, বাতাসের গতি, জোয়ার-ভাটার সক্রিয়তা ইত্যাদির উপর। তেল যেহেতু একটি রাসায়নিক পদার্থ তাই পরিবেশ এর উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব থাকাই স্বাভাবিক।

আপডেট ৩

পাখনা দিয়ে তেল অপসারন
=====================

ব্লগার বৃতি আপু, হাঁস-মুরগির পাখনা দিয়ে পানিতে ভাসমান তেল অপসারণের প্রমাণিত একটি পদ্ধতিটির কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন।

এই পদ্ধতিটি প্রয়োগ করে পানতে ভাসমান শতভাগ তেল অপসারণ করা যায়। চুম্বককে লোহার কাছে নিলে তা যেমন লোহার সাথে জড়িয়ে যায় ঠিক একই ভাবে তেল পাখনার সাথে জড়িয়ে যায়। কচু পাতায় যেমন পানি লেগে থাকে না একই ভাবে মুরগির পাখনায়ও পানি জড়িয়ে থাকে না।

১) কয়েকটি ময়ূরের পাখনা দিয়ে যেমন ঝাড়ু তৈরি করা হয় একই রকম ভাবে বাণিজ্যিক মুরগির ফার্ম থেকে পাখনা সংগ্রহ করে ৮/১০ টি পাখনা ৮/১০ ফুট লম্বা লাঠির মাথায় বেধে নৌকো থেকে পানতে ভাসমান তেল অপসারণ করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

২) বিস্কিট দৌড় প্রতিযোগিতায় সুতোর মধ্যে বিস্কিট বেধে রশির মধ্যে ঝুলিয়ে রাখা হতো দৌড় দিয়ে গিয়ে তা মুখের মধ্যে নিতাম ঠিক একই ভাবে মুরগির পাখনা বেধে নদীর দুই প্রান্ত থেকে ঝুলিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এতে করে জোয়ার-ভাটার সময় নদীর মধ্য দিয়ে যে তেল প্রবাহিত হবে তা পাখনার মধ্যে লেগে যাবে। একটা নির্দিষ্ট সময় পর-পর (৩ বা ৬ ঘণ্টা) পাখনা হতে তেল নিংড়ে নেওয়া যাবে।

৩) স্পঞ্জ দিয়ে তেল সংগ্রহের সময় পানিও ঢুকে যায় স্পঞ্জে কিন্তু হাঁস-মুরগির পাখনায় কখনও পানি জড়াবে না। যে কারণে পানি থেকে উঠার পরে একটু নড়া-চড়া করলে হাঁসের গা থেকে সকল পানি পড়ে যায়।


আপনি নিজে এই পরীক্ষাটি করতে পারেন নিজের বাসায়। আপনাকে যা করতে হবে:

উপকরণ: রান্নার তেল, মুরগির ২/৩ টি পাখনা; একটি বাটি, কিছু পানি।

১) বাটিতে পানি নিন;
২) এর পরে সেখানে কয়েক ফোটা সয়াবিন তেল ঢালুন
৩) কাঠি দিয়ে নেড়ে তল গুলো পানির উপর ছড়িয়ে দিন
৪) এবার মুরগির পাখনা দিয়ে পানির উপর ভাসমান তেলের কণা গুলা নাড়তে থাকুন। কিছু ক্ষণ পরে দেখবেন তেল মুরগির পাখনার উপর জড়িয়ে গেছে; পানির উপর আর কোন তেলের কণা নাই।

চুল দিয়ে তেল অপসারন
====================

একই রকম ভাবে মানুষের চুল দিয়ে পানিতে ভাসমান তেলের শতকরা ৯৫ ভাগ অপসারণ করা যায়। মাথার চুলে তেল দিলে তা যেমন করে আটকে থাকে ঠিক একই পদ্ধতিতে পানিতে ভাসমান তেল জমা হবে।

ঢকা শহরের স্যলুন (চুল কাটার দোকান) গুলো থেকে ১/২ দিনের কাটা চুল সংগ্রহ করলে শ্যলা নদীতে ভাসমান তেলের ছোট ছোট কণা যা এখনও ভাসমান ও সংগ্রহ বাণিজ্যিক ভাবে লাভজনক না বলে সেখানকার মানুষরাও সংগ্রহ করতেছে না তা অপসারণ করা সম্ভব।

ইউটিউবে পাখনা দিয়ে তেল অপসারণের একাধিক ভিডিও আছে চটপট দেখে নিতে পারেন।

How to clean oil spills

ব্লগে প্রচলিত সংবাদ মাধ্যমের কর্মী যদি থাকেন তবে এই পদ্ধতিটির কথা মিডিয়ার প্রচার করেন ও সম্ভব হলে সরকারি কর্তৃপক্ষকে জানানোর ব্যবস্হা করেন দ্রুত।

===========================================

আপডেট ২:

গত ২ দিন বিভিন্ন পত্রিকার পাতায় চোখ বুলাচ্ছিলাম এটা দেখার জন্য যে সুন্দরবনে নিঃসৃত তেল অপসারণের কি অবস্থা? সরকার কি পদক্ষেপ নিলো? উত্তরটা পেয়ে গেলাম আজকে।

তেল-গ্যাস রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনু মুহম্মদ সোমবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন,

“গত ৯ তারিখে তেলবাহী জাহাজটি সুন্দরবনে যুবে যাওয়ার পরে সরকার এখন পর্যন্ত কোনো বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেনি। ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণেও কোনো উদ্যোগ নেয়নি।

“স্থানীয় মানুষ নিজ জীবিকা রক্ষার তাগিদে কাজ শুরু করলে তাতেও সরকারের কোনো সহযোগিতা দেখা যায়নি। এখন সরকার বলছে, তারা স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছে।”


সাভারে গার্মেন্টস দূর্ঘটনায় বিল্ডিং এর নিচে চাপা পড়ে উদ্ধারের অপেক্ষায় দিন গুনে অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল জিবীত মানুষ ঠিক একই পরিনতি বরন করতে যাচ্ছে সুন্দরবনের বাস্তুসংস্হান।

শেষ পর্যন্ত সরকারের বোধোদয় হয়ে যে এই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অবিজ্ঞতার অভাব রয়েছে। আমি প্রথম দিনই বলেছিলাম যে সরকার আমেরিকা কিংবা জাতিসংঘের স হায়তান চাইতে পারে। তবে ঘটনার ৭ দিন পরে হলেও "সুন্দরবনে ছড়িয়ে পড়া তেল নিয়ন্ত্রণে জাতিসংঘের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ সরকার"।

=========================================

আপডেট ১:
===> নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খানের মন্তব্যে ‘‘তেলের কারণে সুন্দরবনে খুব বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না৷ ডলফিনেরও ক্ষতি হবে না" শুনিয়া লজ্জা পাইয়া মৃত ইরাবতী ডলফিন ভাসিয়া উঠিয়া প্রমান করিলেন মন্ত্রী সত্য কথা বলেন নাই।
===> জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের স্বনামধন্য অধ্যাপক Dr. Syed Safiullah স্যার তেল অপসারণের এমন কিছু পদ্ধতির কথা প্রস্তাব করেছেন যেগুলো প্রয়োগ করলে পরিবেশের উপর কোন খারাপ প্রভাব পরবে না; নাম মাত্র মূলে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। পদ্ধতি গুলো নিম্নরূপ (স্যার ইংরেজিতে লিখেছেন তাই সরাসরি তাই দেওয়া হলো)

a)use floating booms (jhata) and draw nets to collect oil..
b)use absorbents to collect oil:
i) rice husk powder (toosh goora) spread on oil sleek and collect the composite mass.
ii)spread finely powdered jhama brick and collect.
iii)apply to oil sleek finely powdered jute stalk and collect the resultant mass.

===================================
সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে গত মঙ্গলবারে সংঘটিত দুর্ঘটনা কবলিত তেলবাহী জাহাজ হতে যে জ্বালানি তেল নদীতে ছড়িয়ে পড়েছে সেটি হলো ফার্নেস তেল। ফার্নেস তেল হলো কম সান্দ্রতা (viscosity) সম্পন্ন এক প্রকার পেট্রো ক্যমিকেল পদার্থ যা সাধারণত শিল্প কারখানার বয়লার ও বাসা-বাড়ি গরম রাখার জ্বালানি হিসাবে শীত প্রধান দেশে ব্যাপক ভাবে ব্যবহার হয়ে থাকে।

অন্যান্য জ্বালানি তেল দুর্ঘটনা অপেক্ষা ফার্নেস তেল দুর্ঘটনার একটা কম ক্ষতিকর দিক হল এই তেল সহজে (অন্যান্য জ্বালানি তেল অপেক্ষা) পরিষ্কার করা যায়; কিন্তু বেশী ক্ষতিকর দিক হলো এই তেল খুব দ্রুত দুর্ঘটনা কবলিত এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে যা আজকের দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকা বন বিভাগের উদ্ধৃতি দিয়ে নিশ্চিত করেছেন “বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সুন্দরবনের পশুর, শ্যালা, রূপসা ও বলেশ্বর নদের ৮০ কিলোমিটার এলাকায় তেল ছড়িয়ে পড়েছে”।

তেল ও পানি উভই তরল পদার্থ হলেও বেশি ভাগ তেল (দুই এক প্রকার ছাড়া) পানি অপেক্ষা হাল্কা হওয়ায় তা পানির সাথে না মিশে পানির উপরে ভাসতে থাকে। কোন দুর্ঘটনার ফলে যদি তেল নদী কিংবা সমুদ্রের পানিতে ছড়িয়ে পরে তার বিস্তৃতি নির্ভর করে বাতাস প্রবাহের দিক, বাতাসের গতি, জোয়ার-ভাটার সক্রিয়তা ইত্যাদির উপর। তেল যেহেতু একটি রাসায়নিক পদার্থ তাই পরিবেশ এর উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব থাকাই স্বাবাভিক। উপকূলীয় এলাকার নদী ও জলাভূমিকে উদ্ভিদ ও প্রাণীর নার্সারি বলা হয়ে থাকে। সুন্দরবন এর যে স্থানে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে সেই এলাকার পরিবেশের বিভিন্ন উপদানগুলোর উপর নিম্নোক্ত ক্ষতিকর প্রভাব দেখা যেতে পারে:



নদীস্থ ও নদী সংলগ্ন এলাকার উদ্ভিদের উপর ক্ষতিকর প্রভাব:

বিভিন্ন সংবাদ পত্রের মাধ্যমে ইতিমধ্যে জেনেছেন যে এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটেছে সেটি সুন্দরবন এলাকার একটি নদী। নদীর দুই পাশে যে বন সেটি শ্বাসমূলীয় (ম্যানগ্রোভ) বনাঞ্চল যা সাধারণত সমুদ্র উপকূলীয় এলাকার দেখা যায়। সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। পানিতে ভাসমান তেল কণা ম্যানগ্রোভ বনের স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে। ম্যানগ্রোভ বনের উদ্ভিদগুলো সুমদ্রের জোয়ার-ভাটা পরিবেশে অভিযোজিত ও মাটির উপরে উঠে আসা মুলে লেনটিসেল নামক এক প্রকার ক্ষুদ্র ছিদ্র থাকে যার মাধ্যমে বায়ু থেকে অক্সিজেন সংগ্রহ করে থাকে। প্রচণ্ড সর্দিতে আক্রান্ত হলে মানুষের নাক যেমন বন্ধ হয়ে যায় ঠিক একই ভাবে জোয়ার-ভাটার সময় পানির ঢেউ এর মাধ্যমে দুর্ঘটনার ফলে ছড়িয়ে পড়া তেল মাটির উপরে উঠে আসা শ্বাসমূলীয় বৃক্ষের মুলে জড়িয়ে লেনটিসেল নামক ছিদ্র বন্ধ করে দেয়। নিঃশ্বাস বন্ধ হলে যেমন মানুষ মারা যেতে বাধ্য একই ভাবে দুর্ঘটনা কবলিত স্থানের বনাঞ্চলের শ্বাসমূলীয় বৃক্ষের লেনটিসেল বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অক্সিজেনের অভাবে আগামী কিছু দিনের মধ্যে মারা যেতে থাকলে অবাক হবার কিছু থাকবে না।

United States Environmental Protection Agency (U.S. EPA) রিপোর্ট অনুসারে কোন-কোন ক্ষেত্রে এক দশকেরও বেশি সময় লেগে যেতে পারে ক্ষতিগ্রস্ত ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চলের পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে [সূত্র ১]। কিছু ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল আর কক্ষনই পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায় নি [সূত্র ২]। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার নদীর দুই পাশে রিপেরিয়ান এলাকায় যে বৃক্ষ রয়েছে জোয়ার-ভাটার ফলে তেল সেই সকল বৃক্ষের পাতা ও কাণ্ডে জড়িয়ে গেছে। বাংলাদেশে এখন যেহেতু বৃষ্টি হবেনা তাই উক্ত তেল পুর-পুরি ধুইয়ে যেতে অন্তত ২-৩ সপ্তাহ লেগে যাবে। অর্থাৎ দুর্ঘটনা কবলিত স্থান হতে ভাটি অঞ্চলের উদ্ভিদ ও প্রাণী আগামী ২-৩ সপ্তাহ ধরে এই দূষণ দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে [সূত্র ৩]। নদীর দুই কূলবর্তী এলাকার মাটি কর্দমাক্ত ও পচা লতা-গুল্ম যুক্ত হওয়ায় নিঃসৃত তেলের একটি অংশ মাটির সাথে লেগে থাকবে [সূত্র ৩]। সূর্য রশ্মি পানির আভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারবে না ফলে ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন নামক ক্ষুদ্র জলজ উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া বাঁধা গ্রস্ত হবে।



নদীস্থ ও নদী সংলগ্ন এলাকার প্রাণী সম্পদের উপর সম্ভব্য ক্ষতিকর প্রভাব:

দুর্ঘটনার ফলে ছড়িয়ে পড়া তেল নদী ও নদীর দুই পার্শ্বে বসবাসকারী প্রাণী সম্পদ যেমন: মাছ, ছোট মাছের প্রধান খাদ্য প্ল্যাঙ্কটন, মাছের উপর নির্ভরশীল পাখী, ভোঁদড় ইত্যাদি প্রাণীর উপর ব্যাপক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। কাপড় যেমন শীত ও গ্রীষ্মের তাপ থেকে মানুষের মানুষর শরীরকে রক্ষা করে একই ভাবে পাখী জাতীয় প্রাণীর পাখনা তাদের শরীরকে তাপ নিরোধক আবরণ দেয়। এখন যেহেতু শীত কাল শুরু হয়ে গিয়েছে তাই পাখির শরীরে তেল জড়িয়ে যাওয়ার কারণে হাইপোথারমিয়া হয়ে মারা যাবে। দুর্ঘটনার ফলে ছড়িয়ে পড়া তেল, মাছের উপর নির্ভরশীল পাখী যেমন: মাছ রাঙ্গা, পান কৌড়ি সহ বিভিন্ন প্রকার বকের পাখনায় জড়ালে ডানা ভারী হয়ে সেই পাখি উড়ানোর শক্তি হারাবে [সূত্র ৬]। ফলে সহজেই অন্য প্রাণী দাঁরা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাবে।

ভোঁদড়; বাঘ, বাণর ইত্যাদি প্রাণীর গায়ে তেল জড়ালে সেই প্রাণী গুলো নিজের জিভ দিয়ে তা পরিষ্কার করার চেষ্টা করবে; এর ফলে তেলের একটা অংশ পেটের ভিতরে চলে যাবে ও বিষক্রিয়ার আক্রান্ত হবে। বেশি পরিমাণ তেল পেটে প্রবেশ করলে মৃত্যু অনিবার্য। একাধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে তেল দুর্ঘটনা সংঘটিত এলাকার প্রাণী সম্পদের প্রজনন ক্ষমতা শতকরা ৩০ থেকে ৬০ ভাগ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে ও পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতে ৩ থেকে ৫ বছর লেগেছে। আলাস্কা উপকূলে সংঘটিত তেল দুর্ঘটনার পরে ৩০ হাজার মৃত পাখি পাওয়া গিয়েছিল। প্রকৃত সংখ্যা প্রাপ্ত মৃত পাখি চেয়ে পাঁচ গুনেরও বেশী বলে বৈজ্ঞানিকরা মনেকরে। চূড়ান্ত ফলাফল সুন্দরবনের ঐ এলাকা হারাবে জীব বৈচিত্র্য।



নদীর মৎস্য সম্পদের উপর সম্ভব্য ক্ষতিকর প্রভাব:

দুর্ঘটনার ফলে নদীর পানিতে ছড়িয়ে পড়া তেল পানির উপর পাতলা একটি আস্তর তৈরি করবে যা ভেদ করে সূর্য রশ্নি পানির আভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারবে না ফলে জুয়ো প্ল্যাঙ্কটন নামক ক্ষুদ্র প্রাণীর প্রধান খাদ্য ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটন নামক ক্ষুদ্র জলজ উদ্ভিদের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া বাঁধা গ্রস্ত হবে। ফলে জুয়ো প্ল্যাঙ্কটন হলো ছোট মাছের প্রধান খাদ্য। ফাইটোপ্ল্যাঙ্কটনের অভাবে জুয়ো প্ল্যাঙ্কটনের পরিমাণ কমে যাবে; জুয়ো প্ল্যাঙ্কটনের অভাবে ছোট মাছের সংখ্যা কমে যাবে; ছোট মাছের অভাবে ঐ এলাকার বড় মাছ ও ডলফিনের খাদ্য সংকট দেখা দেবে। Oil spills can cause serious damage to fisheries and mariculture resources.



পানির উপরস্থ তেলের স্তর ভেদ করে বাতাসের অক্সিজেন পানিতে দ্রবীভূত হতে পারবে না ফলে নদীর তলদেশে অক্সিজেন শূন্য অবস্থার সৃষ্টি হবে ও কাদায় বসবাস কারি প্রাণী মারা যেতে পারে। চূড়ান্ত ফলাফল সুন্দরবনের ঐ এলাকার নদী গুলো হারাবে জীব বৈচিত্র্য।



ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের উপর সম্ভব্য অর্থনৈতিক প্রভাব:

সুন্দরবন এলাকার মানুষের অন্যতম প্রধান জীবিকা হলো বন হতে মধু সংগ্রহ ও নদী থেকে মৎস্য সম্পদ আহরণ। আমরা ইতি মধ্যে জেনেছি যে দুর্ঘটনার ফলে নদীর পানিতে ছড়িয়ে পড়া তেলের কারণে ঐ এলাকার নদী ও বনের বাস্তু সংস্থানের ব্যাপক ক্ষতি হবে যার সরাসরি প্রভাব পরবে মৎস্য ও বনজ সম্পদের উপর অর্থনৈতিক ভাবে নির্ভরশীল মানুষের উপর। Economic Effects of Marine Oil Spills

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার পর্যটন শিল্পের উপর সম্ভব্য প্রভাব:

দেশ ও বিদেশের মানুষের কাছে বাংলাদেশের দুইটি প্রধান পর্যটন স্থান হলো কক্সবাজার ও সুন্দরবন। কক্সবাজার এর চেয়ে সুন্দর সমুদ্র সৈকত বিশ্বের অনেক দেশে থাকলেও সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ বন নাই; ম্যানগ্রোভ বন থাকলেও ডোরা কাঁটা রয়েল বেঙ্গল টাইগার নাই। ঐ এলাকার যে ছবি গুলো নেটে দেখা যাচ্ছে তাতে নিশ্তিচ করেই বলা যায় যে বাঘ মামা ভুল করেও ঐ এলাকার নদীর পাশে পা মোড়াবেন না পানি খেতে; যদি না সেই মামা কানা হয়ে থাকেন অথবা বাঘ শিকারির তাড়া না খেয়ে থাকেন।





ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের স্বাস্থ্যের উপর সম্ভব্য প্রভাব:


বিভিন্ন পত্রিকার পাতায় দেখতে পেলাম যে স্পঞ্জ দিয়ে ঐ এলাকার মানুষের (দারিদ্র খেটে খাওয়া মানুষ) মাধ্যমে নিঃসৃত তেল সংগ্রহ করছেন বিক্রয়ের জন্য। আমি অনুরোধ করতে চাই সরকার যেন ঐ মানুষ গুলোর জন্য রাবারের হাতমোজার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেন। আমেরিকার নর্থ ডেকটা বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রকৌশলী কেন হেলিভান বলেন “The vapors from fuel oil spills or leaks are extremely penetrating and volatile,” says Ken Hellevang, North Dakota State University Extension Service agricultural engineer. “Hiring a professional spill response company to remove the fuel oil is your best option.”



অতিরিক্ত পরিমাণে তেলের বাষ্পের-স্পর্শে আসলে মানুষের বমি-বমি ভাব, অতিরিক্ত রক্ত চাপ, চোখ জ্বালা, মাথা ব্যথা, ও মাথা ঘোরা দেখা যেতে পারে। পত্রিকা পড়ে আরও জানতে পারলাম যে রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পদ্মা বলেছে তারা সংগৃহীত তেল কিনে নেবেন সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। টাকার লোভে পড়ে বয়স্ক ও যুবক মানুষ বিশেষ করে যারা হাঁপানি ও পরিপাক তন্ত্রের সমস্যায় ভুগিতেছেন তারা যদি তেল সংগ্রহের নেমে পড়েন ও বেশি সময় ধরে তেলের বাষ্পের-স্পর্শে আসেন তবে তাদের ঐ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে। তাই সরকারের প্রতি অনুরোধ করতে চাই তেল অপসারণে নিয়োজিত মানুষ গুলোর জন্য একটি আস্থায়ী মেডিক্যাল টিমের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেন।



==================================
যেভাবে তেল অপসারণ করা যাতে পারে:
==================================

খুব সহজ ও সফল আদিম প্রযুক্তির মাধ্যমে দূষণ কমানো ও তেল অপসারণ:

১) জোয়ার-ভাটার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার নদীর দুই কূলের রিপেরিয়ান এলাকায় বৃক্ষের পাতা ও কাণ্ডে তেল জড়িয়ে গেছে তা কেটে ফেলা। বছরের এই সময় এমনিতেই গাছের পাতা ঝড়ে যায় তাই এই উপার খুবই কার্যকর হতে পারে।

২) কোন প্রাণী কিংবা পাখী তার গায়ে তেল লেগে থাকলে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলা খুবই কার্যকরী উপায়।



যান্ত্রিক উপায়ে তেল অপসারণ
=======================
৩) ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজটির চার পাশে বেলুনের মতো প্লাস্টিক এর ফোলান পাইপ স্থাপন করে জাহাজে রক্ষিত অবশিষ্ট তেলের নদীর পানিয়ে চুইয়ে পড়া রোধ করা।

৪) তেল ইতিমধ্যে যে এলাকায় পৌঁছেছে তার ভাটিতে একই ভাবে বেলুনের মতো বাতাস দিয়ে প্লাস্টিক এর ফোলান পাইপ স্থাপন করা যেতে পারে যাতে করে নতুন এলাকায় তেল ছড়িয়ে না পড়তে পারে।

৫) ফোলানো সে পাইপের ঠিক পিছনেই সাধান নৌকা (যন্ত্র চালিত না; যন্ত্র চালিত নৌকা পানিতে ঢেউ এর সৃষ্টি করে তেল যমতে বাঁধা দিবে) নিয়ে অবস্থান করে পাইপে আটকে পড়া তেল স্পঞ্জ দ্বারা সংগ্রহ করা।

জৈব প্রযুক্তির (Bioremediation) মাধ্যমে নিঃসৃত তেল পরিশোধন/অপসারণ

৬) Bioremediation (জীবাণু-বিয়োজ্য) প্রযুক্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় রাসায়নিক সার যেমন নাইট্রোজেন, ফসফরাস ছিটিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত স্থানের মাটিতে ইতিমধ্যেই অবস্থিত মাইক্রো অরগানিজম (যেমন: তেল খেকো ব্যাকটেরিয়া) এর স্বাভাবিক কার্যক্রমের হার ব্রদ্ধি করে (সহজ কথায় বেশি মাংস জন্য যেমন গরু-ছাগল মোটা তাজা করন প্রকল্প নেওয়া হয়ে থাকে ঠিক তেমন) তেলের অণুর ভাঙ্গন প্রক্রিয়া দ্রুত করা যায় (তেলের অণুকে ভেঙ্গে রাসায়নিক ভাবে নিষ্ক্রিয় পদার্থে পরিণত করা)। তেল খেকো ব্যাকটেরিয়া কিভাবে কাজ করে তার সুন্দর বর্ণনা পাওয়া যায় আমেরিকান মাইক্রোবায়োলজি সোসাইটি প্রকাশিত ছোট একটি রিপোর্টে [সূত্র ৮]। জৈব প্রযুক্তির একটি সুবিধা হল এটি অর্থনৈতিক ভাবে সাশ্রয়ী ও কাজ শেষে পরিবেশের উপর অপেক্ষাকৃত কম অবশিষ্টাংশ (Residue) রাখে। বহুল প্রচলিত জৈব উত্তেজক রাসায়নিক পদার্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল পটাশিয়াম নাইট্রেট (KNO3), সোডিয়াম নাইট্রেট (NaNO3), এমুনিয়াম নাইট্রেট (NH4NO3), সোডিয়াম বাই ফসফেট (K2HPO4) ইত্যাদি [সূত্র ৫]। এই প্রযুক্তির সফলতা অনেকাংশে নির্ভর করে কোন পরিবেশে তেল দুর্ঘটনা ঘটেছে (মুক্ত জলাশয়ে নাকি বদ্ধ জলাশয়ে)

[U.S. EPA’s definition of Bioremediation: “the act of adding materials to the act of adding materials to contaminated environments to cause an contaminated environments to cause an acceleration of the natural biodegradation acceleration of the natural biodegradation processes”. U.S. EPA has defined bioremediation agents as U.S. EPA has defined bioremediation agents as “microbiological cultures, enzyme additives, or microbiological cultures, enzyme additives, or nutrient additives that significantly increase the nutrient additives that significantly increase the rate of biodegradation to mitigate the effects of rate of biodegradation to mitigate the effects of the [oil] discharge”]

রাসায়নিক উপায়ে তেল পরিশোধন/অপসারণ

৭) সব শেষে রাসায়নিক পদার্থ ছিটিয়ে অবশিষ্ট তেলের কণা গুলোকে ভেঙ্গে রাসায়নিক ভাবে কম সক্রিয় পদার্থে পরিণত করা যেতে পারে।

নিয়ন্ত্রিত আগুণের মাধ্যমে তেল অপসারণ

৮) নদীর পানিতে ভাসমান তেল বুম (ফ্লটার) দিয়ে এক জায়গায় জড়ো করে নিয়ন্ত্রিত ভাবে জ্বালিয়ে দেওয়া যেতে পারি। তবে তা করতে হবে অবশ্যই প্রশিক্ষিত অগ্নি নির্বাপক কর্মী (ফায়ার ব্রিগেড) এর মাধ্যমে। যদিও এই উপায়ে বায়ু দূষণ হবে কিছুটা।
উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিগুলো ছাড়াও আমেরিকার পরিবেশ রক্ষা অধিদপ্তর (U.S. EPA’s) তেল দুর্ঘটনার মোকাবেলা করার জন্য বেশ কিছু পদ্ধতি প্রস্তাব করেছেন যার বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় তাদের ওয়েবসাইটে [সূত্র ৭]।

সর্বোপরি বাংলাদেশ সরকার আমেরিকান সরকারের সহযোগিতা চাইতে পারে কারণ তারা ২০১০ সালে মেক্সিকো উপসাগর তেল দুর্ঘটনার পরে তা সরিয়ে ফেলে বিশ্বের যে কোন দেশের চেয়ে অনেক অবিজ্ঞতা অর্জন করেছে। অথবা জাতিসংঘের সহযোগিতা চাওয়া যেতে পারে যেহেতু বাংলাদেশ সরকারের এত বেশি পরিমাণ তেল (প্রায় সাড়ে ৩ লাখ লিটার) দুর্ঘটনা মোকাবেলা করার অবিজ্ঞতা নাই। মনে রাখতে হবে নিঃসৃত তেল যত দ্রুত অপসারণ করা সম্ভব হবে পরিবেশের ক্ষতির পরিমাণ ততই কম হবে।

============================================
ছড়িয়ে পড়া তেল অপসারণ কালে অবশ্য পালনীয় সতর্কতা:
============================================

জ্বালানি তেল যেহেতু দাহ্য পদার্থ তাই নিঃসৃত তেল সংগ্রহের সময় নিম্নোক্ত সতর্কতা গুলো অবশ্যই পালন করতে হবে:

১) তেল নিঃসৃত এলাকায় কোন প্রকার ধূমপান করা যাবে না

২) কেউ ধূমপান করলে বিড়ি কিংবা সিগারেটের শেষ অংশ নিচে ফেলে জুতা দিয়ে নিভিয়ে ফেলতে হবে।

৩) মোমবাতি জ্বালানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

৪) আগামী ৭-১০ দিন ঐ এলাকায় মধু সংগ্রহের জন্য যেন কোন বাওয়ালি যেতে না পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ বাওয়ালীরা আগুন দিয়ে মৌমাছি তাড়িয়ে মধু সংগ্রহ করে।

৫) স্পার্ক করে এমন কোন বৈদ্যুতিক যন্ত্র পাতি ব্যাবহার করা থেকে যথা সম্ভব বিরত থাকার চেষ্টা করা যত খন পর্যন্ত না নিঃসৃত তেলের একটা বড় অংশ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

আমেরিকার মতো দেশ ক্যালিফোর্নিয়ার বনাঞ্চলের আগুন নেভাতে হিম-সিম খেয়ে যায় হাজার-হাজার অগ্নি নির্বাপক কর্মী, গাড়ি ও হেলিকপ্টার থাকার পরেও। অবহেলার কারণে একবার যদি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আগুন লেগে যায় তবে চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে সুন্দরবন।

সরকারের ভবিষ্যৎ করনীয়:

পত্রিকার মাধ্যমে জেনে অবাক হলাম যে তাদের কাছে ছড়িয়ে পড়া তেল সংগ্রহ করার কোন যন্ত্র পাতি নাই। কার কাছে আছে সেটাও নিশ্চিত করে বলতে পারে না; সন্দেহ করতেছ নৌ বাহিনীর কাছে আছে। দারিদ্র্যতার কারণে ১০ টাকার টিকেট না কেটে ট্রেন উঠার জন্য ২ দিনের কারাবাস করতে হলেও কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি করার পড়েও আইনের হাত পৌছবে না দুর্ঘটনার জন্য অভিযুক্ত মানুষ গুলোর ঘাড়ে; এক দিনের জন্যও জেলে যেতে হবে না কাউকে; হয়তো জেলে গেলেও তাজরিন গার্মেন্টস এর মালিকের মতোই কিছু খেটে খাওয়া মানুষ কে জিম্মি করে জেল থেকে বেড় হয়ে আসবে কয়েক দিনের মধ্যে।

বরাবরের মতো এবারও সরকারি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে; যে কমিটির বেশিভাগ সদস্যের পরিবেশ বিষয়ে কোন জ্ঞান নাই। বরাবরের মতো এবারও নিশ্চিত করেই বলা যায় দুর্ঘটনার উপযুক্ত কারণ জানা যাবে না পূর্বের ঘটনাগুলোর মতোই। ঘটে যাওয়া ভুল কিংবা অপরাধ স্বীকার করে নিলে একই ভুল কিংবা অপরাধ ঘটার সম্ভাবনা কমে যায়। বিপরীত ঘটনা ঘটে যদি ঘটে যাওয়া ভুল কিংবা অপরাধ অস্বীকার করা হয়। দুর্ভাগ্য ক্রমে বাংলাদেশের বেশিভাগ মানুষ ও সরকার ভুল ও অপরাধ অস্বীকার করে প্রায় সবসময়ই। ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনা মানুষকে সুযোগ দেয় তা থেকে শিক্ষা নেওয়ার; আশাকরি বাংলাদেশ সরকারও এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দুর্ঘটনা মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে রাখবেন। তবে সরকারের উচিত দুর্ঘটনা যেন না ঘটে সেই ব্যবস্থা নেওয়া।

দেশের পরিবেশ ও অর্থনীতি গবেষকদের প্রতি অনুরোধঃ

দুর্ঘটনা কবলিত স্থান যেহেতু খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খুব বেশি দূরে না তাই পরিবেশ বিজ্ঞানের একজন ছাত্র হিসাবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকদের অনুরোধ করতে চাই দুর্ঘটনা কবলিত স্থানের নদী ও বনের বাস্তু সংস্থান পর্যবেক্ষণ করুণ। একজন পরিবেশ গবেষকের জন্য এমন গবেষণার সুযোগ সব সময় আসে না। গত ২ বছর পূর্বে ঢাকা স্কুল অফ ইকোনোমিকস এ প্রথমবারের মতো পরিবেশ অর্থনীতির উপর স্নাতক ডিগ্রী চালু করা হয়েছে। সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে গত মঙ্গলবারে সংঘটিত দুর্ঘটনা সেখান কার ছাত্র ও শিক্ষকদের জন্য অমূল্য গবেষণার বিষয় হতে পারে।



ছবি কৃতজ্ঞতা: ১ নম্বর ছবিটি ব্রিটেনের গার্ডিয়ান পত্রিকা হতে ২ নম্বর ও শেষ ছবি ২ টি জনাব সাকির আহমেদের ফেসবুক থেকে (অনুমতি ক্রমে) ও অন্য ৩ টি ছবি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত।

এই লেখাটা শুরু করেছিলাম গতকালকে উপরে নির্দিষ্ট করে দুর্ঘটনা কবলিত স্থানের পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের উপর সম্ভব্য ক্ষতিকর প্রভাবের কথা বলেছিলাম যার বেশ কয়েকটির কথা পড়লাম আজকের বিভিন্ন সংবাদ পত্রে।

লেখায় নিম্নলিখিত তথ্য সূত্র ব্যাবহার করা হয়েছে
====================================
১) Guidelines for the Bioremediation of oil-contaminated salt marshes [http://www2.epa.gov/sites/production/files/2014-10/documents/salt_marshes.pdf]
২) Baker, J,M, Bayley, J.A., Howells, S.E., Oldham, J., Wilson, M. (1989) Oil in wetland. In B. Dicks (ed): Ecological Impacts of the Oil Industry, John Wiley & Sons Ltd, Chichester, U.K., pp 37-59.
৩) The Galeta Oil Spill III. Chronic reoiling and long-term toxicity of hydrocarbon residues in the mangrove fringes community [http://portal.nceas.ucsb.edu/working_group/valuation-of-coastal-habitats/meta-analysis/papers-for-meta-analysis-database/mangroves-chris/articles-chris/levings1994ecss.pdf]
৪) Clean Up Spilled Fuel Oil Thoroughly
[http://www.ag.ndsu.edu/flood/media-resources/news-releases/after-the-flood/clean-up-spilled-fuel-oil-thoroughly]
৫) Summary of the Literature on the Use of Commercial Bioremediation Agents of Commercial Bioremediation Agents for Cleanup of Oil Contaminated Environments [http://www.epa.gov/oem/docs/oil/fss/fss09/nichols_summary.pdf]
৬) Birds, Feathers, and Oil; How Does oil affect feathers? [http://education.nationalgeographic.com/education/activity/birds-feathers-and-oil/?ar_a=1]
৭) U.S. EPA’s Response Techniques for controlling oil spills and minimizing their impacts on human health and the environment [http://www2.epa.gov/emergency-response/epas-response-techniques]

৮) Microbes and Oil spills [http://academy.asm.org/images/stories/documents/Microbes_and_Oil_Spills.pdf]


পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ভাল তথ্য সুত্রঃ
============================================

৯) Environmental Effects of Oil Spills [http://www.itopf.com/knowledge-resources/documents-guides/environmental-effects/]

১০) EffectsofOilPollutiononFisheriesandMariculture [http://www.itopf.com/fileadmin/data/Documents/TIPS TAPS/TIP11EffectsofOilPollutiononFisheriesandMariculture.pdf]

১১) Education: For Students and Teachers

===================================
লেখাটি নিম্নোক্ত শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছে অনলাইন সংবাদ মাধ্যম প্রিয় ডট কমে। সুন্দরবনে তেল ট্যাঙ্কার ডুবি, পরিবেশের উপর সম্ভব্য প্রতিক্রিয়া ও করণীয় - See more at: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১২:১৬
৫০টি মন্তব্য ৫০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×