somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ক্লিওপেট্রাঃ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এক নারী

২১ শে মে, ২০১০ রাত ২:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
প্রথম পর্ব | দ্বিতীয় পর্ব | তৃতীয় পর্ব | চতুর্থ(শেষ) পর্ব


রানী ক্লিওপেট্রা

৩৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মার্ক এন্টনি আর্মেনিয়া রাজ্যের জনসাধারনের মধ্যে জনমত গঠনে নামলেন যা পরবর্তীকালে অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক সাফল্য বয়ে আনে। এসব পূর্বাপর বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতে তিনি দেশব্যাপী এমনকি আলেকজান্দ্রিয়াসহ উৎসবের আয়োজন করেন, ক্লিওপেট্রাকে ‘নতুন আইসিস’ হিসেবে তুলে ধরার মানসে তাকে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির মর্যাদায় ভূষিত করেন। এন্টনিও প্রাচীন গ্রীক-রোমান শাসনের প্রতিভূ হিসেবে নিজেকে ‘নতুন ডিওনাইসাস’ হিসেবে উপস্থাপন করেন যা ছিল তার বহুদিনের স্বপ্ন। কিছুদিনের মধ্যে আরও অনেক রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ, শিশু-উৎসব অনুষ্ঠান করলেন যেখানে শিশুদের জন্য রাজকীয় উপাধিপ্রদান এমনকি রাজসিংহাসনে তাদের নিয়ে বসারও সুযোগ দিলেন।


প্রাচীন আলেকজান্দ্রিয়া নগরী

সেই অনুষ্ঠানে টলেমি-১৫তম(সিজারিওঁ)-কে সহযোগি সম্রাট ও ‘রাজাদের রাজা’ হিসেবে সনসমক্ষে পরিচয় করিয়ে দেয়া হলো। ক্লিওপেট্রা রইলেন ‘রাজাদের রানী’ হিসেবে যা ছিল সিজারিওঁর উপরের পদবী। আলেকজান্ডার হেলিওস যার অর্থ সূর্য্য, ভুষিত হলেন ‘গ্রট কিং অব দি সেলিউসিড সাম্রাজ্য’; ক্লিওপেট্রা সিলেনি যার অর্থ ‘চন্দ্র’ যাকে দেয়া হলো ‘সেরেনাইকা ও ক্রেট রাজ্যের রানী’র খেতাব, ‘ক্লিওপেট্রা-এন্টনি’র পুত্র টলেমি ফিলাডেলফোস-কে দেয়া হলো ‘সিরিয়া ও এশিয়া মাইনরের রাজা’র খেতাব, যার বয়স তখন মাত্র ২ বছর। ক্লিওপেট্রার স্বপ্ন ছিল তিনিই হবেন সমগ্র বিশ্বের রানী এবং সেই স্বপ্ন পুরণের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের খুবই কাছাকাছি অবস্থান করছিলেন, "As surely as I shall yet dispense justice on the Roman Capital."


রানী ক্লিওপেট্রা

খ্রিস্টপূর্ব ৩২-৩১ সালের মাঝামাঝি সময়ে এন্টনি চূড়ান্তভাবে অক্টাভিয়ার সঙ্গে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটালেন। এই ঘটনা সমগ্র পশ্চিমা বিশ্বে এটাই প্রমান করলো যে, ক্লিওপেট্রার সঙ্গে তাঁর প্রণয় রয়েছে। এন্টনি ইতিমধ্যে রোমন মুদ্রা ‘সিলভার দিনারি’তে ক্লিওপেট্রার মুখের ছবি প্রকাশ করেছিলেন যা মেডিটারিনিয়ান রাজ্যগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। ফলশ্রুতি দাঁড়ালো এই যে, রোমানদের সঙ্গে এন্টনি’র বিশ্বস্ততা, নির্ভরতা, সহযোগিতা ইত্যাদি সবকিছুরই পরিসমাপ্তি ঘটলো। অক্টাভিয়ান ঘটনার প্রেক্ষিতে এন্টনি’র ‘উইল’ প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ নেন আর সেইসাথে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্লিওপেট্রার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণাও করলেন।


অক্টাভিয়ান

এন্টনির নাম রাজকীয় সর্বপ্রকার ডকুমেন্টগুলোতেই ব্যবহৃত হয়ে আসছিল তখন। ক্লিওপেট্রার বিরুদ্ধে এমন ভিত্তিহীন সব অভিয়োগ আনা হচ্ছিল যে, তিনি মদ্যপ শ্রেনীর এবং একজন আস্ত পতিতা। ক্লিওপেট্রার বিরুদ্ধে এধরণের অভিযোগ ছড়ানোর ফলে তাঁর আর এন্টনি’র জন্য বেশ ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ালো। অন্য অনেকের মনে এটাও ধারণা হলো যে, এর ফলে নতুন দেবী হিসেবে ক্লিওপেট্রাই টিকে থাকবেন, এন্টনিও সম্মিলিত শক্তিতে আলেকজান্দ্রিয়া থেকেই বিশ্ব জয়ের সূচনা করবেন। কিন্তু দেখা গেলো, অক্টাভিয়ান নৌবাহিনীর কাছে অক্টিয়াম (গ্রীস)’র যুদ্ধে এন্টনি’র মর্মান্তিক পরাজয় ঘটলো (সেপ্টেম্বর ২, ৩১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)।


প্রাচীন রোম নগরী

একবছরেরও কম সময়ের মধ্যে (৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) দ্বিতীয়বারের মত আলেকজান্দ্রিয়া অভিমুখে অগ্রসরমান অক্টাভিয়ান বাহিনীর মুখোমুখি হলেন এন্টনি। পরাজয় যেন নির্ধারিতই ছিল। আর পরাজিত এন্টনি নিজের তরবারি দিয়েই আত্মহত্যা করলেন। পেছনে পড়ে রইলো তারঁ বিশাল রোম সাম্রাজ্য, প্রেয়সী ক্লিওপেট্রা ও তাঁর আলেকজান্দ্রিয়া।


মার্ক এন্টনি'র আত্মহত্যা

(ক্রমশ)
----------------------------
আরও দেখুনঃ

প্রথম পর্ব | দ্বিতীয় পর্ব | তৃতীয় পর্ব | চতুর্থ(শেষ) পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১০ রাত ৩:২৯
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×