somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কাল্পনিক_ভালোবাসা
বহুদিন আগে কোন এক বারান্দায় শেষ বিকেলের আলোয় আলোকিত উড়ন্ত খোলা চুলের এক তীক্ষ্ণ হৃদয়হরনকারী দৃষ্টি সম্পন্ন তরুনীকে দেখে ভেবেছিলাম, আমি যাদুকর হব। মানুষ বশীকরণের যাদু শিখে, তাকে বশ করে নিশ্চিন্তে কাটিয়ে দিব সারাটি জীবন।

'ওয়েডিং ফটোগ্রাফার'-- শিল্পীর ছদ্মবেশে ব্যবসায়ী।X(

১১ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফটোগ্রাফি। একটি জনপ্রিয় পেশার নাম। ইদানিং অনেক মেয়েরা ফটোগ্রাফারদের প্রতি আসক্ত। তার উপর যদি হয় কোন ওয়েডিং ফটোগ্রাফার তাহলে তো কোন কথা নেই। অনেকটা কাপড় খুলে নাচার দশা। ( কাপড় খুলে নাচার দশা-- দয়া করে কথাটির অর্থ আক্ষরিক ভাবে নিবেন না, এর অর্থ অতি মাত্রায় উৎসাহী) তাই তো দেখি অনেক ছেলেপেলে পড়াশুনা বাদ দিয়ে ফটোগ্রাফি বা ওয়েডিং ফটোগ্রাফি নিয়ে লাফালাফি করে। অনেক ভার্সিটিপড়ুয়া ছেলেকে দেখেছি, তার সেমিস্টারের টাকা দিয়ে ভাল দামী ক্যামেরা কিনেছে। আমার পরিচিত এক ছেলেকে দেখলাম সেদিন Canon EOS 5D Mark II কিনে বসে আসে। তাকে যে কয় বছর ধরে চিনি, তাতে কখনো তাকে ফটোগ্রাফার হিসেবে দেখিনি। জিজ্ঞেস করলাম, এত দামী ক্যমেরা কেন কিনেছ? তার উত্তর ভাই, ফটোগ্রাফি শুরু করছি, ভালো ক্যামেরা ছাড়া ভাল কাজ করা যায় না। তাছাড়া, বড় বড় লেন্সওয়ালা ক্যামেরার ভাবটাই আলাদা। তাই কিনে ফেললাম।
তুমি কি ভাবের জন্য ক্যামেরা কিনেছ?
উত্তরে, ৩২ পাটি দাঁত বের করা বিগলিত হাসি উপহার পেলাম। :|

এই যখন অবস্থা হয় তখন আসলে খুব বেশি কিছু বলার থাকে না। আমি যতটুকু জানি, ফটোগ্রাফির গুরুত্বপূর্ন দিক হচ্চে এর সৃজনশীলতা বা সৃষ্টিশীলতা। এর সাথে নান্দনিকতার একটি বিষয়ও জড়িত। ক্যামেরা দিয়ে যাচ্ছেতাই ভাবে ছবি তোলাটা সৃষ্টিশীল ফটোগ্রাফি নয়। সৌখিন হোক বা পেশাদার হোক, আস্থার সাথে সৃষ্টিশীল ফটোগ্রাফি করতে ধারাবাহিকতার সাথে অনুশীলন ও প্রশিক্ষন দরকার। কেউ যদি শুধু মেয়েদের ইমপ্রেস করার জন্য ফটোগ্রাফি করতে চান, কিংবা ছবি তুলতে চান তাদের ব্যাপারে খুব বেশি কিছু বলার নেই। শুধু এই টুকুই বলতে পারি, চক চক করলেই সোনা হয় না। মেয়েরা স্বর্ন আর পিতলের ফারাক ধরতে পারে। আর যদি ফটোগ্রাফি শেখার জন্য কেউ ভাল ক্যামেরা কিনেন, তাদের জন্য আমার শুভেচ্ছা। তবে মনে রাখবেন, ফটোগ্রাফি অনুশীলন ও প্রশিক্ষনের জন্য দামী ক্যামেরা বাধ্যতামূলক নয়। ফটোগ্রাফি শেখার জন্য এমন ধরনের ক্যামেরা হাতে নেয়া উচিত, যে ক্যামেরায় ফোকাস করা যায়, শাটার স্পিড এবং অ্যাপাচার ইচ্চে মত সেট করা যায়। ক্যামেরাই যেখানে প্রায় সবকিছু করে, তা দিয়ে তেমন কিছু শেখা সম্ভব নয়। একটি ভাল ছবিকে নারী পুরুষ নির্বিশেষে সবাই তারিফ করে। ফটোগ্রাফার সেই তারিফের মূলভাগিদার।:)


দুঃখিত, ধান ভাঙ্গতে শিবের গান গাইলাম। ফটোগ্রাফির বিষয়ে জ্ঞান দেয়াটা আমার কাজ নয়। আমি এই বিষয়ে খুব বেশি একটা জানি না। যাই হোক মূল প্রসংগের আসি।

ফেসবুকে অনেক ভালো ভালো ওয়েডিং ফটোগ্রাফী বা ফটোগ্রাফার দেখছি। অনেক মানুষ তাদের পেজে লাইক দিচ্ছেন। অনেককে দেখলাম, নিজেকে ওয়েডিং ফটোগ্রাফার না বলে ফটোশিল্পী বলছেন। তারা দাবি করছেন তারা বিয়ের ছবি তোলাকে একটি শিল্পে পরিনত করেছেন। এইখানেই আমার আপত্তি। আমার মতে তারা বিয়ের ছবি তোলাকে শিল্প না ব্যবসায় পরিনত করেছেন। কারন এই শিল্পটি শুধুমাত্র টাকার উপর নির্ভরশীল। আপনি যদি প্রচুর টাকা খরচ করতে পারেন তাহলেই কেবল মাত্র আপনি এই শিল্পের অংশ হতে পারবেন বা সেই তথাকথিত শিল্পীর পরশ পাবেন।

জনপ্রিয় বা বিখ্যাত কোন ওয়েডিং ফটোগ্রাফারকে দেখিনি আমি সাধারন কোন মানুষের বিয়ের সুন্দর ছবি তুলতে। তাদের কাউকে কাউকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তেমন কোন উত্তর পাইনি। হতে পারে তারা সাধারন মানুষের বিয়েতে তেমন সৃষ্টিশীল বা নান্দনিক কিছু খুঁজে পান না। হতে পারে তাদের শিল্প টাকা ভিত্তিক কিংবা প্যাকেজ ভিত্তিক। তাদের প্রতিষ্ঠানে আসা ছোট প্যাকেজের (নুন্যতম ১০,০০০ টাকা/ প্রতি প্রোগ্রাম) একজন গ্রাহকের বিয়েতে তারা যেতে চান না। ছোট প্যাকেজের প্রোগ্রামগুলোতে তারা শিক্ষানবীস কিছু ছেলে মেয়েকে পাঠিয়ে দেন। তারা ইচ্ছামত ছবি তুলতে থাকে। এই তোলা ছবিগুলোর থাকে না কোন নতুনত্ব, না কোন পরিকল্পনা। ১০০০ / ১৫০০ ছবি থেকে ১০০ ভাল ছবি বের করার জন্য আপনার ভালো ফটোগ্রাফার হতে হবে না। তার উপর আছে নানা রকম সফটওয়্যারের ব্যবহার। সেই হিসেবে বলা যায়, তাদের এই ছোট প্যাকেজ একরকম প্রতারনাই। X((X((

তবে আপনি যদি বড় প্যাকেজ (নুন্যতম ৩০,০০০ প্রতি প্রোগ্রাম) নির্বাচিত করেন তাহলেই শুধু তাদের দেখা পাবেন। কারন আমাদের ওয়েডিং ফটোগ্রাফারা শুধু বড় প্যাকেজেই নিজের হাতে ছবি তুলেন। যত বেশি টাকা, তত বেশি তার উপস্থিতি। এমনকি বাসর ঘরের রোমান্টিক ফটোগ্রাফিতেও তার উপস্থিতি থাকবে। ;)

এখন প্রশ্ন হলো, যে শিল্প সরাসরি টাকার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়, সেটাকে কি শিল্প বলা যায়? উত্তর, যায় না। এটাকে বলে ব্যবসা। আপনাদের ব্যবসায় অনেক লাভ। কোন ট্যাক্স নাই। আমরা যারা চাকরী বা ব্যবসা করি তারা ট্যাক্স এর যন্ত্রনায় অস্থির। একই দেশে থেকে আপনার ব্যবসায় ট্যাক্স নাই আমার আমার ব্যবসায় ট্যাক্স। ভালোই ব্যবসা করছেন।X(

প্রিয় ওয়েডিং ফটোগ্রাফারা, আপনারা দয়া করে নিজেদেরকে শিল্পী ভাবা বন্ধ করুন। নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দিন। ট্যাক্স দিন। আপনাদের ব্যবসা আরো ফুলে ফেপে উঠুক, আপনাদের জন্য অনেক শুভকামনা।:)
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪০
৩৮টি মন্তব্য ৩৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×