somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোটা আন্দোলন ও সংবাদ মাধ্যম

৩১ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
“সরকারি চাকরিতে প্রবেশের কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে বিক্ষোভ করেছেন কোটাবিরোধী চাকরিপ্রার্থীরা।”


যুগান্তর পত্রিকায় ১৭ ফেব্রুয়ারি (২০১৮) তে এই লাইন দিয়েই শুরু হয়েছিল কোটা আন্দোলনের প্রথম সংবাদ প্রচার। শিরোনাম ছিল “কোটা প্রথা সংস্কারের দাবিতে ঢাবিতে বিক্ষোভ”। এর দুই মাস পর ৮ এপ্রিল কোটা সংস্কারের দাবিতে গণপদযাত্রা, শাহবাগে অবস্থানের সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল সেই কোটা আন্দোলনের দাবিদাওয়ার কথা। কিন্তু সংবাদ মাধ্যম কি সত্যিই সময় মত সংবাদ প্রকাশ করেছিল? দেশের মানুষ এই দিন থেকে জানলেও শুরুটা ছিল অনেক দিন আগে থেকে। সংবাদ মাধ্যমে এই কোটা আন্দোলনের সংবাদ প্রকাশ না করার চিত্র দেখা গেছে বিভিন্ন সময়ে।

তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যে কি করতে পারে তার ধারনা ২০১৩ সালের গণ জাগরণ মঞ্চ প্রমাণ করে দিয়েছে। হাজার হাজার তরুণ তরুণীর সেই আন্দোলনের বীজ বপণ হয়েছিল ফেসবুকের মাধ্যমে। ফেসবুকে সাত আট জনের শাহবাগে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানানোর দৃঢ়তা হাজার হাজার মানুষকে এক সূত্রে বেঁধে ফেলতে পেরেছিল। কোটা আন্দোলন হুট করে তৈরি হয় নি। এই কোটা আন্দোলনের ক্ষেত্রে গণজাগরণ মঞ্চের মত একই ভাবে আন্দোলন দাঁনা বাঁধছিল ফেসবুকে। বিভিন্ন গ্রুপ , পেজ খোলা হয়েছিল এই কোটার বিপক্ষে। এছাড়াও বিভিন্ন ব্লগে কোটার বিপক্ষে লেখা প্রকাশ করা হত। কখনও হাতে গোণা কয়েকজনকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ে আন্দোলন করত। তখন গুটি কয়েক মানুষ কোটা নিয়ে অসামন্জস্যতার কথা তুলে ধরত সেই গ্রুপ গুলোতে। দিনের পর দিন পোষ্ট করা বিভিন্ন লেখায় ফুটে উঠত কোটা সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা আর সেই সংস্কার করতে কি করতে হবে। ধীরে ধীরে বিসিএস প্রত্যাশি শতশত তরুণ বুঝতে পারে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুধু মতামত প্রকাশ করলেই হবে না, এক খানে হয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের পথ বেঁছে নিতে হবে।

তারপরের দিকে উকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী “বাংলাদেশের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা প্রথা বাতিল করে সে ব্যবস্থা পুর্নমূল্যায়ন করতে হাইকোর্টে ৩১শে জানুয়ারি একটি রিট দায়ের করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী ও দুইজন সাংবাদিক। ৫ই মার্চ ২০১৮ সালে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ আবেদনে ভুল রয়েছে এই মর্মে রিট আবেদনটি খারিজ করে দেন।”

এরপর শুরু হয় ৫ দফা দাবি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের বাইরে এসে রাস্তায় আন্দোলন (১৭ই ফেব্রুয়ারি ২০১৮)। শুরু থেকেই সংবাদ মাধ্যম ও টেলিভিশন পুরোপুরি বিমাতা সুলভ আচরণ করে গেছে। সেই আচরণের কারণ যে সরকার পক্ষের চাপ এটা বলার অপেক্ষা রাখে না।

২০১২ সালে সামহয়ার ইন ব্লগে সরব মৌনতা লেখেন-

“এতদিনে বুঝলাম, সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এত এত বিক্ষোভ-আন্দোলন হওয়া সত্ত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে এত ঠান্ডা। কারন এখানে আছে সরকারের বিশেষ আইন-শৃংখলা রক্ষা বাহিনী "চাপাতি লীগ"
জাতির এ বেজন্মা সন্তানদের জন্য আজ কোটা পদ্বতি সংস্কারের দাবিতে অপারাজেয় বাংলার সামনে মানব-বন্ধন করা হল না।বরং তাদের উপর্যুপরি চাপ আর ভয়-ভীতি প্রদর্শনের কারনে ছত্রভংগ হল সাধারণ ছাত্রদের আন্দোলন।প্রতিবাদী কয়েকজনকে মারধর খতে হল, ঐ কুত্তার বাচ্চা গুলা মেয়েদের গায়ে হাত তুলতেও কুন্ঠাবোধ করে না, লাঞ্ছিত হতে হল রোকেয়া হলের কয়েকজন ছাত্রীকেও।এ খবর হয়ত কোন মিডিয়াতেও প্রচার হবে না।”



এতেই বোঝা যায় কোটা আন্দোলন কখনই সরকার পক্ষের লোকদের দৃষ্টির অগোচরে ছিল না। পাঁচ ছয় বছর আগে থেকেই তারা এর বিপক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। তারা চায়নি এই সংবাদগুলো জন সম্মুখে আসুক। এরপর তাদের মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি হিসেবে দেখানো, জামাত শিবির হিসেবে প্রমাণ করার চেষ্টা করা, আন্দোলনে পুলিশ ও ছাত্রলীগদ্বারা অমানবিক অত্যাচার ইত্যাদি পদক্ষেপ বারবার প্রমাণ করেছে সরকারের পরিকল্পণা। সেই পরিকল্পণার একটা অংশ ছিল এই সংবাদ মাধ্যমকে নিজেদের মত করে ব্যবহার করা।





সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৯
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অধুনা পাল্টে যাওয়া গ্রাম বা মফঃস্বল আর ভ্যাবাচ্যাকা খাওয়া শহুরে মানুষ!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০০


দেশের দ্রব্যমুল্যের বাজারে আগুন। মধ্যবিত্তরা তো বটেই উচ্চবিত্তরা পর্যন্ত বাজারে গিয়ে আয়ের সাথে ব্যায়ের তাল মেলাতে হিমসিম খাচ্ছে- - একদিকে বাইরে সুর্য আগুনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমুল্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪১

সাম্প্রতিক দুইটা বিষয় ভাইরাল হতে দেখলাম।
১. এফডিসিতে মারামারি
২. ঘরোয়া ক্রিকেটে নারী আম্পায়ারের আম্পায়ারিং নিয়ে বিতর্ক

১. বাংলা সিনেমাকে আমরা সাধারণ দর্শকরা এখন কার্টুনের মতন ট্রিট করি। মাহিয়া মাহির... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) পক্ষ নিলে আল্লাহ হেদায়াত প্রদান করেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:৪২



সূরা: ৩৯ যুমার, ২৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৩। আল্লাহ নাযিল করেছেন উত্তম হাদিস, যা সুসমঞ্জস্য, পুন: পুন: আবৃত। এতে যারা তাদের রবকে ভয় করে তাদের শরির রোমাঞ্চিত হয়।অত:পর তাদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবন পারাবার: শঠতা ও প্রতারণার উর্বর ভূমি

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪০


অনার্সের শেষ আর মাস্টার্সের শুরু। ভালুকা ডিগ্রি কলেজের উত্তর পার্শ্বে বাচ্চাদের যে স্কুলটা আছে (রোজ বাড কিন্ডারগার্টেন), সেখানে মাত্র যোগদান করেছি। ইংরেজি-ধর্ম ক্লাশ করাই। কয়েকদিনে বেশ পরিচিতি এসে গেল আমার।

স্কুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×