somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মনে পড়ে শৈশব

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২০ দুপুর ২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষের কোলাহল,গাড়ীর এলোমেলো সারি,ব্যাগ কাঁধে শিক্ষার্থীদের এলোপাতাড়ি হাঁটা,কয়েক সেন্টিমিটার পরপর কোচিং সেন্টার জানিয়ে দেয় জায়গাটা চকবাজার।সেই চকবাজারেরই ফুটপাথ ধরে হাটছিলাম।হঠাৎ ছোটবেলার বন্ধু ইমরান,মামুন,মুন্নার সাথে দেখা।সতেরো বছর আগে যাদের সাথে আমার শিক্ষাজীবন শুরু হয়েছিল তাদের তিনজনকে একসাথে পেয়ে সৌভাগ্যবান মনে হল।সবাই মিলে একটা রেম্তোরায় ঢুকলাম চা পান করব বলে।মধ্যবিত্তরা মদের বোতলে কিংবা বিয়ারের গ্লাসে চুমুক দিতে পারে না, তাদের একমাত্র বিলাসী নেশা চায়ের কাপে চুমুক দেয়া।মনে পড়ল, যাদের সাথে চা পান করতে বসেছি তাদের সাথেই জীবনের প্রথম পরীক্ষায় বসেছিলাম।

সেই পরীক্ষায় আমি মাত্র চার নাম্বার পেয়েছিলাম।এত কম নাম্বার দেখে অনেকেই সেদিন আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়েছিলেন।আমি নিজেও যে বিস্মিত হয়নি তা নয়।প্রতিটি প্রশ্ন লেখার পরেও পঞ্চাশ নাম্বারের পরীক্ষায় এত কম নাম্বার নিঃসন্দেহে চিন্তার বিষয়।খুব আগ্রহ, আত্মবিশ্বাস আর উত্তেজনা নিয়ে খাতা চেক করতে গিয়ে আমি তো হতভম্ব।আসলে আমি প্রতিটি প্রশ্ন লিখেছিলাম বটে তবে কোন উত্তর লিখতে পারিনি।কারণ তখনও আমি জানতাম না প্রশ্ন আর উত্তর কি।তাইতো প্রতিষ্ঠানের নাম, পরীক্ষার সময় এমনকি নাম্বার বন্টনসহ পুরো প্রশ্নপত্রের প্রত্যেকটা দাড়ি কমা পর্যন্ত হুবহু লিখে এসেছিলাম উত্তরপত্রে।ফটোকপি মেশিন কে আবিস্কার করেছিলেন জানি না তবে তিনি যদি আবিস্কার নাও করতেন হয়ত
আমার কাছ থেকে ধারণা নিয়েই একসময় ফটোকপি মেশিন আবিস্কার হত।ইতিহাসের পাতায় লিখা থাকতো একজন বাঙালির নাম।

হুবহু প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে আসার পরেও চার নাম্বার কেমনে পেয়েছিলাম তাও আশ্চর্যের বিষয়।আগেই বলে রাখি,সংশ্লিষ্ট শিক্ষক কোনমতেই আমার পরিচিত নন এবং আমার চৌদ্দগোষ্ঠীতেও কোন শিক্ষক নেই।যে সময়ে এক নাম্বার বাড়িয়ে দেওয়াকে এক ফিট জমি দান করে দেওয়া মনে করা হত সেখানে কোন উত্তর না লিখেও চার নাম্বার দেওয়ার মত হাতেম-তাঈ শিক্ষক কল্পনাও করা যায় না।পরে এই চার নাম্বারের রহস্য উদঘাটন করতে গিয়ে আবিস্কার করলাম, প্রশ্নপত্রের শেষ প্রশ্নটি ছিল

৬/দেখে দেখে সুন্দর করে লিখ ৫

(ক) আমাদের দেশ বাংলাদেশ
(খ) বাংলা আমাদের মাতৃভাষা

এই দুইটি লাইন থেকেই চার নাম্বার অর্জন করছিলাম।সতেরো বছর পরেও লাইনদ্বয় মস্তিস্কে গেঁথে আছে,যেভাবে গেঁথে আছে শৈশবের স্মৃতিময় দিনগুলি।কী অদ্ভূত বৈপরীত্য, শৈশবে কোন কিছু মনে রাখতে পারতাম না আর এখন শৈশবের সবকিছুই মনে আছে।
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×