গল্পের নামকরণ টা বোধ হয় ঠিক হয় নি। আমার ভাইয়া আমাদের তিনজনকে বলে থ্রী স্টুজিস- আমার জীবনে ঘোরাঘুরির শুরু এই তিনের গ্রূপেই। প্রথম সফল দুঃসাহসিক অভিযানের পর সেই ঘটনাকে মনে রাখতে প্রতি বছর একটা ট্যুর করার সঙ্কল্প করি। নানান কারণে নির্ধারিত ডিসেম্বরের সেই দিনগুলো ঠিক না রাখতে পারলেও একটা ট্যুর করছি প্রতি বছর। সেই সূত্রেই কাল সকালে আমরা যাত্রা করব (কই যাব এখনো জানি না
একদম ঠিক দিন-তারিখ মনে নেই, জানুয়ারী ২০০৩ এর শেষের দিকের কথা। বুয়েট ভর্তির আগে চয়েস ফর্ম পূরণ ও মেডিক্যাল চেক আপ এই মর্মে এক গাদা সদ্য সাবালকত্ব অর্জন করা ছেলে-মেয়ে ইএমই ভবনের কোন এক তলায় ক্যাচড়-ম্যাচড় করছে। আমি গিয়েছিলাম বাবার সাথে- দুনিয়ার উপর মহা ত্যক্ত ভর্তি পরীক্ষায় আশানুরূপ ফল না হওয়ায় (এক সময় আমি কঠিন আতেঁল ছিলাম- পড়াশুনা না করতে চাইলেও প্রথম স্থানটি আমার চাই
দিনটা খুব ভালো যায় নি। তার উপর যখনি সেই পেছনের বেঞ্চের তবলচির কথা মনে পড়ছিল, মনে মনে ঠিক করে ফেললাম- এ রকম ভয়ানক চীজ যে বিষয়ে পড়বে আমি অবশ্যই তার থেকে একশো হাত দূরে থাকব- তাই হয় আর্কিটেকচার ছাড়ব, নয় তো বুয়েট। তখন কি ঘুনাক্ষরেও ভেবেছিলাম ওই তবলচির প্যাক প্যাক আমাকে এখনো শুনতে হবে! অথচ কিছু দিন আগে যখন বললাম- skype টা ইনস্টল করে নে, আমায় বলে কী না- তোর পক পক শোনার জন্যে আমি skype ইনস্টল করতে পারবো না- কত্ব বড় আস্পর্ধা!!
যাই হোক, নানা কারণে আমার আর্কিটেকচার ছেড়ে এঞ্জিনীয়ারিং এ যাওয়া হলো না, ঢাকা ভার্সিটিতেও বাপ-মা ভর্তি হতে দিল না। ক্লাশ শুরু হওয়ার পর ছাত্রী হলে উঠে দেখি ওই মূর্তিমতী। আমাদের র্যাগ প্রদান অনুষ্ঠানে আমি যথারীতি সবচেয়ে বেশী বিরক্ত- কপাল কুচঁকে সবার দিকে তাকাচ্ছি আর দৃষ্টির আগুনে ভস্ম করে দেওয়ার অক্ষম চেষ্টা চালাচ্ছি। আর অন্যদিকে মিস তবলচি হেসে হেসে কুটিমুটি, আপুরা যাই বলে না কেন সে হাসতে হাসতে মরে যাচ্ছে। এক পর্যায়ে বিরক্ত আপুরা ওর মুখে হাতে masking tape পেঁচিয়ে দেয়। কিন্তু তাতে যেন আগুনে আরো ঘি ঢেলে দেওয়া হলো। এ হেন বস্তুটি আগামীকাল সকালে ঢাকায় পৌঁছুবে
ছাত্রী হলে আমাদের structure করা গ্রূপে ওকেও প্রায়শই দেখা যেত এবং অবশ্যই একজন disturbing element এর ভূমিকাই পালন করত। ওর জ্বালায় প্রায়ই আমাকে সেই গ্রূপ থেকে উঠে আসতে হতো
তারপর কবে যে আমরা কীভাবে কীভাবে একটা ট্যুর প্ল্যান করলাম, একটা exciting ট্যুরের পর আবারো ট্যুর- অতি অল্প পয়সায় ট্যুর কীভাবে করা যায় তার সবচেয়ে ভাল উদাহরণ ছিলাম আমরা- আর কতটা ঝুঁকি নিয়েও কেমন করে সেগুলো উতরে যেতাম।
তারপর মেঘে মেঘে অনেক বেলা হলো। শুধু জানি এর ছয় বছর পর যখন বুয়েট থেকে বের হই- আমার সবচেয়ে কাছাকাছি যে মানুষটাকে দেখতে পেয়েছিলাম তা অনিন্দিতা, ঠিক সেই প্রথম দিনটার মতো।
আশা করছি এবারেরটাও হবে।
-------------------------------------
ভাগ্যিস, অনিন্দিতা আমার একেবারে বিপরীত চরিত্র- আর ব্লগ পড়তে পছন্দ করে না। নইলে আমি কচুকাটা হয়ে যেতাম!
আমাদের তিনজনের একত্রে কোন ছবি নাই- দেওয়ার ইচ্ছা ছিল, শুধু তিনজনের হাত-পায়ের ছবি আছে।
ছবিটা অনিন্দিতার তোলা, আমাদের সেন্টমার্টিন ভ্রমণের সময়- সেবার আমার ক্যামেরা চুরি হয়ে যায় বলে কোন ছবি নেই
--------------------------------------------
তিন স্টুজীর ছোট্ট একটা ট্যুরঃ মাওয়ার চরে Click This Link
তিন স্টুজী এবার কুয়াকাটায়... Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১১:১৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




