somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জীবনানন্দের ক্যাম্পে: রবীন্দ্রোত্তর আধুনিকতা, অশ্লীলতা এবং নেতিবাচক সমালোচনা

০৬ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১১:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রবীন্দ্র পরবর্তী যুগে বাংলা কাব্যধারায় নিজের শক্তিমত্তার পরিচয় দিয়ে কবিতামনষ্ক পাঠকের চেতনাকে উপমার নানামাত্রিক ব্যবহারে বুদ করে রেখেছেন যিনি, তিনি হলেন জীবনানন্দ দাশ। এ কথা বলা চলে নির্দ্ধিধায়, বাংলা কাব্যের আধুনিকতম কবি তিনি। আপাত দৃষ্টিতে সহজ সরল উপমার মাঝেই জীবনানন্দ সার্থক ভাবে এনেছেন জীবনের গভীর বোধ, সমাজ সচেতনতা এবং নগর জীবনের দ্বান্দিকতার নবতর ব্যাখ্যা।

জীবিত থাকা অবস্থায় জীবনানন্দ দাশ পাঠক কিংবা কবি মহল কোনখানেই তেমন বেশি সাড়া ফেলতে পারেননি। বরঞ্চ প্রচুর সমালোচনা তাকে অর্ন্তমুখী এবং লেখার মান নিয়ে তাকে সন্দিহান করে তুলেছিল। ফলশ্রুতিতে জীবদ্দশায় প্রকাশিত গ্রন্থ মোটে সাতটা। পরবর্তীতে প্রচুর কবিতা, গল্প এমনকি উপন্যাসও তিনি লিখেছেন জানা যায়। আজকে একটি বহুল আলোচিত এবং তার চেয়ে বেশি সমালোচিত একটি কবিতা 'ক্যাম্পে' নিয়ে আলোচনা করব। রবীন্দ্রপরবর্তী যুগের আধুনিকতার সূচনাপর্বে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ কবিতা।
কবিতাটি ছাপা হয় পরিচয় পত্রিকায় ১৯৩২ সালে। পত্রিকাটির সম্পাদনায় ছিলেন সুধীন্দ্রনাথ দত্ত। সুধীন্দ্রনাথ মূলত জীবনানন্দের লেখার স্টাইল মোটেই পছন্দ করতেন না। ক্ষেত্রবিশেষে তাকে কবি বলেও গন্য করতেন না। বিষ্ণু দের চাপে বাধ্য হয়ে কবিতাটি ছাপেন কেননা বিষ্ণু দে কবিতাটি জীবনবাবুর কাছ থেকে চেয়ে নিয়ে আসেন। তো কবিতাটি পাঠ করা যাক-

ক্যাম্পে

এখানে বনের কাছে ক্যাম্প আমি ফেলিয়াছি;
সারারাত দখিনা বাতাসে
আকাশের চাঁদের আলোয়
এক ঘাইহরিণীর ডাকে শুনি –
কাহারে সে ডাকে!
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
বনের ভিতরে আজ শিকারীরা আসিয়াছে,
আমিও তাদের ঘ্রাণ পাই যেন,
এইখানে বিছানায় শুয়ে শুয়ে
ঘুম আর আসে নাকো
বসন্তের রাতে।
চারি পাশে বনের বিস্ময়,
চৈত্রের বাতাস,
জোছনার শরীরের স্বাদ যেন্‌!
ঘাইমৃগী সারারাত ডাকে;
কোথাও অনেক বনে — যেইখানে জোছনা আর নাই
পুরুষ হরিণ সব শুনিতেছে শব্দ তার;
তাহারা পেতেছে টের
আসিতেছে তার দিকে।
আজ এই বিস্ময়ের রাতে
তাহাদের প্রেমের সময় আসিয়াছে;
তাহাদের হৃদয়ের বোন
বনের আড়াল থেকে তাহাদের ডাকিতেছে
জোছনায় –
পিপাসার সন্ত্বনায় — অঘ্রাণে — আস্বাদে!
কোথাও বাঘের পাড়া বনে আজ নাই আর যেন!
মৃগদের বুকে আজ কোনো স্পষ্ট ভয় নাই,
সন্দেহের আবছায়া নাই কিছু;
কেবন পিপাসা আছে,
রোমহর্ষ আছে।
মৃগীর মুখের রূপে হয়তো চিতারও বুকে জেগেছে বিস্ময়!
লালসা — আকাঙক্ষা — সাধ — প্রেম স্বপ্ন স্ফুট হয়ে উঠিতেছে সব দিকে
আজ এই বসন্তের রাতে;
এই খানে আমার নক্‌টার্ন –|
একে একে হরিণেরা আসিতেছে গভীর বনের পথ ছেড়ে,
সকল জলের শব্দ পিছে ফেলে অন্য এক আশ্বাসের খোঁজে
দাঁতের — নখের কথা ভূলে গিয়ে তাদের বোনের কাছে অই
সুন্দরী গাছের নীচে — জোছনায়!
মানুষ যেমন করে ঘ্রাণ পেয়ে আসে তার নোনা মেয়েমানুষের কাছে
হরিণেরা আসিতেছে।
– তাদের পেতেছি আমি টের
অনেক পায়ের শব্দ শোনা যায়,
ঘাইমৃগী ডাকিতেছে জোছনায়।
ঘুমাতে পারি না আর;
শুয়ে শুয়ে থেকে
বন্দুকের শব্দ শুনি;
চাঁদের আলোয় ঘাইহরিণি আবার ডাকে;
এইখানে পড়ে থেকে একা একা
আমার হৃদয়ে এক অবসাদ জমে ওঠে
বন্দুকের শব্দ শুনে শুনে
হরিণীর ডাক শুনে শুনে।
কাল মৃগী আসিবে ফিরিয়া;
সকালে — আলোয় তারে দেখা যাবে –
পাশে তার মৃত সব প্রেমিকেরা পড়ে আছে।
মানুষেরা শিখায়ে দিয়েছে তারে এই সব।
আমার খাবার ডিশে হরিণের মাংসের ঘ্রাণ আমি পাব,
মাংস খাওয়া হল তবু শেষ?
কেন শেষ হবে?
কেন এই মৃগদের কথা ভেবে ব্যথা পেতে হবে
তাদের মতন নই আমিও কি?
কোনো এক বসন্তের রাতে
জীবনের কোনো এক বিস্ময়ের রাতে
আমারেও ডাকে নি কি কেউ এসে জোছনায় — দখিনা বাতাসে
অই ঘাইহরিণীর মতো?
আমার হৃদয় — এক পুরুষহরিণ –
পৃথিবীর সব হিংসা ভুলে গিয়ে
চিতার চোখের ভয় — চমকের কথা সব পিছে ফেলে রেখে
তোমারে কি চায় নাই ধরা দিতে?
আমার বুকের প্রেম ঐ মৃত মৃগদের মতো
যখন ধূলায় রক্তে মিশে গেছে
এই হরিণীর মতো তুমি বেঁচেছিল নাকি
জীবনের বিস্ময়ের রাতে
কোনো এক বসন্তের রাতে?
তুমিও কাহার কাছে শিখেছিলে!
মৃত পশুদের মতো আমাদের মাংস লয়ে আমারও পড়ে থাকি;
বিয়োগের — বিয়োগের — মরণের মুখে এসে পড়ে সব
ঐ মৃত মৃগদের মতো –
প্রেমের সাহস সাধ স্বপ্ন বেঁচে থেকে ব্যথা পাই, ঘৃণা মৃত্যু পাই;
পাই না কি?
দোনলার শব্দ শুনি।
ঘাইমৃগী ডেকে যায়,
আমার হৃদয়ে ঘুম আসে নাকো
একা একা শুয়ে থেকে;
বন্দুকের শব্দ তবু চুপে চুপে ভুলে যেতে হয়।
ক্যম্পের বিছানায় রাত তার অন্য এক কথা বলে;
যাহাদের দোনলার মুখে আজ হরিণেরা মরে যায়
হরিণের মাংস হাড় স্বাদ তৃপ্তি নিয়ে এল যাহাদের ডিশে
তাহারাও তোমার মতন –
ক্যাম্পের বিছানায় শুয়ে থেকে শুকাতেছে তাদের ও হৃদয়
কথা ভেবে — কথা ভেবে — ভেবে।
এই ব্যথা এই প্রেম সব দিকে রয়ে গেছে –
কোথাও ফড়িঙে — কীটে, মানুষের বুকের ভিতরে,
আমাদের সবের জীবনে।
বসন্তের জোছনায় অই মৃত মৃগদের মতো
আমরা সবাই।

প্রকাশের পর থেকেই কবিতাটি সমালোচক এবং কবিসমাজের কাছে, জীবনানন্দের আরো বেশ কিছু আধুনিক এবং মেটাফোরের নতুনত্বে সমুজ্জল কবিতার মতই বেশ অস্পষ্ট এবং দূর্বোধ্য বলে গন্য হয়েছে। কবিতাটি নিয়ে রূঢ় সমালোচনার মুখে পড়েছেন কবি। ধারণা করে নেয়া যায়, সে সবই কবিতার পাঠে কবিতাটি অস্পষ্ট এবং দূর্বোধ্য ঠেকার কারণেই। কবিতাটি নিবিড় পাঠে দেখা যাবে, কবিতাটি শুরু হয়েছে যদিও বনে মৃগয়া গমনের পরে ক্যাম্প ফেলবার কথা থেকে, তথাপি ক্যাম্পে যাওয়া এবং শিকার এই কবিতার মূল বিষয় নয়।

ভীষণ অর্ন্তমুখী এবং নিজের গন্ডির ভেতরে চিরকাল বসবাস করা জীবনবাবু অধ্যাবধি গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যমতে কখনো শিকারে যাননি। এছাড়া শিকারীর শিকার প্রসঙ্গে আরেকটি কবিতায় তাঁর অসমর্থন প্রকাশ পেয়েছে (হরিণ কবিতাটিতে)। এই কবিতাটিতে একটি অসমিয়া শব্দ ঘাই ব্যবহৃত হয়েছে (টোপ অর্থে)। শব্দটি যদি আমাদের ইঙ্গিত দেয় যে তিনি আসাম গিয়েছেন বা অসমিয়া ভাষী কারো সাথে মিশে থাকবেন, তবে বলতে হয় তিনি কখনোই আসাম যাননি। তিনি মুনিরুদ্দি নামে একজনের সাথে কথা বলতেন প্রায়ই, যে ছিল কিনা একজন শিকারী। তার কাছে জীবনবাবু শিকার সম্বন্ধীয় অনেক কিছুই শুনতেন। ধরে নেয়া যেতে পারে এই লোকটির কাছ থেকেই তিনি অসমিয়া এ শব্দটি শুনেছেন।
-------------------------------(জীবনানন্দের ভাই অশোকানন্দের বিবৃতি হতে)

যাই হোক ক্যাম্পে কবিতার প্রতিবেশ এবং চরিত্র চিত্রনে কবি যেন সুনিপুন নাট্যকারের ভূমিকা নিয়েছেন। কবিতাটির মূল সুর আদৌ যে ক্যাম্প বা হরিণ শিকার নয় সেই বিষয়টি আমরা বুঝতে পারি কবিতার মধ্যভাগে। কবিতার সুরে ক্যাম্পে অবস্থানরত কথক (ধরে নেই ভ্রমন উদ্দেশ্যে আগত, যেহেতু উল্লেখ নেই আগমনের কারণ) শুনতে পাচ্ছেন এক ঘাই হরিণীর ডাক

আকাশের চাঁদের আলোয়

এক ঘাইহরিণীর ডাকে শুনি –
কাহারে সে ডাকে!
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;
বনের ভিতরে আজ শিকারীরা আসিয়াছে,
আমিও তাদের ঘ্রাণ পাই যেন

এই ঘাই হরিণী ডাকছে। কে কাকে ডাকছে? প্রকৃতপক্ষে এই ঘাই হরিণীটি কি? এটা সবার জানা, ঘাই হরিনী বলতে এখানে বোঝানো হচ্ছে জ্যান্ত হরিণ, যাকে টোপ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রখ্যাত জীবনানন্দ গবেষক ক্লিন্টন বি সিলি A Poet Apart বই এ উল্লেখ করেন, এই ঘাই হরিণীর ব্যবহার জীবনানন্দের জীবনের এক অসফল অধ্যায়ের ইঙ্গিত দেয়, যে প্রেমিকা তাকে প্রত্যাখান করেছে অবজ্ঞা ভরে। এ ব্যাপারে জীবনানন্দের আত্মীয় পরিজনদের কাছ থেকে কোন তথ্য পাওয়া যায় না, তার জীবনে কোন রমনীর সাথে এমন কোন সম্পর্ক ছিল বিয়ের আগে কিংবা পরে। এই বিষয়ে কোন পরিষ্কার ধারণা না পাওয়া গেলেও আমরা ধরে নিতে পারি শিকারের অর্ন্তদ্বন্দ্বমূলক একটা প্রতিবেশ তৈরির জন্য তিনি শিকারি, শিকার ও প্রলোভনের এক জটিল ফাঁদ পেতেছেন।
ঘাই হরিণীর মৃদু শব্দময় বিষণ্ন আর্তনাদ ইঙ্গিত দেয় হরিণের অথবা চিতার আগমনের। একই সাথে যেহেতু ঘাই হরিণী শিকারের টোপ, সে আরো ইঙ্গিত দেয় শিকারীর দল আছে হয়তবা কাছে পিঠে বনের এই বিপন্ন আধারে। কবি এর পরের অংশে বর্ননা দেন চঞ্চলা হরিণের দল কিভাবে প্রতারণার ফাঁদে পা দিচ্ছে-

আজ এই বিস্ময়ের রাতে
তাহাদের প্রেমের সময় আসিয়াছে;
তাহাদের হৃদয়ের বোন
বনের আড়াল থেকে তাহাদের ডাকিতেছে
জোছনায় –
পিপাসার সন্ত্বনায় — অঘ্রাণে — আস্বাদে!
কোথাও বাঘের পাড়া বনে আজ নাই আর যেন!

তাহাদের হৃদয়ের বোন অর্থাৎ ঘাই হরিণীর দল ডেকে যাচ্ছে শুধু ফালগুনের এই সোনালি রাতে ঘাই হরিণের দলকে। বাঘের দল এখন অনুপস্থিত, সম্ভবত অনুপস্থিত স্বজাতির হাতে স্বজাতির বিনাশ রচনার এক মর্মান্তিক খেলা দেখবার জন্য।

একে একে হরিণেরা আসিতেছে গভীর বনের পথ ছেড়ে,
সকল জলের শব্দ পিছে ফেলে অন্য এক আশ্বাসের খোঁজে
দাঁতের — নখের কথা ভূলে গিয়ে তাদের বোনের কাছে অই
সুন্দরী গাছের নীচে — জোছনায়!

বনপথ ছেড়ে ঘাইমৃগীর সাথে মৈথুনে লিপ্ত হতে আসা মৃগের দল জলের শব্দ পিছে ফেলে আসে সুন্দরী গাছের নীচে। কবিতাটি স্পষ্ট আমাদের নিয়ে যায় তৎকালীন পূর্ববঙ্গের বিস্তৃত সুন্দরবন অঞ্চলে, যেখানে অসংখ্য খালে বিলে নদীতে ছেয়ে আছে বিপুলা বনাঞ্চল যার ক্রোড়ে খেলা করে অদ্ভুত এক শ্বাসমূলীয় উদ্ভিদ-সুন্দরী । কথক পদশব্দ পেতে থাকেন, চারিদিকে অসহ্য আওয়াজ, সে আওয়াজ মৃত্যুর, অন্ধকারে তবু কিছু আশা ছিল, কিছু কল্পনা ছিল, সকাল হতেই, ভোরের আলো ফুটতেই দেখা যায় ঘাইহরিণীর পাশে মৃত মৃগের সারি।

চাঁদের আলোয় ঘাইহরিণি আবার ডাকে;
এইখানে পড়ে থেকে একা একা
আমার হৃদয়ে এক অবসাদ জমে ওঠে
বন্দুকের শব্দ শুনে শুনে
হরিণীর ডাক শুনে শুনে।
কাল মৃগী আসিবে ফিরিয়া;
সকালে — আলোয় তারে দেখা যাবে –
পাশে তার মৃত সব প্রেমিকেরা পড়ে আছে।

কথকের ভূমিকা পাঠকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে দেখা দেয় এইবারে।পাতে আসা হরিণের মাংস তিনি আরাম করে খান, অথচ এর আগে মনে হয়েছিল তিনি ক্যাম্পে এসেছিলেন বিহারে। যেখানে তিনি শিকারীর শিকারের নীরব দর্শক। প্রথমাংশে ক্যাম্প ফেলিয়াছির পরে শিকারীদের সাথে তিনি ছিলেন কিনা এ ব্যাপারটি স্পষ্ট নয়

আমার খাবার ডিশে হরিণের মাংসের ঘ্রাণ আমি পাব,
মাংস খাওয়া হল তবু শেষ?
কেন শেষ হবে?
কেন এই মৃগদের কথা ভেবে ব্যথা পেতে হবে
তাদের মতন নই আমিও কি?

কথক চরিত্রটি ধরে নেয়া যায় সময়ের একটা প্রতিভূ, যাকে নৈতিক অনৈতিক সব রকম কাজের শুধু দর্শক হতে হয়, দেখে যেতে হয় পরাজিত মানবতার বিপন্নতা, ক্রম অবক্ষয়। কবিতার বাঁক এখানেই বদলে যায় আশ্চর্য রূপে যখন কথক প্রশ্ন করেন তাদের মতন নই আমিও কি ? কথক নিজেকেই প্রশ্ন করছে যে প্রশ্নের অসীম উত্তরের সবটুকুই তার জানা, কিন্তু মাঝে মাঝে অজানা হয়ে ধরা দেয়। চিতার চোখের ভয়, পৃথিবীর সব হিংসা ভোলা সাহসী মৃগশাবক ধরা দিতে চায়নি কি ঘাইহরিণীর মায়াজালে ?

আমার হৃদয় — এক পুরুষহরিণ –
পৃথিবীর সব হিংসা ভুলে গিয়ে
চিতার চোখের ভয় — চমকের কথা সব পিছে ফেলে রেখে
তোমারে কি চায় নাই ধরা দিতে?

এ্ই পঙতিগুলোর পরের পঙতিতেই ফুটে ওঠে না পাওয়ার বোধ। যখন বুকের আড়শিতে জমাট হয়ে থাকা রক্তধারার মত উৎসরিত প্রেম মিশে যায় ধূলোয়, মৃত মৃগদের মতন। পরমুহূর্তেই কবির অন্তিম কৌতুহল আমাদের চিরন্তন মানবিক বোধটাকেই তুলে ধরে। নিজের বিনাশ মাঝে মাঝে তুচ্ছ মনে হয় যখন হৃদয়ের বোনের বেঁচে থাকাটা অনেক বড় অর্থ বহন করে।

আমার বুকের প্রেম ঐ মৃত মৃগদের মতো
যখন ধূলায় রক্তে মিশে গেছে
এই হরিণীর মতো তুমি বেঁচেছিল নাকি
জীবনের বিস্ময়ের রাতে
কোনো এক বসন্তের রাতে?

জীবনের বিস্ময় নিয়ে বেঁচে থাকা কোন প্রলোভন জাগানিয়া ঘাইহরিণীর মত এক সুররমনীর ভাবনা ভাবতে ভাবতে সময়ের অতলান্তে ডুব দেয় সমস্ত বনানী, নিস্পৃহ কথক, মৃত মৃগের দল, এমনকি দোনলা রাইফেলে যারা কিনে নেয় জীবন কেড়ে নেবার বিমূর্ততার ভীষণ অধিকার। কবিতা শেষ হয় আমাদের অন্তরের রক্তক্ষরণের শাশ্বত চিত্র তুলে ধরে।

ক্যম্পের বিছানায় রাত তার অন্য এক কথা বলে;

যাহাদের দোনলার মুখে আজ হরিণেরা মরে যায়
হরিণের মাংস হাড় স্বাদ তৃপ্তি নিয়ে এল যাহাদের ডিশে
তাহারাও তোমার মতন –
ক্যাম্পের বিছানায় শুয়ে থেকে শুকাতেছে তাদের ও হৃদয়
কথা ভেবে — কথা ভেবে — ভেবে।

জীবনবাবু একটি বিশেষ প্রেক্ষিতে ( পরবর্তী অংশে দ্রষ্টব্য ) এই কবিতাটি বিষয়ে কিছু মতামত রেখেছিলেন। সেখান থেকে কিছুটা উদ্ধৃত করছি

যদি কোন একমাত্র স্থির নিষ্কম্প সুর এই কবিতাটিতে থেকে থাকে তবে তা জীবনের-মানুষের-কীট-ফড়িঙের সবার জীবনেরই নি:সঙ্গতার সুর। সৃষ্টির হাতে আমরা ঢের নি:সহায়- ক্যাম্পে কবিতাটির ইঙ্গিত এই; এইমাত্র।

যথার্থ অর্থেই কবিতার মূল সুর তাই। কবিতাটি আমাদের জানান দেয় আমাদের এই যে যাবতীয় অজাচার, প্রেমের অস্ফুট প্রকাশ, বেদনার নানামাত্রিক দ্বন্দ্ব সব কিছুর শেষ কথা সার্বজনীনতা। যে জীবন ফড়িঙের, দোয়েলের, কীটের, বন বেড়ালের সে জীবনের ছায়া মানবের মাঝেও বিদ্যমান।

এই ব্যথা এই প্রেম সব দিকে রয়ে গেছে –
কোথাও ফড়িঙে — কীটে, মানুষের বুকের ভিতরে,
আমাদের সবের জীবনে।
বসন্তের জোছনায় অই মৃত মৃগদের মতো
আমরা সবাই।

কবিতাটি বিষয়ে নাতিদীর্ঘ আলোচনা হল। এবারে কবিতাটি প্রকাশের পরে সমকালে কবি, সমালোচক এবং পাঠকের সমালোচনা বিষয়ে আলোকপাত করা যাক-

* সজনীকান্ত দাশ ১৯৩১ এর সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে বের হওয়া (মাঝে বন্ধ হযে গিয়েছিল) শনিবারের চিঠিতে কবিতাটির সমালোচনা করে বিস্তর লেখেন। তিনি লেখেন-

কবিতাচ্ছলে কবি যে বিরহিনী ঘাইহরিনীর আত্নকথা ও তাহার হৃদতুতো দা'র মর্মকথা কহিয়াছেন তাহা পরম রমনীয় হইয়াছে। ....
বস্তুত ঘাই হরিণী শব্দটার ব্যাবহারে তার কাছে কবিতাটিকে ভীষণ অশ্লীল মনে হয় এবং তিনি ঘাই হরিণী শব্দটিকে যৌন প্রলোভন হিসেবে নেন। এর পরবর্তীতে হৃদয়ের বোন শব্দটি ব্যবহার নিয়েও তিনি কবিকে কটাক্ষ করেন।

বনের যাবতীয় ঘাই-হরিণকে 'তাহাদের হৃদয়ের বোন' ঘাই-হরিনী অঘ্রাণ ও আস্বাদে'র দ্বারা তাহার পিপাসার সান্তনা'র জন্য ডাকিতেছে। পিসতুতো, মাসতুতো ভাইবোনদের আমরা চিনি। হৃদতুতো বোনের সাক্ষাৎ এই প্রথম পাইলাম।...

মৃগীর মুখের রূপে হয়ত চিতারও বুকে জেগেছে বিষ্ময়!
লালসা-আকাঙ্খা-সাধ-প্রেম-স্বপ্ন স্ফুট হয়ে উঠিতেছে সব দিকে
আজ এই বসন্তের রাতে
এইখানে আমার নকটার্ন-।

এতক্ষণ পরে বুঝিলাম কবিতার নাম ক্যাম্পে হইল কেন! যাহাই হউক নকটার্ন শব্দের পরে ড্যাস মারিয়া কবি তাহার নৈশ রহস্যের সরস ইতিহাসটুকু চাপিয়া গিয়া আমাদিগকে নিরাশ করিয়াছেন। ...

বাস্তবিক অর্থে কবিতার সমালোচনা করতে এসে সজনীকান্ত সকল ভব্যতা এবং সাহিত্যিক শ্লীলতাকে অতিক্রম করে ইতর শ্রেনীর আক্ষরিক পাঠ দ্বারা কবিতাটির সমালোচনা করেন। আরেক অংশে সজনী পরিচয় এর মত উচ্চশ্রেনীর পত্রিকা, যাতে রবীন্দ্রনাথ, হীরেন্দ্রনাথের লেখা ছাপা হয় সেখানে এরূপ অশ্লীল কবিতা কিরূপে ছাপা হয় এই প্রশ্ন তোলেন। ক্যাম্পে কবিতাটি তার মতে, পরিচয়ের অশ্লীলতা চর্চার চূড়ান্ত নমুনা।

প্রকৃতপক্ষে সজনীকান্তের মত ২য় শ্রেনীর কাব্য সমালোচকের দ্বারা বাংলা কাব্য ধারার বাঁক বদলকারী কবিতার এমন রূঢ় সমালোচনা হবে এটা স্বাভাবিক ভাবেই ধরে নেয়া যায়। এই কবিতায় তিনি এমনকি সুন্দরী গাছের কথাকে উল্লেখ করে কবিকে কটাক্ষ করেন। তিনি বলেন, কবির তন্ময়তায় না হয় গাছও সুন্দরী হইল !! (তিনি সুন্দরবনের এই সুন্দরী গাছের কথা জানতেন না)। তার পত্রিকায় জীবাননন্দের নাম বিকৃত করে ছাপতেন, লিখতেন জীবানন্দ। জীবনানন্দকে কবি গন্ডার বলে ডাকতেন। এছাড়াও তাকে বর্নবাদ মূলক বক্তব্য রাখতে দেখা গেছে প্রায়ই। তৎকালীন পূর্ববঙ্গের লেখক কবিদের লেখাকে তিনি তাচ্ছিল্য করতেন পূর্ববঙ্গীয় সাহিত্য বলে। তিনি ব্যঙ্গ করে লেখেন,

এই সাহিত্যের স্পেন্সার হইতেছেন ভাওয়ালের কবি গোবিন্দ দাস, ব্রাউন-কালীপ্রসন্ন ঘোষ, বিদ্যাসাগর এবং হু্‌ইটম্যান- শ্রী জীবানন্দ (লক্ষ্যনীয় কবির নাম বিকৃতি)দাশগুপ্ত; ইহার ম্যাথু আর্নল্ড ও ওয়াল্টার পেটার যথাক্রমে শ্রীমান বুদ্ধদেব বসু ও শ্রীমান অজিতকুমার দত্ত।

* কবিতাটি কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কাছেও কিছুটা অগ্রহনযোগ্য মনে হয়েছিল যার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি সুধীন দত্তের কাছে বলেন, জীবনানন্দ দাশের কবিতায় কোন স্টাইল নেই, আছে পাচমিশালী ভাব।প্রকৃতপক্ষে বাংলা কাব্যজগতে রবীন্দ্রনাথের সমকালীন আর কোন কবি লেখকই তাদের আঙ্গিক এবং ভাষাতাত্ত্বিক দিক থেক রবীন্দ্রনাথের থেকে এত বেশি পৃথক ছিলেন না। সেই ক্ষেত্রে চিরকালনীন রোম্যান্টিসিজম ও আধ্যাত্ববাদের কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনানন্দ দাশের মানবের চিরন্তন বিপন্নতা এবং না পাওয়ার বোধে নুব্জ স্যুরিয়ালিস্টিক কবিতাটি ভাল না লাগাটাই ছিল স্বাভাবিক।

বিরূপ সমালোচনায় অতিষ্ঠ হয়ে জীবনানন্দ প্রথম বারের মত তার কবিতার সমালোচনা বিষয়ে কলম ধরলেন। যদিও এই প্রতিক্রিয়াটি জীবনানন্দের স্বভাব সুলভ আচরণের কারণেই প্রকাশ পায়নি তার জীবদ্দশায়। পরবর্তীতে জীবনানন্দ অনুগ্রাহী কবি ভূমেন্দ্র গুহর কাছে লেখাটি ছিল। তিনি সেটি শতভিষা পত্রিকার ১৩৮১ সংখ্যায় প্রকাশ করেন।

আমার ক্যাম্পে কবিতাটি সম্বন্ধে দু একটা কথা বলা দরকার বলে মনে করি। কবিতাটি যখন শেষ হয় তখন মনে হয়েছিল সহজ শব্দে-শাদা ভাষায় লিখেছি বটে, কিন্তু তবুও কবিতাটি অনেকে বুঝবে না। বাস্তবিকই ক্যাম্পে কবিতাটির মানে অনেকের কাছে এতই দুর্বোধ্য রয়ে গেছে যে এ কবিতাটিকে তার নির্বিবাদে অশ্লীল বলে মনে করেছেন।

কিন্তু তবুও ক্যাম্পে কবিতাটি অশ্লীল নয়। যদি কোন একমাত্র স্থির নিষ্কম্প সুর এই কবিতাটিতে থেকে থাকে তবে তা জীবনের-মানুষের-কীট-ফড়িঙের সবার জীবনেরই নি:সঙ্গতার সুর। সৃষ্টির হাতে আমরা ঢের নি:সহায়- ক্যাম্পে কবিতাটির ইঙ্গিত এই; এইমাত্র। কবিতাটির এই সুর শিকারী, শিকার, হিংসা এবং প্রলোভনে ভুলিয়ে যে হিসা সফল-পৃথিবীর এই সব ব্যবহারে বিরক্ত তত নয়- বিষণ্ন যতখানি; বিষণ্ন নিরাশ্রয়অ ক্যাম্পে কবিতায় কবির মনে হয়েছে তবু যে স্থুল হরিণ শিকারীই শুধু প্রলোভনে ভুলিয়ে হিংসার আড়ম্বর জাকাচ্ছে না, সৃষ্টিই তেমন এক শিকারী, আমাদের সকলের জীবন নিয়েই যেন তার সকল শিকার চলছে; প্রেম-প্রাণ-স্বপ্নের একটা ওলট পালট ধ্বংসের নিরবচ্ছিন্ন আয়োজন যেন সবদিকে: king lear এর 'As this to wanton toys are we to the gods, they kill us for their sport' এই আয়োজন।


বাংলা সাহিত্যে-অন্তত কাব্যে এ সুর-ক্যাম্পে কবিতাটির এই পবিত্র কঠিন নিরাশ্রয়তার সুর: 'জোৎস্নায় ওই মৃত মৃগদের মত আমরা সবাই'- এই সুর আগে এসেছে কিনা জানিনা। অন্তত: এ সুরের সঙ্গে চলতি বাঙালী পাঠক ও লেখক যে খুব কম পরিচিত তা নি:সঙ্কোচে বলা যেতে পারে। যে জিনিস অভ্যস্থ বুদ্ধি বিচার কল্পনাকে আঘাত করে-যা পরিচিত নয় তার অপরাধ ঢের। কিন্তু তবুও অশ্লীলতার দোষে ক্যাম্পে কবিতাটি সবচেয়ে কম অপরাধী। ইংরেজী, জার্মান বা ফ্রেঞ্চ এ কবিতাটি অনুবাদ করে যদি বিদেশী literacy circle - এ পাঠানো হ'ত তাহলে এ কবিতাটির কিরকম সমালোচনা হ'ত ধারনা করতে পারা যায়; ক্যাম্পে কবিতাটির যে সুরের কথা আমি ইতিপূর্বে বলেছি তাই নিয়ে বিশ্লেষণ চলত। দু একটি prurient মন ছাড়া এ কবিতাটির ভিতর থেকেই নিজেদের প্রয়োজনীয় খোরাক খুজে বার করবার অবাধ শক্তি যাদের রয়েছে;এই তাদের একমাত্র শক্তি, এই prurience-র কাছে ক্যাম্পে অশ্লীল- আকাশের নক্ষত্রও শ্লীল নয়। শেলীর 'souls' 'sisters' পাশ্চাত্য কবি ও সমালোচক ও পাঠকদের গভীর আদরের expression কিন্তু হৃদয়ের বোন (এই expressionটির জন্য আমি শেলীর কাছে ঋণী )- এই শব্দ দুটি prurient অন্ত:করণকে শুধু বুঝতে দেয় যে সে কত prurient-তার ভিতরে অন্য কোন চেতনা জাগায় না। Muteykeh (একটি ঘোটকী) সম্বন্ধে browning বলেছেন, 'She was the child of his heart by day, the wife of his breast by night,' না জানি browning সম্বন্ধে prurience কি বলত।

কিন্তু বাংলাদেশে সজনে গাছ ছাড়া যে আরো ঢের গাছ আছে- সুন্দরী গাছ বাংলার বিশাল সুন্দর-বন ছেয়ে রয়েছে যে সজনের কাছে তা অবিদিত থাকতে পারে- prurience এর কাছে প্রকৃত সমালোচকের অন্তরাত্মা যেমন চিরকালই অজ্ঞাত, অনাবিষ্কৃত।


বাংলাদেশের সব কবিই এই ১৯৩২ সালে কলেজীয় কবিতা যুদ্ধের naivete-র ভিতর রয়ে যায় নি। কিন্তু হায়, যদি তেমন হ'য়ে থাকতে পারা যেত। সহজ সরল বোধ নিয়ে সুসাধ্য-সুগম পথে চিন্তালেশশূণ্যতার অপরূপ উল্লাসে জীবন কত মজারই না হ'ত তাহ'লে।


বুদ্ধদেব বসু এই বিষয়টির (সজনীকান্তের ক্রমাগত সমালোচনা) অনিবার্য ফল হিসেবে জীবনানন্দের কলকাতা সিটি কলেজ থেকে চাকরি যাবার কথা লেখেন। এই বিষয় নিয়ে কলকাতার দেশ পত্রিকায় (১৯৬৮ সালে)তিনি একটি নাটিকা লেখেন যেখানে একজন লেখক এবং একজন অধ্যাপক আলোচনা করছেন জীবনানন্দের চাকরি যাবার কারণ নিয়ে, যার উত্তর লুকিয়ে আছে ঘাইহরিণীতে।

তিনি আরো এক জায়গায় লেখেন, এ কথাটি এখন আর অপ্রকাশ্য নেই যে, পরিচয়ে প্রকাশের পরে ক্যাম্পে কবিতাটির সম্বন্ধে অশ্লীলতার নির্বোধ ও দুর্বোধ্য অভিযোগ এমন ভাবে রাষ্ট্র হয়েছিল যে কলকাতার কোন এক কলেজের শুচিবায়ুগ্রস্ত অধ্যক্ষ তাঁকে অধ্যাপনা থেকে অপসারিত করে দেন (কবিতা পৌষ, ১৩৬১)

বুদ্ধদেব বসু যে বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। কেননা কলকাতা সিটি কলেজ থেকে তিনি অপসারিত হন ১৯২৮ সালে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক পরিস্থিতে। আর ক্যাম্পে কবিতাটি প্রকাশিত হয় ১৯৩২ সালে। যাই হোক ক্যাম্পে কবিতার বিষয়ে তৎকালে এই প্রবল সমালোচনায় বিরক্ত হয়েই হোক, কিংবা তৎকালীন লেখক সমাজের প্রতি অভিমান বশতই হোক, কিংবা নিজের সাহিত্য কীর্তির সামর্থ্য বিষয়ে সন্দিহান হয়েই হোক, ১৯৩৫ সালে বুদ্ধদেব বসু, প্রেমেন্দ্র মিত্র এবং সমর সেন সম্পাদিত 'কবিতা' পত্রিকাটি বের হবার আগে লেখা আর পত্রিকায় ছাপতে দেননি। এ সময়ে কল্লোল, প্রগতি বন্ধ হয়ে যায়। তবে আপন মনে নিভৃতে লিখে গেছেন এই নির্জনতার চাষী বিষাদ লিরিকের জন্মদাতা শুদ্ধতম কবি জীবনানন্দ দাশ।

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১১:৩৯
৫৪টি মন্তব্য ৫৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জীবনের গল্প

লিখেছেন ঢাকার লোক, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৩৫

মাত্র মাস দুই আগে আমার এক আত্মীয়ের সাথে দেখা আমার এক বোনের বাড়ি। তার স্ত্রী মারা গেছেন তার সপ্তাহ দুই আগে। মক্কায় উমরাহ করতে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমান

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:১২

" অভিমান "

তোমার ঠোঁটে বোল শিখেছি
তুমি আমার মা, কেমন করে
ভুলছ আমায় বলতে
পারিনা। এমন করে চলে
গেলে, ফিরে ও এলেনা। হয়তো
তোমার সুখেই কাটছে দিন,
আমায় ভাবছ না।

আমি এখন সাগর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×