somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুটি প্রবন্ধ : কবিতার কথা এবং শিল্প (Art) : রবিউল মানিক

১১ ই মে, ২০১২ দুপুর ২:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় বন্ধুরা, আজকের পোস্টটি একেবারেই ব্যতিক্রমধর্মী পোস্ট। সাহিত্য সমালোচক রবিউল মানিক ফেসবুকে একটি গ্রুপে এই লেখা দুটি শেয়ার করেছিলেন। যেহেতু তিনি ব্লগ লেখেন না, তাই উনার অনুমতিক্রমে পোস্টটি ব্লগে শেয়ার করছি। আমি মনে করি যারা সাহিত্য নিয়ে ব্লগিঙ করেন তাদের কাছে প্রবন্ধ দুটি ভাল লাগবে।

*********************** কবিতার কথা ******************
'কবিতা' সাহিত্যের আদি ও প্রাচীনতম শাখা। সকল ভাষারই প্রাচীন নিদর্শন হল 'কবিতা'। যিনি কবিতা লেখেন, তিনিই কবি। কিন্তু কবিতা? কবিতার অবয়ব কিংবা কবিতা কি? কবিতার প্রকৃত অর্থ কিংবা সংজ্ঞা কি?

কবিতার ব্যাপকতার জন্যে আজ পর্য্যন্ত একে সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করা যায় নি। একেকজন একেকভাবে কবিতাকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। তাদের সংজ্ঞা ও দর্শন যেমন যুক্তিযু্ক্ত ভাবে আবেগপূর্ন, তেমনি নান্দনিকতায় ভরপুর। জীবনানন্দের কাছে কবিতা ছিল অনেকরকম। বুদ্ধদেব বসু মনে করতেন,' কবিতা সম্বন্ধে 'বোঝা' কথাটাই অপ্রসঙ্গিক। কবিতা আমরা বুঝিনা, কবিতা আমরা অনুভব করি। 'শামসুর রাহমানের মতে, 'কবিতা আসলে বোধের ব্যাপার। একে সংজ্ঞা দিয়ে বোঝানো মুশকিল।' কবিতা বোঝার জিনিস নয়, অনুভবের, উপলব্ধির জিনিস'বলেছেন হুমায়ুন আজাদ। আবু হাসান শাহরিয়ারের মতে, 'একেকজন কবির কাছে কবিতার অর্থ একেকরকম। তাই এ
প্রশ্নের কোনও সরল একরৈখিক উত্তর নেই।

বোদলেয়ার কবিতাকেই কবিতার শেষকথা বলে মনে করতেন। রবার্ট ফ্রস্ট'র কাছে কবিতা হল পারফরমেন্স ইন ওয়ার্ডস। কোলরিজের কাছে 'গদ্য মানে সর্বোৎকৃষ্টভাবে সাজানো আর পদ্য হল সর্বোৎকৃষ্ট শব্দ সর্বোৎকৃষ্টভাবে সাজানো। 'কীটস মনে করতেন, 'কবিতা মুগ্ধ করবে তার সুক্ষ্ম অপরিমেয়তায়, একটি ঝংকারে নয়। পাঠকের মনে হবে এ যেন তারই সর্বোত্তম চিন্তা যা ক্রমশঃ ভেসে উঠছে তার স্মৃতিতে। '

এলিয়ট জানতেন, 'কবিতা রচনা হলো রক্তকে কালিতে রুপান্তর করার যন্ত্রণা।'মহান দার্শনিক এরিষ্টটলের কাছে কবিতা ছিল দর্শনের চেয়ে বেশী,ইতিহাসের চেয়ে বড়। ' এয়ার্ডসওয়ার্থ বলতেন,'কবিতা সমস্ত জ্ঞানের শ্বাস-প্রশ্বাস আর সুক্ষ্ম আত্মা।'

এতো গেলো বোদ্ধা কবিদের অভিমত কিন্তু আমরা যারা কবিতার সাধারণ পাঠক! তাদের কাছেকবিতার স্বরুপ কিংবা অবয়ব কেমন? আমি বিশ্বাস করি কবিতা বোঝার বিষয় নয়, এটাকে অনুভবে আয়ত্বে নিতে হয়। কোন কবিই পূর্ব-নির্ধারীত পট-ভূমিকায় লেখেন না। স্থান-কাল,পরিবেশ কিংবা কবির হৃদয়াবেগ, অনুভূতি কবিতাকে শেষ পর্য্যন্ত কোথায় নিয়ে যাবে তা কবিতার স্রষ্টা কবি তা জানেন না। কেননা বেদনার্ত হৃদয়ই কবিতার জন্মভূমি কিংবা কবিতা কবিরই জীবনের প্রতিফলন। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের যে ঘাত-প্রতিঘাত কবি তা নিজ হৃদয়ে ধারণ করে বা সহজ ভাষায় বলতে গেলে বলতে হয় ব্যক্তি বা সামাজিক জীবনের চিরকালীন হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, প্রেম-বিরহ, সামাজিক উৎসব, অনাচারই কবির কবিতার উপজীব্য বা পটভূমি। কবির কবিতার এ পটভূমি কোন নির্দিষ্ট গন্ডীতে আবদ্ধ থাকে না। এ পটভূমি কখনো কখনো ব্যক্তি কিংবা সামাজিক জীবনের গন্ডি পেরিয়ে যায়; পেরিয়ে যায় দেশ-মহাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে সমকাল-মহাকাল...। ইতঃপূর্বে যা কখনো ছিল না বা নেই এমন কল্পরাজ্যও কবিতার পটভূমি__ এভাবেই কবিতা হয়ে ওঠে সার্বজনীন।

আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে শাদা চোখে যা দেখি কবিরা তা থেকেই জীবনের মৌল পাঠ গ্রহন করে থাকেন । অবারিত দিগন্তহীন প্রকৃতি কিংবা প্রাত্যাহিক জীবনের সুখ-দুঃখ কিংবা অপমান-লাঞ্জনা থেকেও দৈনন্দিন জীবনের ব্যবহার্য্য শব্দাবলী ঘষে-মেজে তৈরী করেন কবিতার অবয়ব এরপর ছন্দ, কাব্যিক উপমা ও উৎপ্রেক্ষার শাব্দিক অলংকারে বিনির্মাণ করেন একটি কবিতা; যাতে থাকে কথা,বিচার ও তাৎপর্য্যের সমন্বয়। আমরা সাধারণেরা অভিধানের শব্দাবলী জীবনের প্রয়োজনে নিছক ব্যবহার করি কিন্তু কবির ব্যবহৃত আভিধানিক শব্দাবলী কবিতা প্রেমিকার মতো অঙ্গে ধারণ করে; এখানেই কবির স্বার্থকতা।

আমরা দেখি হাইড্র্যান্ট উপচে ওঠা জল চেটে নেয় কুষ্ঠরোগী কিন্তু কবি
দেখে,"হাইড্র্যান্ট খুলে দিয়ে কুষ্ঠরোগী চেটে নেয় জল;/অথবা
সে-হাইড্র্যান্ট হয়তো বা গিয়েছিল ফেঁসে/(রাত্রিঃজীবনানন্দ দাশ)''

কবিতায় ব্যবহৃত প্রত্যেকটি শব্দই একেকটি চিত্রকর্ম। উপমা, উৎপ্রেক্ষা, ভাবনা বা কবির বোধ, মননে, চৈতন্যে মুগ্ধতার আবেশ ও প্রকাশভঙ্গির কারণে কবিতা হয়ে ওঠে পরিপূর্ণ ও জীবন্ত। কবির বিমূর্ত ভাবনায় কবিতা কখনো কখনো নিছক প্রেমের কোমল অনুভূতি, বিরহের বেদনা বিধুর কান্না, কখনো কখনো শোকাহত হৃদয়ের আর্তনাদ, কখনো কখনো বা অধিকার বঞ্চিত শোষিত-নিপীড়িত মানুষের মুখপাত্র, কখনো কখনো বা স্বাধীনতা মন্ত্রে উজ্জীবিত সশস্ত্র সৈনিক,কখনো কখনো বা সমকাল-মহাকালের প্রতিভূ হয়ে এসেছে কবিতা_ এভাবেই কবিতা হয়ে ওঠে শাশ্বত।


কবিতা একটি স্বতস্ফুর্ত প্রণোদনা; যা নিরন্তর সাধনার মাধ্যমে অর্জন করতে হয়। কবির ভাষায়
'নিরন্তর প্রস্ততিই তাকে অবচতনে ভাবায়। বাস্তবের সঙ্গে কল্পনার, নিজের সঙ্গে অন্যের, বর্তমানের সঙ্গে অবর্তমানের, সমকালের সঙ্গে মহাকালের নিরন্তর মিশ্রণ ঘটে চলেছে কবি সত্তার অবচেতনে।মিশ্রণ যত বেশী নিরবিচ্ছিন্ন।কবিতাও তত বেশী মহার্ঘ্য।'
.......................................(কবিতার বীজতলাঃ আবু হাসান শাহরিয়ার)।

ভাব প্রকাশের সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম হল 'কবিতা'। কেননা কবিতা এমন এক রচনা ;যা নান্দনিক ও শৈল্পিকতায় ভরপুর। কবিতার মাধ্যমেই একটি জাতির বুদ্ধিভিত্তিক স্ফুরন ও মননশীলতার নিখুত চিত্র অংকন করা সম্ভব। কবিতা ছাড়া বুদ্ধিভিত্তিক স্ফুরন ও মননশীলতার চিত্র অন্য কোন মাধ্যমে তা অপূর্নাঙ্গই থেকে যায়। কবিতার গতি অজেয়। কবিতার নিজস্ব একটি উচ্ছাস রয়েছে,রয়েছে স্রোত;যা দিয়ে কবিতা এগিয়ে যায় নিজস্ব নিয়মে পূরাতন এবং জীর্ন রীতি-নীতি পেছনে ফেলে।

কবিতার এ স্রোত এমন অজেয় যা কখনো স্তব্ধ হবে না। জীবন স্তব্ধ হবে,কবিতা কখনোই নয়।চলার পথে কখনো কখনো বাঁক নেয় কবিতা যা রবীন্দ্রনাথের ভাষায় 'আধুনিকতা'( যদি কখনও সুযোগ ঘটে তবে 'আধুনিকতাবাদ' নিয়ে পরে আলোচনা করবো)। কবিতা স্বাধীন, দূর্বিনীত ও স্বেচ্ছাচারী। কবিতা আভিধানিক শব্দ ও ব্যকরণিক শৃংখল থেকে মুক্ত।

স্বাধীন, দূর্বিনীত ও স্বেচ্ছাচারীতার কারণে কবিতা সর্বদাই আধুনিকতা ও ধর্মীয় ও রাজন্যবর্গের শাষণ-শোষণ ও অন্যায়ের প্রতিবাদে মুখর। আর তাই কবিতাকে প্লেটো থেকে শুরু করে প্রতিক্রিয়াশীল মোল্লা-পুরুত,যাজক ও রাজ রোষাণলে পড়তে হয়েছে বারংবার। কখনো কখনো রাজানুকল্য ও প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীভূক্ত কবিও কবিতার বিপক্ষে চলে যান। কিন্তু কবিতার ইতিহাসের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই কবিতা কখনো অনাধুনিকতা কিংবা প্রতিক্রিশীলতাকে আকঁড়ে ধরে নি,বরাবরই তাকে পরিত্যাগ করেছে। প্রতিক্রিয়াশীল কবি আল মাহমুদের মতে,'প্রতিক্রিয়াশীলতাও কবিতা হতে পারে।'

কিন্তু না, কবিতার ইতিহাসে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, পাঠকেরা প্রতিক্রিশীল কবিতা সব সময়েই বর্জন করে এসেছে। মানুষের ভেতরের শুভ আকাঙ্ক্ষা কখনোই প্রতিক্রিয়াশীলতাকে মানুষের জন্যে শুভ ও মঙ্গলজনক মনে করেন নি। প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীর সমর্থক কবিরা সব সময়েই কালের বিচারে অপাংতেয় থেকে গেছে, কবি খ্যাতির পাশাপাশি তারা পাঠক কতৃক ধিকৃতও হয়ে এসেছেন।

বিচিত্র এ পৃথিবীতে মানুষ বিভক্ত নানান বর্ণ ও জাতিতে, বিভক্ত নানান গোষ্ঠীতে, বিভক্ত নানান ভাষা ও উপ-ভাষায়। কিন্তু সব জাতির,সব গোষ্ঠীর সব ভাষাভাষী মানুষের মৌল অনুভূতির ভাষা এক এবং অভিন্ন। বিমূর্ত ও শাশ্বত এ অনুভূতির মূর্ত প্রকাশই কবিতা। কবিতার এ মানবিক আবেদন সর্বজন বিদিত ও স্বীকৃত। পল সেলেন'র মতে,'কবিতা মৌলিক কথা বলে,এতে নিকট ও দূর একাকার, একদিকে সে অন্ধকার আবার তা দূরের উজ্জ্বলতাও।

প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে আমাদের সুন্দর বাসযোগ্য এ পৃথিবী একদিন ধ্বংশ হয়ে যাবে। বিজ্ঞানীদের মতে সূর্য্যের জ্বালানীর উৎস হাইড্রোজেন নিঃশেষ হয়ে গেলে পৃথিবী নামক এ গ্রহ টা ধ্বংশ হয়ে যাবে (আমাদের ভীত হওয়ার কোন কারণ নেই, এটা ঘটবে আজ থেকে ৮০০কোটি বছর পর); ততদিন পর্যন্ত বেচে থাকবে মানুষ, বেচে থাকবে তার মনের সু-কোমল অনুভূতি, আবেগ, সংবেদনশীলতা, ততদিন পর্য্যন্ত থাকবে কবিতা। দৈনন্দিন বা প্রাত্যাহিক জীবনের নানা ঘটনার টান-পোড়নে আন্দোলিত হয়ে কবি স্বীয় হৃদয়ে তা ধারণ করে সেই অনুভূতির প্রতিওফলন ঘটাবেন কবিতায়। সংবেদনশীল মানুষ পড়বেন সে কবিতা।

সবশেষে প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশের একটি উদ্ধৃতি দেয়ার লোভ সংবরণ করতে পারছি না।

'......কবিতার ভিতর আনন্দ পাওয়া যায়;জীবনের সমস্যা ঘোলা জলের মূষিকাঞ্জলীর ভিতর শালিখের মতো স্নান না ক'রে আসন্ন নদীর ভিতর বিকেলের শাদা রৌদ্রেরমতো;-সৌন্দর্য্য ও নিরাকরণের স্বাদ পাওয়া যায়।(কবিতার কথা)

*******************************************************

++++++++++++++ শিল্প ++++++++++++++++

Art শব্দের বাংলা প্রতিশব্দ হল 'শিল্প'। ল্যাটিন শব্দ Ars থেকে গ্রিক ভাষায় বিবর্তনের মাধ্যমে ইংরেজীতে Art শব্দটি এসেছে। আদিমকাল থেকেই মানুষ নিজের অজান্তেই শিল্প সৃষ্টি করে আসছে। অরণ্যচারী, গুহাবাসী মানুষ শিল্প কি জানত না,বুঝত না শিল্পের স্বরুপ কি? আদিম মানুষ অন্ধকার দেখে, আগুন দেখে ভয় পেত, তেমনি পূর্ণচাঁদের আলো দেখে মোহিত হত, শিকার করা পশুকে ঘিরে গোল হয়ে মনের আনন্দে নেচে চলত।নিজের বাসস্থান গুহায় এঁকে রেখেছিল কল্পিত দেব-দেবী, শিকার দৃশ্য কিংবা স্বাভাবিক, দৈনন্দিন জীবনের চিত্র। এগুলো সবই শিল্পের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আর যে কোন শিল্পই দৃষ্টিনন্দন বা নান্দনিক।

মানুষের স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজ-কর্মে যে সৌন্দর্য্য ফুটে ওঠে তার সবই নান্দনিক। নিজের আলুলায়িত কেশ যখন কোন রমণী পরিচর্যা করে কিংবা ফুটপাথে বে-আব্রু রমণী সর্ব-সমক্ষে স্তন উন্মুক্ত করে সন্তানকে দুগ্ধ পানকরানোর ফলে যে সৌন্দর্য্যটুকু ফূটে ওঠে তার সবই নান্দনিক। W.B.Warsfild তাঁর Judgement in literature বইয়ে স্পষ্ট বলেছেন, 'Arts is an element in the life civilized man.'

মানুষের জীবন জটিলতম অধ্যায়। জীবনকে সাজাতেহয় নানা প্রকরণে। কারো কারো মতে এই প্রকরণই নন্দন ত্তত্ব।নন্দনত্তত্বের সঙ্গে সৌন্দর্য্যবোধ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। অনেকের কাছে নন্দনতত্ত্বই হল সৌন্দর্য্যতত্ত্ব। নন্দনত্তত্বের সংজ্ঞা নির্ণয় খুব সহজ কাজ নয় এর পরিধির ব্যাপক ও বিশালতার কারণে।

J.A.Cuddon তাঁর Penguin Dictionary of literary Terms and literary theory বইয়ে নন্দনত্তত্ব সম্পর্কে লেখেন,

'aestheticism:A complex term 'pregnant' with many connotations.The actual word derives from Greek aistheta 'thing perceptible by the senson':and Greek aisthetes denotes 'one who perceives.'

এই Aesthetics শব্দটি গ্রিক 'aisthesis' থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে ইংরেজীতে এসেছে বলে ধারণা করা হয়। গ্রিক 'aisthesis' শব্দটির অর্থ sense perception বা ইন্দ্রিয় প্রত্যক্ষতা। অন্য কথায় নন্দনতত্ত্বকে প্রত্যক্ষণ শাস্ত্র বললেও অত্যুক্তি হবে না। প্রাচীন সংস্কৃতে যাকে বলা হয়ে থাকে 'বীক্ষণশাস্ত্র'।বীক্ষণ শব্দের অর্থ বিশেষভাবে দেখা। অর্থাৎ গ্রিক প্রত্যক্ষণ ও সংস্কৃত বীক্ষণ একই অর্থ বহন করে থাকে।

Aesthetics শব্দটি প্রথম কে ব্যবহার করেছিলেন তার সঠিক কোন হদিস পাওয়া যায় না ।তবে
বম গার্টেন Meditationes philosophicae de nanullis ad poema pertinentibus বইয়ে প্রথম এই শব্দটির ব্যবহার করেন। এরপর ইমানুয়েল কান্ট Aesthetics শব্দটি ব্যবহার করেন ১৭৯০ সালে প্রকাশিত Critique of Judgement বইয়ে। F.T. Vischer তার Aesthetik oder Wissen Schafides Schonen শীর্ষক বইয়ে ১৮৪৩ সালে শব্দটির ব্যবহার করেন। ১৮৯০ সালে প্রকাশিত G.T Fechner এর পর Vorschule der Asthetik বইয়েও শব্দটির ব্যবহার পাওয়া যায়। ইউরোপীয় দর্শন চর্চায় Aesthetics শব্দটির অর্থের এই বিশেষীকরণ ব্যাপারটি হেগেল তাঁর Aesthetics বইয়ে উল্লেখ করেন।

পরবর্তীতে নন্দনতত্ত্ব বিষয়ে লেসিং, শিমার, গোয়েটে, শেলিং, শোপেন হাওয়ার, হিউম, বার্ক, রাস্কিন, ড্রাইডেন, পোপ প্রমুখ কবি ও দার্শনিক চিন্তাভাবনা ও আলোচনা করেন। আর ক্রোচে নন্দনতত্ত্বকে দার্শনিক তত্ত্বের রুপ দিলেন তাঁর শিল্পতত্ত্ব ও শিল্পতত্ত্বের ইতিহাস বইয়ে।

বম গার্টেনের মতে,যুক্তিনির্ভর জ্ঞানের লক্ষ্য সত্য,নান্দনিক জ্ঞানের লক্ষ্য সৌন্দর্য্য।বিচার ও পর্যবেক্ষন দ্বারা উপলব্ধিজাত চরম উৎকর্ষতাই সত্য।সৌন্দর্য্যের লক্ষ্য নির্ভেজাল আনন্দের উদ্রেক। সৌন্দর্য্যের সর্বোচ্চ অভিব্যক্তি প্রকৃতির অনুকরণ।

মেলডেনসন এর মতে,'সৌন্দর্য্যের বিকাশই 'শিল্প।' প্রকৃত পক্ষে মানুষের রুচিই সুন্দরের স্বরুপ নির্ধারণ করে থাকে।তবে রুচি সম্পর্কিত বিধি-বিধান অলিখিত এবং কোনো আইন-কানুন বা বিধি নিষেধ দিয়ে এর সীমা নির্ধারণ করা যায় না।

ডাচ লেখক হেমস্টার হুইস মনে করতেন, আনন্দ বিধায়ক বস্তুই সৌন্দর্য্য এবং স্বল্পতম সময়ের মধ্যে প্রচুর অনুভূতির সঞ্চারক বস্তুই সর্বাধিক আনন্দদায়ক এবং স্বল্পতম সময়ে বৃহৎ পরিমাণ অনুভূতি সঞ্চারক বলেই সুন্দর বস্তুর উপভোগ মানুষের অধিগম্য মহত্তম সংবেদনা।

কাল পরিক্রমায় সৌন্দর্য্যবোধ সম্পর্কে মানুষের ধারণা বদলে গেছে। নন্দনতত্ত্বের ব্যাখ্যা অনুযায়ী সৌন্দর্য্যের সনাতন ধারণা নয়, মানুষের চিন্তা, চেতনা এবং সৃজনশীলতার ভিত্তিতে যে আনন্দময় অপরুপ এক জগতের সৃষ্টি হয় তার সম্পূর্ণ পরিচয় পাওয়া যায়। যখন এই Aesthetics বা নন্দনতত্ত্ব শব্দটি প্রচলিত ছিল না তখনো এ বিষয়ে চিন্তা-ভাবনা ও অনুশীলন হয়েছে।

বেনেদিত্তো ক্রোচে শিল্পসৃষ্টি ও নন্দনতাত্ত্বিক ব্যাখ্যা বিষয়ে নূতন বক্তব্য রেখে নান্দনিকতার কেন্দ্রীয় অবস্থানে পরিবর্তন এনে দেন। 'শিল্প মানে প্রকাশ,প্রকাশ মানে সজ্ঞা (ইনট্যুইশন), শিল্প প্রকাশের সমার্থক এবং প্রকাশ আর সজ্ঞা একই।'

শিল্পবোধের সৌন্দর্য্য বিমূর্ত বা মূর্ত নয়,সফল প্রকাশ। শিল্পের এই সফল প্রকাশ সৌন্দর্য্য কিংবা সৌন্দর্য্য ব্যতিরেকে হতে পারে। বেনেদিত্তো ক্রোচে মনে করেন, শিল্পের এই সফল প্রকাশই Aesthetics বা নন্দনতত্ত্ব এর মূল বিষয়। প্লেটো শিল্পকে মনে করতেন মিথ্যার জগৎ কেননা শিল্প হচ্ছে, 'বিশেষের প্রতিভাসের অনুকরণ,'' বা 'Imitation of Imitation.'

শিল্প অনড় বা স্থবিরতা থেকে মুক্তি চায়। অনড়ত্ব বা স্থবিরতা থেকে মুক্তিলাভই হচ্ছে শিল্পের সার্থকতা। যে কোন শিল্পই মানুষের মনে আনন্দের অনুভূতি জাগায়। কিন্তু প্লেটো মনে করতেন শিল্পের আনন্দ পরিশেষে মানুষকে ভোগের পথে নিয়ে যায় এবং তাকে নীতিগতভাবে আদর্শভ্রষ্ট বা বিপথে চালনা করতে পারে। প্লেটো আরো মনে করতেন শিল্প যেমন একদিকে নিছক আনন্দ সৃষ্টি করে মানুষকে ভোগের পথে নিয়ে যায়, তেমনি শ্রোতা বা দর্শক বা পাঠককে ভাবাবেগে আপ্লুত করে ফলে সমাজ ও নৈতিক জীবন অবক্ষয়ের পথে যেতে পারে।সে কারণে প্লেটো শেষ পর্য্যন্ত শিল্পের জগৎকে প্রকৃত reality'র জগৎ বলে মনে করতেন না,মনে করতেন appearance এর জগৎ। পরিশেষে এই মিথ্যার জগৎ অমঙ্গল্বোধ জন্ম দেয় ফলে নৈতিকদৃঢ়তা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

প্লেটো তাঁর বিখ্যাত 'Republic' গ্রন্থে কবিদের ধান, দূর্বা ও চন্দনকাঠ দিয়ে নির্বাসন দিতে চেয়েছিলেন; যারফলে প্লেটোরও ঠাঁই হয়নি কবিতার ইতিহাসে। প্লেটোর প্রিয় কবি ছিলেন হোমার। সফোক্লিসের কবিতাও পছন্দ করেছিলেন তিনি। প্লেটো নিজেও প্রেমের আবেগে গদগদ দু'চারটে পদ্য লিখেছিলেন কিন্তু প্লেটোকে একজন ব্যর্থ বা সার্থক কবি বলা যাবে না কারণ তিনি কবিতার সাধনায় সিদ্ধি খোঁজেন নি। যেহেতু মানুষের চিন্তারাজ্যে প্লেটোর দর্শন আজও শেষ হয়ে যায় নি আর তাই তাঁর কবিতার পাঠক এখনো খুঁজে পাওয়া যায়।

মধ্যযুগীয় নন্দনতাত্ত্বক সেন্ট অগাস্টিন লৌকিক সৌন্দর্য্য ও টমাস একুইনাস দিব্য সৌন্দর্য্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। সৌন্দর্য্যকে দিব্য ও আত্মিকরুপে দেখে থাকেন প্লেটোবাদীরা আর এ্যারিস্টটলপন্থীরা সৌন্দর্য্যকে দেখে থাকেন অবয়বে। রেনেসাঁর কাল থেকে সর্বত্র যে রুপান্তরের পালা-বদল ঘটেছিল তা স্পর্শ করেছিল নন্দনতত্ত্বকেও। সৌন্দর্য্যকে আনন্দময় সত্যের অভিব্যক্তি বা প্রকাশরুপে দেখেছেন লাইবিৎনস, দেকার্তে, ক্রুমাৎস প্রমুখ। যাকে লাইবিৎনস Confused Knowledge বলে থাকেন বোম গার্টেন আবার তাকেই বলেন Sensitive Cognition। Kant'ই সর্বপ্রথম নন্দনতাত্ত্বিক আলোচনাকে প্রণালীবদ্ধ করে মানবচৈতন্যের কার্যকরী তিনটি বৃত্তিতে বিশুদ্ধ জ্ঞান,ব্যবহারিক প্রজ্ঞা ও উদ্দেশ্যমূলক বিচার ও প্রত্যক্ষণ করেছেন। গুণ, পরিমাপ, সম্বন্ধ ও আকৃতির সম্বনয়ের মাধ্যমে তিনি সুন্দরকে পর্যবেক্ষন করেছেন। তাই তার কাছে সুন্দর ধারণামূলক হলেও আনন্দদায়ক। রুচি ও রসবোধের সংমিশ্রনই হচ্ছে সুন্দর। সৌন্দর্য্য তত্ত্বের মূখ্য প্রবক্তা ও নান্দনিক দার্শনিক বেনেদিত্তো ক্রোচে সৌন্দর্য্যকে মিথ্যা বা সত্য বলেন নি। তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন মনের সক্রিয়তা ও বোধকে। সত্য, সৌন্দর্য্য, প্রয়োজন এবং মঙ্গলকে ক্রোচে শিল্প-সৌন্দর্য্যে আত্মিকভাবে অনুভবের দ্বারা প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করেন সৌন্দর্য্য অনুভূতি নির্ভর। আত্মিক অনুভব ক্রোচের সৌন্দর্য্যতত্ত্বে প্রকাশের মাধ্যমেই মূখ্যতঃ পরিলক্ষিত হলেও সৌন্দর্য্যের ধারণায় তিনি এর গুরুত্ব স্বীকার করেছেন। 'Beauty in its ultimate or Metaphysical character is an expression', উক্তি ও উপলব্ধির অদ্বৈত'তখনই স্বার্থক,যখন তা সুন্দরভাবে বিন্যস্ত ও প্রকাশিত হয়।

চার্লস ডারউইন শুধু মানুষ নয়, পশু-পাখির মধ্যে সৌন্দর্য্যবোধের অনুভূতি লক্ষ্য করেছিলেন। পাখিরা নিজেদের বাসা অলংকৃত করে, সঙ্গীনীদের অঙ্গধৃত সৌন্দর্য্যের মূল্যও দেয়। টলস্টয় মনে করতেন শিল্প একটি মানবিক ক্রিয়া। এক মানব হৃদয় থেকে তা আরেক মানব হৃদয়ে ভাবানুভূতি সঞ্চারিত করাই এর মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু সমস্ত মানবিক ক্রিয়াই নির্বিচারে শিল্পের পর্য্যায়ে পড়ে না। শিল্পের স্বরুপ গ্রন্থের প্রারম্ভেই তিনি দেখিয়েছেন শিল্প বিনির্মাণে কি বিপুল পরিমাণ শ্রম ও সময় ব্য্যহয় এবং অর্থহীন,উদ্দেশ্যহীন শিল্প সৃস্টির জন্যে কত শ্রমিকের নিরানন্দ শ্রম অপচয় হয়। একটি নাটকের রিহার্সেল বা মহড়া বর্ণনা প্রসঙ্গে তিনি এটা বলেছেন। টলস্টয় আরো মনে করতেন যে, সৌন্দর্য্যের কোন সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই যার সাহায্যে শিল্পের স্বরুপ বোঝা যায়। সৌন্দর্য্যের যাকিছু সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে তা প্রকৃতির অনুকৃতি কিংবা বিষয়ের অনুগামিতা কিংবা বস্তুর অন্তর্গত সুমিতি-পরিমিতি-ঐক্য-সামঞ্জস্য সুষমাই হোক-শিল্পের সর্বজনগ্রাহ্য সংজ্ঞা আজও কেউ দিতে পারেন নি। বড়জোর শিল্পের দু'য়েকটি লক্ষন তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে মাত্র ।

'What Is Art(শিল্পের স্বরুপ)' গ্রন্থে তিনি বলেছেন,'' Such being the position of affairs it would seem only natural that the decline of art should decline to content itself with a definition of art based on beauty.''

কার্ল মার্কস একদিকে যেমন বিশুদ্ধ নান্দনিকতায় বিশ্বাসী ছিলেন না অপরদিকে মানব-সংস্কৃতির বিবর্তনে শিল্প ও সাহিত্যের ভূমিকার পর্য্যালোচনা বা মূল্যায়নের বাঁধাধরা নিয়মো মানতেন না। মানুষের সমাজ ও ইতিহাস বিচারে যে মৌল প্রত্যয়, সেই যুক্তি পরস্পরার ভিত্তিতেই তাঁর নন্দনতত্ত্ব ধারণা নিরুপিত। মার্কসের কোন পূর্ণাঙ্গ ও সুসংবদ্ধ নন্দনতত্ত্ব খুঁজে পাওয়া যায় নি; নন্দনতত্ত্ব সম্পর্কে তাঁর কোন প্রবন্ধও বের হয় নি। মার্কসের নন্দনতত্ত্ব সম্পর্কিত ধারণা তাঁর অন্যান্য রচনার মধ্যে প্রক্ষিপ্ত হয়েছে। তিনি ১৮৪০ সালে জার্মান ঐতিহ্যের দর্শনের প্রভাব সম্বন্ধে আলোচনা প্রসঙ্গে অনেক নান্দনিক প্রশ্নের অবতারণা করেন। মার্কস তাঁর জীবনের প্রথমের দিকের লেখায় দর্শন এবং পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির প্রতি মনোঃসংযোগ করেছিলেন। তাঁর এই উভয়পক্ষের লেখার মধ্যে নান্দনিক বিষয় সম্পর্কে মন্তব্যগুলো ছড়িয়ে আছে এবং এগুলোর মধ্যে সংযোগ বর্তমান। তিনি জীবনের প্রথমের দিকের লেখাগুলোতে নান্দনিক বোধকে অস্তিত্বের প্রকৃতির দিকে পথ পথ প্রদর্শক এবং শিল্পকে উপরি কাঠামোর বিশেষ বিভাগ হিসাবে গুরুত্ব দিয়েছেন।


সহায়ক গ্রন্থাবলীঃ
১.বাংলাদেশের কবিতার নন্দনতত্ত্বঃমাসুদুল হক।
২.শিল্পের স্বরুপ/লিও টলস্টয়।অনুবাদঃদ্বিজেন্দ্রলাল নাথ।
৩.সবার জন্য নন্দনতত্ত্বঃহাসনাত আবদুল হাই।
৪.কবিতার বীজতলাঃআবু হাসান শাহরিয়র।
৫.নন্দনতত্ত্বঃডঃ সুবীর কুমার নন্দী।
৬.নন্দনতত্ত্ব এর সূত্রঃ অরুণ ভট্টাচার্য।
৭.নন্দনতত্ত্বঃ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
৮.নন্দনতত্ত্বে প্রতীচ্যঃ ড.সুখেন বিশ্বাস।
৯.নন্দনতত্ত্বে প্রাচ্যঃড.সুখেন বিশ্বাস।
১০.সঙ্গীত ও নন্দনতত্ত্বঃসুচেতা চৌধুরী।
১১.প্রবন্ধঃবেনেদিত্তো ক্রোচে/ তরুণ মুখোপাধ্যায় ।
১৩.আধুনিকোত্তরবাদের নন্দনতত্ত্বঃ জিললুর রহমান।
১৪.A Guide To Aesthetics:Prof.Prabasjiban Choudhury.
১৫.Studies In Comparative Aesthetics: Pravas Jivan Chaudhury.
১৬.প্রবন্ধঃলিও টলস্টয়/অজয় কুমার ঘোষ।

বি.দ্র : পোস্টটি আমার মৌলিক লেখা নয় এবং পোস্ট টি করার মূল উদ্দেশ্য লেখা দুটোকে আরো বেশি পাঠকের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া। তাই এই পোস্টে কোন মন্তব্য গ্রহণ করছি না
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১২ দুপুর ২:৪৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×