somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'বাংলাদেশকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার দিন শেষ'

২০ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তুরস্কের বাংলাদেশ দূতাবাসের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান প্রতিবছরে মতো এবারও উৎসাহ-উদ্দীপনা আর বাঙালির মিলনমেলায় পরিণত হয়। প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে জাতীয় দিনগুলোর গুরুত্ব অনেক। এই দিনগুলোতে শধু উদযাপনের বাইরেও বিদেশে কর্মের ফাঁকে স্বদেশি মানুষের সঙ্গে আড্ডা দেয়ার আলাপ করার সুযোগ থাকে। বাংলদেশের আঙ্কারা দূতাবাস গত রোববার আয়োজন করে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস অনুষ্ঠান। তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. আল্লামা সিদ্দিকী তার ২৭ বছরের চাকরিজীবনে বাংলাদেশ ছাড়াও পাঁচটি দেশে দায়িত্বপালন করেছেন। গত তিন বছর ধরে তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। অনুষ্ঠান শেষে যুগান্তরের জন্য তার বিশেষ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন সারওয়ার আলম


যুগান্তর: দেশের বাইরে প্রায় ৬ হাজার মাইল দূরে থেকে বিজয় দিবস পালন করার ভিন্নমাত্রাটা কী?


আল্লামা সিদ্দিকী: বিজয় দিবস বা দেশের বিভিন্ন বিশেষ দিনগুলোকে বিদেশের মাটিতে স্মরণ করার আনন্দ অপার। এবং খুবই অসাধারণ অনুভূতি ভেতরে কাজ করে। আমি নিশ্চিত যে আমার শুধু নয়, যে কোনো প্রবাসী দেশ সচেতন বাংলদেশি নাগরিকেরই ভেতরে এ রকম অনুভূতি এই দিবসগুলোর প্রাক্কালে কাজ করে। একটা গর্বের, একটা প্রাপ্তির, একটা আকাঙ্ক্ষা পূরণের, একটা শান্তির, একটা আত্মবিশ্বাসের, একটা সাহসের প্রত্যয় বা অনুভূতি ভেতরে কাজ করে। আমি খুবই আনন্দিত হই যখন আমাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আমাদের প্রবাসী ভাই ও বোনেরা আমাদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন এবং অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানের কোনো কোনো পর্বে তাদের মূল্যবান অংশগ্রহণও থাকে। এটা অত্যন্ত আনন্দের।

যুগান্তর: দেশের ভেতরে বিজয় দিবস উদযাপন আর দেশের বাইরে বিজয় দিবস উদযাপনের মধ্যে অনুভূতির দিক থেকে পার্থক্যটা কেমন?

আল্লামা সিদ্দিকী: স্কেলে ডেফিনিটলি অনেক পার্থক্য। যেমন দেশের ভিতরে মানুষ বিজয় দিবস উপলক্ষে যেভাবে সকলকে নিয়ে আনন্দ উৎসব করতে পারে আমরা বিদেশে তো সেটা পারি না। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে কাজ করতে হয়। যেমন আবহাওয়ার কথাই ধরা যাক, এখানে হয়তো এমন হতে পারতো যে আজকেই বরফ পড়ছে, এমন হতে পারতো যে আজকে বৃষ্টি পড়ছে। চারপাশে অন্য দেশের ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ। তারা তো আমাদের এই দিনটাকে এইভাবে চেনে না। তো এখানে চ্যালেঞ্জঅনেক। বিদেশে চ্যালেঞ্জ অনেক। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জগুলো ওভারকাম করার ভেতরে আনন্দও অনেক বেশি।


যুগান্তর: দেশের ভেতরে তো আনন্দ এবং গৌরব এর মধ্যে উদযাপিত হয় কিন্তু দেশের বাইরে ভিন দেশের মানুষের কাছে আমাদের এই গৌরবগাঁথাকে তুলে ধরা অন্যরকম একটা আনন্দ নয় কি?


আল্লামা সিদ্দিকী: নিশ্চিতভাবেই তাই। যেমন আজকে আমাদের অনুষ্ঠানে প্রায় ২০০ জন লোক আসলেন। এই দুইশ জনের ভেতরে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী এবং আমাদের এই ছোট কমিউনিটির সদস্য ছিলেন হয়তো ৭০-৮০ জন বা ১০০ জন। আর বাকি ১০০ জন ছিলেন কিন্তু বিদেশি।

শুধু তুরস্ক থেকেই নয়, কেউ কেউ এসেছেন অন্য দেশ থেকে। সব মিলিয়ে এটা ছোট্ট পরিসরে আন্তর্জাতিক একটা মেলায় পরিণত হয়েছে বলে এটা খুবই আনন্দদায়ক একটা ব্যাপার। যখন আমাদের দেশকে, অতীত ইতিহাস, গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস সহ বর্তমান উন্নয়ন, বর্তমান এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের কাহিনী তাদের সামনে আমরা তুলে ধরতে পারি, তখন গর্বে বুক ভরে যায়।

যুগান্তর: এই বিশেষ দিবসে কোন কোন বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?

আল্লামা সিদ্দিকী: আজকে এই বিজয়ের শুভলগ্নে যারা আমাদের দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, যাদের সঠিক দাফন বা অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয় নাই, যারা জানতেন না কালকে বাংলাদেশ স্বাধীন হবে, যারা জানতেন না যে বাংলাদেশের একদিন আংকারাতে, ওয়াশিংটনে, টোকিওতে দূতাবাস হবে, যারা জানতেন না যে একসময় বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি লোক পৃথিবীর ১০০ টা দেশে বসবাস করবে আমি সেই

সকল শহীদদের অত্যন্ত গভীরশ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমাদের অযুত-নিযুত শহীদদের কথা স্মরণ করতে হবে। যারা সাধারণ মানুষের ছেলে, কৃষকের ছেলে, শ্রমিকের ছেলে। যারা কিছুই জানতেন না। যারা আক্রান্ত হয়ে মানুষকে বাঁচানোর জন্য এবং দেশকে স্বাধীন করার জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। তাদেরকে স্মরণ করতে হবে।

এই দেশের (তুরস্কের) মানুষ তাদের জাতীয় নেতাকে খুব শ্রদ্ধা করে। দুর্ভাগ্যের বিষয় আমরা আমাদের দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে এভাবে ওলট-পালট করেছি যে, একটা সময় ছিল যখন বঙ্গবন্ধুর নাম নেয়া বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং সরকারিভাবে অপরাধ বলে গণ্য হতো। আমার মতো সরকারি লোকজন যদি বঙ্গবন্ধুর নাম নিতেন তাহলে তাদের চাকরি চলে যেত।

কোনো মানুষের মধ্যে যদি সামান্যতম কৃতজ্ঞতাবোধ থাকে তাহলে তার প্রথমেই প্রতিদিন স্মরণ করতে হবে বঙ্গবন্ধুকে। প্রতিদিন: সকালে, দুপুরে, বিকালে।

বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তখন বাংলাদেশের চিন্তাও কেউ করত না। বাংলাদেশের কোনো নেতা না। বঙ্গবন্ধু সারাজীবন একটাই স্বপ্ন দেখেছেন এবং সেই স্বপ্নটাকে তিনি বাস্তবায়ন করছেন আর তা হলো বাংলাদেশকে স্বাধীন করা। এই যে আমরা এখানে স্যুট-টাই-কোট পরে বসে আছি তা ওই স্বপ্নের জন্য। এটা থেকে যে বিচ্যুত হয়, সে বিবেকহীন বা অকৃতজ্ঞ নয়, সে বেঈমান।

যুগান্তর: স্বাধীনতার ৪৮ বছরে এসে আমাদের অর্জন কী?

আল্লামা সিদ্দিকী: আজকে বাংলাদেশ আত্মমর্যাদার একটা জায়গায় এসে উপস্থিত হয়েছে। আজ বাংলাদেশ যেখানে এসেছে তাতে আমরা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। আমরা যে যেখানে থাকি, দেশে থাকি বা বিদেশে থাকি, এই কথাগুলো স্মরণ করতে হবে, দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশের জন্য দোয়া করতে হবে।

আমাদের সবাইকে সামনের কথা ভাবতে হবে। দেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা করতে হবে। মনে রাখতে হবে সমানে আমাদের আরও অনেক উজ্জ্বল এক ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।

আল্লাহ আমাদের মাটিতে, পানিতে এতো বরকত দিয়েছেন যা পৃথিবীর কোনো দেশের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। এই প্রাচুর্যতার কারণেই কিন্তু এত ছোট একটা দেশ হওয়ার পরেও আমরা প্রায় ১৭ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারি। এমনকি আমরা আমাদের শস্য মাঝে মাঝে রফতানিও করি। বাংলাদেশকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার দিন শেষ। বুক ফুলিয়ে মাথা উঁচু করে চলতে হবে।

আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধ বিশ্বের ইতিহাসে বিরল এক সংগ্রাম। মাত্র ৯ মাসের সংগ্রামে আমরা স্বাধীন হয়েছি। আমরা অর্থনীতির দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এখন তৃতীয় বিশ্বের দেশেগুলোর জন্য একটা রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অগ্রগতি আমাদেরকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আমরা বিশাল জিডিপি নিয়ে এখন উন্নয়নশীল দেশের অন্তর্ভুক্তির দ্বারপ্রান্তে। আমাদের ২৭০ বিলিয়ন ডলারের জিডিপি আগামী কয়েক বছরের মধ্যে তাজিকিস্তান, কাজাখস্তান, উজবেকিস্থান, তুর্কমেনিস্তান, কিরগিজস্তান এই পাঁচ দেশের সামগ্রিক জিডিপিকে ছাড়িয়ে যাবে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি।

গত অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৪ শতাংশে পৌঁছেছে যা অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ। সেই সঙ্গে বেড়েছে মাথাপিছু আয়। আমাদের দারিদ্র্যতার হার শতকরা ৬২ শতাংশ থেকে ২১ এ নেমে এসেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহের অধিকারী বিশ্বের ৫৭তম দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।

আমাদের দেশের মতো দেশ পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। সবচেয়ে বড় দেশ আমাদের দেশ। আমাদের দেশ সবচেয়ে বড় কেন জানেন? পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ওয়াটার সিস্টেম বা রিভার সিস্টেম আমাদের দেশের মধ্যে দিয়ে গেছে। গঙ্গা, ব্রক্ষ্মপুত্র এবং মেঘনা এই তিন বৃহৎ নদীর ওয়াটার সিস্টেম আমাদের দেশের মধ্যে দিয়ে গেছে। যা আমাদের দেশকে পৃথিবীর সবচেয়ে উর্বর ভূমিতে পরিণত করছে। আমাদের দেশ হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেটা বড় একটা একটিভ ডেল্টা। এই একটিভ ডেল্টা হওয়ার কারণে কিন্তু বাংলাদেশের আয়তন বাড়ছে। বঙ্গোপসাগরের দিকে আমাদের দেশের

অনেক আয়তন বাড়ছে যা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের পক্ষে সম্ভব না। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন বাংলাদেশের যা আয়তন ছিল এখনকার আয়তন তার চেয়ে ২ হাজার বর্গকিলোমিটার বেশি। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০০ বছর একটিভ ডেল্টা প্ল্যান নামে যে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন তাতে আমাদের দেশের আয়তন আগামী ২০ বছরে আরও ২০-২৫ হাজার বর্গকিলোমিটার জমি সাগর গর্ব থেকে পাব।

আমাদের সুন্দরবন হচ্ছে পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন। আমাদের বঙ্গোপসাগর হচ্ছে পৃথিবীর বৃহত্তম উপসাগর। আমাদের ভাষা পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত ভাষাগুলোর একটি। আমাদের জনগণ পৃথিবীতে সবচেয়ে কর্মঠ মানুষদের মধ্যে একটি।

আমাদের কবিরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিদের মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন। জীববৈচিত্র্য, পাখির প্রজাতির সংখ্যা, মাছের প্রজাতির সংখ্যা, ফুল এবং গাছের দিক থেকে আমাদের দেশ অনন্য। আমাদের দেশের চেয়ে বড় কোনো দেশ নেই।

যুগান্তর: আপনার বিদেশে বিজয় দিবস উদযাপনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা কী?


আল্লামা সিদ্দিকী: প্রকৃতপক্ষে, ভিন দেশে ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন বাস্তবতা। এই বাস্তবতায় যখন আমরা অনুষ্ঠান করতে যাই তখন আমাদের মাঝে মাঝে কিছু কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু এসব ডিফিকাল্টিকে অতিক্রম করা, বাধা-বিঘ্নকে অতিক্রম করেই তো আমাদের কাজ। আর শহীদরা, যারা আমাদের দেশের স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছেন, জীবন দিয়েছেন, সর্বস্ব ত্যাগ করেছেন আমাদেরকে একটা ভালো ভবিষ্যতের জন্য, তাদের স্মরণে এই দিনের আনন্দ করতে পারাটাই তো একটা আমি যে বেঁচে আছি তার প্রমান। এবং এই দিন আমরা বিদেশিদের সামনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করি, আমরা তাকে তুলে ধরি। কারণ, বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু এক সত্তা যখন আমরা বাংলাদেশের কথা বলব তখন আমাদের বঙ্গবন্ধুর কথা বলতে বে। যখন বঙ্গবন্ধুর কথা বলব তার সারাজীবন নিয়ে আলোচনা করব তখন আমাদেরকে বাংলাদেশের কথাই বারবার বলতে হবে।

যুগান্তর: আপনার অফিসিয়াল পরিচিতির বাইরে গিয়ে যদি আমরা ব্যক্তি সিদ্দিকীকে জিজ্ঞেস করি যে বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে দেশ থেকে হাজার হাজার মেইল দূরে থেকে নাড়ির টানে কতটুকু অনুভব করেন?


আল্লামা সিদ্দিকী: আমি খুবই অনুভব করি। এতটুকুই আমি বলব, যখন আমাদের জাতীয় কোনো অনুষ্ঠানে বা অন্য কোনো বড় অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত বাজে সেটা ইন্সট্রুমেন্টাল হোক কিংবা সংগীত হোক, যখন বাজে তখন অনেকের মতো, অনেক বাংলাদেশের নাগরিকের মতো, অনেক বাঙালির মতো আমিও মাঝে মাঝে কেঁদে ফেলি।

যুগান্তর: বাংলাদেশের কোন জিনিসটা সবচেয়ে বেশি মিস করেন?


আল্লামা সিদ্দিকী: আমাদের মানুষের যে উষ্ণতা এবং আবেগপ্রবণতা এটা খুব মিস করি। মাঝে মাঝে ইলিশ মাছ মিস করি। মাঝে মাঝে করলা মিস করি। আর শত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমাদের মানুষের মাঝে এগিয়ে যাওয়ার যে প্রত্যয়, সামনে চলার যে প্রবণতা তাদের চোখেমুখে আমরা দেখতে পাই সেটাকে মিস করি।

যুগান্তর: সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।


আল্লামা সিদ্দিকী: আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনার মাধ্যমে যুগান্তরের পাঠক ও বাংলাদেশের সব মানুষকে শুভেচ্ছা।

তুরস্কের বাংলাদেশ দূতাবাসের বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান প্রতিবছরে মতো এবারও উৎসাহ-উদ্দীপনা আর বাঙালির মিলনমেলায় পরিণত হয়। প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে জাতীয় দিনগুলোর গুরুত্ব অনেক। এই দিনগুলোতে শধু উদযাপনের বাইরেও বিদেশে কর্মের ফাঁকে স্বদেশি মানুষের সঙ্গে আড্ডা দেয়ার আলাপ করার সুযোগ থাকে। বাংলদেশের আঙ্কারা দূতাবাস গত রোববার আয়োজন করে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস অনুষ্ঠান। তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম. আল্লামা সিদ্দিকী তার ২৭ বছরের চাকরিজীবনে বাংলাদেশ ছাড়াও পাঁচটি দেশে দায়িত্বপালন করেছেন। গত তিন বছর ধরে তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। অনুষ্ঠান শেষে যুগান্তরের জন্য তার বিশেষ সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন সারওয়ার আলম


যুগান্তর: দেশের বাইরে প্রায় ৬ হাজার মাইল দূরে থেকে বিজয় দিবস পালন করার ভিন্নমাত্রাটা কী?


আল্লামা সিদ্দিকী: বিজয় দিবস বা দেশের বিভিন্ন বিশেষ দিনগুলোকে বিদেশের মাটিতে স্মরণ করার আনন্দ অপার। এবং খুবই অসাধারণ অনুভূতি ভেতরে কাজ করে। আমি নিশ্চিত যে আমার শুধু নয়, যে কোনো প্রবাসী দেশ সচেতন বাংলদেশি নাগরিকেরই ভেতরে এ রকম অনুভূতি এই দিবসগুলোর প্রাক্কালে কাজ করে। একটা গর্বের, একটা প্রাপ্তির, একটা আকাঙ্ক্ষা পূরণের, একটা শান্তির, একটা আত্মবিশ্বাসের, একটা সাহসের প্রত্যয় বা অনুভূতি ভেতরে কাজ করে। আমি খুবই আনন্দিত হই যখন আমাদের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে আমাদের প্রবাসী ভাই ও বোনেরা আমাদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন এবং অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানের কোনো কোনো পর্বে তাদের মূল্যবান অংশগ্রহণও থাকে। এটা অত্যন্ত আনন্দের।

যুগান্তর: দেশের ভেতরে বিজয় দিবস উদযাপন আর দেশের বাইরে বিজয় দিবস উদযাপনের মধ্যে অনুভূতির দিক থেকে পার্থক্যটা কেমন?

আল্লামা সিদ্দিকী: স্কেলে ডেফিনিটলি অনেক পার্থক্য। যেমন দেশের ভিতরে মানুষ বিজয় দিবস উপলক্ষে যেভাবে সকলকে নিয়ে আনন্দ উৎসব করতে পারে আমরা বিদেশে তো সেটা পারি না। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে কাজ করতে হয়। যেমন আবহাওয়ার কথাই ধরা যাক, এখানে হয়তো এমন হতে পারতো যে আজকেই বরফ পড়ছে, এমন হতে পারতো যে আজকে বৃষ্টি পড়ছে। চারপাশে অন্য দেশের ভিন্ন সংস্কৃতির মানুষ। তারা তো আমাদের এই দিনটাকে এইভাবে চেনে না। তো এখানে চ্যালেঞ্জঅনেক। বিদেশে চ্যালেঞ্জ অনেক। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জগুলো ওভারকাম করার ভেতরে আনন্দও অনেক বেশি।


যুগান্তর: দেশের ভেতরে তো আনন্দ এবং গৌরব এর মধ্যে উদযাপিত হয় কিন্তু দেশের বাইরে ভিন দেশের মানুষের কাছে আমাদের এই গৌরবগাঁথাকে তুলে ধরা অন্যরকম একটা আনন্দ নয় কি?


আল্লামা সিদ্দিকী: নিশ্চিতভাবেই তাই। যেমন আজকে আমাদের অনুষ্ঠানে প্রায় ২০০ জন লোক আসলেন। এই দুইশ জনের ভেতরে বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রী এবং আমাদের এই ছোট কমিউনিটির সদস্য ছিলেন হয়তো ৭০-৮০ জন বা ১০০ জন। আর বাকি ১০০ জন ছিলেন কিন্তু বিদেশি।

শুধু তুরস্ক থেকেই নয়, কেউ কেউ এসেছেন অন্য দেশ থেকে। সব মিলিয়ে এটা ছোট্ট পরিসরে আন্তর্জাতিক একটা মেলায় পরিণত হয়েছে বলে এটা খুবই আনন্দদায়ক একটা ব্যাপার। যখন আমাদের দেশকে, অতীত ইতিহাস, গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস সহ বর্তমান উন্নয়ন, বর্তমান এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের কাহিনী তাদের সামনে আমরা তুলে ধরতে পারি, তখন গর্বে বুক ভরে যায়।

যুগান্তর: এই বিশেষ দিবসে কোন কোন বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?

আল্লামা সিদ্দিকী: আজকে এই বিজয়ের শুভলগ্নে যারা আমাদের দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন, যাদের সঠিক দাফন বা অন্তেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয় নাই, যারা জানতেন না কালকে বাংলাদেশ স্বাধীন হবে, যারা জানতেন না যে বাংলাদেশের একদিন আংকারাতে, ওয়াশিংটনে, টোকিওতে দূতাবাস হবে, যারা জানতেন না যে একসময় বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি লোক পৃথিবীর ১০০ টা দেশে বসবাস করবে আমি সেই

সকল শহীদদের অত্যন্ত গভীরশ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমাদের অযুত-নিযুত শহীদদের কথা স্মরণ করতে হবে। যারা সাধারণ মানুষের ছেলে, কৃষকের ছেলে, শ্রমিকের ছেলে। যারা কিছুই জানতেন না। যারা আক্রান্ত হয়ে মানুষকে বাঁচানোর জন্য এবং দেশকে স্বাধীন করার জন্য জীবন দিয়ে গেছেন। তাদেরকে স্মরণ করতে হবে।

এই দেশের (তুরস্কের) মানুষ তাদের জাতীয় নেতাকে খুব শ্রদ্ধা করে। দুর্ভাগ্যের বিষয় আমরা আমাদের দেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে এভাবে ওলট-পালট করেছি যে, একটা সময় ছিল যখন বঙ্গবন্ধুর নাম নেয়া বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং সরকারিভাবে অপরাধ বলে গণ্য হতো। আমার মতো সরকারি লোকজন যদি বঙ্গবন্ধুর নাম নিতেন তাহলে তাদের চাকরি চলে যেত।

কোনো মানুষের মধ্যে যদি সামান্যতম কৃতজ্ঞতাবোধ থাকে তাহলে তার প্রথমেই প্রতিদিন স্মরণ করতে হবে বঙ্গবন্ধুকে। প্রতিদিন: সকালে, দুপুরে, বিকালে।

বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছিলেন, তখন বাংলাদেশের চিন্তাও কেউ করত না। বাংলাদেশের কোনো নেতা না। বঙ্গবন্ধু সারাজীবন একটাই স্বপ্ন দেখেছেন এবং সেই স্বপ্নটাকে তিনি বাস্তবায়ন করছেন আর তা হলো বাংলাদেশকে স্বাধীন করা। এই যে আমরা এখানে স্যুট-টাই-কোট পরে বসে আছি তা ওই স্বপ্নের জন্য। এটা থেকে যে বিচ্যুত হয়, সে বিবেকহীন বা অকৃতজ্ঞ নয়, সে বেঈমান।

যুগান্তর: স্বাধীনতার ৪৮ বছরে এসে আমাদের অর্জন কী?

আল্লামা সিদ্দিকী: আজকে বাংলাদেশ আত্মমর্যাদার একটা জায়গায় এসে উপস্থিত হয়েছে। আজ বাংলাদেশ যেখানে এসেছে তাতে আমরা অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী এবং ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়ে যাবে। আমরা যে যেখানে থাকি, দেশে থাকি বা বিদেশে থাকি, এই কথাগুলো স্মরণ করতে হবে, দেশকে ভালোবাসতে হবে। দেশের জন্য দোয়া করতে হবে।

আমাদের সবাইকে সামনের কথা ভাবতে হবে। দেশকে আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা করতে হবে। মনে রাখতে হবে সমানে আমাদের আরও অনেক উজ্জ্বল এক ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।

আল্লাহ আমাদের মাটিতে, পানিতে এতো বরকত দিয়েছেন যা পৃথিবীর কোনো দেশের সঙ্গে তুলনা করা যায় না। এই প্রাচুর্যতার কারণেই কিন্তু এত ছোট একটা দেশ হওয়ার পরেও আমরা প্রায় ১৭ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারি। এমনকি আমরা আমাদের শস্য মাঝে মাঝে রফতানিও করি। বাংলাদেশকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করার দিন শেষ। বুক ফুলিয়ে মাথা উঁচু করে চলতে হবে।

আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধ বিশ্বের ইতিহাসে বিরল এক সংগ্রাম। মাত্র ৯ মাসের সংগ্রামে আমরা স্বাধীন হয়েছি। আমরা অর্থনীতির দিক দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এখন তৃতীয় বিশ্বের দেশেগুলোর জন্য একটা রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অর্থনৈতিক এবং সামাজিক অগ্রগতি আমাদেরকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর পর্যায়ে নিয়ে গেছে। আমরা বিশাল জিডিপি নিয়ে এখন উন্নয়নশীল দেশের অন্তর্ভুক্তির দ্বারপ্রান্তে। আমাদের ২৭০ বিলিয়ন ডলারের জিডিপি আগামী কয়েক বছরের মধ্যে তাজিকিস্তান, কাজাখস্তান, উজবেকিস্থান, তুর্কমেনিস্তান, কিরগিজস্তান এই পাঁচ দেশের সামগ্রিক জিডিপিকে ছাড়িয়ে যাবে। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আমরা দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছি।

গত অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৪ শতাংশে পৌঁছেছে যা অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ। সেই সঙ্গে বেড়েছে মাথাপিছু আয়। আমাদের দারিদ্র্যতার হার শতকরা ৬২ শতাংশ থেকে ২১ এ নেমে এসেছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে বাংলাদেশ মহাকাশে কৃত্রিম উপগ্রহের অধিকারী বিশ্বের ৫৭তম দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে।

আমাদের দেশের মতো দেশ পৃথিবীতে দ্বিতীয়টি নেই। সবচেয়ে বড় দেশ আমাদের দেশ। আমাদের দেশ সবচেয়ে বড় কেন জানেন? পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ওয়াটার সিস্টেম বা রিভার সিস্টেম আমাদের দেশের মধ্যে দিয়ে গেছে। গঙ্গা, ব্রক্ষ্মপুত্র এবং মেঘনা এই তিন বৃহৎ নদীর ওয়াটার সিস্টেম আমাদের দেশের মধ্যে দিয়ে গেছে। যা আমাদের দেশকে পৃথিবীর সবচেয়ে উর্বর ভূমিতে পরিণত করছে। আমাদের দেশ হচ্ছে পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেটা বড় একটা একটিভ ডেল্টা। এই একটিভ ডেল্টা হওয়ার কারণে কিন্তু বাংলাদেশের আয়তন বাড়ছে। বঙ্গোপসাগরের দিকে আমাদের দেশের

অনেক আয়তন বাড়ছে যা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের পক্ষে সম্ভব না। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন বাংলাদেশের যা আয়তন ছিল এখনকার আয়তন তার চেয়ে ২ হাজার বর্গকিলোমিটার বেশি। আর আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০০ বছর একটিভ ডেল্টা প্ল্যান নামে যে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন তাতে আমাদের দেশের আয়তন আগামী ২০ বছরে আরও ২০-২৫ হাজার বর্গকিলোমিটার জমি সাগর গর্ব থেকে পাব।

আমাদের সুন্দরবন হচ্ছে পৃথিবীর সর্ব বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন। আমাদের বঙ্গোপসাগর হচ্ছে পৃথিবীর বৃহত্তম উপসাগর। আমাদের ভাষা পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত ভাষাগুলোর একটি। আমাদের জনগণ পৃথিবীতে সবচেয়ে কর্মঠ মানুষদের মধ্যে একটি।

আমাদের কবিরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কবিদের মধ্যে স্থান করে নিয়েছেন। জীববৈচিত্র্য, পাখির প্রজাতির সংখ্যা, মাছের প্রজাতির সংখ্যা, ফুল এবং গাছের দিক থেকে আমাদের দেশ অনন্য। আমাদের দেশের চেয়ে বড় কোনো দেশ নেই।

যুগান্তর: আপনার বিদেশে বিজয় দিবস উদযাপনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্মরণীয় ঘটনা কী?


আল্লামা সিদ্দিকী: প্রকৃতপক্ষে, ভিন দেশে ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন বাস্তবতা। এই বাস্তবতায় যখন আমরা অনুষ্ঠান করতে যাই তখন আমাদের মাঝে মাঝে কিছু কিছু সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু এসব ডিফিকাল্টিকে অতিক্রম করা, বাধা-বিঘ্নকে অতিক্রম করেই তো আমাদের কাজ। আর শহীদরা, যারা আমাদের দেশের স্বাধীনতার জন্য রক্ত দিয়েছেন, জীবন দিয়েছেন, সর্বস্ব ত্যাগ করেছেন আমাদেরকে একটা ভালো ভবিষ্যতের জন্য, তাদের স্মরণে এই দিনের আনন্দ করতে পারাটাই তো একটা আমি যে বেঁচে আছি তার প্রমান। এবং এই দিন আমরা বিদেশিদের সামনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করি, আমরা তাকে তুলে ধরি। কারণ, বাংলাদেশ এবং বঙ্গবন্ধু এক সত্তা যখন আমরা বাংলাদেশের কথা বলব তখন আমাদের বঙ্গবন্ধুর কথা বলতে বে। যখন বঙ্গবন্ধুর কথা বলব তার সারাজীবন নিয়ে আলোচনা করব তখন আমাদেরকে বাংলাদেশের কথাই বারবার বলতে হবে।

যুগান্তর: আপনার অফিসিয়াল পরিচিতির বাইরে গিয়ে যদি আমরা ব্যক্তি সিদ্দিকীকে জিজ্ঞেস করি যে বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে দেশ থেকে হাজার হাজার মেইল দূরে থেকে নাড়ির টানে কতটুকু অনুভব করেন?


আল্লামা সিদ্দিকী: আমি খুবই অনুভব করি। এতটুকুই আমি বলব, যখন আমাদের জাতীয় কোনো অনুষ্ঠানে বা অন্য কোনো বড় অনুষ্ঠানে জাতীয় সংগীত বাজে সেটা ইন্সট্রুমেন্টাল হোক কিংবা সংগীত হোক, যখন বাজে তখন অনেকের মতো, অনেক বাংলাদেশের নাগরিকের মতো, অনেক বাঙালির মতো আমিও মাঝে মাঝে কেঁদে ফেলি।

যুগান্তর: বাংলাদেশের কোন জিনিসটা সবচেয়ে বেশি মিস করেন?


আল্লামা সিদ্দিকী: আমাদের মানুষের যে উষ্ণতা এবং আবেগপ্রবণতা এটা খুব মিস করি। মাঝে মাঝে ইলিশ মাছ মিস করি। মাঝে মাঝে করলা মিস করি। আর শত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমাদের মানুষের মাঝে এগিয়ে যাওয়ার যে প্রত্যয়, সামনে চলার যে প্রবণতা তাদের চোখেমুখে আমরা দেখতে পাই সেটাকে মিস করি।

যুগান্তর: সাক্ষাৎকার দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।


আল্লামা সিদ্দিকী: আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনার মাধ্যমে যুগান্তরের পাঠক ও বাংলাদেশের সব মানুষকে শুভেচ্ছা।

সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৩:২৯
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×