somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

:((:(( বিবাহের ছয় মাস পর :((:((

০৫ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দেশের চলমান অস্থিরতা পূর্ণ সময়ে বাইরে বের হওয়া এক বিরাট চ্যালেঞ্জ - এর কাজ। আমি তো মনে করি এই চ্যালেঞ্জ এভারেস্ট জয় করার সমান। তো এই এভারেস্ট জয় করে বাসায় এসে রাজনৈতিক ক্যাচাল শুনার জন্য যেই টিভির রিমোট হাতে নিয়েছি, ঠিক সেই সময় আমার ফোন-খানা ইদুঁরের বাচ্চার মত কিচ কিচ শব্দ করে উঠল, নিয়ে দেখি আমার দোস্ত (সম্প্রতি যিনি বিবাহের কারণে অমাবস্যার চাঁদ) - এর কল, জরুরী তাগাদা পেয়ে দেখা করতে যেয়ে দেখি বেচারার মুখ ভার, কি সমস্যা? কি সমস্যা?
(সমস্যা হিসেবে যা শুনলাম তার কিছুটা আপনাদের জানালাম, পারলে সমাধান দিয়েন)

দোস্ত-এর জবানে বলছি-
"সমস্যা হচ্ছে উনি মেয়ে, আর সমস্যা হচ্ছে আমি আমার জীবণে কোন সমস্যা হোক তা চাই না, কিন্তু আমার জীবণে কোন সমস্যা না হওয়াটাই ওনার জীবণে সবচেয়ে বড় সমস্যা। এই খুশিতে তো ওনার সেলিব্রেট করা উচিত। সত্যি আজকাল মনে হয় ও যখন মুখ খুলে তখন ইঁদুর মারার বিষ খাওয়ায় দেই, আরে ছয় মাসে সব দেখা হয়ে গিয়েছে, কিসের ভালবাসা? কিসের সম্পর্ক, কিসের খুশি?

সম্পর্ক-এর মানে হল আমাদের খুশি, আমাদের সম্পর্ক, আর এখন এই সব ছেড়ে আমাকে ভাবতে হয় ওনার জন্মদিন, ওনার বন্ধুর জন্মদিন, ওনার কুকুরের জন্মদিন, ওনার নতুন বছর উদযাপন যেটা কখনো আমারো নতুন বছর ছিল। :((

মেয়েদের কেউ কখনো খুশি রাখতে পারে না, খুশি মেয়ে একটা কল্পনা মাত্র।

আরে তুই যদি সুপারম্যান-ও হোস তাহলেও খুশি রাখতে পারবি না। যতদিন সুপারম্যান না হবি ততদিন ও বলবে তুমি কিছু কর না, কিছু পারো না, তুমি নুপংসুক, তোমার মত মানুষের সাথে কিভাবে সংসার করবো? আর যদি কোন ভাবে তুই সুপারম্যান হয়ে যাস তাহলে বলবে তুমি তো সুপারম্যান হয়ে গেছো, আমি তো কোন সুপারম্যান চাই না, একজন সাধারণ মানুষ চাই, এখন আমি তোমার সাথে কিভাবে থাকব? /:)

বুঝলি সব সিনেমার দোষ, রোমান্টিক মুভি, একটা ছেলে একটা মেয়ে, দুজন একসাথে হয় আর মুভি শেষ। এর পরের গল্প আর কেউ বলে না।

এর পরের গল্প আমি তোকে বলছি শোন, কোন দিন যদি আদর না করি তো সমস্যা, আর করলে বলে এত কিসের আদিখ্যেতা এত ভালো লাগে না। "শপিং" - ঐ কথা আর বলিস না, ওনার তো শপিং শেষ হয় না, প্রথমে পর্দার কাপড় কিনবে তারপর সেটা কাটাবে, তারপর দেখবে সেটা দেয়ালের রং-এর সাথে ম্যাচ করছে না সেই কারণে আবার কাপড় কিনবে, আরে বাসায় এত চায়ের কাপ আছে যে বিক্রি করলে সারামাসের খরচ মিটে যাবে। আরে যেটা কিনতে যাবে সেটা কিনবে না আরেকটা কিনবে। গত মাসে টেবিল কিনতে হবে টেবিল কিনতে হবে বলে মাথা খারাপ করে ফেলেছে, গেলাম মার্কেটে কি হল? ৫ ঘন্টা ঘুরে স্যান্ডাল কিনে আসছে, দুই সপ্তাহ পর আবার শুরু করছে টেবিল কিনতে হবে।

অফিসে কাজ করছি ফোন আসবে ফোন তুলে বলি ব্যাস্ত আছি পরে কথা বলব, আচ্ছা বল কতটা কঠিন এই কথা বোঝা? তখন বলবে দুই মিনিট কথা বললে কি হয়? আচ্ছা তুই বল দুই মিনিটে কি কথা হবে? তারপর আমি তোমাকে ভালবাসি না বলে ফোন রেখে দিলি তো এক নাটক শুরু হবে, সব দোষ এই মোবাইলের প্রতি মিনিট ১ টাকা, আরে কল প্রতি টাকা কমে গেলেই তো আর কথা বলা বেড়ে যায় না।
আচ্ছা যাক ফোন রিসিভ করলি কিন্তু কথা বললি না তখন বলবে তুমি কথা বলছো না কেন? কথা বলতে ভালো লাগছে না? আর যদি হুম হুম করে পাশ কাটাতে চেয়েছিস তো গেলি, বলবে এই ভাবে কথা বলবে তো আমি তোমাকে ফোন করলাম কেন। আরে আমি কিভাবে বলব উনি কেন ফোন কেন করেছেন!!! X(

এইসবে বিরক্ত হয়ে যদি কোথাও একা একা ঘুরে আসতে চাস তো প্রশ্ন করবে কোথায় যাচ্ছো? কেন যাচ্ছো? আচ্ছা জানো না কোথায় যাচ্ছো? সরাসরি বললেই তো হয় যে আমার থেকে দূরে যেতে চাচ্ছো।

আবার ধর অফিসে কাজ করছিস এসএমএস আসবে ”আমি তোমাকে ভালবাসি”, তুইও ফিরতি এসএমএস দিলি, দিলি তো গেলি, এরপর এসএমএস এর পর এসএমএস আসতেই থাকবে, আরে কি কাজ করবো অফিসে, দুইটা এসএমএস-এর জবাব না দিলেই ফোন চলে আসবে, আর যদি ফোন রিসিভ না করিস ১০ মিনিট পর এসএমএস আসবে "It's not working any more”। ১০ মিনিটেই “I love you” থেকে "It's not working any more”। এতদিনে বুঝলাম কেন শুধু পুরুষ মানুষ হার্টএটাক করে। /:)

সবাই বলে সব সফল পুরুষের পিছনে একজন নারী থাকে, এইটা তো কেউ বলে না যে অসফল পুরুষের পিছনেও একজন নারী থাকে, আর সবাই এটা স্বীকার করবে যে সফল পুরুষের চেয়ে অসফল পুরুষের সংখ্যা বেশি। :((

কখনও যদি বলি আজকে কাজ বেশি তুমি খেয়ে শুয়ে পর আসতে দেরী হবে, তখন অভিমান করবে, খাবে না, না খেয়ে শুয়ে পরবে, আরে আমি কি কাজ ছেড়ে দিব? বাসায় যাও, বুঝাও, খাওয়াও, এইসব করতে করতে নিজের খিদেটাও মরে যায়। এতকিছুর পরও শান্তিতে যদি এক কোণে গিয়ে বসে থাকি তখনও বলবে কি ভাবছো? কি ভাবছো? আরে কিছু ভাবছি না, শুধু ভাবছি কি ভাবে তোমার মুখ বন্ধ করা যায়? তারপর ঝগড়া। X(X(

দুইদিন পর বলবে আচ্ছা আসো একসাথে বসে প্রবলেম সল্ভ করি, আলোচনা করি। কিন্তু আমি তোকে বলছি মেয়েদের সাথে আলোচনা হয় না, কেননা তুই কথা বলতে পারবি না, ওনিই শুধু বলবে, আর তাছাড়া আজকে যা বলবে তা আজকের ঘটনা না, দুই মাস আগের ঘটনা, আরে মনেই থাকে না দুই মাস আগে কি হয়েছিল, মেয়েরা সব জমিয়ে রাখে, এটা বড় হাতিয়ার বড় লড়াইয়ে ব্যবহার করতে হবে। আর ঝগড়ার মাঝে হটাৎ করে বলবে আঙুল নিচে কর, আরে তোর হয়তো খেয়ালও নেই কখন আঙুল তুলেছিস, তারপর তো সব শেষ, আসল আলোচনা যে কোথায় যাবে তার ঠিক নাই, এখন মূল আলোচনা তোর এত সাহস কিভাবে হল তুই উনার দিকে আঙুল তুলেছিস, উনি জুতা ছুড়ে মারলেও কিছু হবে না, কিন্তু তুই আঙুল তুললেই সব দোষ তোর।

আরে বিয়ের সময় কেন ব্যান্ড মিউজিক, ডিজে পার্টি হয় জানিস? আসলে বুঝায় বিয়ের পর কি অবস্থা হবে।:((:((:(("

পরিশেষে একটা কৌতুক-
এক রাতে স্বামী স্ত্রী বলছে, "জান, আমি নৈশভোজ-এর জন্য একজন বন্ধুকে বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে."

"কি? তুমি কি পাগল? ঘরটা একদম জগাখিচুড়ি হয়ে আছে, ঘরে বাজার করা নেই, থালা - বাসন সব ময়লা হয়ে আছে, এবং আমি রান্না করতে পারবো না"

"আমি সব জানি."

"তারপরেও তুমি কেন নৈশভোজ-এর জন্য বন্ধুকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছো?

"কারণ আমার বন্ধুটা বিয়ে করতে চাইছে.":


(এটি একটি রম্য রচনা, একটি চলচ্চিত্রের ছায়া অবলম্বনে তৈরী)

সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৩:০৩
১৫টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×