somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদেশে দেশি রাজনীতি: কি লজ্জা! কি লজ্জা!!

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। মন্ট্রিয়লের হোটেল হায়াৎ এ আয়োজন করা হয়েছিল গ্লোবাল ফান্ডের আন্তর্জাতিক সম্মেলন। অনুষ্ঠানের হোস্ট কানাডার প্রধানমন্ত্রী। অতিথি হিসাবে হাজির বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধান ও সরকার প্রধানরা। এতসব অতিথির মধ্যে আছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। কানাডার প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে তিনি ওখানে গেছেন। ভিতরে যখন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়কদের নিয়ে সাজানো গোছানো অনুষ্ঠান চলছে, হোটেলের বাইরে তখন ভিন্ন এক দৃশ্য। সেখানে চলছে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ, শ্লোগান, মিছিল। দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এই বিক্ষোভকারীরা সবাই বাংলাদেশী। এরা কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশী। রাস্তার একপার্শ্বে বিএনপি’র কর্মী সমর্থক, অপর পার্শ্বে আওয়ামী লীগের। আর দুই পক্ষের মাঝে দুই সারি কানাডিয়ান পুলিশ, তারা নিয়োজিত সেখানে শান্তি রক্ষার উদ্দেশ্যে। এই বীর বাঙালিরা যাতে পরস্পরের ওপর হামলিয়ে না পড়তে পারে, সে কারণেই সদাসতর্ক তারা। একটু পরপর বিএনপি পক্ষের লোকেরা শ্লোগান দিচ্ছে- ‘গো ব্যাক হাসিনা, গো ব্যাক।’ অপর দিকে থেমে নেই আওয়ামী লীগ সমর্থকরাও। পাল্টা শ্লোগান আসছে তাদের কাছ থেকেও- ‘গো ব্যাক রাজাকার, গো ব্যাক পাকিস্তান।’
এই দৃশ্যগুলো আমি একাধিক ভিডিওতে দেখলাম। কানাডা প্রবাসী কয়েকজন বন্ধু তাদের ফেসবুকে এই ভিডিও ক্লিপগুলো আপলোড করেছেন। সত্যি কথা বলতে কি, ভিডিওগুলো দেখতে দেখতে আমি রীতিমত লজ্জা পাচ্ছিলাম। বারবার এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলাম, আমার পাশ থেকে আর কেউ দেখে ফেললো না তো! কেউ বুঝে ফেললো না তো- জাতি হিসাবে আমরা কতটা আসহিঞ্চু আর কতটা নিম্নরুচির মূর্খ? বিএনপি’র যে লোকগুলো দাঁড়িয়েছিল হোটেলের সামনের রাস্তার অপর পার্শ্বে, তাদের হাতে কিছু প্ল্যাকার্ড, ব্যানার ছিল। একটা ব্যানারে লেখা ছিল Safe people, Safe Bangladesh ! বুঝতে অসুবিধা হয়নি, Save লিখতে যেয়ে তারা Safe লিখে ফেলেছে। যারা সেফ এবং সেভ এর পার্থক্যটাই জানে না, তারা দেশ ছেড়ে সুদূর কানাডায় যেয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে রক্ষার মহান ব্রত পালন করছে!
ভিডিওটি দেখতে যেয়ে আমি বারবার কানাডিয়ান পুলিশের মুখের ভাব পড়ার চেষ্টা করছিলাম। ওরা কি ভাবছে এই জাতিটি সম্পর্কে? হোটেলের ভিতরে সম্মেলনে অনেক ক’টি দেশের সরকার প্রধানরা ছিলেন। তারা সবাই যে নিজ নিজ দেশে ব্যাপক জনপ্রিয় তাও হয়তো নয়। প্রত্যেক দেশেই এক বা একাধিক বিরোধী দলও আছে। সেই বিরোধী দলের সমর্থকরাও হয়তো কানাডায় প্রবাসী জীবন যাপন করছেন। আবার হয়তো সরকারী দলের সমর্থকরাও আছেন। কিন্তু বাংলাদেশ ছাড়া আর কোন দেশের কারোকেই কিন্তু হোটেলের সামনে চিল্লাপাল্লা করতে দেখা যায়নি। আসলে কখনোই দেখা যায়ও না। কেবল আমরাই পৃথিবীর তাবৎ জাতিগুলোর জন্য নতুন এক আচরণ দেখিয়ে চলেছি। এসব ঘটনায় ওই দেশে কি জাতি হিসাবে আমাদের ভাবমূর্তি উজ্জল হচ্ছে। ওই হাতে গোনা গোটা বিশেক ধান্দাবাজের ছাগলামীর দায় কি যেয়ে বর্তাচ্ছে না হাজার হাজার প্রবাসী বাংলাদেশীদের ওপরও?
প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরের চুড়ান্ত গন্তব্য কিন্তু কানাডা-ই ছিল না। কানাডা যাওয়ার পথে তিনি নেমেছিলেন ইংল্যান্ডে। আর কানাডা থেকে পরে গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে। যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয় জায়গাতেই প্রায় একই রকম দৃশ্যের অবতারণা হয়েছিল।
শুনেছি নেতা-নেত্রীরা নাকি চান যে বিদেশেও তাদের এইরকম সমর্থক থাকুক। ওনারা যখন ওই দেশে নামেন, কিংবা ও্ই দেশ থেকে বিদায় নেন, চান যে এয়ারপোর্টে তার দলের সমর্থকরা দল বেঁধে আসুক, তার পক্ষে শ্লোগান দিক। এই মানসিকতার একটা নেতিবাচক দিকও যে আছে, সেটা তারা ভুলে যান। হুজুগ একবার তৈরি হয়ে গেলে পক্ষের লোকের পাশাপাশি বিপক্ষের লোকও যে হাজির হবে, তারা যে ‘নিপাত যাক’ জাতীয় শ্লোগানও দেবে- এটা মানতে চান না। এবার শেখ হাসিনা যখন লন্ডনে এয়ারপোর্ট থেকে বের হলেন, দুই ধরনের দৃশ্যই তাকে দেখতে হয়েছে। বিএনপি’র উগ্র সমর্থকরা শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগ বিরোধী শ্লোগান দিয়েছে। উশৃঙ্খলতা করেছে। আবার আওয়ামী লীগের লোকেরাও শেখ হাসিনার পক্ষে শ্লোগান দিয়েছে। এই দুই শ্লোগানের কোনটাকেই কি শোভন বলা যাবে? প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গিয়েছেন, প্রটোকল অনুযায় যে দেশে গেছেন তাদের সরকারী লোকই তো থাকবেন। আমাদের দূতাবাসের লোকও থাকবেন। হইচই কেন হবে? বিদেশের ওই এয়ারপোর্টে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও আরও অনেক যাত্রী তো থাকেন। তাদের অনেকে হয়তো শেখ হাসিনা কিংবা বেগম খালেদা জিয়ার মত নেত্রীকে চিনেনও না। তারা কি আমাদের এই আচরণে খুশি হয়ে থাকেন? বিরক্ত হয়ে যখন সেখানে দায়িত্বপালনরত কাউকে জিজ্ঞাসা করেন, তারা নিশ্চয়ই আমাদের নেত্রীদেরকে দেখিয়ে দেন। তখন ওই বিদেশী যাত্রীর মনে আমাদের নেত্রী কিংবা পুরো জাতির প্রতিই যে মনোভাবের জন্ম নেয় তাকে কি ইতিবাচক কিছু বলা যাবে?
নেতা-নেত্রীরা যে আসলেই চান তার বড় প্রমাণ হলো বড় এই দলগুলো গঠণতান্ত্রিকভাবেই বিদেশে তাদের শাখাকে অনুমোদন দিয়ে থাকেন। আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি’র বিদেশে শাখা থাকবে- এটা দলীয়ভাবেই স্বীকৃত। এই নিয়মের হয়তো দারুন কিছু ইতিবাচক দিকও থাকতে পারে। যদি থেকেও থাকে, তারপরও বলবো সেই ইতিবাচক দিকগুলোকে ছাপিয়ে এখন নেতিবাচক বিষয়গুলোই নগ্ন হয়ে বেরিয়ে পড়েছে। বিদেশে যখন বাঙালিরা থাকেন, তা যে দেশেই থাকুন না কেন, তারা তাদের নিজস্ব স্বীকয়তা নিয়েই থাকেন। জাতি হিসাবে এটাই আমাদের কাছে প্রত্যাশিত। এই প্রত্যাশার প্রতিফলন আমরা পেয়েছি ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়। তখন দুনিয়াজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাঙালিরা আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে বিদেশে জনমত গঠন করেছেন। তার ফলও পেয়েছি, আন্তর্জাতিকভাবেই তখন পাকিস্তান পড়ে গিয়েছিল চাপের মুখে। কিন্তু ইতিবাচক বা ঐতিহ্যমন্ডিত সেই ঘটনার সঙ্গে বর্তমানের হল্লা-হট্টগোলকে মেলানোর সুযোগটা কোথায়? এখন আমরা নিজেরা নিজেরা চিল্লাপাল্লা করি, মারামারি করি। এসব করে করে লোক হাসাই। আর আমাদের নেতা নেত্রীরা সেসব উপভোগ করেন।
কানাডা থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গেলেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দিলেন। রাষ্ট্রনায়কোচিত সেই ভাষণের পরপরই কি ঘটলো? ভাষণ শেষ করেই তিনি গেলেন নিউ ইয়র্ক আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনায় অংশ নিতে। সেখানে আওয়ামী লীগের দু’গ্রুপের মধ্যে মারামারি হলো, অনুষ্ঠানস্থলে চেয়ার ভাঙ্গাভাঙ্গি। অবস্থা এতটাই খারাপ হয়েছিল যে, গ্রান্ড হায়াত হোটেল কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা বাহিনীকে ডাকতে বাধ্য হয়েছিলেন। এই যে ঘটনাসমূহ, এসব কি প্রধানমন্ত্রীর সম্মান বৃদ্ধি করলো? জাতি হিসাবে আমরা আরও উচুতে উঠলাম? তাহলে তারপরও এসব কি চলতেই থাকবে?
রাজনৈতিক দলের বিদেশের শাখা নিয়ে নানা ধরনের মুখরোচক কথা কিন্তু প্রতিনিয়তই শোনা যায়। পৃথিবীর সব দেশেই যে এই আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জাতীয় পার্টির শাখা রয়েছে তা কিন্তু নয়। এর বেশি প্রকোপ দেখা যায় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপীয় দেশসমূহ, মধ্যপ্রাচ্য- এইসব দেশে। অর্থাৎ যে সব দেশে টাকা পয়সার লেনদেনটা একটু বেশি, সেইসব জায়গায়। বিদেশের এই কমিটিগুলোতে যারা নেতৃত্ব দেন, দেশে থাকতে তাদের কিন্তু তেমন কোন খবরই ছিল না। বিদেশে যেয়ে হাতে কিছু অর্থ সম্পদ আসার পর তাদের নেতা হওয়ার খায়েশ জাগে। নানা লোকদের ধরাধরি করে তারা নেতা বনে যান। ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো, এই প্রবাসী নেতারা কিন্তু আবার জাতীয় নেতৃত্বের কাছে বেশ গুরুত্ব পেয়ে থাকেন। দেশ থেকে দলের নেতারা যখন বিদেশে যান, তখন এরাই তাদের দেখাশোনা করেন। এয়ারপোর্ট থেকে নিয়ে যান, নিজেদের হেফাজতে রাখেন, দু’একটা সংবর্ধনার আয়োজন করেন। শপিং করে দেন। তারপর সেইসব উপঢৌকনসহ একেবারে এয়ারপোর্টে তুলে দেন। নেতার স্তর অনুযায়ী এর মাত্রাগত বিভেদ হয় কেবল। সে কারণেই জাতীয় নেতাদের কাছে কেন্দ্রীয় অনেক জুনিয়র নেতার চেয়েও বিদেশের এইসব ভূইফোর নেতারা বেশি গুরুত্ব পেয়ে থাকেন। এর কারণ যে, বিদেশে গেলে তাদের আতিথ্য আর উপঢৌকন ছাড়া আর কিছু নয়, সেটা বুঝতে তেমন একটা কষ্ট হয় না।
প্রবাসীদের মধ্যে নেতৃত্ব নিয়ে কামড়া কামড়িটাও বেশ দৃশ্যমান। এই যে অতি সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে শেখ হাসিনাকে নাগরিক সংবর্ধনা দেয়াকে কেন্দ্র করে নিজেদের মধ্যে হট্টগোল, মারামারি- সেটাও ওই কামড়া কামড়িরই একটা প্রকাশ মাত্র। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানের নাম ধরেই সেখানে গালাগালি করা হয়েছে। যারা করেছে, তারাও আওয়ামী লীগ করেন। তারাও জাতীয় পর্যায়ের কোন না কোন নেতার সঙ্গে সম্পর্কিত।
একটা প্রশ্ন আমার মনে খুবই জোরালোভাবে রয়ে গেছে। বিদেশে আওয়ামী লীগ, বিএনপি’র কমিটি এখন থাকতেই হবে কেন? ওরা কি ওখানে রাজনীতি করবে? ওরা কি ওই দেশের রাজনৈতিক দল হিসাবে নিবন্ধিত হয়ে নির্বাচনে অংশ নেবে? তাহলে কেন? আচ্ছা, না হয় মানলাম যে আমাদের জাতীয় পর্যায়ের বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলো তাদেরকে স্বীকৃতি দিয়েছে। ফান্ড কালেকশনের জন্যই দিক, আর সেখানে মুসাবিদা করার জন্যই হোক, তারা এদেরকে নিজেদের অংশ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কিন্তু ছাত্র বা যুব সংগঠনের প্রয়োজনীয়তাটা কোথায়? এইসব দেশে যুবলীগ, ছাত্রলীগ, যুবদল, ছাত্রদলের কমিটিও আছে। এরা দেশের যুবক বা ছাত্রদের জন্য কতটা উপকারী ভূমিকা রাখতে পারছে সেটা হয়তো বলা কঠিন, তবে তারা সেখানে মারামারি আর হট্টগোল সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের ভাবমূর্তির যে বারোটা বাজাচ্ছে, তা বলা যায় নির্দ্বিধায়। একটা উদাহরণ দেয়া যায়। এবছরই জাতীয় শোক দিবস পালন করতে যেয়ে যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে প্রকাশ্যে মারামারি হয়েছে। পূর্ব লন্ডনের মাইক্রো বিজনেস সেন্টারে হচ্ছিলো সেই আলোচনা সভাটি। আয়োজক অবশ্য ছিল যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ। সভা থেকে বের হয়েই ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ নিজেদের মধ্যেই হাতাহাতি মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। ওদেরকে থামাতে পরে পুলিশ ডাকতে হয়েছিল।
তবে বিদেশ যুব এবং ছাত্রদের সংগঠন নিয়ে কিন্তু এগুলোর দেশীয় নেতৃবৃন্দের আগ্রহের কমতি নেই। এনিয়ে বিরোধের জন্মটাও দেয়া হয় সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মদদেই। বিদেশে যেয়ে সংগঠনের সভাপতি এক কমিটিকে অনুমোদন দেন, তো সাধারণ সম্পাদক যেয়ে আর এক কমিটিকে অনুমোদন দেন। বলা বাহুল্য, এই উভয় অনুমোদনের পিছনেই নিয়ামক হিসাবে কাজ করে অর্থ আর উপঢৌকন। যুবদলের এক নেতা সম্পর্কে তো এমন কথাও প্রচারিত আছে যে, গত আট বছর ক্ষমতার বাইরে থেকেও এই নেতা কেবল বিদেশে গমন এবং সেখানকার কমিটির অনুমোদনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন। এই লোকের এমন ঘটনাও আছে যে, একই এলাকায় তিনি নিজেই একাধিক কমিটি অনুমোদন করেছেন। আবার যারা অর্থ আরা উপঢৌকনের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে গেছে, তারা নিজেরাও নতুন নতুন সংগঠনের জন্ম দিয়ে বসেছেন। সেই সব সংগঠনের নাম শুনলেই উপলব্ধি করা যায় এদের ধান্ধাটা কোন পর্যায়ের? যেমন ধরা যাক, ‘তারেক রহমান অনলাইন ফোর্স’! এটি একটি সংগঠনের নাম। দেশে এর কোন অস্তিত্ব আছে বলে জানা না থাকলেও অনেক দেশেই এটি ধান্দার মাধ্যম হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এরকম তাঁতী লীগ, মৎস লীগের শাখাও আছে বিদেশে। বিদেশের মাটিতে বসে ওরা কি তাঁত বোনে? মাছ মারে? এ কেমন মানসিকতা আমাদের?
আসলে আমি এটিকে একটা জটিল পরিস্থিতি বলবো। ওদের কাছ থেকে জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যে কিছু পাওয়া নিয়ে দ্বিধা থাকলেও নেতাদের প্রাপ্তিযোগ যে রয়েছে তা নিয়ে কোনই সন্দেহ নেই। হয়তো সে কারণেই এ প্রবণতা দিন দিন বাড়তেই থাকবে। আর এই ধারা যত বেগবান হবে, ততই বিদেশে ভূলুণ্ঠিত হতে থাকবে আমাদের জাতীয় ভাবমূর্তি। অথচ জটিল এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি কিন্তু খুবই সহজ। কেবল দুই নেত্রী যদি সিদ্ধান্ত দেন, দেশের বাইরে আমাদের কোন শাখা থাকবে না, তাহলেই হবে। প্রবাসে যারা গেছেন, ওখানে যারা কাজ করছেন, তারা দেশে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাচ্ছেন, ওতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে। প্লিজ, আপনারা ওটাই করুন। বিদেশে যেয়ে দেশীয় রাজনীতি করবেন না। কারণ এটা করতে যেয়ে কি কিছু করছেন এখন, তাতে বিদেশীদের কাছে আমরা বেইজ্জতি হচ্ছি, লজ্জিত হচ্ছি।
আমি জানি, এসব আহ্বানে ওনারা থামবেন না। ওনাদেরকে আসলে থামাতে হবে। আর সেটা পারবেন কেবল দুই নেত্রী। দেশ, জাতি এবং সর্বোপরি আপনাদের নিজেদের সম্মানের স্বার্থে এদেরকে থামান।

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০৫
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদিকে shoot করে লাভবান হলো কে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:২৪


শরিফ ওসমান হাদি যিনি সাধারণত ওসমান হাদি নামে পরিচিত একজন বাংলাদেশি রাজনৈতিক কর্মী ও বক্তা, যিনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। তিনি ত্রয়োদশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধা রাজাকারি পোষ্ট ......

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৫৬


আমি স্বাধীন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করেছি। আমার কাছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, বা পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে আজকের বাংলাদেশের তুলনা—এসব নিয়ে কোনো আবেগ বা নস্টালজিয়া নেই। আমি জন্মগতভাবেই স্বাধীন দেশের নাগরিক, কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা কেন ভারতীয় বাহিনীকে বাংলাদেশে দীর্ঘদিন রাখেনি?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:২০



কারণ, কোল্ডওয়ারের সেই যুগে (১৯৭১সাল ), আমেরিকা ও চীন পাকিস্তানের পক্ষে ছিলো; ইন্দিরা বাংলাদেশে সৈন্য রেখে বিশ্বের বড় শক্তিগুলোর সাথে বিতন্ডায় জড়াতে চাহেনি।

ব্লগে নতুন পাগলের উদ্ভব ঘটেছে;... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×