আজ বিকেলে পাশের বাসায় "লাল নিশান" টানিয়ে দিয়ে গেলো। ব্যালকোনি থেকে দেখলাম- ঐ বাসার গেটের উপর আনুমানিক ১.৫'x১.০' আয়তনের ছোট্ট একটা নিশান।
ঐ বাড়ির ছোট ছেলে তাবলীগ করতে বেড়িয়েছিলো। সেখানে লকডাউন হওয়ায় পালিয়ে বাসায় চলে আসছে। যে এলাকায় ছিলো সে এলাকা থেকে আমাদের থানায় খবর দেয়। থানা থেকে ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে জানানো হয়। তিনি এসে এই ছোট্ট লাল পতাকা ঝুলিয়ে দেবার সাথে এলাকায় টহল বসালেন। বাড়ি লকডাউন।
একটু দূরে আরেক বাসায়ও নাকি একই রকম জামাত থেকে পালিয়ে আসা আরেক ধর্মপ্রাণ যুবক এসেছে। সেখানেও বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। ফলে নৈশপ্রহরীদের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে আমাদের আশেপাশের রাস্তায় হাতে লাঠি, মুখে বাঁশি নিয়ে পাহারা দিতে হচ্ছে। একটু পরপর মাইকিং করছে। এখন বাসা থেকে বের হলেই লাঠির বাড়ি খাওয়া অস্বাভাবিক না।
লকডাউন মানে কেউ ঢুকবেও না, বেরও হবে না। কিন্তু সন্ধ্যার আগেই দেখলাম এক লোক হনহন করে বাসায় ঢুকে গেলো। কেউ যে বের হবে না, তার ভরসা কোথায়? আশা করি লকডাউনের বাড়িগুলো পাহারাদারগণ ঠিকভাবে পাহারায় রাখবে। বহিঃগমণ ঠেকিয়ে রাখবে।
যারা এসেছে তারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী না। তাদের দেহে এখন পর্যন্ত কোন পাওয়াও যায় নি। আশা করি পাওয়া না যাক। এদেরকে আল্লাহ হিদায়াত দিন। এরা মহামারির দিনে গোঁয়ারের মতো ধর্ম প্রচারে গিয়েছিলো। জানি না এরা কি নেকি কামিয়ে এসেছে। এরা নিজেরা বাঁচুক, আমরাও রক্ষা পাই।
আগে বাড়ির বড়দের মুখে শুনতাম অমুক রোগে গ্রামের পর গ্রাম উজার হয়ে যায়। মহামারির নাম বইয়ের পাতায় পড়েছি। গল্প উপন্যাসের ঘটনায় বা সিনেমার স্ক্রিনে দেখেছি। আজ আমরা স্বচক্ষে সেই ঘটনা প্রত্যক্ষ করছি।
আল্লাহ সংক্রমণ থেকে এই বাংলার পাশাপাশি সমগ্র বিশ্বকে রক্ষা করুন। আমাদের হাতে কিছুই নেই। ঘরে বসে থাকা ছাড়া। আর যারা করোনার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী যুদ্ধে লিপ্ত, তাদের জন্য দোয়া করা ছাড়া আমাদের মতো সাধারণ লোকদের আসলে কিছুই করার নেই।
#Stay_Safe #Stay_Strong #কোভিড-১৯
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:১৮