somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আদমচরিত 02

১৮ ই মার্চ, ২০০৬ সন্ধ্যা ৭:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আদম জুলজুল করে তাকিয়ে থাকে ঈভের দিকে। ঈভের পরনে লতাপাতার কাঁচুলি, লতাপাতার কৌপীন, তার শরীরে এক রুক্ষ লাবণ্য, আদম হাঁ করে তাকিয়ে দেখে।

ঈভ বলে, "আদম, তুমি কেন এইভাবে তাকিয়ে আছো? হাঁ বন্ধ করো, মুখে মাছি ঢুকবে।"

আদম তাড়াতাড়ি মুখ বুঁজিয়ে ফেলে সরে পড়ে।

ঝামেলার শুরু হয়েছে এক স্বর্গদূতকে নিয়ে। তার নাম রসময়, সে স্বর্গদূত আর স্বর্গবালাদের নিয়ে নানারকম গরম গল্প তৈরিতে ওস্তাদ। আদম মাঝে মাঝে বড় জঙ্গল পেরিয়ে ঐ মাঠের কাছে গাঁজার পাতা ছিঁড়তে যায়, সেখানেই ঐ রসময়ের সাথে তার ক্রমান্বয়ে সাক্ষাৎ, আলাপ ও দোস্তি হয়েছে। রসময়ের কাছে গল্প শুনে শুনে ইদানীং আদম একটু গরম হয়ে আছে।

সম্প্রতি "পাশের বাড়ির স্বর্গভাবী" নামে একটা কাহানি বানিয়েছে রসময়, সেটা শুনে আদমের মাথা ঝিমঝিম করছে। স্বর্গবালাদের গড়ন মানুষের মতই, তাই ঈভের সাথে অনেকখানিই মিলে যায় অনেককিছু। আদমের দুষ্টু মাথায় নানা পরিকল্পনা খেলতে থাকে।

কিন্তু পরিকল্পনা ও গল্পমাফিক অগ্রসর হতে গিয়ে বাধা পায় আদম। ঈভ মোটেও পাশের বাড়ির স্বর্গভাবীর মতো উদার নয়, সে ঝটকা মেরে নিজের শরীরের উল্লেখযোগ্য অংশ থেকে আদমের হাত সরিয়ে দেয়, তারপর ঠাস করে একটা চড় লাগায় আদমের মুখে। "ছি আদম, তুমি আবার গাঁজা খেয়ে এসেছো? আবার যদি আমার গায়ে হাত দাও আমি সোজা ঈশ্বরের কাছে নালিশ ঠুকে দেবো।"

আদম চড় খেয়ে গোমড়া মুখে চলে যায় কোথায় যেন।

কিন্তু দিন কতক বাদে রসময়ের কাছ থেকে "পাশের বাড়ির স্বর্গমাসি" নামে আরেকটা গল্প শুনে এসে আদম ঈভকে জাপটে ধরে। ঈভ এবার বহুকষ্টে নিজেকে উদ্ধার করতে সমর্থ হয়, কিন্তু আদম তার লতার বাঁধন খসিয়ে ফেলে, ঈভ কোনমতে ছুটে পালায় সোজা ঈশ্বরের দরবারে।

নালিশ শুনে ঈশ্বর গম্ভীর হয়ে ওঠেন। তারপর আদমকে ডেকে পাঠান। আদম মাথা নিচু করে গুটিগুটি পায়ে ঢোকে দরবারে।

"আদম, তুমি নর। নর আদম। নরাধম নও। কেন ঈভকে ওভাবে হামলা করলে?" ঈশ্বর গম্ভীর গলায় বলেন।

আদম ফোঁসফোঁস করে কাঁদে শুধু।

ঈশ্বর বলেন, "জ্ঞানবৃক্ষের ফল না খেয়েই তুমি যেমন উত্থিত হয়ে চলাফেরা করছো, ঐ ফল খেলে কী কান্ড করে বেড়াবে কল্পনা করতে গিয়ে আমি শিউরে উঠছি! তোমাকে হুঁশিয়ার করে দিলাম আদম, এরপর এসব দুষ্টুমি করলে তোমাকে কঠিন শাস্তি দেয়া হবে কিন্তু!"

আদম হাউমাউ করে কেঁদে বলে, "কী করবো? ঈভের শরীরটা দেখলেই আমার কেমন কেমন লাগে! আর ও কাপড়চোপড় পরে না ঠিকমতো, কতো কিছু দেখা যায়, আমার মাথাটাই গরম হয়ে যায় ওকে দেখলে!"

ঈশ্বর কঠোরভাবে বলেন, "সেটা তোমার মাথার দোষ, ঈভের কাপড়ের দোষ না। নিজের মাথা ঠিক করো।"

আদম গোঁয়ারের মতো বলে, "আপনি ঈভকে বলুন না একটু ঢেকেঢুকে চলতে, আমি গরম হয়ে যাই তো!"

ঈশ্বর বলেন, "কী আশ্চর্য আদম! তোমার নষ্ট মাথার জন্য দেখি দুনিয়াটাই দুইদিন পর ঢেকে ফেলতে হবে! যাও যাও, বাজে বোকো না, জড়িবুটি খেয়ে একটু সুস্থ হও। আবার যদি তোমাকে উত্থিত হতে দেখি, একদম স্বর্গ থেকে কানে ধরে বার করে দেবো!"

আদম চোখ মুছতে মুছতে বেরিয়ে আসে। আর মনে মনে কঠিন শপথ করে সে। ঈভকে কাবু করবেই সে একদিন, তার ওপর চড়বেই সে একদিন। আর যদি না পারে, তাহলে ... তাহলে ... ঐ পঁচা জলার অম্ল খানিকটা যোগাড় করে ঈভের শরীরটা পুড়িয়ে ছারখার করে দেবে সে!
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডালাসবাসীর নিউ ইয়র্ক ভ্রমণ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:৪৪

গত পাঁচ ছয় বছর ধরেই নানান কারণে প্রতিবছর আমার নিউইয়র্ক যাওয়া হয়। বিশ্ব অর্থনীতির রাজধানী, ব্রডওয়ে থিয়েটারের রাজধানী ইত্যাদি নানান পরিচয় থাকলেও আমার কাছে নিউইয়র্ককে আমার মত করেই ভাল ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×