somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি ভাল নেই!! নাকি দেশ ভাল নেই?

১৩ ই মে, ২০১২ দুপুর ২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
অনেক দিন ধরে কোন পোষ্ট লিখি না। লিখার ইচ্ছা যে একেবারে নেই তা কিন্তু না। তবে কেন লিখছি না বা লিখতে পারছি না, সেটা আমার নিজের কাছেই মাঝে মঝে বোধগম্য হয় না।

তবে কি! আমি ভাল নেই? সত্যিই ভাল নেই? হযতবা! জীবনের আকাঁবাকা পথে পথ চলতে যেয়ে জীবনের বিধি বিধানে কখনও সখনও আটকে যাই নিজের অজান্তেই, ব্যাঘাত ঘটে প্রায়শই নিজের চিন্তা চেতনায়, ক্ষনিকের জন্য আটকে যায় জীবন চাকা, কিছুটা পিছিয়ে যাই অলক্ষ্যেই। পরক্ষনেই গা ঝাড়া দিয়ে চলতে শুরু করি, জীবন- সংসার এর মায়ায়, বেচে থাকর মোহে। চলতে চলতে আবার হোচট খাই, আবার পথ চলি........এভাবে এগিয়ে যেতে থাকি আমি ও আমার বেচে থাকা। মহান আল্লাহ তায়ালাকে ধন্যবাদ যে, সকল নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত থেকেও তার অনুগ্রহে আর নিজের অদম্য প্রচেষ্টায় বেচে আছি বলে।

কিন্তু নিজের প্রচেষ্টার গন্ডি পেরুলেই প্রতি মুহুর্তে পরতে হয় অজশ্র ভোগান্তিতে। ভোগান্তির যেন আর শেষ নেই। ঘর থেকে রাস্তায় বেরুলেই বিরক্তিতে মনটা কুচকে থাকে সারাক্ষন। এক ঘন্টার রাস্তা তিন ঘন্টায়ও যখন মুক্তি মেলে না, গাড়িতে বসে থেকেও স্বস্তি পাওয়া যায় না আবার হাটতে যেয়েও ঘটে বহুবিধ বিপত্তি। এবড়ো থেবড়ো রাস্তা আর এপাশ ওপাশ খুড়াখুড়িতে দীর্ঘদিন মানুষ ভোগান্তিতে থাকলেও এটা দেখার ও তা থেকে পরিত্রানেরও যেন কোন মানুষ নেই। আর জনগন! সবারই কেমন যেন গা সয়ে গেছে। মুখ ফুটে কেউ কিছু বলে না, মনে হয় ইচ্ছা থাকা সত্বেও বলতে চায় না। আর সবচেয়ে বিরক্তির উদ্রেক হয় নিত্যদিনের বাজারে গেলে। আমরা যারা স্বল্প আয়ের সাধারন মানুষ তাদের হয়েছে সবচেয়ে বড় জ্বালা। আমরা না পারি বলতে, না পারি সইতে। "দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্ধগতি, খেতে হবে কচুর লতি" - সেটাও এখন আর কুলিয়ে-পুষিয়ে উঠতে পারছিনা। বাজারের এই শাসন আর শোষনে নিঃসপেশিত হয়ে ঘামে গরমে শ্রান্ত পরিশ্রানত হয়ে ঘরে গিয়ে যখন দেখা যায় বিদ্যুৎ নেই, হাতে মুখে একটু পানির প্রলেপ দেওয়ার মতও যৎসামন্য একটু পানি নেই, খাইতে বসে সময় মত খাবার নেই (গ্যাসের অভাবে রান্না হয় না বলে) তখন নিজেকে মনে হয় সমাজের উচ্চিষ্ট, অসুচি, পরিত্যাক্ত।
আর বিদ্যুৎ! এর কথা আর কি ইবা বলব। কু্ইক রেন্টালের নামে বিদ্যুতে দেশ ভেসে গেলেও!! তা কাজীর গরুর মত বাস্তবে যে গোয়ালে নেই সেটা এক ঘন্টা পর পর বিদ্যুতের আসা-যাওয়ার রিহার্সেলেই প্রতিয়মান হয়। তারপরও কথার ফুলঝুড়িতে টিভির পর্দা আর মঞ্চ থাকে সারক্ষন প্রকম্পিত, সাধারনের কান হয় ঝালাপালা। তারপর আছে মরার উপর খারার ঘা এর মত হত্যা, গুম চিনতাই আর হয়রানী আতন্ক। সারাক্ষনই মনটা ভিতরে ভিতরে কুকঁড়ে থাকে, কখন কে না কে অপদস্ত, হেনস্হা অথবা গুমই করে ফেলে। মাঝে মাঝেই শুনা যাচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললে বা লিখলে বিশেষ গোয়েন্দা সংস্হার লোকজন নাকি অনেককে অপদস্ত, অপমানিত ও হেনস্হা করছে। এগুলো শুনলেই কেমন জানি অন্তরাত্বা পর্যন্ত কেপে উঠে, গা গুলিয়ে বমি বমি ভাব হয়, নিজেই নিজের মধ্যে কুকড়ে যাই, গুটিয়ে থাকি সারাক্ষন। যখন দেখি সাংবাদিক সাগর-রুনী কে হত্যা করে খুনীরা পার পেয়ে যায়, ইলিয়াস আলীর মত একজন জাতীয় জনপ্রিয় নেতাকে গুম করলে তার কোন হদিস মেলে না, তখন আমার মত একজন অতি সাধারন নাগরিকের হত্যা বা গুমের ঘটনায় দেশ, দেশের প্রশাসন বা সরকার কিইবা করবে? কিইবা ভুমিকা রাখবে? তা ভেবে শুধু শন্কিত বা আতন্কিতই হই না, রীতিমত ভিতরে ভিতরে কুকঁড়ে থাকি সর্বক্ষন। নাগরিক হিসাবে কি এটাই আমার আপনার প্রাপ্য?? একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশে বাস করেও স্বাধীনভাবে কেউ সত্য কথা লিখতে ও বলতে পারবে না, নিজের মৌলিক অধিকার পাবে না এবং তা বলতেও পারবে না, প্রকাশ ঘটাতে পারবে না, এটা কেমন কথা, এটা কোন ভাবেই সহ্য করা যায় না, তা কারো কাম্যও হতে পারে না।

২০০৪-৫ সালেও যে র‌্যাবকে দেখলে পথ চলতে সাহস যোগাত, সেই একই র‌্যাবকে এখন দেখলে মনটা অজানা আতন্কে কেন জানি কুকঁড়ে থাকে। যে পুলিশ জনগনের বন্ধু হওয়ার কথা ছিল সেই পুলিশ এর কথা নাই বা বললাম। এত সব প্রতিকুলতা, আর ভীতিকর অবস্হায় নিজেই নিজেকে সাহস যোগাই, সাহসী হই এই বলে, যে আমি তো কোন অপরাধ করিনি, আমিতো কোন আইন অমান্য করেনি, আমি অপরাধী নই..............!। তারপরও আতন্ক। আমার মত আজ এই আতন্ক সাধারন জনমনে অহরহই বিরাজ করে বা করছে। এই ভীতিকর গুমট অবস্হা কোন অবস্হাতেই জনগন, রাষ্ট্র বা সরকার এর কোনটার জন্যই শুভ ও কাম্য হতে পারে না।

তবে আজ আমার সেই ধারনা ভুল প্রমানিত হল (সত্যিই কি তাই?) আজ পেপার খুলেই প্রথমেই চোখে পড়ল, বড় বড় করে হেড লাইনে লেখা শেখ হাসিনার প্রতি ৭৭ শতাংশ মানুষের আস্থা : গ্যালাপ জরিপ শধু তাই নয়, জরিপটিতে দাবী করা হয়েছে সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে এশিয়ার নেতাদের মধ্যে প্রথম কাতারেই রয়েছেন দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার পরিচালনাকারী শেখ হাসিনা। তালিকায় তার অবস্থান সপ্তম। জরিপে অংশ নেয়া ১৯ শতাংশ মানুষ তার ওপর নাখোশ বলে জানা গেছে। গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্যালাপের এ জরিপে শেখ হাসিনা পেছনে ফেলেছেন- প্রতিবেশী ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং, নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জন ফিলিপ কি, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুসিলো বামবাং ইউধোইয়োনো, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী নুয়েন টান ডাং এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী জুলিয়া গিলার্ডকে। এশিয়ার সবচেয়ে শিল্পোন্নত দেশ জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিকো নোডার অবস্থানও তার পেছেনে। তবে কি সত্যিই দেশের মানুষ ভাল!! আছে? তাইতো মনে হয়.......অন্তত গ্যালাপ জরিপ এ শেখ হাসিনার প্রতি ৭৭ শতাংশ মানুষের আস্থা (!!??) সেই কথাইতো বলে।


হায়! সেলুকাস!...................../:)


আমার মনের শন্কা ছিল হয়তো দেশ ভাল নেই বলেই হয়ত আমিও ভাল নেই। আজকের পর থেকে সেই শন্কা রাখার হিম্মত বা সাহস এর কোনটাই রাখার কোন ক্ষমতা বা অধিকার আর আমার রইল না:((। আসলেই দেশ ভাল আছে.........(!!??)। সরকারের শেষ বেলায় এসে এত এত অনিয়ম, এত বড় বড় অঘটন, দুর্নীর্তি, দলবাজি, টেন্ডারবাজি, দ্রব্যমুল্যের উর্ধ্ধগতি, খুন, গুম, অপহরন, অরক্ষিত বর্ডার, এক তরফা দেওয়ার আয়োজন, আরো অনেক ..........অনেক কিছুর পরও আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এত ব্যাপক জনপ্রিয়তা, সেটা মনে হয় আমার মনের সংকীর্নতারই!! প্রকাশ। তাই আজ আমি আমার নিজের কাছেই ভুল প্রমানিত হলাম -"দেশ ঠিকই ভাল আছে, শুধু ভাল নেই আমি..............
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মে, ২০১২ দুপুর ২:০৯
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হেঁটে আসে বৈশাখ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০০


বৈশাখ, বৈশাখের ঝড় ধূলিবালি
উঠন জুড়ে ঝলমল করছে;
মৌ মৌ ঘ্রান নাকের চারপাশ
তবু বৈশাখ কেনো জানি অহাহাকার-
কালমেঘ দেখে চমকে উঠি!
আজ বুঝি বৈশাখ আমাকে ছুঁয়ে যাবে-
অথচ বৈশাখের নিলাখেলা বুঝা বড় দায়
আজও বৈশাখ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছায়ানটের ‘বটমূল’ নামকরণ নিয়ে মৌলবাদীদের ব্যঙ্গোক্তি

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



পহেলা বৈশাখ পালনের বিরোধীতাকারী কূপমণ্ডুক মৌলবাদীগোষ্ঠী তাদের ফেইসবুক পেইজগুলোতে এই ফটোকার্ডটি পোস্ট করে ব্যঙ্গোক্তি, হাসাহাসি করছে। কেন করছে? এতদিনে তারা উদঘাটন করতে পেরেছে রমনার যে বৃক্ষতলায় ছায়ানটের বর্ষবরণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বয়কটের সাথে ধর্মের সম্পর্কে নাই, আছে সম্পর্ক ব্যবসার।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৫০


ভারতীয় প্রোডাক্ট বয়কটটা আসলে মুখ্য না, তারা চায় সব প্রোডাক্ট বয়কট করে শুধু তাদের নতুন প্রোডাক্ট দিয়ে বাজার দখলে নিতে। তাই তারা দেশীয় প্রতিষ্ঠিত ড্রিংককেও বয়কট করছে। কোকাকোলা, সেভেন আপ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানুষের জন্য নিয়ম নয়, নিয়মের জন্য মানুষ?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৪৭



কুমিল্লা থেকে বাসযোগে (রূপান্তর পরিবহণ) ঢাকায় আসছিলাম। সাইনবোর্ড এলাকায় আসার পর ট্রাফিক পুলিশ গাড়ি আটকালেন। ঘটনা কী জানতে চাইলে বললেন, আপনাদের অন্য গাড়িতে তুলে দেওয়া হবে। আপনারা নামুন।

এটা তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

একজন খাঁটি ব্যবসায়ী ও তার গ্রাহক ভিক্ষুকের গল্প!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৪


ভারতের রাজস্থানী ও মাড়ওয়ার সম্প্রদায়ের লোকজনকে মূলত মাড়ওয়ারি বলে আমরা জানি। এরা মূলত ভারতবর্ষের সবচাইতে সফল ব্যবসায়িক সম্প্রদায়- মাড়ওয়ারি ব্যবসায়ীরা ঐতিহাসিকভাবে অভ্যাসগতভাবে পরিযায়ী। বাংলাদেশ-ভারত নেপাল পাকিস্তান থেকে শুরু করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×