somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এক জাপানিজের চোখে একুশে ফেব্রুয়ারী ও বাংলাদেশ এবং কিছু কথা

২৭ শে আগস্ট, ২০০৬ ভোর ৪:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাতৃভাষায় কথা বলার মত তৃপ্তি আর কোন ভাষায় আছে কি ???
নেই নেই নেই।
তাইতো আমরা কিছুবাংলাভাষী বাংলাদেশী পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করেও একত্রিত হয়েছি এই মাতৃভাষার ব্লগে।
বায়ান্নর সেই একুশে ফেব্রুয়ারী থেকে একাত্তুরের ষোলই ডিসেম্বর পর্যন্ত আমার বাংলা মায়ের দামাল ছেলেদের কতো বুকের রক্ত ঝরেছে এই বাংলার জন্য।আজ আমাদের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী বিশ্ব দরবারে আন্তজর্াতিক মাতৃভাষা হিসেবে স্বীকৃত।

JAPANESE UNIVERSITIES ALUMNI ASSOCIATION IN BANGLADESH (JUAAB) প্রতিবছর ঢাবি'র টিএসসিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে Bangla Speech Compitition For Foreign Nationals এর আয়োজন করে।
2005 সালে এই কম্পিটিশনের 1ম স্থান অধিকারীর বাংলাভাষা ও বাংলাদেশ নিয়ে বক্তব্য আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।

প্রিয় সুধিমন্ডলী
আসসালামু আলাইকুম।
আমি সালাম জানাই শহীদ মোঃ রফিক, জাব্বার, সালাম ও বরকত সহ এ দেশের সেই সব জানা অজানা বীর শহীদদেরকে- যাদের বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশী জাতীর মাথা আজ বিশ্ব দরবারে উচ্চ শিখরে।
যাদের সবের্াচ্চ ত্যাগ , জীবন উৎসর্গের মাধ্যমে আজ বিশ্ব স্বীকৃত "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস" মহান একুশে ফেব্রুয়ারী।

প্রিয় সুধিবৃন্দ
আমি Afifa Kiyomi MLLIK,Japanese বাংলাদেশে প্রায় একযুগ যাবৎ আসা-যাওয়া করছি।প্রায় চার বছর যাবৎ ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছি। এ দীর্ঘ সময়ে বাংলাদেশে আমার অভিগ্গতা(বানান হচ্ছেনা) দুই রকমের। একটি খুবই খারাপ ও কষ্টদায়ক, আর একটি খুবই সুন্দর ও ভালো লাগার। প্রথমে খারাপ ও কষ্ট লাগার কথাটা তুলে ধরছি।

একদিন আমি গাড়িতে চড়ে যাচ্ছিলাম। আমাদের সামনে আরও একটি প্রাইভেট গাড়ি চলছিল। হঠাৎ সেই গাড়ির যাত্রী গাড়ির জানালা খুলে তার বাচ্চার মলসহ pampas ফেলে দিল। তখন আমি গাড়ির যাত্রীকে দেখি।খুবই সুন্দরী, দামী পোশাক পড়া এক ভদ্্র মহিলা,সম্ভবত তিনি শিক্ষিতা।
এই শিক্ষিতা মহিলা এরকম অরুচিশীল কাজটা করলেন কি ভাবে? কি মূল্য হল এই দামী গাড়ির এবং এত সুন্দর পোশাকের।
এ দেশকে ভালোবাসি বলেই আমি এদেশে থাকি। আমাকে কষ্ট দেয় এদেশের পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব।যত্র-তত্র ময়লা আর ময়লা।যেখানে যাই সেখানেই ময়লা।যেমন চিপসের প্যাকেট, আইসক্রীমের কাপ,বাদামের খোসা কাগজের ঠোঙ্গা,সিগারেটের অবশিষ্টাংশ,পানের চিপটি,কলার খোসা,প্লাস্টিকের বোতল........আরো অনেক অনেক কিছু।
15 কোটি লোকের 30কোটি হাত দিয়ে যদি dustbin ব্যবহার না করেযেখানে সেখানে ময়লা ফেলা হয়, তাহলে 55 হাজার বর্গ মাইলের এই ছোট দেশটির কি অবস্থা হবে ভেবে দেখেছেন কি? এবং এই ময়লা গুলো পরিস্কার করা কাদের কাজ? এটাও কি সরকারের কাজ?

দ্্বিতীয়ত আমার খুবই ভালো লেগেছে-এদেশের আত্নীয়তার বন্ধন।যেমন আমার তিন ছেলে তাদের দাদা-দাদী,চাচা-চাচী,ফুফা-ফুফী,আরো 20-30জন ভাই-বোন, ওরা এত সুন্দর আত্নীয়তার বন্ধনের মধ্যে আন্তরিক পরিবেশে বড় হয়ে যাচ্ছে যা ভাবাই যায়না।আমি বিদেশী,আমাকেও আত্নীয়রা এত এত ভালোবাসে যা চিন্তা করা যায়না।যার কারনে আমার দেশের কথা ভুলে এই দেশে থাকতে পারছি।
এ দেশের সব পরিবারেই এ রকম আত্নীয়তার বন্ধন দেখা যায়।এটা বাংলাদেশের খুবই সুন্দর সিস্টেম,যা আমাকে অনেক মুগ্ধ করেছে।

এই রুপ বন্ধন যদি প্রতিটি লোক দেশের জন্য করতে পারেন,তবে একদিন এই দেশটা আসলেই সোনার বাংলা হয়ে যাবে।শহীদ ভাইয়েরা যেমন শহীদ বরণ করে জাতীকে উচ্চ শিখরে তুলেছেন।আসুন আমরা সবাই দেশের প্রতি ক্ষুদ্্রতম হলেও নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখি আমাদের প্রিয় সোনার বাংলাদেশকে।
"পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ"।
ধন্যবাদ।

যার এদেশের সাথে নেই কোন রক্তের বন্ধন কেন সে এদেশটাকে নিয়ে এতো স্বচ্ছ সুন্দরভাবে চিন্তা করলো?

আর আমি , আমরা কি করি?

আমরা আমাদের এতো কষ্টে অর্জিত বাংলা ভাষার অপব্যবহার করি।

আমরা আমাদের সক্ষম 30কোটি হাত দিয়ে নিজেদের ছোট্ট ঘরটা গুছানোর চেষ্টা না করে অক্ষমের মতো নিজেরাই মরামারি আর হানাহানি করে মরি।

হিরোসিমা-নাগাসাকি ট্রাজেডির 50 বছরের মধ্যে টোকিও হয়ে গেল অন্যতম মেগাসিটি আর আমরা এখনো ভূতের পায়ের মতো পিছন দিকেই হাটি।

কেন আমরা এমন করি??

আমরা এমন কেন??
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে আগস্ট, ২০০৬ সকাল ৯:৫৮
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামাস বিজয় উৎসব শুরু করেছে, ইসরায়েল বলছে, "না"

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:০৮



গতকাল অবধি হামাস যুদ্ধবিরতী মেনে নেয়নি; আজ সকালে রাফাতে কয়েকটা বোমা পড়েছে ও মানুষ উত্তর পশ্চিম দিকে পালাচ্ছে। আজকে , জেরুসালেম সময় সন্ধ্যা ৮:০০টার দিকে হামাস ঘোষণা করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×