somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সোনালী দিনের স্মৃতিচারন

০৭ ই মে, ২০১০ সকাল ৮:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সোনালী দিনগুলোর স্মৃতিচারন করতে যেয়ে দেখি আরো কিছু বাকী রয়ে গেছে, যা উল্লেখ করলে ভাল হত। তাই আজকে আবার বসলাম। দেখি কতটুকু পারি।

কানামাছি: ছোট্টবেলায় ঢাকা থেকেছে কিন্তু কানামাছি ভোঁ ভোঁ খেলেনাই এমন মানুষ কমই পাওয়া যাবে। :) তো খেলাটার সময় বেশ চোরামী করা হত। আমরা চার জন খেলতাম। জুঁই-বেলীরা দুই বোন, আমি আর তাসনু আপু। চোর হলে চোখ বাঁধার সময় কাপড়টা ধরে ঢিলা করে রাখতআম যাতে নিচের দিকে একটু ফাঁকা থাকে। তাহলে পরে কে কোথায় পা দেখে তার পেছনে দৌড়ানো যাবে। :P একাজে বেলী ছিল সবচেয়ে ওস্তাদ। ওর চোখ বাঁধারয় "ওরে বাবা ওরে মা...চোখ গেল" বলে এমন ভাবে চিৎকার করত যে ঢিলা করে বাঁধতে হত। আর তখন উপর নিচ দিয়ে দেখে দেখে সবার পেচনে দৌড়াত X(

ফুলটোকা: এই খেলাটাতে মানুষ যত বেশী হয় তত মজা। তাই এটা গ্রামেই বেশী খেলেছি। দুই দলে দু'জন রাজা থাকত। তারাই নাম ঠিক করে দিতো। পরে এক দলের রাজা অন্য দলের কারো চোখ ধরে তার কপালে টোকা দেওয়ার জন্যে আয়রে আমার.... বলে ডাকতো আর সে এসে টোকা দিয়ে জায়গায় যেয়ে বসে পড়তো। রাজা চোখ খোলার আগে তার দলের সবার উদ্দেশ্যে বলত " ক খ গ ঘ, মাথা নিচু করো। রাজা বলে দিলে খেলবো...না" প্রতি দলের রাজার একটা কুটচাল ছিল যে কে টোকা দিলে কিরকম আচরন করবে। সেই আচরন দেখেই বলে দিতো। সঠিক ভাবে বলে দিতে পারলে একটা লাফ দিয়ে ঘর থেকে সামনে এগিয়ে যাবে। এভাবে যারা আগে অপর পক্ষের ঘরে যেতে পারবে তারাই জয়ী। B-)

রুটি থাপড়ানো: খেলাটার কথা পা.কা. ভাইয়া মনে করিয়ে দিয়েছে। এটা গ্রামে খেলেছি। আমাদের গ্রামে এটাকো বলত রুটি চাপটা বড় চার কোন একটা ঘরে এক জন দাড়িয়ে থাকতো আর চার পাশ থেকে সবাই ঘরে এক পা দিয়ে চোর কে যে যেদিক থেকে পারত জোড়ে একটা থাপ্পর মেরে আসত। থাপ্পর মারা সাথে সাথেই সে যদি কাউকে উল্টা থাপ্পর মারতে পারে তাহলে যাকে মারবে সে চোর হবে। যে চোর হত তআর খবর হয়ে যেতো।

স্টপ গাম্বুলা: এটাও পা.কা. ভাইয়া মনে করিয়ে দিয়েছে। এক সাথে অনেক জনের সাথে পাতাো থাকত। যাদের সাথে পাতানো তাদের পিঠে যদি হাত না থাকতো তাহলে ঘামা বলে জোরসে এক রাম কিল বসিয়ে দেওয়া হত। এরকম কিলের হাত থেকে বাঁচার জন্যে আবার ঘন্টা/দিন নির্দিষ্ট করা থাকত। নির্দিষ্ট সময় পরে আবার কিল। B-)

স্টপ: আরেক আজব খেলা হল এটা। এটা আমার পাতানো থাকত আমার দুই চাচাত ভাই-বোন আর এক ফুপুর সাথে। স্টপ বললেই যেভাবে ছিল সেভাবে দাড়িয়ে থাকতে বাধ্য। আর নড়লে সাড়ে সাতটা কিল(জোড়ে জোড়ে ছয়টা আর আস্তে একটা কিল=সাড়ে সাতটা):P বিটলামী করে মাঝে মধ্যে দেখতাম আমি যদি আগে স্টপ দিতাম তাহলে সহজে ঘন্ট দিতাম না, দাড় করিয়ে রাখতাম :P
আর ঢাকায় চলে আসায় সময় ঘন্টা দিতআম হলে আবার যেদিন বাড়ীতে যাবো সেদিন থেকে শুরু হবে B-)

কুমীর কুমীর: এটা এক্কেবারে কমন এটা খেলা। সেই পিচ্চিবেলা থেকে অনেক বড় হয়েও খেলেছি।:P কুমীর(চোর) একটু দূরে গেলেই ঘর থেকে নেমে "কুমীর তোর গাঙ্গে নেমেছি....." চ=দাঁত বের করে নাচা নাচি করতাম। আর সে দৌড়ে আসতো ধরার জন্যে। :) এই খেলার শিকল সিস্টেমটা বেশী মজার ছিল। কুমীরের সামনে দিয়ে একেক জনের হাত ধরে ধরে এক ঘর থেকে আরেক ঘরে চলে যেতাম। তবে একটু এদিক সেদিক হলেই ছুয়ে আবার কুমীর বানিয়ে দিতো। :(

খেলাটার কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যে কি নাম দিব কে ধন্যবাদ :)

লুডু: এইটা খেলেনাই আমার মনে হয় এমন মানুষ নাই। সে....ই একদম পিচ্চিবেলা থেকে খেলা শুরু করেছি এটা। আব্বা বসে বসে শিখাতেন। আমার গুটি যদি কেউ কাটতো তাহলে তার খবর ছিল। কেউ আমার গুটি কাটলে লুডু উল্টে ফেলে এক্কেবরে একাকার করে দিতাম X(( তবে আমি সবার গুটি কাটতে পারতাম :P। পরের দিকে আব্বা ছড়া কেউ আমার সাথে খেলতে চাইতো না আমার জীবনের প্রথম পাশ দিয়েই সারা জীবন খেলে গিয়েছি। এমন হয়েছিল যে কারো চয় না উঠলেও আমার ঠিকই উঠত। বছর দুই-তিন আগে আম্মা লুডুটা শোভন কে দিয়ে দিয়েছে। আর গুটি গুলোর কি হয়েছে আল্লায় ই জানেন।

ছোয়া-ছুঁয়ি, বরফ পানি, রাম-শাম-যদু-মধু, চোর-ডাকাত-পুলিশ-বাবু গোল্লা ছুট, দাড়িয়া বান্ধা ওপেন্টি বায়োস্কোপ, নাইন টেন টোস্কোপ(পাকা ভাই আর কি নাম দিব মনে করিয়ে দিয়েছে) আরো কত্ত খেলা যে খেলেছি মনেও নাই....

পোষ্ট টা অনেক বড় হয়ে গেল। এজন্য আন্তরিক ভাবে ক্ষমা প্রার্থী।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০১০ সকাল ৮:১৫
৪৬টি মন্তব্য ৪৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×