দিন দুয়েক আগে শেষ করলাম, হুমায়েন আহমেদের সর্বশেষ উপন্যাস "দেয়াল"

বইটা পড়লে যে কারো কাছে খালেদ মোশাররফ ও কর্নেল তাহের কে হিরো মনে হবে (দুজনের সাথেই হুমায়ুন আহমেদের ব্যক্তিগত পরিচিতি ও সংস্লিষ্টতা ছিল)। বংবন্ধু হত্যাকারীদের ও জিয়াকে মনে হবে অপরাধী। মজার বিষয় হল, খালেদ মোশাররফের বিরুদ্ধে পাল্টা অভ্যুত্থান, তার মৃত্যু ও সিপাহী বিপ্লবের ক্ষেত্রে কর্নেল তাহেরের ছিল অগ্রনী ভুমিকা । আধুনিক কালে জিয়া খুব খারাপ মানুষ হিসেবে পরিচিত হচ্ছেন (সরকার ও তাদের আনুকুল্য প্রাপ্ত প্রচার যন্ত্র ও বুদ্ধিজীবিদের দ্বারা)। এই দুই নায়ক (কিংবা মহানায়ক) যদিও একজন অন্যজনের পতন ও হত্যার ঘটনায় ভুমিকা রেখেছিলেন, তবুও তারা মহান। কারন তারা শেষ বিচারে জিয়ার বিরোধী ছিলেন কিংবা জিয়া্র দ্বারা ক্কতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। আর জিয়া হলেন ক্ষমতার ভাগীদার , দাবীদার একটি দল ও মতের প্রতিষ্ঠাতা।

আমরা কথায় কথায় বলতে শুনি "অমুক বীর মুক্তিযোদ্ধা"। মুক্তিযোদ্ধারা জাতির সুর্যসন্তান তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু তাই বলে তারা ফেরেশতা হয়ে যান না, তাদের কোন অন্যায় ও ঢাকা পড়েনা (অন্তত বর্তমান প্রচয়ারনাগুলো তেমনই দাবী করে)। দুঃখজঙ্ক হলেও সত্য, স্বাধীন বাংলাদেশে নব্বই পুর্বর্তী অস্থির সময়, ক্ষমতার পালাবদল, অভ্যুত্থান, পাল্টা অভুথ্যান, রক্তের হোলি খেলা...এই ঘটনাগুলোর সাথে মুক্তিযুদ্ধের খেতাব পাওয়া মানুষগুলো ব্যাপক ভাবে জড়িত ছিলেন। যারা রনাজ্ঞনে কাধে কাধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন, তারাই ব্যক্তিস্বার্থে একে অন্যের উপর ঝাপিয়ে পড়েছিলেন হিংস্র হায়েনার মত।

ঘটনা ঘুরেফিরে একই রকম। কিন্তু প্রচার প্রচারনা বিভিন্ন। ইতিহাসের সাথে রাজনীতির যোগ হলে সে ইতিহাস হয়ে দাঁড়ায় বড্ড গোলমেলে, বিভ্রান্তিকর।

বাংলাদেশের ইতিহাস আজীবন গোলমেলেই হয়ে থাকলো!