ঘটনা ১:
বাবু, গ্রাম সম্পর্কের ছোট ভাই। হটাৎ একদিন ফোন দিয়া জানতে চাইল আমি কোথায়? জানালাম ঢাকাতেই আছি। ও কোথায় জানতে চাইলাম। ও ঢাকা সি.এম.এইচ এ। শুনে অবাক হলাম। বললাম, “তুমি কবে আর্মীতে জয়েন করলে?” ও বলল, লাইনে দাড়াই ছিল। সৈনিক হিসেবে টিকে গেছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে - প্রশিক্ষণের সময় পা ভেঙ্গে গেছে। সে আর আর্মীতে থাকতে চায় না। আমার মামা কিম্বা দুলাভাইকে (দু জনই মেজর। একজন আর্টিলারীর। অন্যজন মেডিকেল কোরের।) বলে কোন হেল্প করতে পারব কি না? পরের দিন বাবুর বাবা ফোন দিল দুলাভাইকে। শুরু করল কান্না। তার একটাই ছেলে। তারা সেই ছেলেকে হাড়াতে চায় না। দুলাভাই অনেক বোঝাল। সে নিজেও ৩ মাস পরে পালাতে চাইছিল। একজন প্রশিক্ষক তাকে অনেক বুঝায়া শুনায়া রেখে দিয়েছিল। এই সব। বাবু এখন আর্মীতেই আছে। গত ঈদে দেখা হয়েছিল।
ঘটনা ২:
দুলাভাই বাসায় ফিরে ড্রেস খুলতেই দেখলাম বুকে ৭/৮ জায়গায় ফোস্কা পড়া। কি হয়েছে জানতে চাইলে বলল, “ফায়ারিং টেষ্ট ছিল। গুলির খোসা লেগে ফোস্কা পড়ে গেছে।“
ঘটনা ৩:
এটা আমার ছোট মামার ঘটনা। ঘটনাটা লজ্জাজনক। তবুও শেয়ার করছি। তিনি বাৎসরিক পিইটি পরীক্ষার সময় হোরাইজেন্টাল রোপিং করতে গিয়ে পড়ে যান। কোমরে তীব্র ব্যাথা নিয়ে সিএমএইচে ভর্তী হলে জানতে পারেন, “কোমরের হাড়ে চিড় ধরেছে।“
আমার জানা মতে এমন আর কোন চাকরী নাই যে চাকুরীর প্রশিক্ষণ নেবার সময় বাবা তার ছেলেকে হাড়ানোর ভয় পায়। একজন ডাক্তার রোগী দেখতে গিয়ে বুকে বুলেটের ছ্যাকা খেয়ে ফোস্কা নিয়ে বাড়ি ফেরে। আর মামার কথা কি বলব? তার অন্য বন্ধুরা যারা অন্য সরকারী চাকুরী কিম্বা প্রাইভেট কোম্পানীতে চাকুরী করে তারা দামী গাড়ীতে চড়ে এসি রুমে বসে অফিস করে। আর মামাকে ভাঙ্গা কোমড় নিয়ে সিএমএইচে দৌড়া দৌড়ি করতে হয়। যে চাকুরী করতে এসে সবাই পালায়ে বাচতে চায় সেই চাকুরীতে মোটিভেট করতে সরকার যদি কোন সুযোগ সুবিধা দেয় তবে আমাদের সুচীলদের গা জ্বালা করে। এসির হাওয়া খেয়ে বসে বসে চর্বি বাড়ানেওয়ালা কিম্বা আজিজ সুপার মার্কেটে বসে গঞ্জিকা সেবন পূর্বক দুকলম কাব্য রচনা কারীরা কি করে জানবে ক্যান্টনমেন্টে থাকার দু:খ?
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০১০ সকাল ৯:৩৮