আমাদের জীবণ এতই আধুনিক হয়ে গেছে যে এখন প্রতিটি মানুষের হাতে হাতে পৌছে গেছে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ভিডিও ও ছবি তুলতে সক্ষম ক্যামরা সিষ্টেম মোবাইল।
এই সমস্ত উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মোবাইল দিয়ে খুব সহজে যখন তখন যেখানেই ইচ্ছা তখন হাইরেজ্যুলেশন কোয়ালিটি ভিডিও ও ছবি তোলা সম্ভব।
যেখানে সেখানে প্রায় দেখা যায় কোন কিছু হলেই হুট করে ছবি তুলে বা ভিডিও করে আপলোড করে দেয় ফেসবুকে।
এবার বর্ণনা করবো আমার নিজে চোখে দেখা একটি র্দুঘটনার বাস্তব কাহিনী।
২০ শে এপ্রিল ২০১৪, অনুমাণিক দুপুর ২টার দিকে হবে। কুয়েতের ফাহিল নামক স্থানে র্দুঘটনাটি ঘটে। তখন আমি আমার অফিসের কাজে ব্যাস্ত ছিলাম, আমার আফিসটা ছিল একে বারে রাস্তার পার্শ্বে,
হঠাৎ শুনতে পাই প্রচন্ড জোরে গাড়ী ব্রেক করার শব্দ।
তাৎক্ষণিক কিছুই বুঝে উঠতে পারিনি, কি হল। ভাবলাম হয়তো কোন কুয়েতি গাড়ী ব্রেক করেছে, কারণ কুয়েতিদের এটিএকটি অদ্ভুদ এক রকম শখ, জোরে গাড়ী চালিয়ে হঠাৎ জোরে ব্রেক করে শব্দ করা।
ও মা! একি ব্যাপার মানুষ সবাই ঐ দিকে কেন ছুটো ছুটি করতেছে। কৌতুহল আর সামলাতে পারলাম না। আমিও দৌড়ে গেলাম দেখি ব্যাপারটা কি।
গিয়ে দেখি একজন রক্তাক্ত বষষ্ক মোটা মহিলা রাস্তায় পড়ে আছে।
হঠাৎ আমার একটি বিষয় নজরে পড়লো, ঠিক সেই মুর্হুতে কিছু লোক ঐ রক্তাক্ত মহিলাটিকে ভিডিও করতেছে, আবার কেউ তুলতেছে ছবি। দৃশ্যটি দেখে মনে হলো সবাই মজাপাচ্ছে ঐ আহত মহিলাটির র্দুঘটনার ছবি তুলে আর ভিডিও করে। আরো আর্শ্চয় ব্যাপার ছিল যারা মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও করতেছিল তাদের মাঝে ছিল বেশ কয়েজন কুয়েতি মহিলা।
হায় কি করুণ দৃশ্য, কি অদ্ভুদ নিষ্টুর আচারণ মানুষের। একটি প্রাণীও এগিয়ে আসতেছে না র্দুঘটনায় আহত ঐ বৃদ্ধাকে উদ্ধার বা সাহায্য করতে।
না আর সহ্য হলো না। কষ্ট আর দুঃখ নিয়ে সাহস করে একেবারে আহত মহিলাটির কাছে চলে গেলাম।
টিক তখন সাহস নিয়ে এগিয়ে এলো একজন পাকিস্তানী নাগরিক। আমরা দুজন যখন চেষ্টা করতেছিলম ঐ মহিলাকে রাস্তা হতে তুলে নিরাপদ স্থানে নিতে, ঠিক তখন আরো বেশ কয়েকজন এগিয়ে এলো, এবার পুরাদমে সাহস এলো মনে ।
রাস্তা হতে তুলে নিয়ে মহিলাটিকে একটি র্মাকেটের মেঝে শুয়ে দিলাম। পার্শ্বের এক দোকানদার প্রি একটি বালিশ আর দুটি চাদর দিল, কিছুক্ষণের মধ্যে চলে আসে পুলিশ ও এম্বুলেন্স। দ্রুত নিয়ে গেল ঐ আহত মহিলাটাকে।
পরে জানতে পারলাম ঐ মহিলাটি ছিল শ্রীলংকার নাগরিক, এক কুয়েতির বাসায় কাজের বুয়া হিসাবে কাজ করে। খুশি হলাম যখন শুনলাম তিনি দ্রুত সুস্থ উঠেছে।
সবার প্রতি একটি আকুল আবেদন, যে কোন র্দুঘটনা মুর্হুতে নিজের মোবাইল ফোন দিয়ে ছবি বা ভিডিও করবেন না। বরং র্দুঘটনা মুর্হুতে দ্রুত এগিয়ে যান সাহায্য ও উদ্ধার কজে।
দ্রুত ইমারজেন্সিতে প্রি ফোন করুন ( কুয়েতের ইমারজেন্সি নাম্বার ১১২)
র্দুঘটনার শিকার কোন মহিলা বা র্দুঘটানার দৃশ্য বেশী ভীবষ্য হয় দ্রুত তাকে কাপড় দিয়ে ঢেকে দিন।
তবে মনে রাখবেন আর সাবধান শুধু মাত্র বিদেশে কোন ক্রাইম বা কোন হামলায় আহত নিহতদের উদ্ধারে এগিয় যাবে না। বরং কোন হামলা আক্রমণ দেখলে দ্রুত ঐ স্থান ত্যাগ করুন।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৩১