গত ২২ তারিখে গিয়েছিলাম একাডেমিক জীবনের সরবোচ্চ ডিগ্রীর পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করতে, ১৯৯২ সালের জানুয়ারির ২৫ তারিখে শুরু হওয়া যুদ্ধ আজ শেষ প্রান্তে। আর কিছুদিন পর থেকে আমার ছাত্র পরিচয় টা আর দিতে পারবো না ভাবতেই পারছি না!! মিস ইউ ছাত্রজীবন!!!
আচ্ছা মাস্টার্স পরিক্ষায় পাশ করার পর আমি কি করবো?? কি আর করবো চাকরির জন্য হন্নে হয়ে ঘুরতে হবে!!! তবে আমার খুব শখ আমি বাংলাদেশের সরবোচ্চ উৎপাদনশীল খাত পোশাক শিল্পের সাথে সংযুক্ত হবো যেখানে শ্রমিক হিসাবে কাজ করে বাংলাদেশের দরিদ্রতম মানুষের এক গোষ্ঠী, যাদের চাওয়া পাওয়া অনেক কম যারা সরল সোজা, সামান্য টাকার বিনিময়ে যাদের দিয়ে উদয়াস্ত পরিশ্রম করানো যায় মাঝে মাঝে উপরি আয়ের লোভ দেখিয়ে রাজপথে নামিয়ে দেয়া যায়, যাদের জীবনের মূল্য অতি সামান্য!! যাদের কে চাকরীর ভয় দেখিয়ে যেকোনো সময় ধসে যাবে এমন নড়বড়ে বিল্ডিং এর মাঝে ঢুকিয়ে ফেলা যায়, ইচ্ছা ছিলো তাদের জন্য কিছু করার, আফসোস গত কালের ঘটনা দেখার পর আমার এই ইচ্ছা আট তালার কংক্রিটের নিচে চাপা পড়ে গেছে কারন আমি জেনেছি শুধু আমার ইচ্ছা থাকলেই হবে না আমাকে ক্ষমতাসীন দলের লোক হতে হবে তাহলে আমি অন্যের জমি দখল করে আমার ইচ্ছামত নিয়মনীতি কে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ৫ তালার ফাউন্ডেশনে আট তলা ভবন ঊঠাতে পারবো, আর ভবন ধসে পড়ার পর তারাই আবার আমাকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করবে আর যাদের ভোটে তারা নির্বাচিত হয়েছে তাদেরকে বুঝাবে যে আমরা সব রকম বেবস্থা নিচ্ছি!! ওদের গাড়ি আর বাড়ি দুইটাই সাউন্ডপ্রুফ আর এর ভিতরে থাকতে থাকতে এদের অন্তরটাও সাউন্ডপ্রুফ হয়ে গেছে নিশ্চয়ই তা না হলে তারা কিভাবে মিডিয়ার সামনে এসে বলে যে আমরা সবরকম বেবস্থা নিচ্ছি আর তারপর সারা রাত ওখানে কোন লাইটের বা সুযোগ সুবিধার বেবস্থা না করে বাসায় গিয়ে কয়েক পেগ খাওয়ার পরে নিশ্চিন্তে ঘুমায় আর বলে যে বিরোধী দল কক্টেল ফুটিয়ে আর হাত দিয়ে নাড়িয়ে এই বিল্ডিং ধসিয়ে দিয়েছে!!! তাদের কানে পৌছে না বাবার আর্তনাদ মায়ের আহাজারী, কিভাবে পৌছাবে??? বিদেশি আরকিটেক্ট দিয়ে বাড়ি বানিয়েছেন না?? ওখানে তো আর অনিয়ম করা যায় না!! কারন আপনাদের জীবনের দাম তো আর ২০ হাজার টাকা না তাইনা??
ধন্যবাদ আমার দেশের মানুষদের স্যালুট তাদেরকে কারন পৃথিবীতে আমরাই একমাত্র জাতি যারা নিজেদের বিপদে সব ভেদাভেদ ভুলে অতি দ্রুত এক হতে পারি। আমাদের প্রশিক্ষণ লাগে না কারণ আমরা ভালোবাসা দিয়ে সব জয় করে নিতে পারি।
মুল লেখা