somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তুরাগ নদীর তীরে, পাগড়ি বাঁধিয়া শিরে...

২২ শে জানুয়ারি, ২০১০ বিকাল ৫:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




বিশ্ব এজতেমা এলেই আমার নাজিম ভাইয়ের কথা মনে হয়। লক্ষ লক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসলমান টঙ্গীর এই তুরাগ নদীর তীরে প্রতি বছর জমায়েত হন, আল্লাহর করুনা আর রহমতের আশায়। বিশ্বভাতৃত্ব আর উম্মার এক বড় উদাহরন হিসাবে অনেকেই হয়তো সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন এই জমায়েত আর শেষের দিনের আখেরি মুনাজাতের জন্য। কিন্ত নাজিম ভাইয়ের জন্য মনে হয় এজতেমার এই সময়টা অন্য রকম। অনেক আক্ষেপ হতাশা আর উপায়হীন অবস্থার মধ্যে কাটানো সকরুণ একটা দিনের দুঃসহ স্মৃতি। সময়টা ছিল এরকমই এক আখেরি মোনাজাতের দিনের... হৃদরোগে আক্রান্ত বাবাকে সিলেট থেকে এনেছেন বিমানে করে, এয়ারপোর্টে রেডি অ্যাম্বুলেন্স, কিন্ত কোন ভাবেই এয়ারপোর্ট থেকে বেরোতে পারেন না। শেষ পর্যন্ত সিভিল এভিয়েশন অথরিটি মরিয়া একটা চেষ্টা চালায়, রানওয়ের পেছন দিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটাকে রাস্তা দেবার। কিন্ত সব প্রচেষ্টা পরিণত হয় ব্যর্থতায়। ইতিমধ্যে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল...

বাংলাদেশ তো সব সময়ই নিন্মমানের ব্যবস্থাপনার দেশ। প্রায় সর্বক্ষেত্রেই আমরা প্রতিনিয়ত তার প্রমাণ দিয়ে চলছি। সাধারন রাস্তাঘাটের যানবাহন ব্যবস্থাপনার বিষয়ে আমাদের দক্ষতার কোন সুখ্যাতি কখনই তেমন ছিল না। আর এর সাথে যখন যুক্ত হয় আমাদের নিয়ম না মেনে চলার অনুশীলন, তখন পরিস্থিতি হয়ে ওঠে মারাত্মক। ফলে খুব সহজেই অনুমান করা যায়, আজ থেকে ১৫/১৬ বছর আগে কি ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে নাজিম ভাইয়ের আব্বা প্রায় বিনা চিকিৎসায় অ্যাম্বুলেন্সে শুয়ে শুয়ে মারা গিয়েছিলেন।


টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার আজ ছিল প্রথম দিন। বলা বাহুল্য আমারও এই প্রথম ইজতেমায় যাওয়া। তাও প্রথমদিনের ভিড়, আর সাথে ছিল আমার কিছু সাংবাদিক বন্ধু। ফলে সাহস করে চলে গেলাম, সকাল সকাল মানুষের ভিড় দেখতে। । বিশ্বএজতেমা নিয়ে বরাবরই আমার কৌতুহল ছিল এই কয়েক লক্ষ মানুষের জমায়েতকে কাছ থেকে দেখার। বুঝতে চেষ্টা করা এত এত মানুষ, তাদের জোশ আর উদ্দীপনার উৎসকে। খুব একটা বুঝতে পেরেছি তা বলবো না। এভাবে বাইরে থেকে গিয়ে বোঝাও যায় না।

তাবলীগ জামাতের স্বেচ্ছাসেবকদের আন্তরিক তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। স্রেফ একটা বাঁশের লাঠি সম্বল করে মুলতঃ তাদের হাতেই লোকজনের চলাচলের নিয়ন্ত্রনের ভার।


একটা মজার জিনিষ দেখলাম- সিভিল ড্রেসে কিছু মুসল্লি পুলিশের ক্যাম্পিং। এটা তাদের ডিউটির অংশ, তাদের কাজ হলো জমায়েতের উপর নজরদারী, টহলদারী এবং অস্বাভাবিক কিছু দেখলে রিপোর্ট করা। এ ছাড়া অন্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সাথে তাদের কোন পার্থক্য নাই। বিশাল তাবুর নিচে চড়া রোদে গা এলিয়ে শুয়ে আছে কয়েকজন, বড় বড় হাড়িতে চলছে রান্না বান্না। অর্থাৎ তারা ধর্মেও আছে, তাদের মতো করে জিরাফেও আছে। আমাদের সঙ্গে আলাপ কালে খোলাখুলি তারা জানালেন, প্রতি বছরই এ ধরনের ব্যবস্থা থাকে। পুলিশের মধ্যে যারা ধর্মপ্রাণ তারা অপশন দিলে তাদের এখানে এভাবে ডিউটিতে পাঠানো হয়। তারা কোন অস্ত্র বহন করে না, তাদের কাজ মুলত এলাকায় নজরদারী রাখা-


আজ টঙ্গী এলাকায় ট্রাফিক কন্ট্রোলের যা নমুনা দেখলাম-- সেই যত্র তত্র গাড়ি পার্কিং আর রাস্তা আটকে গাড়ি ঘোরানো... আগামী দুই দিন যে কি অবস্থা হবে এই এলাকার...!!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জানুয়ারি, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৫৫
১৭টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×