মিন্তি। ঢাকা শহরের সকল বড় বাজারে এদের দেখা যায়। তবে আগে সকল বাজারে এদের দেখা যেত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ দেখা যেত শিশুদের। তবে বিগত কয়েক বছর বাজারে এ সব শিশুদের দেখা যেত না। বেশ কিছু দিন আমি আবার শিশুদের দেখতে পাচ্ছি। এরা আমাদের মত যারা বাজার করে তাদের ব্যাগ বহন করে এবং বাজার শেষ হলে যানবহন পর্যন্ত নিয়ে তুলে দেয়। বিনিময়ে ৫/১০ টাকা পায়। আমি সাধারণত কোন ধরনের মিন্তির সাহায্য নেই না। কারণ হলঃ প্রথমত- এ সব শিশুদের দিয়ে আমার ব্যাগ বহন করাতে আমার ভাল লাগে না। দ্বিতীয়ত- আমি কখনোই আমার বহন ক্ষমতার বাইরে বাজার করি না। তৃতীয়ত- আমার বাজার একদম রাস্তার পাশে, বাজার করেই ক কদম হাটলেই যানবহন পাওয়া যায়। আমার বাজারের শেষ পর্য়ায়ে রনি নামের এ ছেলেটি আমাকে বলল “ব্যাগ টানাবেন” আমি বললাম “না আমার দরকার নেই”। শুনেই রনি ঘুরে চলে যাচ্ছিল। আমি ডাকলাম। ডেকে একটি ৫ টাকার নোট ওর দিকে এগিয়ে দিলাম। বললাম “আমার ব্যাগ টানতে হবে না তবে তুমি এই ৫ টাকা নেও”। ও বলল “ব্যাগ না টানালে আমি টাকা নেই না” আমি কয়েকবার ওকে বললাম নিতে। কিছুতেই ও নিল না। তখন আমি আমার ব্যাগ ওর হাতে ধরিয়ে দিলাম। এবং ৫ টাকাও দিলাম। ও সাথে সাথে তা পকেটে ভরে ফেলল।এরপর ব্যাগ নিয়ে ও আমার সাথে রিক্সা পর্যন্ত আসল।
ব্যাগ উঠানোর শেষে আমি ওকে বললাম “কতো টাকা তুমি চাও বল। তুমি যা চাইবা তাই দেব” ও বলল “না স্যার আপনি যা দিবেন তাই নেব।” এবারো আমি বেশ কয়েকবার তাকে বলল একটা কিছু চাইতে। ও প্রতিবার আমর পরে ছেড়ে দিল। আমি পকেট থেকে ৫০ টাকার একটা নোট বের করে ওকে দিলাম। ওর দন্তকুল বিকোষিত হল। টাকা হাতে নিয়েই ও জানতে চাইলো “স্যার আপনি আবার কবে আসবেন।” আমি বললাম “আমি আর এ বাজারে আসবো না। তুমি আমার কাছ থেকে ৫৫ টাকা বাগিয়ে নিয়েছো। আর আসছি না।” সাথে সাথে ও ৫০ টাকা আমার দিকে বাড়য়ে দিয়ে বলল “স্যার তাহলে আমাকে টাকা কমায়ে দেন।” আমি ওর ছোট মনের পবিত্রতা এবং সরলতা দেখে লজ্জায় পড়ে গেলাম। আসলেই শিশুদের মন কত সহজ, সরল এবং পবিত্র। তাইতো বাইবেলে বলেছে “If you do not became a child, you could not enter into the haven." আমরা কেন এ সব শিশুদের মত হতে পারি না? বিশেষ করে দেশের কর্ণধারা।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ১২:২৮