এদেশে যানবহন শ্রমিকরা ঠিক করে যে সড়ক দূর্ঘটনায় ড্রাইভারদের শাস্তি কি হবে। মালিক-শ্রমিকরা ঠিক করে যে যানবহনের ভাড়া কত হবে। তারাই ঠিক করে কোন আইন তারা মানবে আর কোন আইন তারা মানবে না।বেসরকারী পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ঠিক করে দেয় জনগণের পরিবহন বিআরটিসি কোন রুটে চলবে এবং তার ভাড়া কতে হবে। সরকারী কর্মচারীরাই ঠিক করে তার কখন আফিসে যাবে আর কতক্ষন অফিস করবে। তাদের বেতন ভাতা তারাই ঠিক করে। তবে এ সব কাজগুলি হয় সরকারী মিটিং এর একটি তকমা লাগিয়ে। তাতে জনগণের স্বার্থ থাকুক আর না থাকুক তাতে কারো কিছু আসে যায় না।সিএনজি ভাড়া বাড়াবার জন্য মন্ত্রানালয় যে কমিটি করে দিয়েছে সেখানে যাত্রী প্রতিনিধি থাকবে না এটাইতো স্বভাবিক। সিএনজি মালিক-শ্রমিকরা প্রথম থেকেই কোন আইন কানুন মানে না। তারা যা ইচ্ছা তাই করে, যে ভাবে ইচ্ছা সে ভাবেই তার যাত্রীর পকেট কাটে।এগুলি দেখার বা শুনার কেউ নেই। সেখানে আবার কমিটি করে ভাড়া বাড়াবার দরকারটা কেন? তারা আরো বেশী করে যাত্রীর পকেট খালি করতে পারে সে জন্য? পরিবহন শ্রমিক-মালিকরা কয়েক লক্ষ টাকায় কেনা যানবহনের মালিক হয়ে রাস্তার রাজা সেজে বসে।হাজার হাজার কোটি টাকায় বানানো যে রাস্তা এদের রুটি রুজি দেয় তা দেশের জনগণের কষ্টের ট্যাক্স এর টাকা এ কথা তারা ভুলে যায়। এভাবেই চলছে দেশ, সরকার এবং তার মন্ত্রনালয়।
যে মন্ত্রানালয় যাত্রীদের আরো বেশী করে পকেট কাটার জন্য কমিটি করে দিয়েছে, সে মন্ত্রানালয়ে একজন করিতকর্মা মন্ত্রী আছেন। তাকে আমরা প্রায়ই টিভিতে দেখি, সরেজমিন সমস্যা দেখার জন্য টিভি ক্যামেরা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনিই সমাস্যা দেখছেন আর সমাধান দিচ্ছেন। আনেকে তাকে ভালবেসে ‘ফাটাকেষ্ট’ নামে ডাকতে পছন্দ করেন। এ ভাবেতো একজন মন্ত্রীর দক্ষতা, যোগ্যতা যাচাই করা যায় না। উনাকে কেন সরেজমিন সব কিছু দেখতে হবে? তাহলে তার মন্ত্রানালয়ে হাজার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী আছে তারা কি করে? তারা কি শুধু মাসে মাসে বেতন ভাতা নেওয়ার জন্য? যা জনগণের কষ্টের টাকা। এভাবেতো মন্ত্রানালয়ের দক্ষতা,যোগ্যতা বাড়াবার কোন সুযোগ নেই। ওরাতো নিশ্চিন্ত। মন্ত্রী আছেন, উনিই সমাস্য দেখবেন, উনিই সমাধান দেবেন। এখানে প্রয়োজন ‘পুরষ্কার এবং বহিষ্কার’ এর ব্যবস্থা থাকা। দায়িত্ব পালন না করলে সাথে সাথে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদচ্যুত করতে হবে। তা না হলে যা হবার তাই হবে। সিএনজি ভাড়া বাড়াবার ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। মন্ত্রানালয় সিএনজি ভাড়া বাড়াবার জন্য উদগ্রীব তাই সিএনজি মালিক-শ্রমিকদের স্বার্থ দেখা তাদের দায়িত্ব। জনগণের স্বার্থ দেখার সমায় কোথায়? জনগণের কাজ ট্যাক্স প্রদান করা আর সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজ হল মাসের শেষে বেতন ভাতা গ্রহন করা। এভাতো দেশ চলতে পারি না। এর অবসান হওয়া খুবই প্রয়োজন।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:১০