যে বাটীতে থাকি ইহাকে গরীবখানা বলিলে দোষ হইবে না।
বৃষ্টি শুরু হইলে বিদ্যুৎ চলিয়া যায় বলিয়া মটর পানি উঠাইতে না পারিলেও,
চালের ফুটো চুয়াইয়া যেই পানি আসিবে তাহা দিয়ে একখানা বালতি না হোউক আধা বালতি অনায়াসে ভরিয়া যায়।
যাহাই হোক সেটা এইখানের আলোচ্য বিষয় নয়।
মেসের নাম গারিবুল্লা ভিলা হইলেও মনের দিক হইতে যথেষ্ট পরিমাণ বড়।
এই তো বছর হইল,
পাশের ভদ্রবেশী বড়লাটের বাসায় এক পোয়াতি বিড়াল তিনখানা বাচ্চা প্রসব করিয়াছে।
বড়লাটের বিরাট বাটীতে তাহাদের স্থান সংকুলান হইল না।
তাহাদের প্রতি ঘরে বিড়ালের ফটোগ্রাফ সোভা পাইলেও জন্ম হইবার পরপর মা বিড়াল তাহারা রাখিয়া ছোট বিড়ালদের ফেলিয়া গেল এই গরীবখানার সামনে।
যখন কান্না শুনিয়া যখন দৃষ্টি গোচর হইল,
ততক্ষণ দুই বিড়াল ইহজগৎ ছাড়িয়াছে ক্ষুদা জ্বালায়।
কোন কিছু চিন্তা না করিয়া অতি যন্তে কোলে তুলিয়া নিল ছোট ভাই রাফি।
ইহাই মনে হয় প্রচলিত সমাজে 'দুর্দিনের পরেই আসিবে সুদিন'।
বিড়ালের শুরু হইল সুদিন।
এরপরে হুলস্থুল শুরু হইল বিড়ালের নাম রাখা লইয়া।
কেউ বলে ছেলে কেউ বলে মেয়ে বিড়াল।
পরিশেষে তাহার মধ্যে ছেলে মেয়ে উহার আলামত খোজাঁর চেষ্টায় ব্যার্থ হইয়া উহার নিষ্পাপ চেহারা বিবেচনা রাখিয়া সর্ব সসম্মতিক্রমে রাফি আদরে নাম রাখিল মিমি।
এক বছরপর......
এতোদিনে মিমি যথেষ্ট রুষ্ট পুষ্ট হইয়াছে,
গায়ে গোতড়ে বাড়িয়াছে।
গাছে উঠিতে পারে,
ইদুঁর খুজিঁয়া বাহির করিয়া পৈশাচিক ভাবে খুনও করিতে পারে।
কুকুর আসিলে তাহারে ভয় দেখাইয়া তাড়াইয়া দিতেও পারে।
সারাদিন যেখানেই ঘুরিয়া বেড়াক দুপুর হইলে ঠিক পায়ের কাছে আসিয়া বসিয়া থাকিবে।
মাঝেমধ্যে আদর করিয়া কামড় দেয় উহাতে ব্যাথা পাওয়া যায় না।
রাত হইলে খাটের নিচে কোন প্রকার শব্দ না করিয়া ঘুমাইয়া যাইবে।
দিনেদিনে বড়ই আদরের প্রাণী হইয়া উঠিয়াছে এই টিনচালা বাসায়।
৯ মে ২০১৭.....
হুট করে আবিষ্কার করা হইল
সে লেজ উঠাইয়া হাটে।
মেয়ে বিড়ালের লজ্জা বেশী তাহারা লেজ উঠাইয়া হাটিবার কথা না।
১৬ জোড়া বিচক্ষণ চোখ বিচক্ষণতার সাথে আরও কিছু সময় অবলোকন করিয়া অবশেষ নিশ্চিত হইল ইহা মরদ বিড়াল।
মেয়ে নাম তাহার সাথে জুড়িয়া রাখা তাহার জন্য অপমানকর।
অপমান মুক্তি দিলাম।
আমি বিড়ালটার নাম রাখিলাম টাইগার।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০১৭ রাত ১০:৫৪