somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন রানা চৌধুরী স্যার । আমাদের সবার পরিচিত ।

০২ রা জুলাই, ২০১৩ রাত ১১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



ছবিটি দেখে চিনতে পারছেন ? আমারা যারা এইচ.এস.সি তে সায়েন্সে ছিলাম তাদের কাছে খুব পরিচিত পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের মলাট । স্যার এর একটা লেখা চোখে পড়তেই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম । লেখাটা উনার বই নিয়ে । অবশ্যই পড়বেন ।

আমার যে সকল বন্ধু বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলেন ( অন্তত: উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে ) বা আছো তাদেরকে আমার লেখার নিচের দীর্ঘ অংশটুকু পড়ে মূল্যবান মতামত দেওয়ার অনুরোধ করছি। কারণ, তাদের মতামত ও পরামর্শই আমাদের চলার পথের পাথেয়। আমরা আমাদের যৌবনে, সদ্য স্বাধীন দেশে ইচ্ছানুযায়ী অনেক পেশা গ্রহণের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও শিক্ষকতাকে গ্রহণ করেছিলাম একটা আদর্শ হিসেবে । ইনশাল্লাহ আমৃত্যু আমরা শিক্ষক থাকতে চাই , যদিও যথানিয়মে চকিুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেছি ।

“ আলহামদুল্লিাহ । আল্লাহ এর অশেষ রহমতে অবশেষে আমাদের রচিত পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্র বইটি বেরুলো। বইটি পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত নয় । কেন বইটি অনুমোদন পেল না সেটা আমরা জানি না , আমাদের জানানো হয়নি। যদিও মূল্যায়নের জন্য যথারীতি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত ফি জমা দেওয়া হয়েছে। আমরা শুনেছি অনুমোদনের জন্য ১৩ খানা বই জমা পড়েছিল। ১০ খানা বই এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আমাদের খানা সম্ভবত: ১৩ তম স্থান অধিকার করেছে। এতদিন প্রথম দিক থেকে প্রথম ছিলাম , এবার শেষ দিক থেকে প্রথম ! এরপরও সারা দেশের অনেক শিক্ষক , শিক্ষার্থী ও অভিবাবক বিস্মিত হয়ে আমাদেরকে বইটি প্রকাশের অনুরোধ করেন ।

পদার্থবিজ্ঞান তথা বিজ্ঞানের সূত্র, তত্ত্ব, ব্যাখ্যা , প্রতিপাদন অগ্রগতি কারো অনুমোদনের উপর নির্ভর করে না । পৃথিবীর শত শত দেশে শত শত বছর ধরে লক্ষ লক্ষ শিক্ষক-শিক্ষিকা কোটি কোটি ছাত্র-ছাত্রীকে কারো অনুমোদন ব্যতীতই বিজ্ঞান শিক্ষা দিয়ে বিজ্ঞানের অগ্রগতি তথা সভ্যতাকে আজকের এই পর্যায়ে নিয়ে এসছেন।

তবে বিভিন্ন রাষ্ট্র তাদের প্রয়োজন, চাহিদা ও সংস্কৃতির নিরিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের আগ পর্যন্ত কোন্ কোন্ বিষয়ে কতটুকু শিক্ষা দেওয়া হবে তা শিক্ষাক্রম ( Curriculum) আকারে নির্ধারণ করে দেন ।আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু কীভাবে তা পড়ানো হবে, শ্রেণিকক্ষে কীভাবে উপস্থাপনা করা হবে তা ঐ পর্যায়ের শিক্ষকদের উপরই নির্ভর করে ।আর অভিজ্ঞ শিক্ষক ও ব্যক্তিবর্গ তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সুবিধা ও সাহায্যার্থে পুস্তক রচনা করেন । আমাদের দেশেও তাই ছিল। বিভিন্নজন বিভিন্ন পুস্তক রচনা করেছেন। আমাদের দেশে ১৯৯৮ সাল থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বই এর অনুমোদনের ব্যাপারটা শুরু হয়।
বাংলা মাধ্যম চালু হওয়ার আগে বিগত শতাব্দির বিশের দশকে লেখা বসু ও চ্যাটার্জির পদার্থবিজ্ঞান, লাডলি মোহন মিত্রের রসায়ন, এ.সি মিত্রের জীববিজ্ঞান আর দাশ ও মুখার্জির গণিতের বইগুলো পড়েই এই উপমহাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসার ঘটেছে। আমরা পেয়েছি বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে প্রকৌশলী, চিকিৎসক, গবেষক ও বিভিন্ন বিষয়ের প্রাত:স্মরণীয় শিক্ষকদের।
বাংলা ভাষায় শিক্ষাদান শুরু হলে ড. মুসলিম উদ্দীন, কামিনী মোহন সাহা, তোফাজ্জল হোসেন, নাসির উদ্দিন প্রামাণিক, ড. আবুল কাসেম প্রমুখ পদার্থবিজ্ঞানের উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে পাঠ্যপুস্তক রচনা শুরু করেন। পরবর্তীকালে পদার্থবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে আধুনিকতার সূচনা করেন মোহাম্মদ ইসহাক ও নুরুন্নবী তালুকদার। প্রায় একই সময়ে ১৯৮২ সাল থেকে আমরা তিন বন্ধু আমাদের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদানের অভিজ্ঞতার আলোকে , ক্লাশ রুমের পড়ানোর মতো করে এবং চলিত ভাষায় পদার্থবিজ্ঞান এর পাঠ্যপুস্তক রচনা করি ।আল্লাহ এর অশেষ শুকুর যে এর পর থেকে আমাদের বই এর বিভিন্ন সংস্করণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অকুণ্ঠ সমর্থন লাভ করে। তাদের পরামর্শমতো আমরা নিয়মিত বইএর উন্নতি সাধনের চেষ্টা করে আসছি। এর পর থেকে পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের নিজস্ব যে মাধ্যমিক স্তরের বই আছে , সেখানেও আমরা অন্যতম প্রণেতা। ১৯৯৬ সালে প্রকাশিত বোর্ডের মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞান যা ২০১৪ সালের এসএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত বলবৎ থাকবে , তা আমাদের তিন বন্ধুরই রচিত । নতুন সিলেবাসে সদ্য প্রকাশিত ( ২০১৩ ) বোর্ডের মাধ্যমিক পদার্থবিজ্ঞানের বই লেখার জন্য অনুরুদ্ধ হয়ে আমরা দুজন তাতেও অংশ নেই ।
এই বইটি বোর্ডে জমা দেওয়া বই এর বর্ধিত সংস্করণ। আমরা শতভাগ শিক্ষাক্রম তথা সিলেবাস অনুসরণ করেছি। বইটি অনুমোদন না হওয়ার পরও যখন আমাদের প্রকাশক সুশিক্ষক ড. ভক্তিময় সরকার অনেক সাহস ও ততোধিক ব্যবসায়িক ঝুকি নিয়ে বইটি প্রকাশে আগ্রহ প্রকাশ করলেন, তখন আমরা সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত বিষয়বস্তু উপস্থাপনায় ও সাজানোতে , অনুশীলনী তৈরিতে , শিক্ষর্থিীর উপলব্ধি, অনুধাবন ও ভবিষ্যৎ উচ্চ শিক্ষার কথা বিবেচনা করে কিছুটা স্বাধীনতা গ্রহণ করেছি।
আমাদের দেশের বাস্তবতায় এবং শিক্ষা ব্যবস্থায় উচ্চ মাধ্যমিক কোনো প্রান্তিক স্তর নয় । উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পর আমাদের দেশের বিজ্ঞানের প্রায় সকল ছাত্র-ছাত্রী প্রকৌশল শাস্ত্র বা চিকিৎসা বিজ্ঞান বা বিশ্ববিদ্যালয়/কলেজে বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করে ।বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে উন্নত বিশ্বের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে পাল্লা দিয়ে তাদের শিক্ষাক্রম তথা সিলেবাস তৈরি করে। কাজেই এদেশের একজন নাগরিক হিসেবে, একজন অভিভাবক হিসেবে সর্বোপরি শিক্ষক হিসেবে আমাদের চিন্তা চেতনায় রাখতে হয় আমাদের সন্তানেরা , শিক্ষার্থীরা যেন উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে এমন শিক্ষা লাভ করে যাতে তারা নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণের উপযোগী করে তুলতে পারে। আমাদের শিক্ষাক্রমের সীমানার মধ্যে থেকেও আমরা আমাদের ক্ষুদ্র সামর্থ্য দিয়ে সে চেষ্টা করেছি ।
এখন আমাদের দেশের জ্ঞানী , বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষকতার মহৎ পেশায় নিয়োজিত নিবেদিত প্রাণ শিক্ষকেরা এবং আমাদের দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ , আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ ও মেধাবী শিক্ষার্থীরাই বিচার করবে বইটি আমাদের পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত শিক্ষাক্রম অনুসারে লেখা হয়েছে কী না ? এই বই পড়ে পদার্থাবজ্ঞান উপলব্ধি ও অনুধাবনে , শিক্ষার্থীদের সুপ্ত সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটবে কী না ?”


এই সেই রানা স্যার ,



ধন্যবাদ সবাইকে ।
১০টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×