somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

১০০% মজার বেয়াদবের বেয়াদপি.......

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১২ সকাল ১১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে বেয়াদপি বিষয়টার উপর কিছু লিখতে চাই। শব্দটা মনে হয় 'বে-আদবী' হবে তাইনা? মানে আদব এর অভাব। সেই অর্থে ধরলে উদাহরন স্বরুপ বলতে হয় মুরুব্বী কাউকে সালাম না দিলে 'বে-আদবী' হয়েছে বলা যেতে পারে। কিন্ত এই যুগে 'বেয়াদপির' মানে এমন দাড়িয়েছে যেন আপনি সালাম তো দিলেনই না, উল্টো তাকে তুই তোকারি করে অপমান করলেন!

আমার সবসময়ই কমনসেন্স জিনিসটা একটু কম (আমি বুঝেই পাইনা এই সেন্স গুলো 'কমন' হলে আমার বেলায় 'কমন' পড়লোনা কেন?) তাই আমার মনে ছোটবেলায় অদ্ভুত অদ্ভুত প্রশ্নের উদয় হতো। যেমন আমি বুঝতাম না মুরুব্বিরা ছোটদের 'বেচে থাক বাবা' বলে কেন? ওনারাই তো এক পা কবরে দিয়ে রেখেছেন, মড়ার সম্ভাবনা ওনাদেরই তো আমার আগে বেশী! আমাদেরই তো মুরুব্বীদের বলা উচিৎ, 'বেচে থাকুন চাচা/চাচী', তাইনা? তারপর আসে সালাম এর বিষয়, মুরুব্বীরা রিটায়ার্ড মানুষ, আমাদের থেকে শান্তিতে বেশী থাকেন, অথচ আমাদেরি 'আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক বলতে' হয়! ওনাদেরই তো এটা ছোটদের বেশী বেশী বলা উচিৎ বা নিদেনপক্ষে সবাই সবাই কে বলা উচিৎ ( অবশ্য সম্প্রতি আমার নেংটা কালের এক বন্ধু হঠাৎ টেলিফোনে আমাকে 'স্লামালিকুম , কেমন আছিস' বলে শুরু করায় আমি রাগে মুখের ওপর ফোন রেখে দিয়েছিলাম!)





তারপর আসি পায়ে ধরে সালাম করার ( কদমবুছি) ব্যাপারে। এক অনুষ্ঠানে নানা কোন এক মুরুব্বী ধরে নিয়ে এসে পায়ের দিকে ইশারা করে বললেন 'ইনাকে সালাম কর'! আমি এর আগে কোনদিন পায়ে ধরে সালাম করি নাই, তাই বোকার মতো নীচু হয়ে পায়ের দিকে তাকিয়ে কপালে হাত দিয়ে বললাম, 'আস্‌সালামালাইকুম'! (তাহার পর কি হইল জানে শ্যামলাল...)

আসলে পরে পড়াশোনা করে দেখেছি সালাম ব্যাপারটার (কপালে হাত ঠেকিয়ে আদাব বা আর্মিদের স্যালুট) সাথে কপালের কোন যোগসূত্র নাই, পায়ের সাথে তো নয়ই। আদিম কালে দুটি অচেনা মানুষ পথে দেখা হলে একে অপরকে খালি হাত তুলে বলতো "দেখ, আমার হাতে কোন অস্ত্র নাই, আমি তোমার শত্রু নই।" সেই থেকে এসেছে সম্ভাষণ এর চর্চা। এখন কল্পনা করুন তো, সেই যুগে একজন যদি আরেকজনের পায়ে ধরে সালাম করতে যেত, তাহলে অপরজন কি ছিটকে সরে গিয়ে ভাবতো না 'এই ব্যাটা দেখি প্রথম পরিচয়েই আমার মুখমেহন করতে চায়!" আসলে পায়ে ধরে সালাম টা এসেছে প্রণাম থেকে, যার মূলভাব হল 'পায়ের ধুলো নেয়া, অর্থাৎ 'আমি আপনার পায়ের ধুলোরই যোগ্য মাত্র' - এই ভক্তির পরাকাষ্ঠা প্রকাশ করা। আমাদের মুরুব্বিরা যে পায়ে ধরে সালাম করলেই গলে যান, একবারো ভাবেন না যে তাদের কে পরোক্ষে বলা হচ্ছে যে 'আপনার পায়ে এত ধুলা থাকে যে তা হাত দিয়ে মুঠি করে নেয়া যায়, আপনি কি নিভিয়া ক্রীম ব্যবহার করেন না?' কী অপমান!

বয়ঃসন্ধিকালে বেয়াদপির আরো নতুন নতুন নমুনা বের হয়। পকেটে হাত দিয়ে কথা বলেছি বলে শিক্ষক চটে গেলেন, আমি বুঝলাম না মাথায়, কানে, জায়গায় বেজায়গায় চুলকিয়ে কথা বললে অভব্যতা হয়না, পকেটে হাত দিলে এত দোষ কেন? যেন শিক্ষক আমার মানিব্যাগ চুরি করে নেবেন বলে সন্দেহ করছি! অনেকে হাত পিছনে নিয়ে কথা বলে, যেটা বিহেভিওরাল সাইকোলজির ভাষায় কিছু লুকানোর ইঙ্গিত বহন করে, কিন্তু শিক্ষকদের অভিধানে সেটা সুবোধ বালকের লক্ষণ! হাত বেধে বা নেড়ে কথা বললেও সেটা বেয়াদপি (এই স্যারই আবার মেয়েরা আঙ্গুলে আঙ্গুল পেচিয়ে দুলে দুলে ন্যাকা স্বরে কথা বললে খুব আহ্লাদিত হন!) আমি আবার জোকার নায়েকের মতো সামনে বিশেষ নাজুক জায়গায় হাত জড়ো করে কথা বলতে পারিনা (মানে দরকার হয়না, ম্যাডাম দের সাথে কথা বললেও না হয় একটা সম্ভাবনা ছিল!) সুতরাং বাকী থাকে হাত সটান পাশে ওরাং ওটাং এর মতো ঝুলিয়ে এটেনশান হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা! সৈনিকসুলভ সমীহ্‌ই বোধহয় স্যাররা চান আমাদের কাছে!

বড়দের সামনে সিগারেট বা চুয়িংগাম খাওয়াও কেন বেয়াদপি সেটাও আমার মোটা মাথায় ঢোকেনা! 'ওটা শরীরের জন্যে ক্ষতিকর' উত্তর আসে, আর কোন যুক্তি তে না পেরে। বটে! যিনি বলছেন তিনি দেখা গেল বলছেন পান চিবাতে চিবাতে, হারপিক দিয়ে মাজলেও যার দাগ দাঁত থেকে ওঠানো যাবেনা! দ্বিতীয় যুক্তি, 'ইনকাম করে নিজের পয়সায় খেও, বাপের পয়সায় নয়।' আমার এক বন্ধু উত্তর দিয়েছিলো, "স্যার আমি তো টিউশানি করি তিনটা..." "বেয়াদপ কথাকার! মুখে মুখে তর্ক!" আর কি বলবো, তর্ক তো মুখেমুখেই করতে হয়, টেক্সট চ্যাট করে তো এই জিনিস ভাল জমেনা! অবশেষে শাস্তি হল, ক্লাসের কোনে কানে ধরে দাঁড়িয়ে থাকা। আমি তখন মনে মনে ভাবছি, 'আচ্ছা, আমরা নাকে, মাথায়, থুতনিতে শরীরের আর কোথাও ধরে শাস্তি দিলে (জানি এটার সাথে শারীরিক কষ্টের যোগাযোগ আছে) লজ্জা পাইনা, কানের লতি ধরে থাকলে লজ্জা পাই কেন? কেন, কেন, কেন? কেউ বলতে পারেন?

আপনাদের কারো অন্যান্য বেয়াদপির ব্যাপারে অভিজ্ঞতা বা প্রশ্ন থাকলে শেয়ার করুন। একটু হাসাহাসি করি সবাই মিলে...






বি:দ্র:এটা সংগৃহীত
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি আর এমন কে

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:১৩


যখন আমি থাকব না কী হবে আর?
থামবে মুহূর্তকাল কিছু দুনিয়ার?
আলো-বাতাস থাকবে এখন যেমন
তুষ্ট করছে গৌরবে সকলের মন।
নদী বয়ে যাবে চিরদিনের মতন,
জোয়ার-ভাটা চলবে সময় যখন।
দিনে সূর্য, আর রাতের আকাশে চাঁদ-
জোছনা ভোলাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

২০২৪ সালের জুলাই মাস থেকে যেই হত্যাকান্ড শুরু হয়েছে, ইহা কয়েক বছর চলবে।

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৭



সামুর সামনের পাতায় এখন মহামতি ব্লগার শ্রাবনধারার ১ খানা পোষ্ট ঝুলছে; উহাতে তিনি "জুলাই বেপ্লবের" ১ জল্লাদ বেপ্লবীকে কে বা কাহারা গুলি করতে পারে, সেটার উপর উনার অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকার হিসাবেই গর্ববোধ করবেন মুক্তিযোদ্ধা আখতারুজ্জামান !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:১৮


একজন রাজাকার চিরকাল রাজাকার কিন্তু একবার মুক্তিযোদ্ধা আজীবন মুক্তিযোদ্ধা নয় - হুমায়ুন আজাদের ভবিষ্যৎ বাণী সত্যি হতে চলেছে। বিএনপি থেকে ৫ বার বহিস্কৃত নেতা মেজর আখতারুজ্জামান। আপাদমস্তক টাউট বাটপার একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে চাঁদগাজীর নাম দেখাচ্ছে। মুহূর্তেই আপনার দাঁত-মুখ শক্ত হয়ে গেল। তার মন্তব্য পড়ার আগেই আপনার মস্তিষ্ক সংকেত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×