somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খ্যাঁত ভালবাসা

০৫ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-হ্যালো।
-কি করো?
-ডিম ভাজি।
-আজও বুয়া আসেনি?
-নাহ।
-কবে শুনবো মুরগীরা আন্দোলন শুরু
করেছে,ব্যাচেলরদের
অত্যাচারে তারা ডিমে তা দিতে
পারছেনা বলে।
-আমি ব্যাচেলর?
-নয়তো কি?
-তুমি আমার বউ না?
-কবে বিয়ে করলে?
-বউ বানাতে বিয়ে করতে হয় নাকি?
ঠিক আছে,তুমি আমার অবিবাহিত বউ।


সিঁথি হাসে।আজ আনিসের
কথাবার্তা কেমন অন্যরকম লাগছে।
এমনিতে সে খুব কমই কথা বলে।
যা বলবে,গুছিয়ে বলবে।মার্জিত
ভাষায়।প্রেমিকের অধিকার
নিয়ে কখনো অনধিকার চর্চা করেনি আনিস।জোকস করেও
কোনদিন একটা অশালীন শব্দ
বলেনি,অন্তত সিঁথির সামনে।সেজন্য
সিঁথির আরো বেশি ভালো লাগে।


-শোনো,কাল
ভার্সিটিতে একটা কালচারাল
প্রোগ্রাম আছে।আসবে?
-কখন?
-৩টা নাগাদ?
আনিসের দীর্ঘশ্বাস শোনা যায়।
-ঐ সময়ে একটা টিউশনি আছে।
-একদিন বাদ দাও।কি হবে?
-স্টুডেন্টের সামনে পরীক্ষা।
তাছাড়া গত সপ্তাহে জ্বরের জন্য
তোমার আদেশ মেনে পুরো তিনদিন
ঘরে শুয়ে কাটিয়েছি। এমনিতেই
অনেক বাদ গেছে।আর হলে...বোঝোই
তো।
-তুমি একহাজার দিন বাদ দিলেও কিছু
হবেনা।তোমার মত টিচার কোন
গার্জেয়ান বা স্টুডেন্টই
ছাড়তে চাইবেনা।আর এই
ছাত্রী তো তোমার মহাভক্ত।
-তুমি এত জোর করছো কেন সেটা বলো।
বিশেষ কিছু?
-নয়তো কি?আমার বান্ধবীদের সবার
বয়ফ্রেন্ড কাল আসবে।
তুমি না এলে,আমি ওখানে গিয়ে কি
করব?
-আহহ,ঝামেলা হয়ে গেল।থাক,নাহয়
তুমিও বাদ দাও।
-তোমার সমস্যা কি,এখন বুঝতে পারছি।
তুমি নিজেতো দশজনের সামনে সহজ
হতে পারোনা বলে কোথাও
যাওনা,আমাকেও
যেতে দিতে চাওনা।
নিজে একটা অসামাজিক,এখন
আমাকেও বানাতে চাইছো।রাগ
ঝরে সিঁথির কন্ঠ থেকে।
আনিস শান্ত গলায় বলল,এতো দিনেও
যদি চিনতে না পারো,তাহলে আর
কি বলার আছে।
সিঁথি শোনো,তোমাকে আগেও
অনেকবার বলেছি।বয়ফ্রেন্ড
শব্দটা আমার খুব অপছন্দ।আমি তোমার
বয়ফ্রেন্ড-কথাটা ভাবলেই
নিজেকে কেমন সস্তা মনে হয়।
আমি তোমাকে ভালোবাসি,সিঁথি।
কচু বাসো।খ্যাঁত কোথাকার।
রাখো ফোন।বলেই সিঁথি নিজেই
ফোনটা কেটে দেয়।


বিছানা থেকে উঠে সিঁথি দেয়ালে
টাঙ্গানো ক্যালেন্ডারের
সামনে যায়।লাল মার্কার পেন
দিয়ে আজকের তারিখে একটা দাগ
দেয়।এই মাসে আজসহ মোট সাতবার
ঝগড়া হয়েছে ওদের।
অদ্ভুত তো!সিঁথি নিজেই অবাক হয়।
ইদানীং ঝগড়াঝাঁটি একটু বেশিই
হচ্ছে।
ঝগড়া বলা যায়না ঠিক,অনেকটা কথা
কাটাকাটি,বাদানুবাদ।প্রায় সবদিনই
সেটা হয় একপক্ষীয়। আনিসের
মধ্যে অস্থিরতা,চিৎকার-চেঁচামেচির
কোন বালাই নেই। সে বরাবরই
ধীরস্থির,শান্ত,চুপচাপ।যা-ই ঘটুক,তার
সুন্দর একটা ব্যাখ্যা দিতে পারে।এই
ব্যাপারটাই একটা সময় সিঁথিকে মুগ্ধ
করেছিল।কিন্তু এখন আর করেনা।
বরং অসহ্যবোধ হয়।


সিঁথির সাথে আনিসের পরিচয়
হয়েছিল বছর তিনেক আগে।সিঁথি তখন
সবেমাত্র কলেজে উঠেছে।কলেজের
পাশেই পাবলিক লাইব্রেরী।
সিঁথি ছোটবেলা থেকে বইয়ের
পোকা।কলেজ ছুটির পর প্রায়ই
লাইব্রেরীতে যেতো,লাইব্রেরী বন্ধ
হওয়া অবধি থাকতো সেখানে।
নিয়মিত যেতে যেতে একদিন
সিঁথি আবিষ্কার করলো,তার
মতো আরো একজনও প্রতিদিন
লাইব্রেরীতে আসে।ছেলেটা এসেই
প্রথমে পত্রিকা পড়ে,তারপর পেছনের
রুম থেকে মোটা মোটা কয়েকটা বই
নিয়ে এসে বসে পড়ে।কিসব নোটও
করে।
লাইব্রেরী ছয়টায় বন্ধ
হতো,বাসায়ফিরতে ফিরতে প্রায়
সাড়ে ছ’টা।একদিন লাইব্রেরী বন্ধ
হয়ে গেলে সিঁথি নিচে দাঁড়িয়ে
আছে,এমন সময় ছেলেটা এগিয়ে আসে।


-এখানে দাঁড়িয়ে আছেন যে?বাসায়
যাবেন না?
-দাঁড়িয়ে থাকলে আপনার কোন
সমস্যা?
-আমার সমস্যার জন্য বলছিনা।
সন্ধ্যা হয়ে গেছে প্রায়,অনেকক্ষণ
ধরেই দেখছি আপনি দাঁড়িয়ে আছেন।
মনে হচ্ছিলো কোন সমস্যা হয়েছে।
-অনেকক্ষণ ধরে আপনার
আমাকে দেখার কি দরকার?নিজের
চরকায় তেল দিচ্ছেন না কেন?ফুয়েল
শেষ?
ছেলেটা হেসে ফেলে।
-জুতোর ফিতে ছিড়ে গেছে?
সিঁথি এবারে অবাক হয়।
-আপনাকে কে বলল?
ছেলেটা হাসতে হাসতে বলে,
-একজায়গায় আপনি স্ট্যাচুর মত
দাঁড়িয়ে আছেন,একমাত্র
জুতো ছিড়ে না গেলে মেয়েরা
এতো দীর্ঘসময় একজায়গায় স্থির
থাকতে পারেনা।
-মেয়েদের ব্যাপারে তো প্রচুর
অভিজ্ঞতা দেখছি।
কথাটা শুনে ছেলেটা যেন বিব্রত
হলো।
-কোথায় যাবেন?
-উফ!আপনার কি দরকার?
-রিক্সা ঠিক করে দিতাম।অন্ধকার
হয়ে গেছে,জুতো হাতে একদৌড়ে
গিয়ে উঠে পড়বেন।
ছেলেটার প্রতিটা কথাই তখন ভীষণ
গা জ্বালানো মনে হয়েছিল সিঁথির।
কিন্তু কেন যেন,ফেরার পথে বারবার
ঐ ছেলেটার কথাই মনে পড়ছিল।বাসায়
এসে সেদিন প্রচুর বকা খেতে হয়
সিঁথিকে।মা’র সাফ কথা,কাল
থেকে কলেজ বাদে সোজা বাসায়
আসতে হবে।কিন্তু,পরদিনও
সিঁথিকে লাইব্রেরীতে যেতে হয়,
এবং এরপর থেকে,প্রতিদিন।


গা জ্বালানো কথা বলা ছেলেটাকে
কবে যে ভালো লাগলো,আর
কবেই বা তার প্রেমে পড়ে গেল-
সিঁথি নিজেও জানেনা।শ্যামবর্
ণের,প্রায় বিদঘুটে চেহারার,ফুলহাতা
শার্টওয়ালা ছেলেটা অদ্ভুত সুন্দর
করে হাসে।দেখলে মায়া লাগে।
সিঁথি সেই মায়ায় বেঁধে গেল,আর
বেঁধে আছে তিনটি বছর ধরে। আছে?
সিঁথি নিজেকেই প্রশ্ন করে।
এটা সত্যি,আনিসকে তার এখন আগের
মত ভালো লাগেনা।কেন?এর
পেছনে বোধহয় সিঁথির সদ্য
ভার্সিটিতে উঠা ফ্রেন্ডসার্কেলের
বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা আছে।
পরদিনের ঘটনা থেকেই
ব্যাপারটা অনেকখানি বোঝা যাবে।
পুরো ভার্সিটি জুড়েই একটা উৎসবমুখর
পরিবেশ।ক্যাফেটে
রিয়াতে এসে সিঁথি দেখল
ফ্যান্সি,নায়লা,সুতপা,সুহা সহ
চারটা ছেলে গোল হয়ে এক
টেবিলে বসেছে।

সিঁথিকে দেখেই
মেয়েরা চারজন হৈহৈ করে উঠে।
তোকে হেব্বি লাগছেপ্রথমে ফ্যান্সি
কথা বলে।এতগুলো ছেলের
সামনে সিঁথি ঠিক সহজ
হতে পারছিলনা। শুধু হাসলো,কিছু বলল
না।একা কেন?তোর বিএফ কই?সুহা প্রশ্ন
করে। অনেকটা অস্বস্তির
সাথে সিঁথি জবাব দেয়,’ওর একটু কাজ
আছে।
আসতে পারবেনা।
ওহ নো।আজকের জন্য কত আগে থেকেই
তো প্ল্যান করা ছিল।একটা ঘন্টার
জন্যও ম্যানেজ
করতে পারলো না?’কিছুটা বিরক্তির
সাথেই বলল সুহা।আসলে বিকেলে ও
একজায়গায় পড়াতে যায়।
সিঁথি বলে দেয়।
অ্যাঁ!’সমস্বরে বলে উঠে মেয়েগুলো।
সিথির খুব লজ্জা লাগে।কথাটা বলায়
কি হলো,যদিও বুঝলো না।ছেলেগুলোও
কেমন হাসছে।ইস! কেন বলল কথাটা!
কিছুক্ষণ পর আবার ফ্যান্সিই
বলে উঠল,বাই দ্য ওয়ে,পরিচয়
করিয়ে দেই।আমাদের ফ্রেন্ড সিঁথি।
আর ও হচ্ছে...,ফ্যান্সি তার বয়ফ্রেন্ডের
নাম বলে।একে একে বাকি তিনজনও
যার যার বয়ফ্রেন্ডের সাথে সিঁথির
পরিচয় করিয়ে দেয়।
সময়টা ভালোই কাটে।বাসায় ফেরার
পথে হুট করেই একটা কথা সিঁথির
মাথায় আসে।
আজকে আনিসকে নিয়ে না এসে
ভালোই করেছে।বান্ধবীদের
হাজারটা কটু কথা শুনতে হতো।আর
শুনতে হবে নাইবা কেন?আনিসকে ঐ
ছেলেগুলোর পাশে দাঁড়
করিয়ে দিলে কি বিশ্রী রকমের
বেমানান লাগতো,তা সিঁথি চোখ
বুজেই আন্দাজ করতে পারে। এখনকার
ছেলেরা কতো স্মার্ট।জিন্স
প্যান্ট,ফ্যাশনেবল
গেঞ্জি টি শার্ট,চোখে সানগ্লাস।
নিজেদের বাইক
আছে,গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে যখন
ইচ্ছে যেখানে ইচ্ছে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আর আনিস?জিন্স প্যান্ট নাকি তার
পছন্দ না,কাপড়
কিনে দর্জি দিয়ে বানায় সবসময়।
ফুলহাতা শার্ট ব্যতীত অন্যকিছু
পড়বেনা।সানগ্লাস তার কাছে অন্ধের
লাঠির মতো লাগে।বাইক নেই,আর
জীবনে কিনবেও না।কিনবে কেন?
তার রিক্সা চড়তেই বেশ লাগে।খ্যাঁত
আর কাকে বলে!একদম উৎকৃষ্ট শ্রেণীর
খ্যাঁত।


সিঁথির বান্ধবীরা ঠিকই বলে।প্রথম
যেদিন সিঁথি আনিসের
ছবি দেখালো,তারা প্রত্যেকেই চোখ
কপালে তোলার
ভঙ্গি করে বললো,’এটাকে তুই কোথায়
পেলি?এরসাথে তুই ডেটিংয়ে যাস?
মাই গড!লোকজন তাকিয়ে থাকে না?
পুরাই তো বীস্ট এন্ড বিউটি জুটি।
সিঁথির জন্মদিনে আনিস যখন
একতোড়া ফুল আর একসেট বই উপহার
দিল,সেদিনও সিঁথিকে বান্ধবীদের
কটুক্তি শুনতে হলো।নায়লা তার ব্যাগ
থেকে একটা ব্রেসলেট বের
করে সিঁথিকে দেখালো,’দেখ।
এটা হোয়াইট গোল্ডের।সামির গত পরশু
আমাকে গিফট করেছে।কোন অকেশন
নেই,এমনিতেই।সিঁথি বললো,’তোর
সামিরের মত আনিসের
অতো টাকা নেই।নিজের
পড়াশুনার খরচ ও নিজেই দেয়।
সামিরের টাকা কে বলল?সামিরের
বাবার টাকা সব।আনিসের বাবারও
অতো টাকা নেই।তাহলে তুই এই ফকির
ছেলের সাথে লটকে আছিস কেন?
সুহা বলে উঠে।


বান্ধবীরা সিঁথিকে বোঝাতে
চেষ্টা করে।ফ্যান্সি বলল,’সিঁথি,ট্রাই
টু আন্ডারস্ট্যান্ড।তুই একটা মডার্ণ
মেয়ে।যথেষ্ট সুন্দরীও।প্রাইভেট
ভার্সিটিতে পড়ছিস।
একটা স্ট্যান্ডার্ড ফ্যামিলিতে তুই বড়
হয়েছিস।অথচ,রিলেশন করেছিস
একটা বদখত বাংলা পাঁচ চেহারার
ছেলের সাথে।বুঝলাম,পড়াশুনায়
ভালো-ব্রিলিয়ান্ট।সো হোয়াট?এই
ছেলে বড়জোর একটা ২০-২৫ হাজার
টাকা বেতনের জব করতে পারবে।এই
টাকা তোর এখন প্রতি সেমিস্টারের
ফি।ছেলেটা একটা নিম্ন মধ্যবিত্ত
পরিবার থেকে এসেছে,তাই তার
মেন্টালিটিও ওরকমই।তুই সেই
সোসাইটির সাথে অ্যাডজাস্ট
করতে পারবি নিজেকে?সুতপাও সায়
দেয়।‘দেখ,তিন বছর আগে তুই
ছিলি ইমম্যাচিউরড।ইমোশনের
বশে একটা ভুল করেছিস,এবং গত তিন
বছর ধরে সেটা বয়ে বেড়াচ্ছিস।এখন
ভার্সিটিতে পড়ছিস,যথেষ্ট
ম্যাচুরিটি এসেছে।তোর নিজেরই
বোঝা উচিৎ,ইমোশন
এন্ডরিয়েলিটি আর
টোটালি ডিফরেন্ট।আর ঐ ছেলের
সাথে রিলেশনটা কি তোর আব্বু-আম্মু
মেনে নেবে?


কথাগুলো সিঁথিকে ভাবায়।দিন-
রাত,রাত-দিন ভাবায়।সত্যিই
তো,আনিসের সাথে তার সম্পর্ক
বাবা-মা কখনোই মেনে নেবেন না।
যদিও এটা এখন মুখ্য ব্যাপার নয়।আর
ফ্যান্সি যেটা বলেছে,তাও তো ঠিক।
সিঁথির পাশে আনিসকে কেমন
লাগে!ব্যাপারটা সিঁথি লক্ষ্য
করেছে,আনিসের সাথে কোথায়
বেরুলে আশেপাশের লোকজন কি অদ্ভুত
দৃষ্টিতেই না তাকায়।
ইস,এতোদিন কেন এটা খেয়াল
করলোনা!এরপর থেকে আনিসের
সাথে বাইরে যাওয়া কমিয়ে
দিয়েছে সিঁথি।


আজকাল আগের মতো রাতভর কথাও
হয়না।
আনিসের
ব্যস্ততা থাকে,কখনো বা সিঁথির
পরীক্ষা,প্রেজেন্টেশন।এরকম কিছু
থাকলে আনিসকে বলতে হয়না,সে
নিজে থেকেই ফোন রেখে দেয়।
পড়াশুনাকে সে সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভাবে।
আগে এই
ব্যাপারগুলো সিঁথিকে যতোটা তৃপ্তি
দিতো,এখন দেয় না।
মনে হয়,এগুলো আনিসের
ব্যক্তিত্ব নয় বরং দূর্বলতা।
মাস খানেক কেটে গেছে।এর
মধ্যে একবারও আনিসের
সাথে দেখা হয়নি সিঁথির।আনিস
দেখা করতে চেয়েছে দু’একবার।কিন্তু
সিঁথি নানান
অজুহাতে এড়িয়ে গেছে।আনিস
বোধহয় এখনো কিছু বুঝতে পারেনি।আর
পারলেই বা কি!
সিঁথি আনিসের কাছ
থেকে সরে আসতে চাইছে।অনেক
ভেবে চিন্তে সিঁথি বুঝতে পেরেছে
,আনিসের সাথে যতোটা সহজে সম্পর্ক
তৈরী হয়েছে,অতো সহজে জীবন
কাটানো সম্ভব হবেনা।
প্রতিটা মেয়েই তো চায়,তার
একটা সুখের সংসার
হোক,সেই
সংসারে ভালোবাসা থাকুক।কিন্তু
সুখ-ভালোবাসাই তো শেষকথা নয়।
জীবনে অর্থবিত্তেরও যথেষ্ট প্রয়োজন
আছে।সিঁথি স্বচ্ছল পরিবারে বড়
হয়েছে,মুখ ফুটে যখন
যা চেয়েছে,পেয়েছে।আনিসের
কাছে এটা আশা করাও ভুল।হ্যা,আনিস
তাকে ভালোবাসে।আনিসের
কাছে থাকলে তার
জীবনটা ভালোবাসাপূর্ণ হবে,কিন্তু
সেখানে অভাবের দৌরাত্ম্যও
থাকবে বিভীষিকার মত।এক সময়
ভালোবাসা পরাজিত হবে সময়ের
কাছে,প্রয়োজনের
তাগিদে বাস্তবতা যখন কঠিন
চেহারা নিয়ে সামনে এসে দাঁড়াবে
,তখন কি করবে সিঁথি?আবার এই
তিনবছরের স্মৃতির ঝুলিটাও তো খুব
হালকা নয়।জীবনের কতগুলো মধুর
বিকেল কেটেছে আনিসের হাত
ধরে,নির্ঘুম রাত পার হয়েছে তার গল্প
শুনে।সেই স্মৃতিগুলোই
বা সিঁথি কিভাবে ভুলে যাবে
বেমালুম?

এমন দোটানা!অবশ্য সেটা থেকেও
মুক্তি পেল শীঘ্রই।
ভার্সিটিতে একটা ছেলের
সাথে পরিচয় হয়েছে সিঁথির।
ছেলেটার নাম সেজান,ওর এক
সেমিস্টার সিনিয়র।বেশ স্মার্ট।
কথাবার্তার স্টাইলও চমৎকার।
সিঁথি বুঝতে পারে,ছেলেটা তার
ব্যাপারে আগ্রহী।ওরও খারাপ
লাগেনা সেজানকে।
ইদানীং ফোনে কথা হয় ওদের।সেজান
নাকি গিটার বাজাতে পারে।
সিঁথিকে বললো,একদিন শোনাবে।
একদিন ভার্সিটি শেষে সেজানের
বাইকে করে সিঁথি ঘুরতে বের হয়।
সিঁথিকে নিয়ে সেজান
শপিংমলে যায়।এটা ওটা কিনে দেয়।
একসাথে দুজনে লাঞ্চ করে।
সেজানের ব্যাপারটা সিঁথির
বান্ধবীরাও সাদরে মেনে নিয়েছে।
তারা সিঁথিকে বলে,এতোদিনে ওর
সুমতি হয়েছে।


সিঁথি আনিসের কথা প্রায় ভুলেই
গেছে।একদিন রাতে সেজানের
সাথে কথা হচ্ছে,এমন সময় আনিসের
ফোন আসে।প্রায় আধ ঘন্টা ধরে ফোন
দিয়ে যায় সে।সিঁথির অসম্ভব বিরক্ত
লাগে।ননসেন্স একটা!
কথা শেষে আনিসকে ফোন দেয়।কিন্তু
ততোক্ষণে আনিস ঘুমিয়ে পড়েছে।
সিঁথির আরো মেজাজ খারাপ হয়।
মেসেজ পাঠায় আনিসকে,কাল
বিকেলে দেখা করার জন্য।
যা বলার,সরাসরিই বলা উচিৎ।

প্রায় তিন মাস পর দেখা।আনিস কেমন যেন
শুকিয়ে গেছে।মুখ
ভর্তি খোঁচাখোঁচা দাড়ি।
সবমিলিয়ে জুবুথুবু অবস্থা।সিঁথির
তাকাতে ইচ্ছে করেনা।ঘন্টাখানেক
পর।সিঁথি চলে যাচ্ছে,পিছন
ফিরে তাকালে দেখতো,আজ পৃথিবীর
সবচেয়ে দুঃখী ছেলেটি কেমন
ব্যাকুল
হয়ে কাঁদছে।


এরপর,ছ’মাস চলে যায়।ভালোই ছিল
সিঁথি।সেজানের সাথে চমৎকার
কাটছিল সময়গুলো।সেসময় নতুন
ব্যাচে প্রায় শ’খানেক স্টুডেন্ট
ভর্তি হয়েছে ভার্সিটিতে।সেদিন
ছিল ফ্রেশার’স রিসিপশন।

সিঁথি শাড়ী পড়ে ভার্সিটিতে গেল।
সেজানের জন্য একটা সারপ্রাইজ এটা।
কিন্তু ভার্সিটি গিয়ে সেজানকে কোথাও
দেখতে পেলোনা।
হঠাৎ অডিটোরিয়ামের
সামনে দেখলো,সেজান একটা মেয়ের
সাথে কথা বলছে।সিঁথি এগিয়ে গেল।
সেজান সিঁথিকে দেখে একটুও
বিচলিত না হয়ে বলল,’সিঁথি,ও
হলো নিভা।আমার কলেজ ফ্রেন্ড।
এইবার ভর্তি হয়েছে।আর নিভা,ও
সিঁথি।আমার ফ্রেন্ড।আমরা একই
ব্যাচে পড়ছি।‘ফ্রেন্ড?’সিঁথির
মনে হলো একটা প্রচন্ড
ধাক্কা খেয়েছে কোথাও।সেজান এই
মিথ্যেটা কেন বলল?


আজকাল সেজানকে পাওয়া যায়না।
কেমন যেন সিঁথিকে এড়িয়ে চলে।
সিঁথির সামনেই ঐ
মেয়েটাকে নিয়ে হেঁটে যায়,কখনো
ক্যাম্পাসে কখনো বাইরে।সিঁথি ফোন
দিলে হু হা করে রেখে দেয়।
প্রচন্ড কান্না পায় সিঁথির।
নিজেকে অসম্ভব অসহায় মনে হয়।একদিন
ফ্যান্সিরা ওর বাসায় আসে।
সিঁথি ওদেরকে সব খুলে বলে।
সুতপা বলল,’এটা নিয়ে এত মন খারাপ
করছিস কেন?সে অন্য
মেয়ে নিয়ে ঘোরছে,তুইও অন্য কোন
ছেলের সাথে ঘুরে বেড়া।
নায়লা বলল,’তোর ইমোশন আর
গেলোনা।এত ডীপ
রিলেশনে যেতে কে বলল তোকে?
ভালো লেগেছে,ঘুরেছিস,
মজা করেছিস ব্যস।
এটা নিয়ে ফ্যাচফ্যাচ করে কাঁদার
কি হলো বাপ!তখন
ফ্যান্সি বলে উঠলো,’ডীপ রিলেশন আর
হবে কি।সেজান নাকি ওকে একদিন ওর
ফ্ল্যাটে আসতে বলেছিল।
সিঁথি না করে দিয়েছে।সেজান
নিজের মুখে বলেছে আমাকে।এরকম
ব্যাকডেটেড মেয়ের সাথে আর
কতোদিনই বা রিলেশন
টেকানো যায়?
সিঁথি হতভম্ভ হয়ে শুধু মেয়েগুলোর
কথা শুনছিল।এদেরকেই
কিনা সে বিশ্বাস করেছিল!এই
নোংরা মেয়েগুলোকে,যারা
নিজেদের ভাবে ‘আধুনিক’!
সিঁথি শান্তগলায়
বলল,’তোদেরকে একটা রিকুয়েস্ট করি।
কাইন্ডলি তোরা এই মুহূর্তে আমার
সামনে থেকে চলে যা।আর
কক্ষণো ভুলেও আমার
সাথে কথা বলতে বা যোগাযোগ
করতে আসিস না।
নায়লা চেঁচিয়ে উঠে,’মানে?তোর
বাসায় এসেছি বলে এভাবে ইনসাল্ট
করছিস আমাদের?সুহা বলল,’এসব
তো তোর ভালোর জন্যই...’কিন্তু শেষ
করতে পারেনা।সিঁথি চিৎকার
করে উঠে,’প্লীইজ।গেট আউট।


অনেকগুলো এলোমেলো দিন
কেটে যায়।যদিও সিঁথির মনে হচ্ছিল
কোন এক নিষ্ঠুর উপায়ে তার
ঘড়িটা বন্ধ হয়ে গেছে।প্রতিটা মুহূর্তই
যেন একেকটা আলোকবর্ষ।
পুরনো দিনগুলো সিঁথির খুব মনে পড়ে।
এক বিকেলে কি মনে করে সিঁথি
পাবলিক লাইব্রেরীতে যায়।
কি আশ্চর্য!আনিসও এসেছে।ও বোধহয়
আগেরমতই প্রতিদিন আসে।আচ্ছা,আনিস
কি সত্যি আগের মত আছে?ও
কি এখনো সিঁথিকে ভালোবাসে?
ঐদিন সিঁথিকে দেখেই আনিস
পালিয়ে যায়।এরপর প্রতিদিনই
সিঁথি সেখানে যেতে শুরু করে,কিন্তু
আনিস আর আসেনি।ফোন নাম্বারটাও
বোধহয় বদলে ফেলেছে।
এতো অভিমানী ছিল ছেলেটা!
কিন্তু,সিঁথিতো বোঝেনি।


একদিন সিঁথি আনিসের মেসে যায়।
ঠিকানাটা জানা ছিল,কিন্তু
কখনো আসা হয়নি।আনিসের রুমমেট
ছেলেটা ঘরেই ছিল।সিঁথি আনিসের
কথা জিজ্ঞেস করতেই
বললো,সে নাকি দিন সাতেক আগেই
মেস ছেড়ে চলে গেছে।ঠিক ঐ
মুহূর্তে,জীবনে প্রথমবারের মত সিঁথির
মনে হয়,তার আর বেঁচে থাকার
প্রয়োজন নেই।আনিস
যে তাকে এভাবে আঘাত না দিয়েও
মেরে ফেলবে,এতোখানি ক্ষমতা
আনিসের হাতে আছে-সিঁথি স্বপ্নেও
ভাবেনি।
চলে আসছিল,পেছন
থেকে ছেলেটা ডাক দেয়।‘কিছু
মনে করবেন না,আপনার
নামটা জানতে পারি?‘সিঁথি’ আনিস
ভাই একটা খাম দিয়ে গেছেন।
বলেছিলেন,কেবল সিঁথি নামের কেউ
যদি আগামী একমাসের
মধ্যে আসে,তাকে যেন এটা দেয়া হয়।
নয়তো ছিড়ে ফেলে দেই।সিঁথি চুপচাপ
দাঁড়িয়ে আছে।‘আপনি একটু
দাঁড়ান।‘ছেলেটা ঘরে ঢুকে,
খানিকবাদেই একটা হলদে খাম
হাতে ফেরত আসে।সম্বোধনহীন
একটা চিঠি।


“তোমাকে কি বলে সম্বোধন
করে লেখা শুরু
করবো,বুঝতে পারছি না।প্রিয়,প্রিয়তম
বলার অধিকার তো নেইই,তোমার নাম
ধরে ডাকার যোগ্যতাটাও
মনে হচ্ছে,হারিয়ে ফেলেছি।
আদৌ এই
চিঠি তুমি পাবে কিনা,জানিনা।আর
সত্যি বলতে,এই অনিশ্চয়তাটুকু
আছে বলেই আজ নির্দ্বিধায়
লিখতে বসেছি।সেদিন
তুমি চলে আসার পর,পুরো পৃথিবীটাই
মিথ্যে মনে হচ্ছিল।এক জীবনে অনেক
কষ্ট পেয়েছি,ছোটবেলা থেকেই
নানান প্রতিকূলতা পেরিয়ে জীবনের
এই অবস্থানে এসেছি আমি।কিছুই
তোমার অজানা নয়।সব জেনেই
তুমি আমাকে ভালোবেসেছিলে।এখন
জানি,সেই
ভালোবাসা করুনা বৈ কিছু ছিলনা।
যাহোক,সেদিন তোমার
কথাগুলো শোনার পর
মনে হলো,এরচেয়ে বেশি কষ্ট
স্বয়ং ঈশ্বরও আমাকে দিতে পারতেন
না।
তবে,পরে ভেবে দেখলাম
কথাগুলো মিথ্যে নয়।সত্যিই,তোমার
পাশে আমাকে মানায় না।
সত্যিই,তোমাকে কেবল
ভালোবাসা দিয়ে পরিপূর্ণ
সুখী করে আমি রাখতে পারবনা।
কিন্তু,এই ব্যাপারগুলো তিন বছর
আগে কেন ভাবলে না,বলতে পারো?
জানি,পারবেনা।আমি বলে দিচ্ছি।
তখন তুমি ভালোবাসাটাকেই বড়
করে দেখেছো।
আমাকে নিয়ে তোমার স্বপ্ন ছিল
আমার মতোই।সাধ্যের মধ্যে সুখ
তৈরী করার জন্য আমরা দুজনই প্রস্তুত
ছিলাম।সেজন্যই আমার সাথে দিনের
পর দিন ভাঙ্গাচুরা রিক্সায়
করে ঘুরতে তোমার দ্বিধা হয়নি।আমার
ত্রিশ টাকা দামের রজনীগন্ধা স্টিকও
তোমার কাছে অনেক দামী ছিল।
যাকগে,কি হবে এসব বলে।
শুনতে হয়তো খারাপ
লাগবে তোমার,তবুও বলি।আজ
তুমি যেটাকে আঁকড়ে ধরে অন্য
দশজনের সাথে তাল
মিলাতে চাইছো,একটা সময় ঠিকই
বুঝতে পারবে-সেটা ভুল ছিল।
ভালোবাসার সংজ্ঞা একেকজনের
জন্য
একেকরকম।তুমি অনেক
সৌভাগ্যবতী,স্বার্থহীন-শুদ্ধতম
ভালোবাসা পৃথিবীর অল্প যে’কজন
মানুষ পেয়েছে,তুমি তাদের একজন
ছিলে।খুব রাগ হচ্ছে,না?
তোমাকে আরেকটু রাগিয়ে দেই।
শেষবারের মতো তোমার নাম
ধরে ডাকতে খুব ইচ্ছে করছে।
সিঁথি,আমি তোমাকে ভালোবাসি।
জীবনের শেষ মুহূর্তটা পর্যন্ত বাসবো।
তুমি খুব অস্থির একটা সময়ের মধ্য
দিয়ে যাচ্ছো,জানি।
আমি তোমাকে মুক্তি দিচ্ছি।
তুমি সুখী হও।
-আনিস।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×