somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রবাসীদের ঈদ ভাবনা

৩০ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৯:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মোসাদ্দেক হোসেন সাইফুল

সারা দিন উৎসব আর প্রিয়জনের সাথে প্রতিটি মুহূর্তের আনন্দ ভাগাভাগি করার নাম ঈদ।এক মাস ব্যাপী সিয়াম সাধনার

শেষেঈদ ঘরে ঘরে আনন্দ ছড়িয়ে দেবে ।eidমুসলমানদের অন্তরে ঈদ লালিত হয় আবেগ অনুভূতি আর ভালবাসার অফুরন্ত উচ্ছাস নিয়ে। ।বাঙ্গালী তথা মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ও এটি ।কিন্তু পৃথিবীতে এমন অনেকেই আছেন যাদের কাছে ঈদ , ঈদের আনন্দ নিয়ে আসে না ।রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ পরিবার,পরিজন,প্রিয়তম স্ত্রী,মমতাময়ী মা,বাবা ,প্রীয় সন্তান,আদরের ভাই ,বোনের কথা অন্যান্য দিন মনে হলেও,না হবার ভান করে কাটিয়ে দিলে ও ঈদের দিন সে অভিনয় করা যায় না ।প্রকৃতপক্ষে আমরা যারা প্রবাসে থাকি, তাদের দেহ থাকে প্রবাসে আর মনটা দেশে।প্রবাস মানেই নিঃসঙ্গতা, একাকিত্ব, প্রবাস মানেই জীবন সংগ্রাম। এ সংগ্রাম অস্তিত্ব রক্ষার, আবার উন্নয়ন, উদ্ভাবন ও উৎকর্ষ সাধনেরও। এ জীবন কর্মমুখর, শ্রমঘন, প্রতিনিয়ত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার। উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, উত্তেজনা এর নিত্যসঙ্গী।মরু পর্বতের মত হাহাকার বেদনা হৃদয়ে চাপা দিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক রাখতে এখানে ।প্রবাসে আবেগের কোন স্হান নেই,তাই কষ্টেবুকটা ফেটে গেলেও বলার কোন উপায় নেই ,প্রবাসীদের কষ্টের অসহ্য যন্ত্রণা প্রবাসী ছাড়া আর কেউ বুঝবে না ।যন্ত্রণা ভুলে থাকার কৌশল প্রবাসীরা এত ভালোভাবে রপ্ত করেছেন যা অনেকেই জানেন না ।দেশেসবার ধারনা প্রবাস মানে অপুরন্ত টাকা,বিলাসী জীবন ,সুখ আর সুখ কিন্তু আমরা প্রবাসীরা এখানে কেউ বেকার,কারো কাজ ভিসা দুটোই নেই,দেশে ফেরত যাওয়ার টিকেটের টাকা ও নেই,কেউ কর্মক্ষেএে মালিকের নির্যাতনের স্বীকার,কেউ দীঘদিন যাবত বেতন পাচ্ছে না, সারাদিন অমানবিক পরিশ্রম করলে ও আমরা আমাদের কষ্টের কথা প্রকাশ করি না কারন কষ্টের কথা প্রকাশ করা ও এক ধরনের কষ্ট,আমরা চাই আমাদের কষ্ট হলেও দেশে আমাদের প্রিয়জনেরা যেন সুখে থাকে-আমাদের কষ্ট যেন ওদের স্পর্শ করতে না পারে তাই দেশের মানুষ আমাদের সুন্দর স্বাস্হ্য আর মুখভরা হাসিটাই দেখে ,তাই আসল সত্যটা হাসি আর চোখে দেখা সুখের আবরনে ঢাকা পড়ে য়ায় ।প্রবাসীরা কি পরিমান কষ্ট করে টাকা উপাজন করে তা কেউ নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করবে না ।আমি এমন অনেককেই জানি য়ারা কয়টা টাকা বেশী জমানোর জন্য,মাস শেষে পরিবারকে একটু বেশী টাকা পাঠানো জন্য এখানে পরিমান মত খাওয়া খান না,আরামদায়ক/শুশীল পোষাক পরেন না,একটি ছোট কক্ষে ১০ জন অনেক কষ্ট করে থাকে।এই সব কিছু মেনে নিয়েও শুধু দেশে রেখে আশা প্রিয়জনদের মুখে হাঁসি ফোটানের জন্য (কারও স্ত্রীকে ভাল জীবন যাপনের জন্য , সন্তানকে উচ্ছ শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য , কারও অসুস্থ মা বাবার চিকিৎসা,ঠিককমতন ঔষধ পত্র যোগানোর জন্য , পরিবার পরিজন নিয়ে শান্তিতে দুমুঠো অন্নের জন্য) আমাদের এই প্রবাসে যাত্রাকিন্তু আমরা প্রবাসীরা তখনই সবচেয়ে বেশী কষ্ট পাই যখন দেখি আমাদের কারো ভাই,কারো সন্তান আমাদের কষ্টাজিত টাকা মনের খায়েস অপচয় করেই যাচ্ছে,প্রিয়তমা স্ত্রী পরকীয়ায় মেতেছে,আদরের সন্তানটি বিপদগামী হচ্ছে,দেশে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে কর্মকর্তারা আমাদের তুচ্যতাচ্ছিল্য করে হয়রানী করছে।(দেশের মন্ত্রী এমপিরা প্রবাসীদের নিয়ে বড় বড় লেকচার দেয়,প্রবাসীদের কষ্টাজিত টাকা সচল রাখে দেশের চাকা,কেউ কেউ আবার প্রবাসীদের অর্থনৈতিক মুক্তিযোদ্ধা বলে ডাকেন,এতসব অর্জনের পুরষ্কার আমরা বাংলাদেশ বিমানবন্দরে নামার সাথে সাথে পেয়ে যাই।দিন যায়,সরকার পরিবর্তন হয় কিন্তু প্রবাসীদের এ দূর্বোগ লাঘব হয় না) দৈনন্দিন শত ব্যস্ততার মধ্যেও প্রবাসীদের মন প্রিয়জনের জন্য সারাক্ষন ব্যাকুল থাকে,একটু ভালো খাবার খেতে বসলে মনে পড়ে দেশে আমাদের পরিবার এমন খাবার পাচ্ছে কিনা ?কালেভদ্রে কোথাও ঘুরতে গেলে মনে পড়ে প্রিয় মানুষটি এখন সাথে থাকলে কতই না ভালো লাগত ।এখানে অনেকের ঈদের দিন ও ডিউটি থাকায় তারা ঈদের জামায়াতে অংশগ্রহন করতে পারে না ,প্রকৃতপক্ষে শতকরা ৮০ ভাগ প্রবাসীর সকালের সূর্যোদয় ও বিকালের সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ হয় না ।এখানে ফজরের নামাজের পর পর ই নির্দিষ্ট কিছু মসজিদে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় ,খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে নামাজে যেতে হয় ।এখানে নামাজে যাওয়ার সময় আমাদের কেউ পেছন ফিরে ডেকে বলেনা একটু সেমাই ,একটূ পায়েস খেয়ে যাও ।পুর্বাকাশে সুর্য মামার দেখা পাওয়ার সাথে সাথেই শেষ হয়ে যায় ঈদের নামাজ ।এর পর নামাজ থেকে ফিরে আবার কর্মস্হলে ফিরে যেতে হয় ,যারা ছুটি পায় এখানকার বন্ধু বান্ধব নিয়ে সামান্য ঘোরাফেরা বা একে অপরের বাসায় গিয়ে কিচুক্ষন আড্ডা দিয়ে ফিরে এসে আবার পরদিন ডিউটির প্রস্তুতি ,এভাবেই কেটে যায় আমাদের ঈদ নামক কষ্টের দিনটি (প্রবাসে ও কিছু বাংলাদেশী আছে য়ারা এখানে ব্যবসায়িক ও সামাজিক ভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং পরিবার নিয়ে সুখে শান্তিতে আছে ,তবে তাদের সংখ্যা সামান্য)।আমাদের ঈদ যেমনই যাক অন্তত এটুকু জেনে ভালো লাগে যে আমাদের কষ্টের উপার্জিত টাকা দিয়ে আমাদের পরিবার সুখে শান্তিতেঈদ করতে পারছে ,একজন প্রবাসী হিসেবে এটাই আমাদের স্বার্থকতা ।
সূত্র: বিডিভিউ২৪.কম
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×