নীলিমার সাথে যখন তার পরিচয় হয় তখন তার নিজের পৃথিবী ঝড়ের পরে বিধ্বস্ত পৃথিবীর মত নিঃস্ব,রিক্ত। কত রাতের পর রাত নির্ঘুম কাটিয়েছে অন্ধকার ঘরে ভূতের মত। কখনো তার একাকিত্ব, তার নিঃসঙ্গতা বুকের উপর এমন করে চেপে বসেছে যেনএকমুঠো বাতাসের জন্য হাহাকার করে উঠেছে বুক। এমনি এক সময়ে ছায়ার মত নীরবে শুভ্রর পাশে পাশে হেঁটেছে নীলিমা। শুভ্র কখনো কাছে টেনে নিয়েছে বন্ধুর মত, কখনো পৃথিবীর প্রতি এক অজানা আক্রোশে দূরে ঠেলে দিয়েছে নিলীমাকে। কত যে অবহেলা সয়েছে মেয়েটি, কত কত রাত নীরবে চোখের পানি ফেলেছে, তবুও শুভ্রর মুখে একটু হাসি ফোটাবার জন্য নিজের দুঃখ গুলো চাপা দিয়ে রেখে শুভ্রর চারিপাশে একটি ভালবাসার বলয় তৈরি করে রেখেছে সব সময়।
পৃথিবীতে কিছু ভালবাসা আছে যা প্রথমেই অনেক ভাললাগা দিয়ে ভাসিয়ে নিয়ে যায় তারপর সময়ের সাথে মলিন হতে হতে একটা সময় মনেহয় হয়তো কোথাও কোনদিন কোনকিছু ছিলইনা আবার কিছু ভালবাসার নিজের অজান্তেই থেকে যায় প্রথমে, তারপর প্রতিদিন একটি বিন্দু করে জমা হতে থাকে সেখানে। এক সময় এই ভালবাসা নিজেকে স্বত্বা কে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে। তেমনি এক মায়ার বাঁধনে বেধেছিল মেয়েটি তারে। কিন্তু আজ যে নিজেকেই এতটুকু ভালবাসতে পারেনা তার দেবারই বা আর কি সাধ্য থাকে। তবুও স্বার্থপরের মত ভাবে, এই পৃথিবী থেকে পালিয়ে গেলেও অন্তত একটা ছোট পৃথিবী তার আছে সেখানে সে নিশ্চিন্তে একটু আশ্রয় পেতে পারে। বোকা মেয়েটি সারা জীনব শুধু দিয়েই গেলো, বিধাতার করুণা ভান্ডারের কনাটুকু কোনদিন তার জন্য জুটলো না
মাঝে মাঝে খুব কষ্ট হয় শুভ্রর। যে জীবন তাকে ফেলে চলে গেছে সেই জীবনের জন্য কোন কষ্ট নয়, কোন না পাওয়ার কষ্ট নয়, এই কষ্ট দিতে না পারার কষ্ট। রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে নিজেকে তার নিঃস্ব মনে হয়। শীতের পাতা ঝরে যাওয়া গাছটির মত তার আজ শুধু প্রানটাই আছে, পাতা ঝরে গেছে গেছে সেই কবেই। ধীরে ধীরে আকাশের দিকে মুখ তুলে সে মনে মনে বলে যদি বিধাতা বলে কেও কোথাও থাকো তাহলে এই দুখিনী মেয়েটিকে একটু সুখী করো।
এই লেখাটি দোস্তো জয়িতা, প্রিয়তি ও ছোট ভাই আরাফাত শান্ত কে উৎসর্গ করলাম।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মে, ২০০৮ ভোর ৫:০৯