আন্দোলনের গ্রহন যোগ্যতা বৃদ্ধি এবং কিছু ব্যাপারে আপনাদের সাবধান করার জন্য তরুন প্রজন্মের একজন সৈনিক এবং দেশের একজন নাগরিক হিসাবে আপনাদেরকে কিছু পরামর্শ। আশা করি ব্যাপার গুলি অবহেলা না করে গুরুত্ব দিবেন।
= ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপি এবং আওয়ামীলীগ দুটি দলই জামায়তকে ব্যাবহার করেছে। বর্তমানে বিএনপি যতই জামায়তকে নিয়ে থাকুক এই বিএনপি এই দেশে রাজনীতি করবেই। এই মুহ্হুর্তে যেহেতু বিএনপি ধরি মাছ না ছুঁই পানি ভাব নিয়ে আছে। যদিও জনগন এবং তরুন প্রজন্ম সবই বুঝে। তবুও প্রজন্ম চত্বরের উচিত বিএনপিকে সরাসরি আহবান জানানো- বিএনপি যেন রাজাকারের দল ছেড়ে প্রজন্ম চত্বরে একাত্ম হয় অথবা বিএনপিতে যারা মুক্তিযুদ্ধ চেতনা ধারন করেন এবং রাজাকারের ফাঁসির সাথে একমত তারা যেন যোগ দেয়। এতে করে এই আন্দোলনের গ্রহন যোগ্যতা আরো বৃদ্ধিপাবে এবং বিএনপিকেও চাপে ফেলা যাবে। বিএনপি পিছলাতে পারবেনা। অথবা আন্দোলনের কয়েকজন প্রতিনিধি বিএনপির হাই কমান্ডের সাথে বৈঠক করে জামায়ত শিবির ত্যাগ করে প্রজন্মের কাতারে সামিল হতে আহবান জানাতে পারেন। তাতে বিএনবি সাড়া না দিলেও অব্যশই এই আন্দোলনের গ্রহন যোগ্যতা বারবে এবং বিএনপির ব্যাপরে জনগন আরো পরিস্কার হবে।
= প্রজন্ম চত্বর আল্টিমেটাম দিয়ে হার্ডলাইনে যাওয়া উচিত। এ ভাবে দীর্ঘ মেয়াদী আন্দোলন ধরে রাখা কঠিন হবে। সুনির্দিষ্ট টার্গেট ছাড়া জনগনের রিদম ধরে রাখা সত্যিই কঠিন হয়ে যাবে। আন্দোলনের পূর্ন শক্তি থাকতেই চেলেঞ্জ জানানো উচিত এবং কেউ চেলেঞ্জ জানানোর আগেই চেলেঞ্জ জানানো উচিত। এ ভাবে শক্তি ক্ষয় করে অন্দোলন দূর্বল করে কোন চেলেঞ্জে গ্রহন করাটা হবে অত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। বড় ধরনের সফলতা না পেলে প্রজন্ম তথা গোটা জনগনকে পূনরায় জাগ্রত করা যাবেনা এবং সেটা করতে আরো কত বছর আবার অপেক্ষা করতে হয় চিন্তার বিষয়। জামায়ত শিবির নিষিদ্ধের দাবী, রাজাকারদের ফাসিঁর দাবী আদায়ের পর প্রজন্ম চত্বরের এবং আমাদের তরুন প্রজন্মের একটিই ফাইনাল টার্গেট হওয়া উচিত বাংলার মাটিতে হাজারো রাজনৈতিক দল থাকবে প্রতিটি দলে থাকবে হাজারো মত, কিন্তু বাংলার মাটিতে থাকবেনা শুধু মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের কোন অপশক্তির রাজনৈতিক দল এবং ধর্মকে পুজিঁ করা রাজনৈতিক কোন দল। এই ধরনের ফাইনাল টার্গেটটি প্রকাশ করা উচিত।
= ২১শে ফেব্রুয়ারী তে বেলুন ওড়ানো এবং সেখানে বেলুনের সুতোয় শহীদদের উদ্দেশ্যে চিঠি বেধে দেওয়া হবে এ ধরনের কর্মসূচি কোন স্কুলের কর্মসূচী হতে পারে, সমগ্র জাতির এই আন্দোলনে এ ধরনের ঠুনকো কর্মসূচি দিয়ে তামাসা তৈরী করা কোন ভাবেই গ্রহন যোগ্য নয়। এ পরিবর্তে সারা দেশে শহীদদের জন্য সকল ধর্মের মানুষের সকল ধর্মীয় উপসনালয়ে এবং স্কুল কলেজ মাদ্রাসায় দোয়া প্রার্থনা করার কর্মসূচি দেয়া উচিত। এতে ধর্ম নিয়ে যারা টানা টানি বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে তাদেরও একটা জবাব দেয়া হবে যে, এ্ই দেশে সব ধর্মের চর্চা চলবে কিন্তু ধর্ম নিয়ে রাজনীতি চলবেনা। এবং এই আন্দোলনের গ্রহন যোগ্যতাও বৃদ্ধি পাবে।
= প্রজন্ম চত্বর কে রাজীব চত্বর ঘোষনা করার চিন্তা করছেন কেউ কেউ এটা কোন ভাবেই ঠিক হবেনা। রাজীব ভাস্করর্য থাকতে পারে কিন্তু 'প্রজন্ম চত্বর' কে নাম পালটালে বিতর্ক উঠবে এবং এর গুরুত্ব হারাবে। আর এই আন্দোলনের সাথে এবং 'প্রজন্ম চত্বর' নামের সাথেই মিশে আছে রাজীব তাই আলাদা করার কোন কারন দেখছিনা। তাছাড়া আল্লাহ না করুক, পরবর্তিতে এই অন্দোলনে বা পরে এই প্রজন্মের আরো কোন আন্দোলনে এমন আরো কারুর নাম যোগ হলে কি করা হবে ? তারচেয়ে ভাষ্কর্য রেখে বা প্রজন্ম চত্বরে নাম ফলক বসিয়ে যে তিনজন শহীদ হয়েছেন তাদের নাম লেখা যেতে পারে।
= দেশের যে সব বুদ্ধিজিবীদের বিবেক ঘুমিয়ে আছে তাদের বিবেক ঘুমিয়ে থাকাই ভাল। এরা সবাই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, তরুন বুদ্ধিজিবীরাই এই আন্দোলনকে সফল করার জন্য যথেষ্ট। আজকের তরুন আগামী প্রজন্মের সত্যিকারের বুদ্ধিজীবি হউক কামনা করি। তাই চাটুকার বুদ্ধিজিবী থেকে সাবধান।
= আপনাদের প্রতি সম্পূর্ন শ্রদ্ধা রেখে বলছি- দল ঘেষাঘেষিটা নির্বাচনের জন্য বরাদ্ধ রাখেন, আাপাতত এটা বন্ধ রাখেন।
আর কোন দল গোষ্ঠি কিংবা কোন ব্যাক্তি যদি আন্দোলনকে আতাতের প্রস্তাব দেয় তবে জনসমূক্ষে প্রকাশ করুন, সৎ সাহস দেখান। আর আপনারা কোন কিছুর লোভে সমগ্র বাঙ্গালী জাতীর বিশ্বাস এবং তরুন প্রজন্মের আবেগের সুযোগ নিয়ে বেঈমানী করেছেনতো মনে রাখবেন, এই প্রজন্ম অতীতের সব ইতিহাস ভুলে গিয়ে আবার জাগবে শুধু একটি দাবী নিয়ে কোন আইন আদালতের বিচার নয় জাতীর এই বেঈমানদের রাস্তায় ফেলে দিগম্বর করে পেটানোর জন্য। তাই জাতীর বেঈমান নয় জাতীর নায়ক হওয়ার আহবান এবং শুভ কামনা রইল।
সময় এখন তরুন প্রজন্মের সময় এখন সাহবাগের, তাই বলে সাহবাগের প্রজন্ম চত্বরই দেশ চালাবে সেটা বলছিনা তবে জাতীয় ইস্যুগুলোতে তরুন প্রজন্মের দিক নির্দেশনা প্রতিটি সরকাররে প্রতি পরবর্তি সময় গুলোতেও থাকবে বলেই বিশ্বাস করি। ৪২ বছরে দেশ পরিচালনায় অনেক সরকার দেখেছি জাতীয় ইস্যু গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলি এক হতে না পারলেও এই প্রজন্ম দেখিয়েছে শুধু কোন দল নয় সারা দেশকে কিভাবে ঐক্য বদ্ধ করতে হয়, কিভাবে সাহবাগকে বাংলাদেশ বানাতে হয় কিভাবে সমগ্র বাংলাদেশকে সাহবাগ বানাতে হয়।
মনে রাখবেন সমগ্র জাতী স্বপ্ন দেখা ভুলে গিয়েছিল, এই প্রজন্মই আবার স্বপ্ন দেখিয়েছে। জাতী এটা আশা করতনা। এই প্রজন্ম প্রতিটি মানুষের মনে নতুন করে আশা জাগিয়েছে। সুতরাং স্বপ্ন যখন এই প্রজন্ম দেখিয়েছে স্বপনটা সত্যি করার দায়িত্ব এই প্রজন্মেরই।
জয় বাংলা
জয় প্রজন্ম
বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:৫৪