somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিদায় ২০১৫

৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

‘বিদায়! বিদায়! একি কলরব ধ্বনিছে বাতাসে, ক্রন্দন ভরা অক্ষিপট/ভাসাইছে সবাই ঝর্ণার ধারা, অধর পুষ্প নাহি ফুটে আজ/মুখে সবার বিষণ্নতা, আজি মোদের বিদায় লগ্ন_ কহিছে কৃষ্ণপাতা।’
বিপন্ন-বিস্মিত চোখে মহাকালের দিকে তাকিয়ে আরো একটি বছর হারিয়ে যাবে কালের গর্ভে। ঝরা পালকের মতো ঝরে পড়বে একটি বছর। বর্ষবরণের আবাহন রেখে কুয়াশামোড়া সূর্য আজ বিদায় নেবে মহাকালের যাত্রায়। জীর্ণঝরা পল্লবের মতো সরল রৈখিক গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে আজ খসে পড়বে ‘২০১৫’। বিদায় ২০১৫। মধ্যরাতে নতুন বছর ২০১৬-কে স্বাগত জানানোর উৎসবের বাঁশি বেজে উঠবে সবার প্রাণে। আগামীকাল থেকে শুরু হবে নতুন প্রত্যাশার নতুন বছর কিন্তু যে বছরটি হারিয়ে গেল জীবন থেকে, ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে, তার সবই কি হারিয়ে যাবে? মুছে যাবে সব?

বিশ্ববাসী নতুন বছরের আগমনে মেতে উঠবে আনন্দ-উল্লাসে। ফেলে আসা বছরটির দিকে ফিরে তাকালে আমরা হয়ে উঠি আনন্দ-বেদনায় সমান উদ্বেল। হয়তো স্মৃতি সতত সুখের নয়। হিসেবের খাতায় জমে আছে অনেক বিয়োগ-ব্যথা, হারানোর কান্না, আর মালিন্যের দাগ। তবু নিরাশার গভীর থেকে ফুটে ওঠে বিপুল আশার আলো, ধ্বংসস্ত‚প থেকে ফোটে নবতর জীবনের ফুল। আমরা আবারো মেতে উঠি সৃষ্টিসুখের উল্লাসে, বৈরী সময়কে মাড়িয়ে এসে গেয়ে উঠি জীবনের জয়গান। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আনন্দ-বেদনার সাক্ষী হয়ে কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে বছরটি।

বিদায় ২০১৫। মধ্যরাতে নতুন বছর ২০১৬-কে স্বাগত জানানোর উৎসবের বাঁশি বেজে উঠবে সবার প্রাণে। নতুন প্রত্যাশায় শুরু হবে নতুন বছর কিন্তু যে বছরটি হারিয়ে গেল জীবন থেকে, ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে, তার সবই কি হারিয়ে যাবে? মুছে যাবে সব? ঘটনাবহুল ২০১৫-এর অনেক ঘটনার রেশ টেনেই মানুষ এগিয়ে যাবে ২০১৬ সালের দিনরাত্রির পথে। প্রাপ্তি- প্রাপ্তির নিরিখে পেছনে তাকালে দেখা যাবে প্রাপ্তির উজ্জ্বল কিছু সোনালি শস্য, অন্যদিকে অতৃপ্তির কিছু শীর্ণপাতার মতো রিক্ততারও আর্তি জেগে আছে।

হরতাল ও অবরোধের বছর
২০১৫ সালটা শুরু হয়েছিল টানা হরতাল-অবরোধের সহিংসতার ভেতর। পুরনো আদলের রাজনীতি। সেই একই দৃশ্যপট। সেই হরতাল। জ্বালাও-পোড়াও। জনমনে আতঙ্ক। সরকারের সতর্কবাণী। মামলা-গ্রেফতার। মিছিল-সমাবেশে বিধিনিষেধ। সারাবছর চলেছে রাজনীতিতে এক অনিশ্চিত পরিবেশ। এ বছর ৪ জানুয়ারি বেগম খালেদা জিয়া তার গুলশান কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ থেকে ৯৩ দিনের আন্দোলন করেছেন। এসময় সারাদেশে পেট্রোলবোমা, আগুন, ককটেল, গুলি, হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনায় ঝরেছে ১৩৭ প্রাণ। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন।
তবে নৌকা এবং ধানের শীষ নিয়ে একটি উত্সবমুখর প্রচারণাময় ভোটযুদ্ধের ভেতর দিয়ে শেষ হয়েছে পুরনো বছরের শেষ মাসটি।

জঙ্গিদের হামলার শিকার
২০১৫ সাল মুক্তমনা লেখক-প্রকাশক ও ভিন্ন মতাবলম্বী ইসলামী চিন্তাবিদ ও পীরদের জন্য সীমাহীন আতঙ্কের বছর ছিল। তারাই বার বার জঙ্গিদের হামলার শিকার হয়েছেন। এ কারণে অনেকেই দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। বছরের শুরুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় জেএমবির জঙ্গিরা মুক্তমনা বিজ্ঞানমনস্ক লেখক ও বস্নগার অভিজিৎ রায়কে প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। গুরুতর আহত হয় অভিজিতের স্ত্রী বন্যা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদাসীনতার কারণে এ ধরনের হত্যা থেমে থাকেনি। এরপর খিলগাঁওয়ের নিজবাসায় বস্নগার নিলাদ্রী চট্টোপাধ্যায় ওরফে নিলয় নীলকেও একইভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আনসার আল-ইসলাম বাংলাদেশ এই হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে ৩১ অক্টোবর সুপরিকল্পিতভাবে জঙ্গি হামলায় শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের জাগৃতি প্রকাশনীর নিজ অফিসে খুন হন ফয়সল আরেফিন দীপন। একই দিন লালমাটিয়ায় টুটুলের শুদ্ধস্বর প্রকাশনীর অফিসে হামলার শিকার হন আহমেদুর রশীদ টুটুল, রণদীপন বসু ও তারেক রহিম। বছরের শেষদিকে নভেম্বর মাসে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকসহ ৭ বিশিষ্ট ব্যক্তিকেও হত্যার হুমকি দিয়ে চিঠি দেয়। অপরদিকে তেজগাঁওয়ে ওয়াশিকুর রহমান বাবু এবং সিলেটে অনন্ত বিজয় দাসকেও একই পরিণতি বরণ করে নিতে হয়। আনসারুল্লাহ বাংলাটিম এদের হত্যার দায় স্বীকার করে।

লেখক-প্রকাশক-বস্নগারদের পাশাপাশি বাড্ডায় পিডিবির সাবেক চেয়ারম্যান ও কথিত পীর খিজির খানকেও তার দরবার শরিফের ভেতরে কুপিয়ে হত্যা করে।

২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকায় হোসেনি দালানে বোমা হামলার ঘটনাটিও এ বছরের অন্যতম ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি। ওয়েবসাইটে এক বিবৃতিতে আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করে। তবে আইএস নিয়ে সরকারের ভেতরেও তথ্যের বিভ্রান্তি ছিল। সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আইএস নিয়ে স্ববিরোধী কথা বলে আলোচনার ঝড় তোলেন। বছরের শেষভাগে ঢাকা ও রংপুরে দুই বিদেশি নাগরিককে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ চরম সমালোচনার মুখে পড়ে। বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে সরকার। গুলশান ২ নাম্বার সেকশনের ৯০ নাম্বার সড়কে ইতালিয়ান নাগরিক তাবেলা সিজারকে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। আইএস এ হত্যার দায় স্বীকার করে। ঘটনার পর হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর কয়েকদিন পর রংপুরে জাপানি নাগরিক হোসে কোমিও সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন। এ ঘটনার পর বাংলাদেশে অবস্থানরত বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্নের ঝড় ওঠে। এরপর দিনাজপুরে অপর এক ইতালীয় নাগরিকের ওপর ধারালো অস্ত্রসহ সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। বিদেশিদের নিরাপত্তার বিষয়টি সব মহলে বেশ নাড়া দেয়।

ক্রিকেটময় ক্রীড়াঙ্গন
বিশ্বকাপ ২০১৫ : আফগানিস্তানকে হারানোর মধ্য দিয়ে বিশ্বমঞ্চ মাতানো শুরু করে বাংলাদেশ। এরপর বাঘের গর্জনে কেঁপে উঠে স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ড।
ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ : বিশ্বকাপের পর পাকিস্তানকে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের পর টাইগারদের শিকারের তালিকায় যোগ হয় দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত। ওয়ানডে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়ের আগে বাংলাদেশ একমাত্র টেস্টও ড্র করে। ভারতের পর প্রাপ্তির খাতায় যোগ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অনভিজ্ঞ বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারলেও ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নেয়। এরপর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজও ড্র করে স্বাগতিক দল। বছরের শেষে জিম্বাবুয়ে বধ : বছরের শেষ প্রান্তে জিম্বাবুয়েকে ওয়ানডে সিরিজে হারায় টাইগাররা। ওয়ানডে সিরিজে সফরকারীদের হোয়াইটওয়াশের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ ড্র করে বাংলাদেশ। বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহর জোড়া সেঞ্চুরি : প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরির স্বাদ পান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৯ মার্চ অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৩ রানের পর ১৩ মার্চ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৮ রান করেন রিয়াদ। বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে মুস্তাফিজ : ওয়ানডেতে মাত্র নয় ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়ে আইসিসির বর্ষসেরা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান।

ছিটমহলে স্বাধীনতার সূর্যোদয়
২০১৫ সালে ছিটমহলবাসী পেয়েছে নতুন পরিচয়। সেখানে উঠেছে স্বাধীনতার নতুন সূর্য। চলতি বছরের ২০ অক্টোবর বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন পালক যুক্ত হলো। রকারের বড় অর্জনের তালিকায় যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত ল্যান্ড বাউন্ডারি চুক্তির বাস্তবায়ন
ও ছিটমহল বিনিময়। দীর্ঘ ৬৮ বছর পর ছিটমহল বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মূল ভূখণ্ডের অংশ হয়ে গেছে ছিটগুলো। এতে পূর্ণ নাগরিকের পর্যাদা পেল ৫০ হাজার মানুষ।

মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার
বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড সহ মানবতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধের বিচার, বিডিআর বিদ্রোহের মামলার আপিল, চাঞ্চল্যকর রাজন-রাকিব হত্যা এবং ঐশীর মামলা ছিল
এ বছর আলোচনার কেন্দ্রে। তিনজন যুদ্ধাপরাধী মুহাম্মদ কামারুজ্জামান, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ এবং সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুদ কার্যকর করা হয়েছে।
এতে পাকিস্তান উষ্মা প্রকাশ করে গণহত্যার দায় অস্বীকার করলে দেশটির সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি উঠেছে।
যুদ্ধাপরাধের ফাঁসির রায় কার্যকর নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা চরমে উঠেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে।

কূটনৈতিক ক্ষেত্রে অর্জনঃ
২০১৫ সালে কূটনৈতিক ক্ষেত্রে এসেছে অর্জন ও চ্যালেঞ্জ। বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বাংলাদেশের ভূমিকা ও নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের কার্যক্রম এ দেশকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নতুন মাত্রায় উন্নীত করেছে। রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ সম্মান ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার গ্রহণ করেছেন।
বিশ্বে মৎস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ চতুর্থ স্থান করে নিয়েছে। সবজি উৎপাদনে সুনাম করেছে। অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড আরও শক্ত হয়েছে দেশের। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে যুদ্ধাপরাধীদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ায় জাতির কলঙ্ক মোচন হয়েছে। যদিও সহিংসতায় অসংখ্য নিরীহ মানুষের মৃত্যু, আহতদের আর্তচিৎকার, ব্লগার হত্যা, জঙ্গিদের উত্থান, বিদেশি নাগরিক হত্যার মতো ঘটনায় বারবার হোঁচট খেতে হয়েছে সবাইকে। তবে বছর শেষে ২৩৪ পৌরসভায় সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ভোট উৎসব হয়ে ওঠে ২০১৫ সালের আলোচিত ঘটনা।
এ বছর ওয়াশিংটনভিত্তিক প্রভাবশালী ম্যাগাজিন ফরেন পলিসির একশ’ বিশিষ্ট দৃঢ়চিন্তার ব্যক্তিত্বের তালিকায় স্থান করে নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘ সম্মেলনে পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন্স অব দি আর্থ’ ও বাংলাদেশে আইসিটির প্রসারে জাতিসংঘের ‘টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী। মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্থান আলোচিত হয়। বাংলাদেশ সফর করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

মধ্যম আয়ের দেশ
বিশ্বজুড়েই উন্নয়নের রোল মডেল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ। আর্থসামাজিক উন্নয়নের বাংলাদেশের সাফল্য পেয়েছে বিশ্ব স্বীকৃতি। বাংলাদেশ হয়ে উঠেছে মধ্যম আয়ের দেশ।
১ জুলাই ২০১৫ বাংলাদেশকে নিম্নআয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় উন্নীত করে আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থা বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশ এখন পরিচিত হবে নিম্নমধ্যম
আয়ের দেশ হিসেবে। স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘ ৪৪ বছর ধরে বাংলাদেশ ছিল নিম্নআয়ের দেশের তালিকায়। প্রতিবছরের ১ জুলাই বিশ্বব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে এ শ্রেণিকরণের
তালিকা প্রকাশ করে। বিশ্বব্যাংক ‘এটলাস মেথড’ নামের বিশেষ এক পদ্ধতিতে মাথাপিছু জাতীয় আয় পরিমাপ করে থাকে। এক্ষেত্রে একটি দেশের স্থানীয় মুদ্রার মোট জাতীয়
আয়কে (GNI) মার্কিন ডলারে রূপান্তর করা হয় ক্ষেত্রে তিন বছরের গড় বিনিময় হারকে সমন্বয় করা হয়, যাতে করে আন্তর্জাতিক মূল্যস্ফীতি ও বিনিময় হারের ওঠানামা
সমন্বিত হয়।

স্বপ্নের পদ্মা সেতু
নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু হয়েছে এ বছর। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিমি। দ্বিতীয় তলায় (আপার ডেকে) ৭২ ফুটের চার লেনের সড়ক

বিজ্ঞানযাত্রা
সোলার সাইকেল : বাংলাদেশে প্রথম তৈরি সোলার সাইকেল দিনাজপুর পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটের তিন ছাত্র বিজয় মল্লিক, সাব্বির হোসেন ও শান্ত কুমার রায় তৈরি করেন পরিবেশবান্ধব এই সাইকেল। সূর্যের অলোতে চার্জ নেওয়া এ সাইকেল ১ ঘণ্টায় চলবে ২০/২৫ কিলোমিটার। য়োচার চুল্লির আবিষ্কার : পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) সহকারী অধ্যাপক মো. শামীম মিয়া উদ্ভাবন করেন বায়োচার চুল্লি। বায়োচার এক ধরনের চার বা কয়লা, যা মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে, রাসায়নিক সারের কার্যকারিতা বাড়ায়, মাটিতে এবং মাটির অম্লত্ব দূর করে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ
সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে গত সাড়ে ছয় বছরে দেশে তথ্যপ্রযুক্তি উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী বিপ্লব ঘটেছে। দেশে ইন্টারনেট ব্যবহার বেড়েছে গাণিতিক হারে। প্রযুক্তি বিজ্ঞানীদের মতে, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা ৫ কোটি ৪৯ লাখ ৫৯ হাজার জন। দেশের ৯৯ ভাগ এলাকা মোবাইল নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। দেশে থ্রি-জি প্রযুক্তির মোবাইল নেটওয়ার্ক চালু করা হয়েছে। আমাদের অর্থনীতির এই মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে গেছে ইন্টারনেট।

গুগল স্ট্রিটে বাংলাদেশ
গুগল ম্যাপ ও গুগল আর্থের একটি বাড়তি সেবা হলো গুগল স্ট্রিট ভিউ, যা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের রাস্তাসহ নানা ঐতিহাসিক স্থাপনার ছবি প্রদর্শন করে। খানে যোগ হয়েছে বাংলাদেশ। গুগল স্ট্রিট ভিউয়ে বাংলাদেশের সংযুক্তি প্রশংসনীয়। এ স্ট্রিট ভিউ ব্যবহারকারীকে তার নিকটবর্তী এলাকার প্যানোরামিক একটি চিত্র তুলে ধরার মাধ্যমে সহজেই কোনো জায়গার দিকনির্দেশনা পেতে সাহায্য করে। যবহারকারীর কাঙ্ক্ষিত জায়গাটি নিজের চোখে দেখার সুযোগ মেলে। ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদনে গুগল ঢাকা এবং চট্টগ্রামজুড়ে স্ট্রিট ভিউ গাড়িতে তাদের কার্যক্রম শুরু করে।

নারীর সাফল্যের বছর
সেনাবাহিনীতে নারী সৈনিক, বিমানবাহিনীতে নারী বৈমানিক, বর্ডারগার্ড বাংলাদেশের সীমান্ত প্রহরায় নারী,

সাত চূড়ায় ওয়াসফিয়া
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সাত মহাদেশের সাতটি সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করেছেন ওয়াসফিয়া নাজরীন। চার বছর আগে ‘বাংলাদেশ অন সেভেন সামিট’ নামে অভিযান শুরু
করেছিলেন তিনি।

অমোঘ মৃত্যুর নির্মম দুয়ারে যাদের হারালাম :
২০১৫ সালে আমরা হারিয়েছি বেশ কয়েকজন প্রিয় ব্যক্তিত্বকে। তাদের মধ্যে রয়েছেন_ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের অন্যতম রূপকার ভাস্কর নভেরা আহমেদ, কবি গোবিন্দ হালদার, সাবেক স্পিকার শেখ রাজ্জাক আলী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহমদ, প্রবীণ সাংবাদিক হাসানউজ্জামান খান, প্রখ্যাত সাংবাদিক সিরাজুর রহমান,
সঙ্গীতশিল্পী ফরিদা ইয়াসমিন, সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার স্ত্রী চিত্রশিল্পী আসমা কিবরিয়া, সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী, চলচ্চিত্র নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম প্রমুখ।

বাংলাদেশ নিয়ে মানুষের বিপুল প্রত্যাশা এই যে, নতুন বছরে অভিযাত্রা হবে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার অচলায়তন ভেঙে ‘হঠাত্ আলোর ঝলকানি লেগে ঝলমল করে উঠুক চিত্ত।’
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:২৭
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×