বাংলাদেশ দলের রান ১ উইকেটে ১৭১ থেকে ১০ উইকেটে ২২০, আর ইংল্যান্ড ৮ উইকেটে ১৪৪ থেকে ১০ উইকেটে ২৪৩। প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের টেল এন্ডার ভেঙ্গে পড়লো। নিশ্চিত জয় পরাজয়ে মোচড় দিল। সেই থেকে শুরু। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সহজ জয়কে কঠিন করে দিল ইংল্যান্ডের টেল এন্ডাররা। তৃতীয় ওয়ানডের কথা সবাই জানেন। চট্টগ্রামে ১ম টেস্টে বাংলাদেশের টেলতো দূরের কথা মিডল অর্ডার বলেও যে কিছু নেই, বুঝা গেল। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং-এ ষাট ভাগ সাপোর্ট দিয়েছে তাদের লোয়ার অর্ডার। পক্ষান্তরে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা প্লাসকে মাইনাসে রূপান্তর করেছে। দ্বিতীয় টেস্টতো এখনো লাইভ চলছে, সবাই দেখছেন। কিন্তু বিসিবি দেখছেনা, তাদরে দেখার টাইমও নেই, টাকা গুনতে হবে না? তাহলে ঘটনাটা আসলে কী?
হারা ম্যাচ জিতা, জিতা ম্যাচ হারা, ক্রিকেটে হয়েই থাকে, বাংলাদেশের বেলায়ও এর ব্যতিক্রম ছিল না। কিন্তু এ জিনিসটা চরম ও মরণ ব্যাধিতে রূপ নিল গত টি-২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপ থেকে। সেই যে ভারতের বিপক্ষে ৩ বলে ২ রানের পরাজয়ের ইতিহাস। বলা যায়, তা-ই আমাদের কাল হয়ে দাঁড়ালো। এত লুটপাটের মধ্যে দু-এক পয়সা কোনও মনস্তত্ববিদকে দিলে ভালো হতো। কেউ দিল না।
গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, এরপর হোমে পরপর ৭ টি ওয়ানডে সিরিজ জয় আমাদের ক্রিকেটারদের আত্মাবশ্বাসকে নিয়ে গিয়েছিল হিমালয় চূড়ায়। যদিও পুরো অজর্নটাই আমাদের ক্রিকেটারদের, কিন্তু বিসিবির তাতে হলো আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ অবস্থা। স্পন্সর বাড়তে থাকলো দ্বি-জ্যামিতিক হারে। নতুন নতুন নানা পোস্ট পজিশন, দ্বি-স্তর বিশিষ্ট নির্বাচক পর্ষদ, হ্যান ত্যান করে আপাদমস্তক লুটপাটে নিমজ্জিত হলো তারা। আর ক্রিকেট! ভাবলো, এটা যেহেতু একটা জায়গায় চলে আসছে তা চলতেই থাকবে। কিন্তু আমাদের সময়তো সর্বদা আসবে না, তাই আপাতত: ‘উলট পালট করে দে মা লুটে পুটে খাই’।
এদিকে দেখুন, হাওয়ায় ভাসতে থাকা টিম ভারতের কাছে পরাজয়ের পর চুপসে গেল। কথা দিয়েও এই পরাজয়ের জন্য দায়ী মুশফিক, মাহমুদুল্লাহকে বিন্দুমাত্র শাস্তির মুখোমুখি করা হলো না। কেন বলছি? হলে ভালো হতো। এরপর মুশফিক ঘরোয়া প্রিমিয়ার লীগে মোহামেডানের অধিনায়কের দায়িত্ব পেলেন, পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকে তার দল সুপার লীগে উঠে ৫ম স্থানে গিয়ে লীগ শেষ করলো। মানসিক ব্যাধিটা ধরতে পারছেন? ঔষধ হলে সারতো। আফগানদের সাথে ১ম মাচটা ভাগ্যগুনে জয়, ২য়টা হার, আর ৩য়টাতো জিততেই হলো। কিন্তু তিনটাতেই আমাদের মিডল অর্ডার এবং টেল-এন্ডারের বেহাল অবস্থা ফুটে উঠেছিল, নজর দেয়নি কেউ। হাতে নাতে ফল পাওয়া গেল ইংল্যান্ড সিরিজে। এরপর ১ম টেস্ট। নজর দেয়া দরকার ছিল, তা না হলে ২য়টা ভিন্ন কিছু হতে পারতো। হলো না। হবেও না। টেস্টে আমাদের ১০ নম্বর ব্যাট্সমানের সেঞ্চুরির রেকর্ড আছে, আর এখন ১০ জন মিলেও ৫০ করতে পারে না। যে মহান গুনে সাকিব মুশফিকরা ফিনিশার বা ম্যাচ উইনার খেতাব পেয়েছিলেন, তারা এখন ডেস্ট্রয়ার আর লুজারার হয়ে গেছে। এসবের জন্য মাথা আছে বটে, কিন্তু সেখানে ব্যাথার ছিটে-ফোঁটাও নেই।
খুব মনে পড়ছে ১৯৯৯ বিশ্বকাপ জয়ের পর অস্ট্রেলিয়ার কোচ বলেছিলেন, ‘বিশ্বকাপ জিতেছি, কিন্তু আমদের বেশ কিছু সাইটে দূর্বলতা পরিলক্ষিত হয়েছে, সেটাতে নজর দিতে হবে’। নজর তারা দিয়েছিলেন। আর এজন্যই ২০০৩, ২০০৭ ও ২০১১ বিশ্বকাপ তাদের ঘরে, মাঝখানে ২০১১ মিস।
ক্রিকেট অসেট্রলিয়াও হতে পারতো কলাগাছ, হয়নি। কিন্তু কী করব বলুন? কলাগাছ ছাড়া পাপনরা আর কী-ই বা হবে। তারপরও বলছি, এখনও সময় আছে। নাকি বিসিবি এখন ভাগ-বাটোয়ারার তহশিলদার আর ক্রিকেট মরিচিকিা মাত্র?
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:১৫

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




