somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেধাবীদের পীঠস্থান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়

২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রতিবছর এক ঝাঁক তরুণ শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়৷অনেক পরিশ্রম আর নিরবচ্ছিন্ন অধ্যবসায় এবং সেই সাথে অভিভাবকদের সচেতনতার ফলস্বরূপ এসব শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়৷কেউবা পাস করে জিপিএ ৫·০০ পেয়ে,কেউবা ৪·০০ পেয়ে,আবার কেউবা এর চেয়ে ও কম পয়েন্ট নিয়ে৷সবাই আবার সমান স্বপ্ন নিয়ে উত্তীর্ণ হয়না৷কেউ হতে চায় ডাক্তার,কেউ ইঞ্জিনিয়ার,কেউ শিক্ষক,কেউ বিসিএস ক্যাডার৷

এরকম আরো বিভিন্ন স্বপ্ন থাকে প্রত্যেক শিক্ষার্থীরই৷
স্বপ্ন সকল শিক্ষার্থীর সমান হবে এমন নয়৷যারা লেখাপড়াকে জীবনের হাল হিসেবে ধরে নেয় কেবল তাঁরাই সোনালি জীবনের স্বপ্ন দেখে৷তাঁদের মধ্যেও স্বপ্নের তারতম্য আছে৷আবার সকলের স্বপ্ন পূরণ হয়না৷

কেবল মেধাবীদের মধ্যে মেধাবী যারা,যারা বইকে আপন সন্তান মনে করে পরম স্নেহে কাছে টেনে নিয়ে পড়াশোনা করে কেবল তাঁরাই ওই সোনালি স্বপ্নকে বাস্তবিক রূপ দিতে পারে৷

এখন প্রশ্ন হল,প্রতিবছর তো হাজার হাজার শিক্ষার্থী জিপিএ ৫·০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়৷এরা সবাই কী মেধাবী?

আসলে,জিপিএ ৫·০০ যারা পায় তারা প্রত্যেকে মেধাবী নয়৷অনেক শিক্ষার্থী আছে যারা সারা বছরেও একদিন বইয়ের একটি পৃষ্ঠাও উল্টিয়ে দেখেনি৷পরীক্ষার ২/৪ মাস আগে তাঁরা কোচিং সেন্টারের দ্বারস্থ হয়৷সেখানে গিয়ে গাদা গাদা নোটখাতা গলাধঃকরণ করে৷তারপর পরীক্ষালয়ে গিয়ে উত্তরপত্রে তা উদগীরণ করে৷যাকে জ্বর হলে ঔষধ খাওয়ার সাথে তুলনা করা যায়৷আবার কোন কোন শিক্ষার্থী আছে যারা পাঠ্যবইয়ের সব খুঁটিনাটি বিষয় আয়ত্ত করে৷নিরবচ্ছিন্ন অধ্যবসায়ের ফলস্বরূপ পায় জিপিএ ৫·০০ বা জিপিএ ৪·০০৷

প্রকৃত মেধাবী বলেন অথবা মেধাবীদের মধ্যে মেধাবী বলেন,এদের পরিচয়টাই কিন্তু আলাদা৷বলা হয়ে থাকে,পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা চান্স পায় তাঁরা প্রত্যেকেই মেধাবী৷কথাটি সর্বাংশে সত্য না হলেও সর্বাংশে সত্যের সহোদর৷প্রকৃতপক্ষে, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য যেসব প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হয় সেগুলো প্রথম শ্রেণি থাকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের অন্তর্ভুক্ত খুঁটিনাটি বিষয় এবং কিছু জেনারেল নলেজ থেকে৷

ফলে,যেসব শিক্ষার্থী পাঠ্যবইয়ের প্রতিটি অক্ষরের হাড়ে হাড়ে ঢুকে গবেষণা করে অধ্যয়ন করেছে তারাই উত্তীর্ণ হয় ভর্তি পরীক্ষায়৷অনেক জিপিএ ৫·০০ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী আছে যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায় না৷আবার অনেক শিক্ষার্থী এর চেয়ে কম পয়েন্ট পেয়ে চান্স পেয়ে যায়৷এ থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে,শুধু মুখস্থ আর ঠোটস্থ করলেই মেধাবী হওয়া যায়না৷মেধাবী হতে হলে প্রয়োজন নিরবচ্ছিন্ন অধ্যবসায়৷

আবার,আমাদের সমাজে দুই শ্রেণির অজ্ঞ-বিজ্ঞ লোক আছেন৷এক শ্রেণির লোক আছেন যারা মনে করেন কেবল ধনীর সন্তানেরাই মেধাবী হয় বা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়৷কারণ তারা বিভিন্ন অভিজাত কোচিং সেন্টারে গিয়ে লেখাপড়া করে৷আবার আরেক শ্রেণির অজ্ঞ-বিজ্ঞ লোক আছেন যারা এই ধারণাটির ঠিক উল্টো হিসাব-নিকাশ কষেন৷তারা ধারণা করেন যে,পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গরীবের সন্তানেরাই চান্স পায়৷কারণ তারা ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারেনা৷আবার বিদেশ ও যেতে পারেনা৷এসব শিক্ষার্থীদের মাথা গোঁজানোর ঠাঁই কোথাও নেই৷তাই এরা বই নামক পুঁথি পাঠেই ব্যস্ত থাকে৷

আমার মতে,দুই শ্রেণীর লোকের ধারণাই সর্বাংশে ভুল৷প্রথম শ্রেণির লোকের উদ্দেশ্য আগেই বলেছি,গাদা গাদা বই মুখস্থ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া যায় না কিংবা মেধাবী হওয়া যায় না৷এখন দ্বিতীয় শ্রেণির লোকদের উদ্দেশ্যে বলছি,মেধাবী তারা হয়না অথবা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁরা চান্স পায়না; যাদের মাথা গোঁজানোর ঠাঁই কোথাও হয়না৷পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তারাই ভর্তির সুযোগ পায়; যারা সবসময় অধ্যবসায়ের সাথে নিয়োজিত থাকে,লেখাপড়াকে নিয়ে গবেষণা করে,গাদা গাদা বই মুখস্থ না করে গাদা গাদা বই নিয়ে গবেষণা করে৷

পরিশেষে,সকল শ্রেণির লোকদের উদ্দেশ্যেই বলছি:আসুন এসব বাজে কথা ডাস্টবিনে রেখে দেই৷সেই সাথে সমস্বরে সুর তুলি,ধনী-গরীব নয়; মেধাবীদের পীঠস্থানই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়৷এতে মেধাবীরা লেখাপড়া করতে উৎসাহ পাবে৷দেশ ও জাতি হবে উন্নত ও সমৃদ্ধ৷সোনার বাংলার সোনার সন্তানেরাই পারবে তৃতীয় বিশ্বে মাথা উঁচু করে সগৌরবে দাঁড়াতে৷


লেখক:নাসিম আহমদ লস্কর
শিক্ষার্থী;ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ (১ম বর্ষ)
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়৷
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×