ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিটে আবারও ভর্তি পরীক্ষা না নেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল। তিনি বলেছেন, ‘প্রশ্নপত্র বা উত্তরপত্র বিনষ্ট হয়ে থাকলে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়া হয়ে থাকে। আমি একজন শিক্ষক হিসেবে বলছি, ভর্তির প্রক্রিয়াটা বললে সুবিধা হবে। ওএমআর শিটটি স্ক্যান করে তা ফাইল হিসেবে সেভ করা হয়।’
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার নম্বরপত্র থাকে। এ দুটো বিষয় মিলিয়ে একটি গ্রেড তৈরি করা হয়। সবাই ভর্তি হতে পারে না। কেবল যারা তালিকার ওপরের দিকে থাকে, তারাই ভর্তির সুযোগ পায়।
জাফর ইকবাল বলেন, পরীক্ষা-সম্পর্কিত পুরো তথ্য রয়েছে, যেভাবে খুশি সেভাবে নতুন করে মূল্যায়ন করা যায়। তিনি বলেন, ‘শুনেছি, ওই কাজ করার জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা বিশেষজ্ঞ নন। মূল্যায়নের ফাইলগুলো আছে। সেগুলো পুনরায় মূল্যায়ন করা যেতে পারে। কিছু পরিবর্তন হবে। কেউ বাদ পড়বে আবার নতুন করে কেউ আসবে। এ ছাড়া বিভাগগুলোতে ১০টি করে আসন বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।’
কিছু কিছু ছাত্র এবার দ্বিতীয় ও শেষবারের মতো পরীক্ষা দিয়েছে। তাদের আরেকবার বিশেষভাবে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দেওয়ার সুপারিশ করেন জাফর ইকবাল।
এ ছাড়া নতুন করে উত্তর তৈরি করে আবার পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা যেতে পারে। একই সঙ্গে জাফর ইকবাল সব বিশ্ববিদ্যালয়ের একযোগে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সুপারিশ করেন।
আদালত আগামী বুধবার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন। এ সময়ের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেল, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী এবং জাফর ইকবালকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাতে বলা হয়েছে।
পুনর্মূল্যায়িত ফলাফল বাতিলের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের ওপর আজ সোমবার এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ শুনানি গ্রহণ করেন।
আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আদালতের নির্দেশনা অনুসারে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মুহম্মদ জাফর ইকবাল অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে এসে পৌঁছেন।
‘গ’ ইউনিটের (ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ) ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা সমাধানে হাইকোর্ট গত বৃহস্পতিবার বিশেষজ্ঞ মতামত দিতে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবালকে হাজির হতে বলেছিলেন। আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ১০টা ৫০ মিনিটে এজলাস কক্ষে প্রবেশ করেন জাফর ইকবাল।
বিচারপতিরা এজলাসে আসন গ্রহণের পর বলেন, ‘দুইটায় শুনানির গ্রহণের ক্ষণ নির্ধারণ করা হলো।’
রিট আবেদনকারীদের পক্ষে এ সময় আদালতে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আলতাফ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
‘গ’ ইউনিটের পুনর্মূল্যায়িত ফলাফল বাতিলের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২২ নভেম্বর ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১২ শিক্ষার্থী হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। আবেদনের ওপর দুই দিন শুনানি নিয়ে গত বুধবার আদালত আজ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
গত ৩১ অক্টোবর ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়। উত্তরপত্রে ভুল থাকার পরিপ্রেক্ষিতে আরেক দফা ফল প্রকাশ ও বাতিল এবং সবশেষে ৯ ডিসেম্বর ফের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
Prothom alo