বইমেলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ব্লগে আর আসব না বলে আগে একটি পোষ্ট দিলেও আমি না এসে থাকতে পারছি না সে জন্য প্রথমে আল্লাহ এবং পরে আপনাদের সবার কাছে ক্ষমা চাইছি। আমার আসলে এ ধরণের কথা বলা উচিত হয়নি যা আমি রাখতে পারব না। তবে ভবিষ্যতে চেষ্টা থাকবে এমন কোন ভুল পুনরায় না করার।
যাহোক যে জন্য এ পোষ্টটি লিখলাম। গত ২ দিন আগে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে একটি গাড়ীর মধ্যে দুইজন ভিক্ষুকের কথোপকথন আমাকে ব্যাপক বিনোদন দিয়েছিল আর তাই আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করে দিলাম! দেখুন আপনারা এখানে কোন বিনোদন খুঁজে পান কি না।
পুনশ্চ: সেই ভিক্ষুক দুজনের একজন রাজশাহী নিয়ে বেশ বাজে একটা মন্তব্য করেছিল, আমি প্রতিবাদ করতে গিয়েও পারিনি যে তাদের সঙ্গে শুধু শুধু লাগতে যাওয়া বা তাদেরকে জ্ঞান দিতে গিয়ে নিজে কোন একটা ক্যাচালে না জড়িয়ে যাই এই ভয়ে। শুধু মুখ বুজে তা সহ্য করে গিয়েছি, কারণ আমিও যে রাজশাহী বিভাগের মানুষ।
নিচে তাদের কথোপকথন হুবহু তুলে দিলাম, যদিও ভাষাগত কোন পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু মুল বিষয়বস্তু এমনি ছিল।
- হালায় এইহানে যাইয়া তো একদম শান্তি পাইলাম না! ময়লা, ডেরেনের পানি আর ...... গন্ধের জ্বালায় ঠিকমতো খাইতেও পারলাম না।
- হ, ঠিকই কইছস, টেকাও বেশি কামাইতে পারলাম না!
- কি আর করমু ক, এইদিকে গেলে ময়লা ....... ঐদিকে আবার ঘুমানির যাগা নাই! তাইলে কোনহানে যাই ক' দেহি।
- আরে তুই তো ঠিকই কইছস, হালায় বিরানিডাও টিক কইরা খায়তে পারলাম না। আসলেই ঐদিকে যায়্যা লাভ অইল না।
- আরে হুন, এই রহম দুয়েকদিনের লাইগ্যা কোনহানে যাইয়া লাব অইব না, যাইতে অইব ১০-১৫ দিনের লাইগ্যা। তাইলে একবারে মেলা টেকা কামান যাইব।
- ১০-১৫ দিনের লাইগ্যা গেলে তো বালাই অয়, তয় কোনদিকে যামু? কোনহানে গ্যেলে দুইডা টেহা বেশি হামু?
- যাইতে অইব দুরে, যাইয়া ১০-১২ দিন থাইক্যা এরপরে আইতে অইব।
- হ, তাইলে ল রাজশাহী যাই।
- আরে কি কছ, রাহশাহী যাইয়া করবি কি? ঐইডা তো ভাতে মরা এলাকা, ঐহান থাইক্যা মানুষ ঢাহা শহরে আইয়্যে টেহার লাইগ্যা, আর তুই ঐহানে যাইবার চাছ?
- আরে ঠিকই তো কইছস!
দুজনের হা হা করে হাসতে থাকে।
-আরে রাজশাহীর মাইনষে বিরিয়ানি কায় আম দিয়া।
- এহ্ বিরিয়ানি, না পোলাউ, হালারা ভাত পায় কোনহানে আবার বিরিয়ানি কাইব।
- আরে আমি এর আগে গেছিলাম তো, তহন দ্যাখচি।
- আরে তুই হামাক রাজশাহী চিনাচ্চু, মুই কি রাজশাহী চিনি না মনে করিচ্চিচ, দ্যাক আমি অহন রাজশাই'র ভাষা কইচ্চি।
- হাঃ হাঃ হা, আরে আমি এর আগে তো গেছি ওইখানে, আব্দুল.........র, না....র, ............ এসব যাগায় আছিলাম, তখন দেখচি অরাও টাকা অলা লোক। বিরিয়ানি কায় আম দিয়া, হাঃ হাঃ হা।
- আরে হালা, তুই কি পাগল অইলি নাহি ওই দিকে না যাইতে অইব ঢাহার আশেপাশে, যেহানে ম্যালা ট্যাহা পামু আর বিরিয়ানি কাইতে পারমু। ঐদিকে গ্যালে ট্যাহাও পামু না আর তুই প্রত্যেকদিন বিরিয়ানি খাবি কই?
- অ, তুই ঠিকই কইছস, অইদিকে গ্যালে বিরিয়ানি কামু কই? হাঃ হাঃ হাঃ
এ পর্যন্ত শোনার পর আমার আর তাদের কাছাকাছি বসে থাকার ধৈর্য্য কুলালো না বলে সামনের দিকে একটা খালি আসন পেয়ে সেখানে এসে বসি আর মনে মনে রাগে ফুঁসতে থাকি, আরে হালার জমিদারেরা করছ তো ভিক্ষা, আবার রাজশাহীরে কছ ভাতে মরার দ্যাশ, হালারা যে বিরিয়ানি বিরিয়ানি কইরা দম বাইর কইরা হালাইতে আছস, হেই বিরিয়ানির চাইল আহে কোনহান থাইক্যা এইটার খোঁজ রাহস?
কিছুক্ষণ পরে তাদের পুরো কথপোকথন আবার ভাবতে ভাবতে মনে মনে প্রচুর পরিমাণে হেসে নেই। করে ভিক্ষা, খায় বিরিয়ানি থাকে ......... এর মধ্যে হেরা আবার কয় রাজশাহী ভাতে মরা দ্যাশ।
.......... এর স্থলে পড়তে হবে যা আমরা প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নির্দিষ্ট একটি স্থানে রেখে এসে পরিতৃপ্ত হই।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ দুপুর ১:০৭