বৃষ্টি দাও
এক বিন্দু জল দাও।
হে বিধাতা !
বৃষ্টি দাও, এক বিন্দু জল দাও।
তোমার কোমল পৃথিবী আজ এক ঊষড় মরুভূমি,
চারিদিকে আজ শুধু হাহাকার শুনি।
আকাশটা বড়ই বিবর্ণ লাগে আজ
ধূলোমাখা চারপাশ, ফসলের মাঠ ফেটে চৌচির।
জলের মাছও আজ কাতর এক ফোটা বৃষ্টির জন্য।
ভরা বসন্তেও আজ ডাকে না কোকিল,
মৌমাছিদের দলে লেগেছে দ্বন্দ্ব, এক ফোটা মধুর জন্য।
তোমার কাছে আজ আকুতি
বৃষ্টি দাও, এক বিন্দু জল দাও।
শিল্পীর কন্ঠ আজ স্তব্ধ, কবিরা সব নিরব।
প্রেমিকার হাসিও আর মন কাড়ে না প্রেমিকের।
মায়ের আদরটাও যেন পানসে লাগে ছেলের কাছে,
ছোটভাই টি আর দুষ্টুমি করে না বড় বোনের সাথে।
মনের সব রঙ হারিয়ে শিল্পীর ক্যনভাস আজ নিথর পড়ে থাকে,
গাছের পাতাগুলো আর ঝিরিঝিরি শব্দে হাসে না,
ফুল বাগানের মালী আজ বেকার।
কারো মুখে আজ হাসি নেই,
শুধু আছে নিদারুণ ক্লান্তির ছাপ।
আমার এ আকুতি তুমি আজ শোন,
বৃষ্টি দাও, এক বিন্দু জল দাও।
হে বিধাতা !
আমিতো তোমার এবাদাত করতে পারিনা,
পারিনা পাঁচ ওয়াক্ত তোমার সামনে হাজির হতে।
আমি পারিনা তোমার সৃষ্টির সেবা করতে,
আমি পারিনা তোমার ধ্যানে মগ্ন হতে।
তাইতো তুমি আজ আমার উপর রুষ্ট,
আমার আকুতি তুচ্ছ কর তুমি,
আমায় শাস্তি দাও, আমায় নিঃশেষ করে দাও আজ !
কিন্তু যে কৃষক তোমার কঠিন পৃথিবীর বুক চিড়ে
তুলে আনে নবীন শস্য,
যে ছোট্ট ছেলেটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে ফুল বিক্রি করে,
যে মাঝি গায়ের ঘাম শুকিয়ে অক্লান্ত দাড় টেনে যায়,
যে শ্রমিক দিনভর পরিশ্রম করে একমুঠো ভাতের জন্য,
সে তো তোমার এবাদত করে, তোমায় স্মরন করে।
তবুও কেন তুমি আজ এত কঠর, এত নিষ্ঠুর।
কৃষকের হাহাকারে, শ্রমিকের কান্নায় তোমার আরশ কি কেঁপে ওঠে না?
তুমি আর নিরব থেক না।
আমার সব অপরাধ মেনে আজ তোমার সামনে দাড়িয়েছি,
তোমার রায় মেনে নিতে আজ প্রস্তুত আমি।
আমায় শাস্তি দাও, আমায় নিঃশেষ করে দাও আজ !
তবু আমার এ উপরোধ আজ তুমি ফিরিয়ে দিও না,
বৃষ্টি দাও, এক বিন্দু জল দাও।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




