সম্প্রতি ডঃ মুহম্মদ জাফর ইকবালের একটি ভিডিও ক্লিপ নিয়ে বেশ ব্লগীও তোলপাড় হচ্ছে। যদিও সমালোচনাকারীদের দাবী ক্যাম্পাসেও নাকি এই ঘটনা ঝড় তুলেছে, কিন্তু সাস্টে পড়া বন্ধুদের কাছে এমন কিছুই শুনলাম নাহ্‌! ভিডিও তে দেখা যাচ্ছে জাফর ইকবাল ছাত্রীদের সাথে হিন্দি গানের তালে তালে নাচছেন (যদি হাত তালি দিয়ে একটু দুলাদুলি করাকে নাচ বলে! তাহাদের মতে অবশ্য এইটা ওয়েস্টার্ন নাচ )। বিশেষ গোষ্ঠির সমালোচনার কারণ তিনি নাচতে নাচতে (!) একটি মেয়ের কাঁধে হাত রেখেছেন এবং গানটি ছিল হিন্দি গান। যারা এখনো দেখেননি তারা নিচে ভিডিওটি দেখতে পারেনঃ http://www.youtube.com/watch?v=dBcACLP11nw

তো যারা এতো ফালাফালি করছেন তারা কি জানেন মেয়েটি কে ছিল? মেয়েটি আর কেউ নয়, জাফর স্যারের কন্যা ইয়েশিম। প্রোগ্রামটি ছিল ছাত্রী হোস্টেলে, যে হোস্টেলের প্রভোষ্টঃ ড: ইয়াসমিন হক, জাফর স্যারের অর্ধাঙ্গীনি। জাফর স্যার এসেছিলেন আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে। এই ভিডিও যারা প্রথম প্রচার শুরু করেছিল তারা জেনে শুনে এই তথ্য গোপন করেছে। পরে অনেকেই বুঝে হোক আর না বুঝে হোক ব্যাপারটি নিয়ে খামাখা হইচই করেছে। এখন নিজের মেয়ের কাঁধে হাত রাখাটাও তাদের অনেকের কাছে অশ্লীল লাগবে কিনা কে জানে!

আর ছাত্রীরা যদি স্যারকে টেনে আনতে পারে নাচার জন্যে (সেক্ষেত্রেও তো শরীর স্পর্শ হয়!), তাহলে নাচতে নাচতে ছাত্রীকে নিয়ে নাচলে সমস্যা কোথায়?? যদিও বলাই বাহুল্য, ওটা তার ছাত্রী ছিল না, ছিল নিজের মেয়ে।

আর হিন্দি গান! স্যার কি বলেছিলেন যে তোমরা হিন্দি গান বাজাও, আমি নাচবো?! তরুণদের এই হিন্দি প্রীতি একজন শিক্ষক হিসেবে খুব কাছ থেকে লক্ষ্য করেন জন্যই তো বার বার এ বিষয়টা নিয়ে লেখেন উনি। আপনাদের মনে আছে কিনা জানি না, একুশে টিভি (বন্ধ হয়ে যাবার আগে) তে একবার ঈদে হিন্দি প্রোগ্রাম দেখানোর ঘোষণা দেওয়ার পর তিনি আর কোনদিন একুশে দেখবেন না এমন কথাও বলেছিলেন (তিনি এমনিতেও টিভি খুব কম দেখেন, কিন্তু একুশের সংবাদ তখন আমাদের সকলের মতোই তারও পছন্দের ছিল)।

ওনার সকল কাজের ব্যাপারে আমাদের সবার সহমত নাও থাকতে পারে, তাই বলে তথ্য গোপন করে (জেনে বা না জেনে) এধরনের অপপ্রচার কাম্য নয়। আর এই তথ্য বিকৃতির শুরুটা যারা করেছে তাদের তো কিছু বলে লাভ নেই, কারণ জাফর স্যারের ব্যাপারে তাদের গাত্রদাহের কারণ আমরা সবাই জানি... আফটার অল, "দেশে কখনো যুদ্ধাপরাধী ছিল না"!

[আরো জানতে পড়ুনঃ http://www.sachalayatan.com/alamgir/29572]