somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চট্টগ্রাম বহিঃনোঙর...ছবি ব্লগ!

৩১ শে মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


'লায়লা' অন্ধ্র উপকুল অতিক্রম করেছে... তবে রেশ রয়ে গেছে তখনও। ৩ নম্বর সিগনাল মাথায় নিয়েই বন্ধুরা মিলে বেড়াতে গেছিলাম চট্টগ্রাম বহিঃনোঙর। আমাদের এক বড় ভাই, মেরিন ইঞ্জিনিয়ার, আছেন লাইবেরিয়ার একটি জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। জাহাজটি বর্তমানে চট্টগ্রাম বহিঃনোঙরে অবস্থান করছে। জাহাজে থাকা-খাওয়া.... আর আড্ডার প্রর্যাপ্ত রসদ মজুদ, সুতরাং এই সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবেনা... রওনা হয়ে গেলাম চিটাগাং-এর উদ্দেশ্যে....


কর্ণফুলীর মোহনায় ১৫ নম্বর ঘাট থেকে এই স্পীডবোট আর লাইফবোট-গুলি করেই যেতে হবে বহিঃনোঙরে। আমাদের গন্তব্য সমূদ্র তীর হতে ৬ নটিকেল মাইল বা প্রায় ১১ কিলোমিটার সমূদ্র অভ্যন্তরে।


বহিঃনোঙর অভিমুখে আমাদের যাত্রা হলো শুরু।


কর্ণফুলীর মোহনায় নোঙর করা লাইটারেজের সারি।


ঐ যে... দূরে আমাদের গন্তব্য.... সুলু উইন্ড,অয়েল ট্যাঙ্কার! সুলু উইন্ড মানে.... মৃদূ বায়ু প্রবাহ!


ঢেউ-এর দোলায় দোল খেতে খেতে আমরা জাহাজের আরও কাছাকাছি




এইতো আমরা পৌঁছে গেছি....






অবশেষে পৌঁছেই গেলাম আমরা সুলু উইন্ড-এ।

কিন্তু এরপরই আমরা সম্মুখীন হলাম আসল পরীক্ষার। জাহাজে উঠতে হলে লতা সিঁড়ি (রোপ ল্যাডার) বেয়ে উঠতে হবে প্রায় ৪০ ফুট। নীচে ঢেউ-এর দোলায় লাইফবোট দুলছে প্রচন্ডভাবে। জাহাজের গায়ে ঢেউ-এর ধাক্কায় লাইফবোট একবার লাফ দিয়ে উঠছে ৬ ফুট উপরে... আবার নেমে যাচ্ছে ৬ ফুট! লাইফবোট থেকে লতা সিঁড়ি-তে নিজেকে স্থানান্তর করাটাই বিশাল রিস্ক। আর নীচে পরে গেলে ভাটার টানে নির্ঘাত সমূদ্রের আরও গভীরে।


আল্লাহর নাম নিয়ে একে একে ঝুলে পড়লাম লতা সিঁড়িতে... রক্ষার মালিক আল্লাহ!


অবশেষে আমরা জাহাজের উপরে।


সুলু উইন্ডের মাষ্টার ব্রীজ থেকে মেইন ডেকের একাংশ।


জাহাজের ফরোয়ার্ড ডেক।


স্পেয়ার এ্যঙ্কর।


মেঘলা আকাশে সানসেট-এর ছবি তোলার চেষ্টা।


সানসেট-এর লালীমা।


ফরোয়ার্ড ডেকে সান্ধ্যকালীন খোশগপ্প।


কেবিনে জমপেশ আড্ডা।

পরদিন ফেরার পালা। রাতেই দেখলাম আকাশে কোন তারা নেই... আর বাতাসের বেগ আরও জোড়ালো হয়েছে। এই আবহাওয়ায় আমাদের থাকা ঠিক হবেনা ভেবে পরদিন ফিরে আসবো সিদ্ধান্ত নিলাম। ভোরে সাগর কিছুটা শান্ত থাকে বলে ঠিক হলো ভোর আটটায় রওনা হবো। কিন্তু বিধি বাম.... ভোর থেকেই মুষলধারে বৃষ্টি..আর জাহাজের রোলিং! আমরা ধরেই নিলাম....এখানেই আটকা পড়ে গেছি আমরা! কিন্তু দুপুরের দিকে আবহাওয়া একটু ভাল হলো। জাহাজের ক্যাপ্টেন পরামর্শ দিলেন আবহাওয়া আবারও খারাপ হবার আগেই ডাঙায় ফেরা ভাল। উত্তাল সাগর পাড়ি দিয়েই ডাঙায় ফিরবো ঠিক করলাম।




জাহাজ থেকে নামার সময় আবারও সেই বিভিষিকাময় লতা সিঁড়ি। নীচে উত্তাল ঢেউয়ে বাদামের খোসার মত দুলছে লাইফবোট। এবার বাড়তি সাবধানতা হিসেবে কোমরে সেফটি বেল্ট।


পিছে ফেলে আসছি সুলু উইন্ড!


বাই.... সুলু উইন্ড!


ফেরার দিন সাগর এত উত্তাল ছিল যে.... লাইফবোটে অতিরিক্ত দুলুনীতে অবধারিত সী-সিকনেস!


অতঃপর...... ডাঙায় ফিরে স্বস্তি!

ভিডিও লিংকস....

১. জাহাজের সাথে লাইফবোট বাঁধার চেষ্টা
২. রিস্কি লতা সিঁড়ি ক্লাইম্বিই।

অফ টপিকঃ গত বর্ষায় টাঙ্গুয়ার হাওর বেড়াতে গিয়ে দেখে এসেছি ভরা বর্ষায় ভাটির দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য! এবার বর্ষায় এমন এক জায়গায় বেড়াতে যাবার ইচ্ছে আছে..... যেখানে থাকবে থোকা থোকা কদম ফুল, ঝিলের পানিতে যতদূর চোখ যায় শুধু শাপলা আর শাপলা... আর রাতে বৃষ্টির গান উপভোগ করার জন্য টিনের চালের একটুখানি মাথা গোঁজার ঠাঁই। এমন কোন জায়গার সন্ধান থাকলে একটু জানাবেন প্লিজ... কৃতার্থ হবো।








সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জুন, ২০১১ সন্ধ্যা ৬:১৬
২০টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×