somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নীল মনি
ভীষণ কঠিন পোড়ামাটিকে আবার সেই কাদামাটিতে ফিরিয়ে আনা,ভীষণ কঠিন আঘাত দেয়া শব্দমালা গুলো ফিরিয়ে নেয়া।ভীষণ কঠিন নিজের সম্পর্কে কিছু বলা।যে চোখ দেখিনি সে চোখ কেমন করে বিশ্বাস করবে জানি না।যে কখনো রাখিনি হৃদয়ের উপর হৃদয়;সে কেমন করে বুঝবে আমায়!

খোলা চিঠি -১

১১ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ১:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Ayesha Sheela

প্রিয় মেজপু,
একটা খোলা চিঠি লিখলাম। চিঠিটা যাদের পড়তে মন চায় তারা পড়ে নিক আর যারা বিরক্ত হতে চায় তাদের একটু বিরক্ত করি কী বলিস?

অনেক কিছু লিখেছিলাম তোকে নিয়ে।সব মুছে গেল। মুছে যাওয়ার সাথে সাথেই তোকে একটা কমেন্ট করে হাসি দিলাম।তুই কি জানিস কেন হাসি দিলাম? এইজন্য যে মনে হল যা যা লিখেছি তা আসলে ভালো হয়নি তাই ও একা একা মুছে গেল।

আজকাল কী দুর্দান্ত ছবি তুলিস। খুব ভালো লাগে। তোর প্রতিটা ছবি ভীষণ প্রাণবন্ত। আমার বইটা নিয়ে তুই যা করলি।কত কত ছবি তুললি! অরণ্যের গুঞ্জন সাজাচ্ছিস না, মনে হচ্ছে সেই ছোট্ট বেলার মত তুই নীলাকে সাজিয়ে দিচ্ছিস বার বার। তোরা সবাই কেন আমাকে এত বেশি ভালোবাসিস বলতো? কারোর জন্য আমি কিছুই করতে পারি না।ভাই বোন হল আল্লাহর রহমত। আল্লাহ তা আলা রহমত আর আশীর্বাদ স্বরূপ তোদেরকে উপহার দিয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ। আজ দুপুরে বড়পাকে কী বলেছি জানিস? বললাম আপা আপনার হাতের মুরগী রান্না খেতে ইচ্ছে করছে। আপা বলে কি জানিস? আমার নীলাকে আমি এখন কই পাবো! এই দ্যাখ চোখ ভিজে গেছে।

জানিস, বড় আপা আমার স্ট্যাটাস দেখে তাও আবার ত্বসিন বাবার একাউন্ট থেকে। আমার এ কথা শুনে খুব ভালো লাগল।আমি ঢাকা চলে আসাতে আমাদের আর এক সাথে হওয়া হয়ে ওঠে না।বড়পা ভীষণ মিস করে।

তোরে কতদিন হল কত কথা বলা হল না। আমরা কি সময়ের কাছে হারিয়ে যাচ্ছি? রিকশায় করে ফিরছি তখন মনে হল টাকার কাছে সময় বেঁচে দিয়েছি। ব্যস্ততা ঘিরে ধরেছে। জানিস বইমেলার একটা গল্প বলা হয়নি। একটা স্টলে একজন অনেক বড় মাপের লেখক আছেন। সেখানে অনেক মানুষের ভিড়। আমি জানতাম না উনি আছেন। পরে বুঝলাম। একটা বাচ্চা মেয়ে তার বইটা নেবে। যে কিনে দিচ্ছে সে বলছে দেখ উনি বইটা লিখেছে। মেজপু বিশ্বাস কর লেখক বাচ্চাটার মুখের দিকে একবারও তাকাল না।এমনকি ওই মেয়েটির দিকেও। সবাই বুঝি বড় হয়ে গেলে এমন হয়ে যায় ? আমার খুব কষ্ট লেগেছে জানিস। আমি ওখান থেকে চলে এসেছি।আর আসতে আসতে ভেবেছি মানুষ এমন কেন?
এই একটা প্রশ্ন আমার সারাজীবন ধরে ঘুরবে আমি জানি। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতে আমি হারিয়ে যাব এবং শেষত বুঝে যাব মানুষ এমনি! কিন্তু তারপরেও কিছু মানুষ আছে যারা মানুষ হিসেবে অসাধারণ। চলার পথে এদের সাথে পরিচয় না হলে জীবন অপূর্ণ থেকে যেত। তবে যাই বলিস না কেন পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই ভালো। হাতে গোনা কিছু মানুষ আছে যারা ভালো না কিন্তু ভালোর অভিনয় করে, আর কিছু আছে যারা ভালো দেখাতে গিয়েও নিজের রঙটা দেখিয়ে ফেলে। খারাপটাকে ভালো দিয়ে ঢাকতে পারে না। প্রকাশ হয়েই যায় তা অবশেষে।

শোন তোকে তো বলা হয়নি গত কয়েকদিন ধরে ভাবছিলাম একটা কথা -সেটা হল আমরা সবাই তুই, আমি,আপা,আব্বু,ফাহিম একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পৃথিবীতে এসেছি। ধর আমার ৩৫ বছর। এই নির্দিষ্ট সময়টা যেহেতু আমি জানি না তাই অনির্দিষ্টভাবে জীবনের ভোগ উপকরণে ব্যস্ত। এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমাকে সকল কাজ সম্পন্ন করতে হবে। তার মানে বুঝতে পারছিস প্রতিটা সেকেন্ড এবং মিনিট কতটা গুরুত্বপূর্ণ! আমি যদি কারো সাথে গল্প করে সময় কাটায় তাহলে ৩৫ বছরের সময় থেকে বিয়োগ হয়ে যাচ্ছে। বুঝতে পারছিস কী পরিমাণ মূল্যবান সময়! আমার ধারণা আমি তোরে বোঝাতে পারছি না।উপলব্ধি তীব্র হোক তখন বোঝাব।

আজ সকালে ঘুম ভাঙার পর থেকেই মনের আকাশে মেঘ। ব্যস্ততা যদিও ভুলিয়ে দিয়েছে তবুও একটা কথা ভেবে কষ্ট পাচ্ছি।যখন কেউ লুকাতে চায় তখন তাকে লুকাতে দেয়া উচিত।

ঘুম আসছে। অনেক বকবক করলাম। তুই ভালো থাকিস। চিঠি দেখে ভয় পাস না যেন। লিখে আর এডিট করিনি।ত্রুটিগুলো ক্ষমা করিস।নিজের যত্ন নিস। আর শোন তোর লিপিস্টিক আর কাজল ফেলে গেছিস।আমি আজকে কিন্তু একটু কাজল দিয়েছিলাম।
©রুবাইদা গুলশান
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০১৯ রাত ১:৩৭
৯টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস-পরীক্ষার হলে দেরিঃ পক্ষ বনাম বিপক্ষ

লিখেছেন BM Khalid Hasan, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



বর্তমানের হট টপিক হলো, “১ মিনিট দেরি করে বিসিএস পরীক্ষার হলে ঢুকতে না পেরে পরীক্ষার্থীর স্বপ্ন ভঙ্গ।” প্রচন্ড কান্নারত অবস্থায় তাদের ছবি ও ভিডিও দেখা যাচ্ছে। কারণ সারাজীবন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না।

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৮




আমাদের কার কি করা উচিৎ আর কি করা উচিৎ না সেটাই আমারা জানি না। আমাদের দেশে মানুষ জন্ম নেয়ার সাথেই একটি গাছ লাগানো উচিৎ । আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

মানবতার কাজে বিশ্বাসে বড় ধাক্কা মিল্টন সমাদ্দার

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৭


মানুষ মানুষের জন্যে, যুগে যুগে মানুষ মাজুর হয়েছে, মানুষই পাশে দাঁড়িয়েছে। অনেকে কাজের ব্যস্ততায় এবং নিজের সময়ের সীমাবদ্ধতায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে না। তখন তারা সাহায্যের হাত বাড়ান আর্থিক ভাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

×