আমার লেখালেখির মূল শুরু সামু থেকেই বলা চলে। এর আগে প্রচুর পড়তাম। হাতের লেখা ভালো না, হাতে লিখতে কস্ট হয়, এজন্য তেমন একটা লেখা হতো না কখনও।
সামু থেকে একবার কার দেওয়া একটা লিংকে ক্লিক করে যেন মাইক্রোওয়ার্কার্স নামের একটা সাইটে জয়েন করেছিলাম। ওখানে দেখলাম ইংরেজীতে লেখালেখির প্রচুর কাজ পাওয়া যায়, শুধু নিজের একটা ব্লগ থাকতে হয়। সৌভাগ্যক্রমে আমার তখন মেডিকেল, ফ্যাশন ও খেলাধূলা বিষয়ক তিনটা ডোমেইন ছিলো, যাদের প্রতিটারই গুগলের ডোমেইন অথরিটি লেভেল ৩+ ছিলো (সামুর তখন ৬এর মত মনে পড়ে)। তো সেগুলিতে লেখা শুরু করলাম।
ঐ সাইটে প্রতি লেখায় আমি ৪.৫-৭ডলার পর্যন্ত পেতাম। ছাত্র অবস্থায় সেটা একেবারে খারাপ ছিলো না। ডলার হাতে পৌছুতে পৌছুতে হয়ে যেতো ৭০ টাকা। দিনে আমি ৪-৫টা লেখা লিখতাম।
সেখান থেকে ইস্তফা দিয়ে এক সময় ওডেস্কে কাজ শুরু করলাম। সেখানে কয়েকটা কন্ট্রাক্টের কাজ পেয়ে গেলাম। তার সাথে দেশে দুইজন নামকরা স্পোর্টস রিপোর্টারদের হয়েও লিখতাম। উনাদের নাম বললে আমার চাকরী থাকবে না, আইমিন আমি যে প্রাইভেসি পলিসিতে সাইন করেছিলাম তা ভঙ্গ করা হবে, তাই নাম বললাম না।
ভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য করতাম তাদের এসাইনমেন্ট লিখে। পরে একসময় টিচারদের কাছে ধরা খেয়ে গেলাম। আমি দুইটা জিনিষ মিলাতে পারতাম না। ১. আমার নিজের একটা লেখার স্টাইল ছিলো, সেটাকে আমি যে ছাত্রের হয়ে এসাইনমেন্ট লিখছি তার লেখার মত করতে পারতাম না। ২. আমার শিক্ষকেরা প্রায় সবাই আমার লেখার স্টাইল সম্পর্কে অবগত ছিলো, তাই ধরা খেয়ে যেতাম।
এরপর শুরু করলাম শুধু এসাইনমেন্ট ও ইন্টারনশিপ রিপোর্ট ফরম্যটিং এর কাজ। প্রতি সেমিস্টারেই মোটামুটি গোটা ৩০-৪০ জনের কাজ করে দিতে হতো।
এরপর খুব একটা আর এ লাইনে আগাই নি। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে আমি মাঝে মধ্যে মানুষের সিভি আর কাভার লেটার লেখার কাজ করি। এ বিষয়ে আমার রেকর্ড ভালো। বেশ অনেকেই উপকার পেয়েছেন। আমার প্রতিষ্ঠানের ভিতরের কয়েকজনকেও লিখে দিয়েছি। আমার ম্যানেজার যখন অন্য প্রতিষ্ঠানে চাকরীর জন্য এপ্লাই করলো, তার কাভার লেটারও আমি লিখে দিয়েছিলাম।
আজকে আমার ম্যানেজারের পোষ্টে এপ্লাই করবার জন্য আমি নিজের কাভার লেটার লিখতে বসেছি। লিখতে গিয়েই পড়েছি বিপদে। সকাল ৭টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বসে থেকে প্রথম দুই-তিন লাইনের পর আর কিছু আগাতে পারিনি!
বহু আগে মুভি দেখতাম, সপ্তাহে ৪-৫টা বা কখনও কখনও তার বেশী। মুন্না ভাই এমবিবিএস নামে একটা মুভির মধ্যে দেখেছিলাম যে একজন ডাক্তার বলেন যে উনি রোগীকে রোগীই মনে করেন। কারণ তিনি যদি নিজের মেয়ের অপারেশন করতে যান, তাহলে তার ভয়ে হাত কাঁপতে পারে। কিন্তু রোগীর অপারেশনে তা হবে না।
আমারও তেমনই ফিল হচ্ছে, তবে আমি নিজের কাভার লেটার লেখার সময় ভাবতে পারছি না যে অন্য কারও কাভার লেটার লিখছি।
এদিকে আর মাত্র কয়েক ঘন্টা পরই এপ্লিকেশনের ডেডলাইন শেষ!
Photo by NEOM on Unsplash
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৪৯