কত আশা করে টিকিট কাটলাম, হোটেল বুকিং দিলাম, এমনকি আমার কলিগ মিশরের মোবাইল সিম কার্ডও দিয়ে দিল।
ওয়েবসাইটে সব জায়গাতেই দেখেছি, পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাসের বেশি থাকলে আমিরাতের রেসিডেন্টরা মিশরে অন-অ্যারাইভাল ভিসা পাবে।
সব কিছুই ঠিকঠাক চলছিল। এমনকি আমি লুক্সোর যাওয়ার বাসের টিকিটও কিনে ফেলেছিলাম। কপাল ভালো, ভালো বাসের টিকিট শেষ হয়ে যাওয়ায় কিনতে পারিনি।
যাওয়ার দুই দিন আগে আমার বন্ধু ভিসার ব্যাপারটা আবার নিশ্চিত করতে বলল।
আমি আমার এয়ারলাইনে চাকরি করা এক বন্ধুকে ফোন করলাম। সে এমিরেটস এয়ারলাইনের কল সেন্টারে ফোন করতে বলল। আমি কল দিয়ে সব বিস্তারিত বললাম—আমি বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী, দুবাইয়ের ভিসা আছে। জানতে চাইলাম, অন-অ্যারাইভাল ভিসা পাব কি না।
তিনি বললেন, "একটু দেখে বলছি।" দুই মিনিট পরে জানালেন, আমিরাতের ভিসা থাকলে বাংলাদেশিরা অন-অ্যারাইভাল ভিসা পাবে, তবে পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাস থাকতে হবে।
তখনই বুঝলাম, মাইনকা চিপায় পড়তে যাচ্ছি।
পরে ফোন করলাম দুবাইয়ের মিশরের দূতাবাসে। তারাও একই কথা বলল—ভিসা ও পাসপোর্টের মেয়াদ ৬ মাস থাকতে হবে, তবেই ২৫ ডলার ফি দিয়ে অন-অ্যারাইভাল ভিসা পাওয়া যাবে।
আমি শারমিনকে জানালাম। সে একটু দোটানায় পড়ে গেল, বলল, "তোমরা যদি না যাও, তাহলে আমরাও যাব না। একা ঘুরে মজা পাব না।" পরে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম, এয়ারপোর্টে গিয়ে শেষ চেষ্টা করব।
আবুধাবির নতুন এয়ারপোর্টে গিয়ে পৌঁছালাম রাত তিনটার দিকে।
কাউন্টারে ডানা আর শারমিনের পাসপোর্ট দেখে এজেন্ট বলল, "এদের বোর্ডিং দেওয়া যাবে না। মিশরের জন্য ভিসার মেয়াদ ৬ মাস বাধ্যতামূলক। না হলে ইমিগ্রেশন ফেরত পাঠাবে এবং এয়ারলাইনকে জরিমানা দিতে হবে।"
আমি এজেন্টকে অনুরোধ করলাম কোনো উপায় আছে কি না জানতে। উনি বললেন, "নাই। তবে বাংলাদেশি সুপারভাইজারের সাথে কথা বলতে পারেন।"
সুপারভাইজারের কাছে সব বললাম। তিনিও বললেন, "মিশর ইমিগ্রেশন একদিনের কম মেয়াদ হলেও ফেরত পাঠায়। আর এয়ারলাইনকে জরিমানাও করে। তাই কিছু করার নেই।"
কি আর করা! রাজ আর লিজাকে অনেক বুঝিয়ে ওদের যেতে রাজি করালাম।
বিদায় দিয়ে আমরা বসে ভাবতে লাগলাম, এখন আবুধাবিতে কী করব?
ঘড়িতে তখন বাজে ভোর ৪.৩০, সূর্য উঠতে বেশ সময় বাকী। আমি যেই বন্ধুর কাছে গাড়ী রাখতে দিয়েছি সে একটু আগেই ঘুমাতে গেছে, হোটেলের চেক ইন টাইম ও তো দুপুর ২ টা।

সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৮:০১