somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কতৃপক্ষের ব্যাবসার বলি, কেন হবে শিক্ষার্থী?

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর আরোপিত ভ্যাট নিয়ে আমার কিছু বলার ইচ্ছে ছিলো না। সাড়ে সাত পার্সেন্ট ভ্যাট আমার কাছে খুব বেশী মনে হয়নি। যে ১০০ টাকা দিতে পারবে। তার সাড়ে সাত টাকাও দিতে পারবে। এটা খুব স্বাভাবিক বিষয়। কিন্তু, আজ যখন ভিন্ন একটি চিন্তা মাথায় আসলো তখন মনে হলো আমার কিছু বলা উচিৎ। যদিও আমি এতো উচ্চমানের লেখক নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার মত বিত্তবানও নয়। তবু ছোট মুখে বড় কথা বলার চেষ্টা করছি। মানুষের মৌলিক অধিকার ৫ টি। খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, বাসস্থান এবং শিক্ষা। যদিও অনেকে বিনোদনকেও মানুষের মৌলিক অধিকার বলেন। আমার লেখার বিষয় মৌলিক বিষয় কোনটি সেটি নয়। সেটি নিয়ে অন্য একদিন আলোচনা করবো। একটা শিশুকে শিক্ষিত এবং সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। একটা শিশু প্রাইমারি লেভেল অতিক্রম করে সম্পূর্ণ বিনামুল্যে। যে অর্থ খরচ হয় তা নামমাত্র। একজন শিশুকে বিনামুল্যে অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন করতে রাষ্ট্র কাজ করছে। এই ধারা অব্যাহত আছে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত। কারন, এখানে সিট নিয়ে খুব জামেলা হয় না। যার টাকা আছে সে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পড়াচ্ছে। যার টাকা নেই সে সরকারী প্রতিষ্ঠানে পড়াচ্ছে। এখানে মানসম্মত প্রতিষ্ঠানের অভাব থাকলেও, সাধারনত প্রতিষ্ঠানের অভাব নাই। কিন্তু, উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরুলেই বুঝা যায় পৃথিবী কত কঠিন। বাংলাদেশে সব মিলিয়ে সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৭ টি। যেখানে প্রতি বছর পরিক্ষা পরিক্ষা দিয়েন উত্তীর্ণ হচ্ছে ৭/৮ লাখেরও বেশী শিক্ষার্থী। ধরুন, প্রতি বছর ৫ লক্ষ শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইলো। বাংলাদেশের সব সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে ৫ হাজার করে ছাত্র ভর্তি হতে পারে। যদিও বাস্তবিক সংখ্যাটা ৪ হাজারেরও কম হবে। তবু ধরলাম ৫ হাজার। তাহলে ৩৭ ট বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ছাত্র ভর্তি হতে পারবে ১ লক্ষ ৮৫ হাজার শিক্ষার্থী। বাকি ৩ লক্ষ ১৫ হাজার শিক্ষার্থী কোথায় ভর্তি হবে। রাষ্ট্র তো এদের উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারছে না। যদিও এদের উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এখানে রাষ্ট্র যখন ব্যার্থ, তখন দায়িত্ব নিচ্ছে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি। তাদের উদ্দেশ্য ব্যাবসায়ীক হতে পারে। কিন্তু, তাদের ব্যাবসা করার সুযোগটা রাষ্ট্র করে দিচ্ছে। এখন যদি রাষ্ট্র মনে করে তাদের শিক্ষা দানের নামে এই ব্যাবসা বন্ধ করতে হবে। তাহলে রাষ্ট্র সেই জন্যে একটা যৌক্তিক ব্যাবস্থা নিতে পারে। সেই জন্যে ভ্যাট ধার্য করতে পারে না। রাষ্ট্র চাইলেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে রাষ্ট্রের নজরদারিতে আনতে পারে। এটা অসম্ভব কিছু নয়। রাষ্ট্র বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্যে একটা নীতিমালাও নির্ধারণ করে দিতে পারে। যাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ব্যাবসা করতে না পারে। যে কোর্স একটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ৩ লক্ষ টাকায় করাচ্ছে। সেই একই কোর্সটা অন্য আরেকটা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ৯ লক্ষ টাকায় করাচ্ছে। এখন খুব স্বাভাবিকভাবে বুঝা যায়, যে ৯ লক্ষ নিচ্ছে। সে ৬ লক্ষ বেশী নিচ্ছে। সেখানে তার ৪ লক্ষ হলেও লাভ আছে। তাই যাতে সে এতো লাভ করতে না পারে। সে জন্যে রাষ্ট্র কিছু নীতিমালা প্রণয়ন করতে পারে। কিন্তু, রাষ্ট্র যদি তা না করে বলে, এতো টাকা লাভ করতেছো, আমাকে ৭.৫% শেয়ার দাও। এরপর কি হবে ৯ লক্ষ টাকার কোর্স ৯ লক্ষ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা হবে। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ রাষ্ট্রকে ৬৭৫০০ টাকা দিয়ে দিলো। কিন্তু, তাদের ইনকাম আগেরটা থাকলো। কিন্তু, ছাত্রদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৬৭৫০০ টাকা বেশী গেলো। রাষ্ট্র খুশী, বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষও খুশী। মাঝখান থেকে ছাত্ররা মরবে। এখন যে ছাত্র ৯ লক্ষ টাকা দিয়ে অনার্স করছে। সে আরো এক লক্ষ টাকাও দিতে পারবে। কিন্তু, যে ৯ লক্ষ টাকা জমি বিক্রি করে এই ৯ লক্ষ টাকা জমা করে রাখছে। তার পরিণতি কি হবে? তার পক্ষ ৬৭ টাকাও জোগাড় করা সম্ভব নয়। সে ৬৭ হাজার টাকা জোগাড় করবে কি করে? আচ্ছা ধরুন, সে বহুকষ্টে এই টাকা জোগাড় করলো। বাধ্য হয়ে ভিটেমাটিও বিক্রি করলো। কিন্তু, এর কিছুদিন পর যে আবারও ভ্যাট বাড়ানো হবে না তার নিশ্চয়তা কি? এখন ভ্যাট ৭.৫ %। কিছুদিন পর সেটা যদি ১৫ % করে দেয়া হয়। কারো তো কিছু করার নেই। তারপর সেটা ৩০% হবে না যে তারও নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবো না। শিক্ষায় খরচ বাড়লে ছাত্ররা বাধ্য হয়ে বিদেশমুখী হবে। আর তখন দেশ হারাবে প্রচুর পরিমাণ উদীয়মান নাগরিক।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৪
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×