ছবি: ইন্টারনেট
কামিনীর দুচোখ বেয়ে নামছে জলের ধারা। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ও সোনাঝরা দিগন্তের পানে। হাতে হাত রেখে বসে আছে দুজন, ওদের প্রিয় সেই শিমুল গাছটির নিচে। ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে গাছটি। বাসন্তী সাজে আজ সে রঙিন। শিমুলের লাল আভা আর গোধূলির লালিমা এক হয়ে মাখামাখি করছে কামিনীর দুই গালে। দুই গালের দুই অশ্রুবিন্দু যেন ঝিনুকের বুকে সদ্য জমাটবাঁধা বাসন্তী রঙের দুটি মুক্তো কণা।
বাসন্তী রঙের শাড়ি পরেছে আজ কামিনী। দুই হাতে গাঁদা ফুলের বালা। গলা, কান, মাথা সব গাঁদায় গাঁদাায় সজ্জিত। কামিনী যেন সেই সোনার বরণ হলদিয়া পাখি। হলদিয়া পাখি কেঁদে চলেছে অবিরত। সুহাস কোন বাঁধা দিচ্ছে না। ক্রন্দনরত হলদিয়া পাখিটা তার কাছে আরো বেশি অপরূপা লাগছে। মুগ্ধ নয়নে তাই তাকিয়ে আছে ও কামিনীর দিকে।
না, বসন্তবরণে এই সাজ আজ সাজেনি কামিনী। আজ ওর গায়ে-হলুদ। তাই এই বাসন্তী সাজ। গায়ে হলুদের বাসন্তী সাজে সুহাস একটিবার ওকে দেখতে চেয়েছে।
প্রেমিকের শেষ আবদারটুকু রাখতে বিউটিপার্লার থেকে সোজা চলে এসেছে ও এই শিমুলতলায়, সুহাসের কাছে। ওদের ভালোবাসার সাক্ষী এই শিমুল গাছ। আজ থেকে বিচ্ছেদেরও সাক্ষী হয়ে রইলো। এতদিনের প্রেম ওদের। আজ সেই প্রেমিককে হারিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হবে। ব্যথায় মনটা তাই আজ বড্ড ভারাক্রান্ত।
সূর্য ডুবি ডুবি। উঠতে হবে এবার। হলুদ মঞ্চ অপেক্ষা করে আছে। বরপক্ষ চলে আসবে কিছুক্ষণ পর। চুপচাপ উঠে দাঁড়ালো কামিনী। সুহাসও কোন কথা না বলে উঠে দাঁড়ালো নীরবে। সময় ফুরিয়ে এসেছে। ফিরতে হবে ওকেও। আজ ওরও যে গায়ে হলুদ। বিয়েটা যে কামিনীর সাথেই।
----
সবাইকে বাসন্তী শুভেচ্ছা।
©নিভৃতা
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৫